ক্রিয়েটিভ রাইটিং(গল্প) || অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে (দ্বিতীয় পর্ব)
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি বাস্তব গল্প শেয়ার করবো। এর আগে এই গল্পের প্রথম পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম এবং আজকে দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করতে যাচ্ছি। যাইহোক আমাদের ভাই ব্রাদার ইমরান নতুন চাকরিতে জয়েন করার পর প্রচুর চাপে ছিলো। রাত ১১/১২ টা পর্যন্ত অফিসে কাজ করতো। মূলত ২ বছর পরপর ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করতে হবে এবং সেজন্য ইমিগ্রেশনের নিয়ম অনুযায়ী বাড়তি বেতন পেতে হবে। তাহলে পরিবার নিয়ে সাউথ কোরিয়াতে বসবাস করতে পারবে। যাইহোক ইমরান প্ল্যানিং করেছিল খুব শীঘ্রই তার ওয়াইফ এবং ৩ বছর বয়সী ছেলে সন্তানকে খুব শীঘ্রই কোরিয়াতে নিয়ে যাবে। তো ইমরান ঈদের দিন রাতে আমাদের সাথে আড্ডা দিতে দিতে ঘুমিয়ে পড়ার পর,আমরা অনেকক্ষণ পর ইমরানকে ঘুম থেকে উঠিয়ে দিলাম।
Location
আমাদের সবাইকে যার যার রুমে ফিরতে হবে বলে। কারণ পরের দিন আমাদের সবার অফিস ছিলো। যাইহোক ইমরান এবং আমরা সবাই যার যার রুমে ফিরে গিয়েছিলাম। এরপর ২/৩ দিন আমাদের কারো সাথেই ইমরানের যোগাযোগ হয়নি। কারণ সবাই মোটামুটি ব্যস্ত ছিলাম। তো একদিন আমি এবং আমাদের আরেকজন ভাই ব্রাদার অফিস থেকে বিকেল বেলা ৫ টার পর বাসার দিকে ফিরছিলাম, তখন আমাদের এক বড় ভাই (আরিফ) আমার মোবাইলে ফোন দিলো। ফোন দিয়ে বললো যে ইমরানের ওয়াইফ নাকি ইমরানকে ২ দিন ধরে ফোন দিচ্ছে, কিন্তু ইমরান ফোন রিসিভ করছে না। ইমরান অনেক আগে বরিশালের আরিফ ভাইয়ের সাথে একই ফ্ল্যাটে থাকতো। তারা ৪/৫ বছর একই ফ্ল্যাটে থাকতো বলে,আরিফ ভাইয়ের ফেসবুক আইডি জানতো ইমরানের বউ।
তো ইমরানের সাথে ইমরানের বউ যোগাযোগ করতে পারেনি বলে,শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে আরিফ ভাইকে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে নক দেয়। তারপর সবকিছু খুলে বলার পর,আরিফ ভাই আমাকে ফোন দিয়ে বললো ইমরানের বাসায় গিয়ে একটু খোঁজ নিতে। কারণ ২ দিন ধরে ইমরানের বউয়ের সাথে ইমরান যোগাযোগ করেনি বলে,ইমরানের বউ অনেক টেনশন করছিলো। মূলত আরিফ ভাই অনেক দূরে একটি কোম্পানিতে জব করতেন তখন। যাইহোক আমি রুমে গিয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে, আমার আরও ২ জন ভাই ব্রাদারকে নিয়ে ইমরানের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম। অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা হেঁটে ইমরানের বাসায় পৌঁছে গিয়েছিলাম। ইমরান মূলত ৩ তলা বিল্ডিংয়ের দোতলায় থাকতো। তো আমরা দোতলায় উঠে,প্রথমেই ইমরানের রুমের দরজা খোলার চেষ্টা করলাম। দেখলাম যে দরজা ভিতর থেকে লক করা ছিলো না।
আমরা সাথে সাথে দরজা খুলে ফেললাম। দরজা খোলার পর আমরা যা দেখলাম, তা দেখার জন্য মোটেও প্রস্তত ছিলাম না। আপনারা বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা, আমি যে এখন লিখতেছি,ঠিক এই মুহূর্তে আমরা শরীরের লোম গুলো দাঁড়িয়ে গিয়েছে এবং চোখ থেকেও পানি পরছে। মানে ইমরান ফ্লোরে খালি গায়ে শুয়ে আছে শুধুমাত্র লুঙ্গী পরিধান করে। তাছাড়া রুমের ভিতরে দরজার সামনে যে জুতার বক্স ছিলো, সেই বক্সটি নিচে পরেছিল। মানে অনেক কিছুই এলোমেলো হয়েছিল। ইমরানের অবস্থা দেখে এতটাই ভয় পেয়েছিলাম যে,ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। তখন আমরা তিনজন ইমরানের রুমে না ঢুকে,রুমের দরজা চাপিয়ে দিয়ে, বিল্ডিংয়ের নিচে নেমে গিয়েছিলাম। কারণ ওর অবস্থা দেখেই আমরা বুঝে গিয়েছিলাম সে হয়তো আর পৃথিবীতে নেই। যাইহোক এরপর কি হলো,সেটা জানতে হলে আপনাদেরকে পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। (চলবে)
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | গল্প(ক্রিয়েটিভ রাইটিং) |
---|---|
পোস্ট তৈরি | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ১০.৫.২০২৪ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
💯⚜2️⃣0️⃣2️⃣4️⃣ This is a manual curation from the @tipu Curation Project.
Also your post was promoted on 🧵"X"🧵 by the account josluds
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 1/7) Get profit votes with @tipU :)
আপনার গল্পের আজকের শেষ ফিনিশিং এর অংশটি পড়ে তো আমার নিজের শরীরের লোম দাঁড়িয়ে গেল ভাইয়া। যেভাবে বর্ণনা দিয়েছেন তাতে স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে যে অবশ্যই ইমরান আর বেচে নেই। যাইহোক পোস্টটির পরবর্তী পর্বের জন্য অধীর আগ্রহে থাকলাম।
হ্যাঁ ভাই ইমরান আগেই মারা গিয়েছিল। কিন্তু সে একা থাকতো বলে কেউ জানতে পারেনি। যাইহোক পোস্টটি পড়ে যথাযথ মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই। বেঁচে বানান ভুল হয়েছে ভাই। আশা করি ঠিক করে নিবেন।
ধন্যবাদ ভাই, ভুল ঠিক করে নিয়েছি।
আপনার পোস্ট পড়ে ইমরান ভাইয়ের জন্য অনেক খারাপ লাগলো। আসলে ভাইয়া মানুষের এমন হঠাৎ চলে যাওয়া দেখে অনেক খারাপ লাগে। আর কোন আপনজনকে খোঁজ নিতে গিয়ে মৃত্যু দেখলে। তখন কেন সেই কথা মনে পড়লে সব সময় শরীরের লোম দাঁড়িয়ে যাই।এমন খবর ইমরানের বউ কিভাবে মেনে নেবে সেটা দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।
হ্যাঁ আপু হঠাৎ মৃত্যু মেনে নিতে খুবই কষ্ট হয়। পরবর্তী পর্বে বিস্তারিত জানতে পারবেন আপু। যাইহোক পোস্টটি পড়ে এভাবে সাপোর্ট করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
গল্পটা শুরু থেকে পড়তে ভালোই লেগেছিল। কিন্তু শেষে এরকম কিছু দেখে গা শিউরে উঠেছে। সত্যি শরীরের পশম গুলো দাঁড়িয়ে গিয়েছে। আমি নিজে কি লিখব কমেন্টে, এটাই বুঝতে পারতেছি না। কোন কিছু বলার মত ভাষা হারিয়ে গিয়েছে মুখ থেকে। কে জানে কয়দিন ধরে তিনি এভাবে মরে পড়ে রয়েছেন। হয়তো দুইদিন ধরে এভাবেই রয়েছে। যেহেতু ওনার স্ত্রীর সাথে দুই দিন কথা হয়নি। এখন দেখা যাক পরবর্তীতে কি হয়।
ভাই পরবর্তী পর্বে বিস্তারিত জানতে পারবেন। কিন্তু এমন মর্মান্তিক মৃত্যু আসলেই মেনে নেওয়া যায় না। যাইহোক পোস্টটি পড়ে গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
কিছুদিন আগে ইউটিউবে একটা ভিডিওতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ দেখলাম। মানুষ দুশ্চিন্তার জন্য এবং পরিবারের দুর্ব্যবহারের জন্য স্ট্রোক করে মারা যায়। তবে যাই হোক এই সমস্ত বিষয়গুলো আমাদের সকলের মনে রাখা উচিত এবং টেনশন থেকে যেভাবে ফ্রি থাকা যায় সেই বিষয়ে আমাদের বেশি অ্যাকটিভ হতে হবে। অসাধারণ একটি বিষয় নিয়ে আপনি আলোচনা করেছেন এতে বেশ ভালো লাগলো আমার।
হ্যাঁ ভাই দুশ্চিন্তা খুবই খারাপ জিনিস। তাই কখনোই কোনো কিছু নিয়ে দুশ্চিন্তা করা যাবে না। যাইহোক পোস্টটি পড়ে আপনার মূল্যবান মতামত প্রকাশ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আপনি আলোচনা করেছেন। আপনার এই পোস্ট সকলের জন্য খুবই উপকার হবে। মানুষ অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে স্টক করে। তাই আমাদের যে কোন মুহূর্তে দুশ্চিন্তা জিনিসগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে এবং টেনশন করতে হবে না। অবশ্যই ভাইয়া ইমরানের পরবর্তী বিষয়টা জানার অপেক্ষায় থাকবো। তবে উনি যখন ফ্লোরে ওভাবে পড়ে রয়েছেন তখনই বুঝতে পারলাম কতটা টেনশন করার পরে অবস্থা হয়েছে।
হ্যাঁ আপু এই ধরনের পোস্ট পড়লে অনেকেই সচেতন হবে বলে আমি মনে করি। যাইহোক পোস্টটি পড়ে গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।