প্রতিদিনের মতো আজকেও আমি আপনাদের সামনে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি বাস্তব গল্প শেয়ার করবো। এর আগে এই গল্পের তৃতীয় পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম এবং আজকে চতুর্থ পর্ব শেয়ার করতে যাচ্ছি। যাইহোক পুলিশ আমাদের ৩ জনকে ইমরানের মৃত্যুর ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য পুলিশ স্টেশনে ডাকার পর, আমরা পরের দিন লাঞ্চের পর অফিস থেকে বের হয়ে পুলিশ স্টেশনের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। তারপর আমরা তিনজন পুলিশ স্টেশনের বাইরে একত্রিত হয়ে, পুলিশ স্টেশনে প্রবেশ করেছিলাম। যাইহোক পুলিশ অফিসার আমাদেরকে শুরতেই জিজ্ঞেস করলেন আমাদের পরিচয় কিভাবে এবং কতো দিনের পরিচয়। তারপর আমরা কেনো ইমরানের রুমে প্রবেশ করেছিলাম এটা জিজ্ঞেস করলো।

আমরা সবকিছুই খুলে বলার চেষ্টা করলাম। তাছাড়া ইমরান যে বিল্ডিংয়ে থাকতো,সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ চেক করেছিলো পুলিশ। কারণ ইমরান যেহেতু মারা গিয়েছে, এটা কি স্বাভাবিক মৃত্যু নাকি অন্য কিছু,মূলত সেটাই পুলিশ জানার চেষ্টা করছিলো। যাইহোক আমরা মোটামুটি অনেকক্ষণ পুলিশ স্টেশনে থাকার পর বের হয়ে গেলাম। কিন্তু বের হওয়ার আগে পুলিশ অফিসার আমাদেরকে বলেছিলো প্রয়োজন হলে আবারও আমাদেরকে ডাকবে পুলিশ স্টেশনে। যদিও পরবর্তীতে আর ডাকেনি আমাদেরকে। যাইহোক পরের দিন আমার মোবাইলে হঠাৎ করে একটা ফোন আসলো। ফোন রিসিভ করার পর জানতে পারলাম সিউলে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে ফোন করেছে ইমরানের ব্যাপারে কথা বলার জন্য।

মূলত ইমরান যে হসপিটালের মর্গে ছিলো, সেখান থেকেই বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করা হয়েছিল, কারণ ইমরানের লাশ তো বাংলাদেশে পাঠাতে হবে। বাংলাদেশ দূতাবাসে আমার মোবাইল নম্বরটা তারাই দিয়েছিলো,যাতে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারে। যাইহোক বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে আমার সাথে যোগাযোগ করার পর, আমাকে জিজ্ঞেস করলো ইমরান যে কোম্পানিতে কাজ করতো, সেখানে ইমরান কতো দিনের বেতন পাওনা রয়েছে, এটা আমি জানি নাকি। তাছাড়া অন্য কারো সাথে ব্যক্তিগত লেনদেন রয়েছে কিনা। আমি বললাম ইমরান যে কোম্পানিতে কাজ করতো,সেখানে হয়তোবা অল্প কয়েকদিনের টাকা পাবে। কিন্তু এর আগে ইমরান একটি কোম্পানিতে দীর্ঘদিন কাজ করেছিলো এবং সেই কোম্পানির মালিকের কাছ থেকে এখনো বাংলাদেশী প্রায় ৯/১০ লাখ টাকার মতো পাবে।

কিন্তু সেই কোম্পানির মালিক টাকা দিচ্ছে না অনেকদিন ধরে। তাছাড়া ইমরান ব্যাংকে বাংলাদেশী টাকার প্রায় ১৫ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে রেখেছিলো। যদিও ইমরান ফিক্সড ডিপোজিট করেছিলো ভিসাগত কারণে। যাইহোক ব্যাংকের ফিক্সড ডিপোজিট এবং ব্যাংকে থাকা টাকা বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশে ইমরানের পরিবারের কাছে পাঠানো হবে। তাছাড়া কোম্পানিতে যে ইমরান টাকা পয়সা পাবে,সেই ব্যাপারে কথাবার্তা বলার জন্য আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিলো বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে। কারণ তারা আমার ব্যাপারে খবর নিয়েছিলো যে, আমি কোরিয়ান ভাষা মোটামুটি ভালো বলতে পারি। যাইহোক এরপর কি হলো,সেটা জানতে হলে আপনাদেরকে পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। (চলবে)