জেনারেল রাইটিং: "দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টান পৃথিবী বদলে যাবে"
দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানোর মধ্যেই লুকিয়ে আছে পৃথিবী বদলে দেওয়ার সম্ভাবনা। মানুষ যতটা না তার পরিস্থিতি দ্বারা প্রভাবিত, তার চেয়ে বেশি প্রভাবিত হয় তার দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা। আমরা যেভাবে জীবন দেখি, সেভাবেই জীবন আমাদের প্রতিক্রিয়া দেয়। তাই, আমাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করা মানে পৃথিবীকে নতুনভাবে দেখার সুযোগ তৈরি করা।
আমাদের চারপাশের বিশ্ব, প্রকৃতি, সমাজ ও ব্যক্তি সবাই আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে গড়ে ওঠে। একজন মানুষ যখন তার চারপাশের জগৎকে নেতিবাচকভাবে দেখে, তখন সেই ব্যক্তির জীবনের অভিজ্ঞতাও নেতিবাচক হয়ে ওঠে। উদাহরণস্বরূপ, কেউ যদি প্রতিদিন শুধু সমস্যাগুলো দেখতে থাকে, তবে সে প্রতিনিয়ত অস্থিরতা ও হতাশার মুখোমুখি হবে। অন্যদিকে, যদি কেউ প্রতিদিন চ্যালেঞ্জগুলোকে সুযোগ হিসেবে দেখে, তবে সে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার শক্তি ও সম্ভাবনা খুঁজে পায়।দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন খুব সহজ নয়, তবে এটি প্রয়োজনীয়। প্রথমে নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে—আমাদের ভাবনা ও মনোভাব কি জীবনের উন্নতির পথে বাধা সৃষ্টি করছে? আমরা কি নেতিবাচক চিন্তা ও অভ্যাসগুলোর শিকার হচ্ছি? যদি তাই হয়, তবে তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এই পরিবর্তন ঘটাতে সচেতন মনোযোগ ও ধৈর্যের প্রয়োজন হয়। এর মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি, জীবন কখনো একরঙা নয়। এটি এক বিস্তৃত ক্যানভাস, যেখানে ভাল-মন্দ, সুখ-দুঃখ সবই মিশে থাকে।
দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের প্রথম ধাপ হলো কৃতজ্ঞতা। আমরা প্রায়ই আমাদের জীবনে যে সুন্দর জিনিসগুলো আছে সেগুলোকে অবহেলা করি। ধীরে ধীরে আমাদের মনোযোগ শুধু অভাব বা অসম্পূর্ণতার দিকে চলে যায়। কিন্তু যদি প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আমরা অন্তত পাঁচটি এমন জিনিসের কথা ভাবি, যেগুলোর জন্য আমরা কৃতজ্ঞ হতে পারি, তাহলে আমাদের মনের মধ্যে ইতিবাচকতা আসবে। কৃতজ্ঞতা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে পাল্টাতে সাহায্য করে, কারণ এটি আমাদের মনকে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যায়।এছাড়াও, আত্মবিশ্বাস ও ইতিবাচক চিন্তাধারার বিকাশও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হলে আমাদের নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে এবং বুঝতে হবে যে আমরা আমাদের ভাগ্যের নিয়ন্ত্রক। আমরা যদি বিশ্বাস করি যে আমরা ব্যর্থ হবো, তবে সাফল্য আমাদের কাছে আসবে না। কিন্তু যদি আমরা বিশ্বাস করি যে আমরা চেষ্টার মাধ্যমে যেকোনো পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে পারি, তবে আমাদের সামনে অনেক সুযোগ খুলে যাবে।
দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আমাদের সমাজেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। একজন ইতিবাচক মানুষ কেবল তার নিজের জীবনেই নয়, তার আশেপাশের মানুষদের জীবনেও পরিবর্তন আনতে পারে। তিনি আশার আলো দেখান এবং অন্যদের প্রেরণা যোগান। সমাজের নেতিবাচক দিকগুলো নিয়ে বেশি চিন্তা না করে যদি আমরা প্রত্যেকে নিজের চারপাশের মানুষদের সাহায্য করতে পারি, তাহলে একটি সুন্দর, সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে উঠবে।এক্ষেত্রে আমাদের প্রতিদিনের আচরণ ও কথাবার্তার মধ্যেও পরিবর্তন আনতে হবে। আমরা যা বলি, যেমন ভাবি, তেমনই আমাদের চারপাশের পরিবেশ তৈরি হয়। যদি আমরা সারাক্ষণ অভিযোগ করি, খারাপ দিকগুলো নিয়ে কথা বলি, তবে আমাদের চারপাশে নেতিবাচকতা ছড়িয়ে পড়বে। কিন্তু যদি আমরা ইতিবাচক কথাবার্তা বলি, ভালোর প্রশংসা করি এবং অন্যদের উৎসাহ দিই, তবে আমাদের চারপাশে আশাবাদ ও ভালোবাসার পরিবেশ তৈরি হবে।
দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হলে আমাদের জীবনের উদ্দেশ্যগুলোকে নতুনভাবে নির্ধারণ করতে হবে। আমরা যদি সবসময় পার্থিব বিষয়গুলোর পেছনে ছুটে চলি, তবে জীবনকে শুধুই চাহিদা পূরণের যন্ত্র হিসেবে দেখব। কিন্তু যদি আমরা মানুষের কল্যাণ, প্রকৃতির সংরক্ষণ, বা জ্ঞানার্জনের মতো মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে জীবনযাপন করি, তবে পৃথিবীকে আমরা আরও সুন্দর ও অর্থবহ রূপে দেখতে পারব।দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানো মানেই ব্যক্তিগত উন্নতির পাশাপাশি সমষ্টিগত উন্নতির দিকে এগিয়ে যাওয়া। প্রতিটি ছোট পরিবর্তন এক সময়ে বৃহত্তর প্রভাব ফেলে। একজন মানুষ যখন তার নিজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলায়, সে তার পরিবার, সমাজ, এমনকি পুরো বিশ্বে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।
পৃথিবীকে বদলানোর আসল ক্ষমতা আমাদেরই হাতে। পরিবর্তন শুরু হয় আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। যখন আমরা আশাবাদী, কৃতজ্ঞ, ও সহানুভূতিশীল মন নিয়ে জীবনকে দেখি, তখনই পৃথিবীও আমাদের জন্য নতুনভাবে আলোকিত হয়ে ওঠে।
আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
অনেক সুন্দর কথা বলেছেন ভাইয়া। আমি আপনার সাথে সহমত পোষণ করলাম। দুনিয়াকে চিনতে হলে আগে নিজের দৃষ্টিভঙ্গিকে পরিবর্তন করতে হবে। যে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি ঠিক করে চলতে পারবে তার কাছে দুনিয়া দুনিয়ার কর্মকান্ড ভালো লাগবে। তাছাড়া নিজের মনোভাব যদি ঠিক না হয় তাহলে দুনিয়ায় কোন কিছুই নিজের কাছে ঠিক মনে হয় না।
আসলে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির উপরে নির্ভর করে পৃথিবী ঠিক কেমন।আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি যদি ভাল হয় পৃথিবী ভালো, আর দৃষ্টিভঙ্গি খারাপ হলে পৃথিবী খারাপ।
https://x.com/mohamad786FA/status/1842228204582674764?t=S7NKFuv8V1fKy46zz6ge2g&s=19
উপযুক্ত একটি টপিকস নিয়ে আপনি আজকে আলোচনা করেছেন। আপনার লেখাগুলো পড়ে খুবই ভালো লেগেছে। আপনি ঠিকই বলছেন যার দৃষ্টিভঙ্গি যত সুন্দর তার জন্যে পৃথিবীটা খুবই সুন্দর। যতই দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানো যাবে ততই দুনিয়াটা সহজ হয়ে যাবে।
আসলে পৃথিবীর সৌন্দর্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির উপরে নির্ভর করে।আমরা যেভাবে পৃথিবীকে দেখব সেভাবেই আমাদের সামনে পৃথিবী উপস্থাপন হবে।
টাইটেল এর কথাটা আমার কাছে দারুন লেগেছে। হ্যাঁ আমরা যদি প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে মন মানসিকতাটা সেভাবে তৈরি করি সে ক্ষেত্রে জীবনটা বদলে ফেলানো সম্ভব।
জি ভাই আরে এভাবেই সুন্দর একটি পৃথিবী বিনির্মাণ করা সম্ভব।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আমরা যদি উন্নত দেশগুলোর দিকে লক্ষ্য করি তাহলে সর্বপ্রথম দেখব ঐ দেশের জনগণের উন্নত চিন্তাধারা। বিশেষ করে মানুষের প্রতি তাদের চিন্তাধারা আমাদের থেকে বেশ আলাদা। আপনি চমৎকার কিছু বিষয় এক্ষেত্রে তুলে ধরেছেন যেগুলো একেবারে চির সত্য। চমৎকার ছিল আপনার পোস্ট টা। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।
তাদের চিন্তা ভাবনা তাদের নিজেদেরকে ঘিরে নয় বরং তাদের চিন্তা ভাবনা পুরো দেশটাকে ঘিরে।তার জন্যই বাইরের দেশগুলো আমাদের চেয়ে অনেক অনেক বেশি উন্নত।
আজকের পোস্টে আপনি দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে যে কথাগুলো বলেছেন তা কিন্তু একজন সঠিক। কেননা আমরা একটা জিনিস খেয়াল করে দেখি যে অন্যান্য দেশের দৃষ্টিভঙ্গি সবসময় উন্নত দেখে থাকে তাই তারা সবসময় আমাদের দেশ থেকে এগিয়ে থাকে। তাইতো আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে পরিবর্তন করে আমাদেরকে অবশ্যই উন্নতির দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
আমরা যদি আমাদের কথা না ভেবে আশেপাশের মানুষ, এবং আমাদের এই দেশের কথা ভাবতাম তাহলে আমাদের দেশ আজ অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়ে যেত।কিন্তু আমরা তো তা করি না।
নেতিবাচক চিন্তা গুলো দূর করা উচিত। আর নিজের মানসিকতাকে বদলানো উচিত। আমরা যদি নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাই তাহলে সবকিছু বদলে যাবে। অসাধারণ একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
জি ভাই,আমাদের নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর মাধ্যমেই সবকিছু বদলানো সম্ভব।
"দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টান পৃথিবী বদলে যাবে" এই কথাটির সাথে আমি অনেক দিন ধরে সহমত পোষণ করেছি। বারবার দৃষ্টিভঙ্গি চেঞ্জ করেছি। কিন্তু সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি কখনোই বদলায় না। সেই বৈষম্য সেই স্বজনপ্রীতি, সেই বিশ্বাসঘাতকতা, সেই অপবাদ, সেই হত্যাকাণ্ড সেই হানাহানি সেই মারামারি কোনটাই পরিবর্তন হচ্ছে না। তবে ভীষণ আশাবাদী।
স্বজনপ্রীতি, বিশ্বাসঘাতকতা,অপবাদ, হত্যাকাণ্ড, হানাহানি, মারামারি এইসব যেদিন আমাদের সমাজ থেকে দূর হবে তারপরের দিন থেকেই সবকিছু সুন্দর হবে।কিন্তু বর্তমান যে পরিস্থিতি সেই সুদিন মনে হয় আর আসবেনা।আমিও আপনার মত ভীষণ আশাবাদী।
অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে। দৃষ্টিভঙ্গি বদলান পৃথিবী বদলে যাবে। তাই এই কথাটি এখন মানতে ভীষণ কষ্ট হয়।