অনেকদিন পর রিকশা এবং নৌকা দিয়ে ঘুরার অনুভূতি

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম,

আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।

গত সপ্তাহে পুরো পরিবার নিয়ে, আমার নানা শশুর বাড়িতে দাওয়াতে গিয়েছিলাম। আমাদের বাসা থেকে তাদের বাসায় যেতে, রিকশা করে ১০ মিনিটের মতো সময় লাগে। যোহর নামাজ আদায় করে সবাইকে নিয়ে, চলে গেলাম নানা শশুর বাড়িতে। যাওয়ার পর সবাই গল্প-গুজব করলাম এবং অনেক আড্ডা দিলাম সবাই মিলে। তারপর আমরা সবাই একসাথে খাওয়া দাওয়া করে নিলাম। তারপর আবারও আড্ডা শুরু করলাম সবাই,আমি এমনিতেই খুব আড্ডা প্রিয় মানুষ। অনেক আত্মীয় স্বজন এসেছিল সেদিন, তাই জমপেশ আড্ডা হয়েছিল।

20221201_203417.jpg

20221201_203343.jpg

আড্ডা শেষ করার পর বিকেল ৪ টার দিকে, বাসায় চলে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, এমন সময় আমার ওয়াইফ বললো রিকশা দিয়ে ঘুরবে। তারপর আমার আব্বু আম্মু আমাদের বাসায় চলে গেল, আর আমরা দুইজন রিকশা দিয়ে ঘুরতে বের হলাম। আসলেই পড়ন্ত বিকেলে রিকশা দিয়ে ঘুরার মজাই আলাদা। আমরা প্রায় ৩০ মিনিটের মতো রিকশা দিয়ে ঘুরলাম এবং চলে গেলাম লাঙ্গলবন্দের দিকে। আমরা লাঙ্গলবন্দ বাজারে নেমে পড়লাম। সেখানে পাশাপাশি অনেকগুলো ঘাট রয়েছে,তার মধ্যে আমরা একটি ঘাটে গেলাম, যার নাম হচ্ছে রাজঘাট। এই রাজঘাটটি ব্রহ্মপুত্র নদীতে অবস্থিত।

20221201_203433.jpg

20221201_203632.jpg

এখানে দূর দূরান্ত থেকে অনেক হিন্দুরা স্নান করতে আসে। এমনকি কলকাতা থেকেও অনেক হিন্দুরা এখানে আসে স্নান করতে। কারণ তারা বিশ্বাস করে যে,এই নদীতে স্নান করা পূণ্যের কাজ এবং পাপমোচন হয়। এছাড়াও অনেক মুসলমানরাও বছরের বিভিন্ন সময়, এখানে এসে গোসল করে থাকে। এই নদীতে পাশাপাশি বিভিন্ন নামের ১৩টি ঘাট রয়েছে এবং অনেকগুলো আশ্রম রয়েছে। যাইহোক এরপর আমরা রাজঘাট থেকে, নৌকায় চড়ে প্রায় ৩০ মিনিটের মতো ঘুরলাম। আসলে বিকেল বেলা নৌকায় চড়ার মজাই আলাদা। আমরা দুইজন গল্প গুজব করতে লাগলাম এবং প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে লাগলাম।

20221201_203541.jpg

20221201_203601.jpg

নদীর মধ্যে অনেক কচুরিপানা ছিল, সেজন্য মাঝির নৌকা চালাতে মাঝে মধ্যে একটু কষ্ট হচ্ছিলো। নদীর তীরে কিছু কাশফুলও দেখতে পেলাম। নৌকা দিয়ে ঘুরতে ঘুরতে কিছু ফটোগ্রাফি করে নিলাম। এরইমধ্যে সন্ধ্যা হয়ে আসলো, তারপর আমরা প্রেমতলা ঘাটে নেমে পড়লাম। নৌকায় ৩০ মিনিটের মতো ঘুরে, মাঝিকে ১০০ টাকা ভাড়া দিলাম। প্রেমতলা ঘাটে নেমে আরো কিছু ফটোগ্রাফি করলাম। তারপর রিকশা নিয়ে চলে গেলাম লাঙলবন্দ বাজারে। লাঙলবন্দ বাজারে মুরগির হালিম পাওয়া যায় এবং অনেক দূর থেকে লোকজন এই হালিম খেতে আসে।

20221201_204201.jpg

20221201_204145.jpg

সন্ধ্যার পর অনেক ভীড় হয় এই জায়গাটিতে। আমি কয়েকবার এসে খেয়েছিলাম বন্ধুদের সাথে। আমার কাছেও এখানকার মুরগির হালিম এবং আলু দিয়ে মুড়ি মাখানো অনেক ভালো লাগে খেতে। আমার ওয়াইফ এর হালিম ভীষণ পছন্দ। রেস্টুরেন্টে খাওয়ার মজা এক রকম, আর মাঝে মধ্যে স্ট্রিট ফুড খাওয়ার মজাই অন্য রকম। আমি এমনিতে নলির হালিম ছাড়া অন্য হালিম তেমন খাই না, তবে এখানকার মুরগির হালিমটা খেতে ভালোই লাগে। তো যাইহোক আমার ওয়াইফ বললো, সে নাকি এখানে বসে খাবে না। সেজন্য মুরগির হালিম এবং আলু দিয়ে মুড়ি মাখানো, পার্সেল নিয়ে নিলাম সবার জন্য। তারপর রিকশা নিলাম বাসায় যাওয়ার জন্য। প্রায় ২৫ মিনিটের মতো রিকশায় চড়ে, বাসায় চলে আসলাম।

20221127_172130.jpg

20221127_172559.jpg

Location

বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই।আমি আমার কিছু ভালো লাগার মুহূর্ত এবং অনুভূতিগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আপনাদের কাছে কেমন লাগলো ,তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না এবং কোনো ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ও ধরিয়ে দিবেন সেই আশা করছি।আপনাদের সাপোর্ট পেলে, আবারো ইনশাল্লাহ দেখা হবে অন্য কোন পোস্টে।সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

ক্যাটাগরিভ্রমণ
ফটোগ্রাফার@mohinahmed
ডিভাইসSamsung Galaxy S9 Plus
তারিখ২.১২.২০২২
স্থানw3w
Sort:  
 2 years ago 

রিক্সায় এবং নৌকায় করে ঘুরে তো বেশ আনন্দই করেছেন। বিশেষ করে যখন নিজের জীবনসঙ্গীর সাথে এরকম কোন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া হয় তখন বেশি ভালো লাগে। নৌকায় থাকা অবস্থায় নদীর পাড়ে কাশ ফুলের যে ফটোগ্রাফি করেছেন সেটি অনেক বেশি আকর্ষণীয় দেখাচ্ছে। এই জায়গায় গিয়ে যদি ফটোগ্রাফি করা যায় তাহলে আরো বেশি সুন্দর হবে। যাই হোক হালিম খেতে আমার কাছেও খুব ভালো লাগে। আমরা মাঝেমধ্যেই বাসায় তৈরি করে থাকি। অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের মাঝে এই সুন্দর মুহূর্ত যে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন আপু,জীবনসঙ্গীর সাথে এরকম কোন জায়গায় ঘুরতে, আমারও ভীষণ ভালো লাগে। কাশফুল যেখানে ছিল, সেখানে গিয়ে ফটোগ্রাফি করার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে আসছিলো, তাই সেখানে নামা হয়নি। সুন্দর মতামতের মাধ্যমে পাশে থাকার জন্য, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

নানা শ্বশুর বাড়িতে দাওয়াত খেতে গিয়ে দাওয়াত খাওয়া শেষ করে বাড়িতে ফেরার আগে দুজনে খুবই সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। রিক্সায় করে ঘুরাঘুরি করতে খুবই ভালো লাগে আর সেটা যদি বিকেলবেলা হয় তাহলে তো আর কোন কথাই নেই। বিকেলবেলা যখন সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়ে সেই সময়টাতে ঘুরাঘুরির পাশাপাশি নদীতে নৌকা করে ভ্রমণ করতে অনেক বেশি ভালো লাগে যেটা আপনার পোস্ট দেখেই বোঝা যাচ্ছে। সুন্দর এই মুহূর্তটা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

জি ভাইয়া বিকেল বেলা নৌকা দিয়ে ঘুরতে, আসলেই অনেক ভালো লাগে। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

নানি শশুর বাড়িতে দাওয়াতে গিয়ে তো ভাইয়া চমৎকার মুহূর্ত কাটিয়েছেন। নৌকায় ঘুরতে আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। রিক্সায় ঘুরতে আরো বেশি ভালো লাগে। চমৎকার একটি দিন ছিলো। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত সাপোর্ট করার জন্য, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

রিকশায় ঘুরে ঘুরে এবং নৌকায় ঘোরাঘুরি দুটোই আমার অনেক পছন্দ। নানা শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে বেশ আনন্দ সময় কাটিয়েছেন। আসলেই পরিবারের সবাই মিলে কোথাও ঘুরাঘুরি করার মজাই আলাদা। প্রিয়জনকে নিয়ে ঘুরলে তো আনন্দটা দ্বিগুণ বেড়ে যায়। প্রেমতলা ঘাটে নেমেছেন। ঘাটের নাম কিন্তু খুবই সুন্দর আমার ভালো লেগেছে শুনে। আমারও স্ট্রিট ফুড খাওয়া অনেক ভালো লাগে। আমার কাছে মুরগির হালিমের চাইতে গরুর হালিম খেতে বেশি ভালো লাগে। বেশ চমৎকার সময় কেটেছে আপনাদের।

 2 years ago 

জি আপু প্রিয়জনকে নিয়ে ঘুরতে গেলে, আনন্দটা সত্যিই দ্বিগুণ হয়ে যায়। সব মিলিয়ে বেশ আনন্দে সময় কাটিয়েছি। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মতামত প্রকাশ করার জন্য।

 2 years ago 

আপনারা সবাই মিলে বেশ মজা করছেন নানা শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে।খাওয়া-দাওয়া শেষ করে বেশ মজা করছেন রিকশায় চড়ে।আমার কাছেও চিকেন হালিম বেশ ভালো লাগে। তবে কোনদিন আলু দিয়ে মুড়ি মাখা খাওয়া হয়নি।

 2 years ago 

আলু দিয়ে মুড়ি মাখা খেয়ে দেখবেন, আশা করি খুব ভালো লাগবে। আপনার কাছেও চিকেন হালিম বেশ ভালো লাগে, জেনে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

রিক্সায় ঘুরতে আমার কাছেও খুব ভালো লাগে। আপনি আপনার নানা শশুর বাড়িতে আড্ডা দিয়ে আবার রিক্সায় ঘুরেছেন ৩০মিনিট। রিক্সা থেকে নেমে আবার নৌকায় ঘুরেছেন। আমার নিজেরই তো রিক্সা নৌকায় ঘুরতে মন চাচ্ছে। এরকম হালিম গরম খেতেই বেশি ভালো লাগে। আপনিতো পার্সেল করে বাসায় নিয়ে গেলেন । বাসায় গিয়ে খেতে এতটা মজা লাগবে না নিশ্চয়। যাই হোক খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন বোঝা যাচ্ছে। খুব ভালো লাগলো ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

জি আপু আমার কাছেও, হালিম গরম খেতেই বেশি ভালো লাগে। কিন্তু আমার ওয়াইফ সেখানে বসে খাবে না, সেজন্য বাসায় নিয়ে গিয়ে খেয়েছি। মোটামুটি গরম ছিল, তাই খেতে ভালোই লেগেছিল। সুন্দর মন্তব্যের জন্য, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

নৌকাতে ঘুরাঘুরি করেছেন ৩০ মিনিট। ৩০ মিনিট ঘুরাঘুরি করে শুধু ১০০ টাকা দিয়েছেন শুনে অবাক হলাম। আমাদের এখানে যদি ৩০ মিনিট ঘুরাঘুরি করি কমপক্ষে পাঁচ সাতশো টাকা নিবে। নৌকা ভ্রমন করতে আমার নিজেরও ভীষণ ভালো লাগে। ব্যস্ততার কারণে এখন কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয় না। আপনি তো একটি দাওয়াতের উসিলায় ঘুরতে পেরেছেন।

 2 years ago 

জি ভাইয়া এক ঘন্টায় ২০০ টাকা নেয়। সেখানে লোকজন সবসময় পারাপার হয়, তাই ন্যায্য ভাড়া নেয়। সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

ভাই আপনার মত আমিও আড্ডা দিতে খুব ভালোবাসি। তবে নিজের প্রিয়জনের সাথে ঘুরতে বেরোনো এবং খাওয়া দাওয়া করা অনেকটাই আনন্দের। খুব ভালো লাগলো আপনার ভ্রমণ কাহিনী পড়ে।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন ভাইয়া, প্রিয়জনের সাথে ঘুরে বেড়ানোর আনন্দই অন্যরকম। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

রিক্সায় ও নৌকা করে ঘুরতে গিয়ে অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন ভাইয়া। আমার কাছে এভাবে ঘুরতে অনেক ভালো লাগে। সাথে যদি কাছের কেউ থাকে তাহলে আরো ভালো লাগে। আপনি ভাবিকে নিয়ে সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। আপনাদের দুজনের জন্য অনেক শুভকামনা রইল। ধন্যবাদ আপনাকে

 2 years ago 

জি আপু আমরা দুইজন, অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছি। আমাদেরকে শুভকামনা জানানোর জন্য এবং সুন্দর মন্তব্যের জন্য, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 62581.77
ETH 2546.73
USDT 1.00
SBD 2.75