শাহিন ভাইয়ের মুদি দোকান নিয়ে গল্প 🛖পর্ব -২🤥 By mohamad786 [10% Beneficiary @shy-fox]
স্মৃতির পাতায় থেকে শাহীন ভাইয়ের মুদি দোকানের গল্প আপনাদের সাথে প্রথম পর্ব শেয়ার করেছিলাম। আজকে আবারো আপনাদের মাঝে এসেছি দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে। আসলে এই দ্বিতীয় পর্বের মাধ্যমে আমরা জানতে পারব কিভাবে শাহীন ভাইয়ের দোকানে আগুন লেগেছিল এবং গ্রামের মানুষ শাহীন ভাইয়ের জন্য কি কি পদক্ষেপ নিয়েছিল। তে দোকানে রাতে আগুন লেগেছিলো,আর মানুষ সেই মাঝ রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল। যখন আগুনের ধোঁয়া আশেপাশে ছড়িয়ে পড়েছিল।তখন মানুষ উঠে এসে দেখে শাহীন ভাইয়ের দোকানে আগুন। তো পাশেই ছিল পুকুর সেখান থেকে পানি দিয়ে দোকানের আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছিল। অনেকক্ষণ চেষ্টা করে আগুন নেভানোর সম্ভব হল। তখন দেখা গেল ৬০ থেকে ৭০ ভাগ দোকান পুড়ে গেছে।শাহীন ভাইয়ের দোকানে একটি টেলিভিশন এবং একটি ফ্রিজ ছিল আর এই দোকানে অনেক বাকির খাতা ছিল, এই সবকিছু পুড়ে যায়। শাহিন ভাই তখন দোকানের সামনে এসে হাউমাউ করে চিৎকার করে কান্না করতে থাকে এবং তার কান্না দেখতে পেয়ে খুবই খারাপ লাগে এবং গ্রামের মানুষ তাকে সান্তনা দিতে থাকে। যে আল্লাহর কাছে ধৈর্য ধারণ করো। এর ফল তুমি পাবেই। শাহিন ভাইকে কোনমতে একটা রুমে নেওয়া হলোএবং তাকে সান্তনা দিতে থাকলো।
শাহীন ভাইয়ের দোকানে আগুন লাগার ঘটনা পুরো গ্রামবাসী জানাজানি হয়ে গেল এবং গ্রামের মুরুব্বীরা বললো এই গরীব দুঃখী মানুষের ওপরে এত বড় অন্যায় এর কঠিন বিচার হবে। তখন শহীন ভাইয়ের দোকানের সামনে ছোট বৈঠক বসা হল এবং সেখানে সিদ্ধান্ত নেয়া হল উপযুক্ত প্রমানসহ যে ব্যক্তি আগুন ধরিয়ে দিয়েছে তার কঠিন বিচার হবে। কারণ এই শাহিন মাঝেমধ্যেই দোকানে ঘুমাতো। যদি আজকে ওই দোকানে ঘুমাতো তাহলে দোকান পুড়ার সাথে শাহীনও পুরে যেতো এরকম একটা ঘটনা এবং দোকান পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনার কঠিন বিচার হবে। যেভাবে হোক প্রমাণ যোগাতে হবে এবং গ্রামের সকল মানুষকে বললো শুক্রবারের দিন একটি বড় বৈঠকের আয়োজন করল হবে।গ্রামের সবাই উপস্থিত থাকবেন।শুক্রবারের জুমার নামাজ শেষে গ্রামের সকলেই সেই বৈঠকে উপস্থিত হল এবং সেখানে আলোচনা করা হচ্ছিল কিভাবে এই আগুনটা লাগানো। শাহিনের সাথে কার কার ঝগড়াঝাঁটি রয়েছে, সেই বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গেল।
গ্রামের সবাই তখন বলল শাহিন খুবই ভালো মানুষ।শাহীনের সাথে কারো ঝগড়া হয়নি এবং মারামারি হয়নি। তবে আমাদের গ্রামে চারজন ছেলে রয়েছে তারা কোন কাজই করেনা। শাহিনের দোকান থেকে বাকি খায় এবং শাহিন টাকা চাইলে তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে।তখন গ্রামের চেয়ারম্যান শাহীনকে বলল যে তোমার সাথে ওদের কি রকম খারাপ ব্যবহার ছিল। তখন শাহিন বলল ওরা মাঝেমধ্যেই বাকি খেত। আমি টাকা চাইলে বলতো এই মাসে না পরের মাসে দেব এবং একদিন টাকা নিয়ে আমার সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করছে। আমার গায়ে হাত তুলেছিল। আর বলেছিল যে বাকির খাতাই থেকে নাম কিভাবে মুছে ফেলতে হয় সেটা আমরা করবো।এই কথাটা বলেছিল। আমার মনে হয় আগুন লাগিয়েছে ওরাই।এটা আমি বুঝতে পারছি না। তবে আমার মনে হয় ওরা হয়তো এই আগুন লাগানো সাথে জড়িযতো। তখন শাহিনের কথামতোই গ্রামের সকলেই বলছে ওরা আগুন লাগার। কারণ আগুন লাগানোর মতো জঘন্য কাজ আর কেউ করবে না।ওদের চারজনকে ডাকা হল এবং চেয়ারম্যান যখন ডাকলো তখন ঐই চারজন সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিল না।
তখন ওই চারজন বৈঠকে উপস্থিত ছিল না। এটা যখন চেয়ারম্যান শুনলে তখন চেয়ারম্যান বলল যে এই চারজনই আগুন লাগিয়েছে, না হলে ওরা কেন উপস্থিত থাকবে না। ওদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ নেই তারপরে ওরা কেন পালালো। তখন এই চারজনের বাবাকে ডাকা হলো। তখন এই চারজনের বাবাদের বললো যে তোমারদের ছেলেরা আগুন লাগিয়েছে। এর কঠিন বিচার হবে, তুমি কি বল, ওই চারজনের বাবারা তখন চেয়ারম্যান সাহেব পা ধরে বললো আমাদের ছেলেরা আগুন লাগায়নি। আমার ছেলেরা আমাদের বলেছে বলেছে তারা আগুন লাগাইনি। যখন বৈঠকে করা হল তখন গ্রামের সবাই আলোচনা করতে ছিল যে আগুন লাগিয়েছে ওরাই চারজন। আজকের এই কঠিন বিচার হবে এবং এই চারজনকে ধরে নিয়ে মারবে। তখন ওরা চারজন ভয়ে পালিয়েছে বাড়ি থেকে। ওরা আমাদের বলেছে যে বাবা আমরা যতই খারাপ হোক আমরা এই আগুন লাগাইনি।আগুন লাগানোর সাথে আমরা কোনোভাবেই জড়িত ছিলাম না। কিন্তু আমাদের সাথে শাহিন ভাইয়ের খারাপ ব্যবহার মারামারি হয়েছে যার কারণে গ্রামের মানুষ ভাবছে আমরাই আগুন লাগিয়েছি।তাই আমাদের ছেলেরা আজকে এই বৈঠকে উপস্থিত হয়নি।
তখন চেয়ারম্যান সাহেব কিছুক্ষণ চুপ থাকল এবং বলল কথাগুলো যুক্তির রয়েছে।যেহেতু আমাদের কাছে প্রমাণও নাই। যদি ওরা আগুন লাগিয়ে না থাকে তাহলে ওদের সাথে অন্যায় করা হবে।তারপরে চেয়ারম্যান সাহেব বললো যে আজকে বিকালের মধ্যেই তোমার চারজন তোমাদের তার ছেলেদের নিয়ে আমার সাথে ইউনিয়ন পরিষদে দেখা করবে। যদি তোমাদের ছেলেরা যদি কোন অপরাধ না করে থাকে, তাহলে ওদের কোন শাস্তি হবে না। তারপরও আমার সাথে দেখা করতে হবে। তখন ওই ছেলেদের বাবা বলল যে ঠিক আছে, আমরা আপনার সাথে দেখা করাবো। তখন বিকেলবেলা গ্রামের আরো কয়েকজনকে নিয়ে ঐচারজনসহ ইউনিয়ন পরিষদে নেওয়া হল। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেব তাদের সাথে কথা বলতে লাগলো।
তখন গ্রামের চেয়ারম্যান এবং আরো দুজন মুরুব্বিকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের একটি অন্ধকার রুমে নেওয়া হল।আর সেই চারজনের বাবাকে বলল যে আপনার কোন চিন্তা করোবেন না। ওদের শুধু একটু জিজ্ঞাসাবাদও করবো।তারপর রুমে নেওয়ার হলো,চারজনকে এমনভাবে ভয় দেখানো হলো। যাতে সত্যটা বলে। অনেক ভয় পেয়েছিল ওরা। ওদের বলা হল একদম মেরে ফেলবো যদি সত্যি কথা না বলোস। তখন ওরা বলেছিলাম আল্লাহর কসম আমরা আগুন লাগায়নি। আমরা কেউ আগুন লাগানোর সাথে জড়িত ছিলাম না। আমরা শুধু চেয়েছিলাম কিভাবে বাকির খাতাটা চুরি করা যায়। কিন্তু আগুন লাগানোর সাথে আমরা কোনভাবেই যুক্ত ছিলাম না।চারজনকে নানাভাবে ভয় দেখিয়ে ও যেহেতু ওদের মুখ থেকে আগুন লাগানো স্বীকার করতে পারেনি। তখন চেয়ারম্যান সাহেব ভাবলো যে না ওরা আগুন লাগাই নিয়ে।আগুন লাগানো পেছনে রহস্য রয়েছে। তখন চেয়ারম্যান সাহেব বললো ঠিক আছে, তোদের আজ থেকে একটা কাজ কে এই আগুন লাগিয়েছে। গ্রামের ভিতরে খোঁজ নিবে এবং এই জিনিসটা আমাদের কাছে প্রমাণ করে দিবি। যদি প্রমাণ করতে না পারো তাহলে তোদের সবাইকে জেলে পাঠাবো। তখন বলল ঠিক আছে আমরা গ্রামে ঘোরাফেরা করি এবং গ্রামে সকল বিষয়ে জিনিস আমরা খবর রাখবো। আমাদের কিছু দিন সময় দেন,আমরা যেভাবেই হোক খোঁজ-খবর নিয়ে আপনাকে জানাবো।তখন চেয়ারম্যান সাহেব গ্রামের মুরুব্বিদের এবং শাহিন ভাইকে ডেকে বলল। এই চারজনের ভিতরে কেউ আগুন লাগাইনি। তবেকে আগুন লাগিয়েছে এটা বের করার দায়িত্ব আমার ওপরে।আমি খুব তাড়াতাড়ি বের করব,আর শাহিন তুমি টেনশন করো না।তোমার ব্যবস্থা আমি করবো।
আজ এখানেই শেষ করছি। আবারো অন্য কোনদিন ভিন্ন কোনো কন্টেট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন, এই দোয়া রইল। আল্লাহ হাফেজ।🙏🤲🙏
আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবসি ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।
👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺
আসলে গল্পটি খুব রহস্যজনক প্রথম পর্ব পড়ে ভেবেছিলাম এই চারজনই আগুন লাগিয়েছে। দ্বিতীয় পর্ব পড়ে জানলাম এই চারজনের কেউই আগুন লাগায়নি। তাহলে ৩য় পক্ষ কে এই ব্যক্তি যে শাহীন ভাইয়ের দোকানে আগুন লাগিয়ে ছিল। সেই পর্বটি পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
আপনার সুন্দর মন্তব্যের কারণে আমার খুবই ভালো লেগেছে, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
শাহিন ভাইয়ের দোকান পোড়ানোর ব্যাপারটা যদিও হৃদয় বিধায়ক ছিল। কিন্তু গল্পে রহস্যের আভাস পাচ্ছি এবং কি খুব মজা লেগেছে উঠেছিল। তার মধ্যে শেষ করে দিলেন। অপেক্ষা রইলাম আগামী পর্বের, শুভকামনা রইল আপনার জন্য। এত সুন্দর একটি গল্প উপহার দেওয়ার জন্য।
আপনার প্রশংসা শুনে আমার খুবই ভালো লেগেছে আপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা
বাস্তবতা যে সিনেমা কে হার মানায় এটাই প্রমাণ।শাহীন ভাইয়ের জন্য খারাপ লাগল।আপনাদের গ্রামের মানুষ অনেক হেল্পফুল এটা বোঝা যাচ্ছে গল্প থেকে।আর চেয়ারম্যান সাহেব ও বেশ চালাক মানুষ।কাটা দিয়ে কাটা তোলার ব্যবস্থা করলেন।পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
এত সুন্দর মন্তব্য করে আমাকে উৎসাহিত করেছেন, সেজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ
আপনার সুন্দর মন্তব্যের কারণে আমার খুবই ভালো লেগেছে, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আপনার লিখাটি পড়ে আমার মনে ও একটু কষ্ট লেগেছিল। আসলে এই ধরনের জগন্য কাজ যারা করে তাদের কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত। যাতে এ ধরনের নিরীহ মানুষের কেউ আর ক্ষতি করতে সাহস না পায়।
শাহিন ভাইয়ের দোকানে আগুন লাগার বিষয়টি বেশ রহস্যময় অবস্থা তৈরি করেছে। ঐ চারজন যারা বাকি খায় এবং বাকির খাতা সরিয়ে ফেলতে চাইতো। ওরা আগুন যদি না লাগিয়ে থাকে তাহলে এখানে তৃতীয় পক্ষের কেউ রয়েছে যে শাহিন ভাইয়ের ক্ষতি চায়। ব্যাপারটা আসলে গোলমেলে। দেখা যাক সামনের পর্বে কি ঘটে।
আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ