সেকালের গরম বনাম একালের গরম ।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আজ - ১২ই, বৈশাখ, | ১৪২৯ , বঙ্গাব্দ | গ্রীষ্মকাল |


আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।




sunset-g7dbf2a1d7_1920.jpg
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

বর্তমান সময়ে খুবই চর্চার এবং সাধারন একটি বিষয় হচ্ছে গরম। সবার মুখে মুখে রয়েছে গরমের অতিষ্ঠতা তিক্ততার প্রকাশ। প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে জনজীবন। সূর্যের ঝলসানো আলোয় ঝলসে যাচ্ছে সবকিছু। প্রচন্ড রোদে সবকিছু যেন ঘোলাটে হয়ে উঠেছে। বাহিরে রোদ ধুলাবালিতে রাস্তাঘাট গুলো যেন কুয়াশার মতো হয়ে উঠেছে। দিনের বেলা তো বাইরে বের হওয়ার কোনই উপায় নেই।

দূষিত পরিবেশ অপরিকল্পিত নগরায়ন বৃক্ষ নিধন তাই দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে পৃথিবীর তাপমাত্রা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বায়ুমণ্ডলের ওজন নামক উপকারী একটি স্তর। যে স্থরটি আমাদের সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি গুলো থেকে পৃথিবী কে রক্ষা করে। পৃথিবীর উন্নত হচ্ছে কিন্তু বাড়ছে দূষণ। যতদিন না পৃথিবীর এই দূষণ কমবে ততদিন কমবেনা পৃথিবীর উষ্ণতা। পৃথিবী কে রক্ষা করতে হলে অবশ্যই আমাদের দূষণ কমাতে হবে এবং বৃক্ষ রোপণ করতে হবে। আমাদেরকে আরো অধিক সচেতন হতে হবে পৃথিবীর দূষণ নিধনে।

যাই হোক, সময়ের সাথে সাথে সবকিছুই পরিবর্তন হয় সে সাথে পরিবর্তন হয় মানুষের জীবনযাত্রার ধরণ। মানুষ এখন অনেকটাই আধুনিক হয়ে উঠেছে হয়ে উঠেছে প্রযুক্তিনির্ভর। তাই মানুষের আগের জীবন ধারণের সাথে এখনকার জীবনধারণের অনেকটুকুই আমিল লক্ষ্য করা যায়। আর সে অমিলগুলোই আজ আমি আপনাদের সাথে তুলে ধরার চেষ্টা করব।




house-g9dcddcb16_1280.jpg
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

সেকালের মানুষরা গরমের সময় যখন দুপুর বেলায় ঝলসানো রোদে সূর্য মাথার উপর থাকে তখন গাছের ছায়ার নিচে বসে শীতলপাটি বিছিয়ে প্রকৃতির মুক্ত বাতাসে আরাম করত। কিন্তু এখনকার সময়ের মানুষরা ফ্যান কিনবা এসি ছেড়ে বদ্ধ ঘরে বসে আরাম করে।

এখন আমরা পানি ঠান্ডা করতে ফ্রিজে রেখে দেই। কিন্তু আগেকার সময়ে তো ফ্রিজ ছিল না তাই তারা পানি ঠান্ডা করত ভিন্ন পদ্ধতিতে। তারা মাটির পাত্রে পানি রাখতো আর সে পানিগুলো ফ্রিজে রাখা পানির মতো শীতল হয়ে যেত। মাটির পাত্রের সেই শীতল পানি গুলো ছিল স্বাস্থ্যসম্মত কিন্তু এখনকার ফ্রিজের ঠান্ডা পানি গুলো কিন্তু মাঝে মাঝে আমাদের শরীর খারাপের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

আগেকার সময়ে মানুষ বাতাস করতো তালপাতার পাখা দিয়ে। যদিও সময় পরিবর্তন হয়, তালপাতার পাখার বাদলে তৈরি হয়েছে নতুন উপকরণ দিয়ে নতুন ধরনের হাতপাখা। কিন্তু তালপাতা পাখার বাতাস হতো বেশি অন্য যেকোনো হাত পাখার থেকে। কেননা তালপাখা গুলো হচ্ছে পাতলা ও ওজনে হালকা। আমি খুব ছোটবেলায় যখন গ্রামে থাকতাম তখন এই তালপাতার পাখা গুলো দেখেছি। কিন্তু এখন আর এগুলো খুব একটা দেখতে পাওয়া যায় না। আগে বিভিন্ন গ্রাম্য মেলা গুলোতে এই ধরনের তালপাতার হাতপাখা গুলো বেশি দেখা যেত। আপনাদের এলাকায় কি এখনো এই তালপাতার পাখাগুলো পাওয়া যায় তা জানাবেন।




landscape-g801b571c8_1920.jpg
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

আগেকার মানুষ তাদের তৃষ্ণা মেটাতে ক্ষেতের তাজা তরমুজ , আখ এবং ডাবের পানি দিয়ে। কেননা তখন এসব কিছু ছিল খুবই সহজলভ্য। কিন্তু এখনকার সময়ে এ সবকিছুই যেন বড় লোকের খাদ্য। কিন্তু একটা সময়ে এই সকল ফলমূল এত হতো যে মানুষ খাওয়ার পরেও পশু-পাখিকে খাওয়ানো হতো। আমার আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমি দেখেছি তরমুজের খেতে তরমুজ পেকে ফেটে যেত কিন্তু খাওয়ার কোন মানুষ ছিল না। তাই পশু-পাখিকে খাওয়ানো হতো। কিন্তু এখন তো আমরা সকলেই অবগত তরমুজ এর দাম সম্পর্কে। কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে তরমুজ।

আসলে প্রযুক্তি আমাদের সবকিছু পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সেইসাথে পাল্টে দিয়েছে আমাদের জীবন যাত্রার ধরন। প্রযুক্তি যেমন আমাদের জীবনকে সহজ করে তুলেছে তেমনি করে তুলেছে নানা অসুবিধার কারন। আগের সময়ে এতটা গরম ছিল না এখন বর্তমানে আমরা যতটা গরম উপলব্ধি করছি।

সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

তীব্র গরমে আমাদের সকলের জীবনে অতিষ্ঠ হয়েছে। এর পিছনে আপনি যে কারণগুলো উল্লেখ করেছেন এরমধ্যে বায়ু দূষণ অপরিকল্পিত নগরায়ন এগুলো সত্যি বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য দায়ী। সুন্দর পোষ্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



 2 years ago 

ভাই আজকে আপনার পোষ্টটি পড়ে আমার সেই পুরনো দিনের কথা মনে পড়ে গেল। সেই পুরনো দিনগুলোর কথা দাদীর কাছে শুনেছি এবং দাদীর কাছ শুনতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। আপনার পোস্টের মাধ্যমে আবারো জানতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। আসলে সেকালে ভিড় ছিল না, তারা মাটির পাতিল এর ভিতরে পানি রাখা আর এই মাটির পাতিল মাটির মধ্যে রাখা হতো। যাতে আরো বেশি পানি ঠান্ডা থাকে, আর সে কালে গরম বেশি হলেই গাছের নিচে শীতলপাটি বসে মুক্ত বাতাস আর এখন এসি এবং ফ্যানের বাতাসে বদ্ধ ঘরে থাকতে হয়। আপনি খুবই সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে আগের দিনগুলোর কথা তুলে ধরেছেন।

 2 years ago 

সত্যি ভাইয়া আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। এটা বাস্তবতার সাথে অনেকটাই মিলে তুলে ধরেছেন আপনি। আসলে ছোটবেলা আমিও দেখতাম আমার দাদুরা মাটির কলসিতে পানি রাখত পানি ঠান্ডা হওয়ার জন্য। তালপাতার পাখা তে আমি বাতাস করেছি। দেশ গ্রামে এখনো অনেক মানুষ আছে যারা কারেন্ট চলে গেলে গাছ তলায় শীতলপাটি বিছিয়ে অনেক মানুষ মিলে বাতাস খেতে গল্প করতো, হাসি ঠাট্টায় মেতে থাকত পরিবারের সকলে মিলে । কিন্তু এখন এগুলো খুব একটা লক্ষ করা যায় না। এখন সবাই সবার পার্সোনাল রুমে এসির নিচে ফ্যানের নিচে বসে আরাম করে। এটা ঠিক বলেছেন ভাইয়া ফ্রিজের ঠান্ডা পানি অনেক সময় আমাদের শরীরে খারাপ করে। গলা ব্যথা করে অনেক সময় দাঁতের শিরশির করে। কিন্তু প্রাকৃতিক ভাবে মানুষ যেভাবে পারে ঠান্ডা করতো সেভাবে এ ধরনের কোনো সমস্যা দেখা দিত না। আসলে যুগে যুগে সব পাল্টে যাচ্ছে মানুষ ও তালে তাল মেলাচ্ছে। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে সুন্দর এই পোস্ট টি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

ঠিক বলেছেন ভাই। আসলে পৃথীবির অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। আমার মনে হয়না আর দূষন কমবে। আর গাছ লাগানোর মত যায়গাও দিন দিন কমে যাচ্ছে। আমার এখনো মনে গ্রামে থাকতে মাটির এক ধরনের কলস ছিলো সেগুলোতে পানি রাখতো অনেক ঠান্ডা লাগতো। আবার চাপ কল থেকে পানি তুললেও অনেক ঠান্ডা পাওয়া যেতো।

 2 years ago 

দূষিত পরিবেশ অপরিকল্পিত নগরায়ন বৃক্ষ নিধন তাই দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে পৃথিবীর তাপমাত্রা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বায়ুমণ্ডলের ওজন নামক উপকারী একটি স্তর।

ভাইয়া আপনার লেখাগুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আপনি বাস্তব সম্পর্কে অনেক সুন্দর ভাবে গুছিয়ে লিখেছেন। পরিবেশ দূষণের জন্যই তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আসলে আগেকার দিনের সময় গুলোর সাথে বর্তমান দিনের সময় গুলোর অনেক পার্থক্য রয়েছে। আগেকার সময়ে মানুষ তালপাতার পাখায় বাতাস করে নিজের ক্লান্তি মেটাতো। আর এখনকার সময় সেটা দেখতে পাওয়া যায় না। এছাড়াও বর্তমানে তরমুজের যে দাম বেড়ে গেছে তাতে করে সাধারণ মানুষের খাওয়া খুবই মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনি খুব সুন্দর ভাবে প্রতিটি বিষয় উপস্থাপন করেছেন। আপনার লেখাগুলো যখন পড়ছিলাম তখন বারবার চোখের সামনে সেই দৃশ্যগুলো ভেসে উঠছিল। অনেক সুন্দর ভাবে পুরো বিষয়টি উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে জানাচ্ছি ধন্যবাদ। সেই সাথে আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো ভাইয়া।💓💓💓

 2 years ago 

সেকালের মানুষরা গরমের সময় যখন দুপুর বেলায় ঝলসানো রোদে সূর্য মাথার উপর থাকে তখন গাছের ছায়ার নিচে বসে শীতলপাটি বিছিয়ে প্রকৃতির মুক্ত বাতাসে আরাম করত। কিন্তু এখনকার সময়ের মানুষরা ফ্যান কিনবা এসি ছেড়ে বদ্ধ ঘরে বসে আরাম করে।

একদম খাঁটি কথা বলেছেন ভাইয়া। সত্যি আগেকার দিনের সাথে এখনকার দিনের পার্থক্য বলে শেষ করা যাবেনা। আমার মতে আগের দিনগুলো ছিল বেস্ট। কিন্তু এখন প্রযুক্তির কারণে সবকিছু পাল্টে গেছে। আমার কাছে একটা এখনকার প্রযুক্তিগুলো একদম ভালো লাগেনা। আপনার লেখাটা পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। একদম বাস্তব কিছু কথা তুলে ধরেছেন।

Hi @moh.arif,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Please consider to approve our witness 👇

Come and visit Italy Community

 2 years ago 

দূষিত পরিবেশ অপরিকল্পিত নগরায়ন বৃক্ষ নিধন তাই দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে পৃথিবীর তাপমাত্রা

আমিও এটাই মনে করি অতিরিক্ত গরমের কারণ এই বৃক্ষনিধন। আগে কার দিনে গরম পড়লে মানুষ গাছের নিছে গিয়ে বসত আহ কী সুন্দর বাতাস। কিন্তু এখন সেই গাছই আমরা আগে নিধন করছি। সেই তালের পাখা এখন নেই বললেই চলে। আজ দিনে ফ‍্যানের বাতাস মনে হচ্ছে আগুনের বাতাস। এইরকম চলতে থাকলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হব। পৃথিবী হবে আমাদের বাস অনুপযোগী।

 2 years ago 

অসাধারণ দক্ষতা দিয়ে লিখেছেন ভাইয়া, দারুন সব কথা উপস্থাপন করেছেন। সময়ের সাথে সাথে মানুষ উন্নত হচ্ছে আর তার সাথে সব কিছু। কিন্তু আগের দিনের মতো শান্তি এখন এ সি এর নিচে ও পাওয়া জাইনা। তবে এখন এটাই মেনে নিতে হবে। ধন্যবাদ ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 56596.99
ETH 2394.78
USDT 1.00
SBD 2.32