"সেলাই ঘর" নাটকের রিভিউ।

এরপর দেখা যায় কুসুম তার ম্যানেজারকে বুঝানোর চেষ্টা করছে যাতে তার মেয়েকে তার সাথে নিয়ে আসা যায়। তার মেয়েকে বাসায় রাখার কারণে কি হয়েছে সেসব ঘটনা গুলো খুলে বলেছে। কিন্তু ম্যানেজার কোনভাবেই এ সবকিছু মেনে নিচ্ছে না। বরং তার ম্যানেজার তাকে চাকরি ছেড়ে দিতে বলে। চাকরি ছাড়ার সময় কুসুমের বকেয়া বেতনের পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। চাকরি হারিয়ে কুসুম খুবই চিন্তায় পড়ে গেছে। সে কি করবে কিভাবে তার সংসার চলবে এসব কিছুর চিন্তাভাবনা নিয়ে বসে আছে সে। সে ঠিক করে কিছু টাকা লোন করে একটি ডিজিটাল সেলাই মেশিন কিনবে। কিন্তু যার কাছে লোন নিতে গিয়েছে সে কোনভাবে লোন দিতে রাজি নয় কেননা কুসুমের কাছে বন্ধক দেওয়ার মতো কোনো কিছুই নেই। কিন্তু লোকটি জানায় তার স্ত্রী সেলাই মেশিন একটি সেলাই মেশিন বিক্রি করবে। ৩০০০ টাকায় হলে সে মেশিনটি বিক্রি করে দিবে। তাই কুসুম ঠিক করে ওই সেলাই মেশিনটি কিনবেন। তার কাছে সব টাকা হিসাব করার পরে দেখছে ৩০০০ টাকা হচ্ছে না। তাই তার প্রতিবেশী তাকে কিছু টাকা দিয়েছে মেশিন কেনার জন্য। টাকাগুলো দিয়ে মেশিনটিকে বাড়িতে নিয়ে আসে। এখন কুসুম ঘরে বসেই মেয়েকে সাথে নিয়ে সেলায় এর কাজ করে থাকে। এমন করতে করতে কিছুদিনের মধ্যে সে একটি সেলাই এর দোকান দেয়। এরপর দোকানটিকে আরো বড় করতে থাকে। এখন তার দোকানে অনেক শ্রমিক ও কর্মচারী কাজ করে। এবং এর কিছুদিনের মধ্যেই সে একটি গার্মেন্টস প্রতিষ্টান করে ফেলে। আর এভাবেই সে তার জীবনের সাফল্য করতে থাকে। এখন তার মেয়ে মুনি অনেকটা বড় হয়ে গেছে। সে এখন খুব ভালো একজন ফ্যাশন ডিজাইনার। তার গার্মেন্টসের অনেক পোশাকের ডিজাইন মুনি নিজেই করে।

নাটকটিতে অনেক শিক্ষনীয় ব্যাপার রয়েছে। নাটকটিতে দেখানো হয়েছে একজন নারী কিভাবে তার জীবনকে ধৈর্য শ্রম এবং মনোবল দিয়ে পরিবর্তন করতে পারে। আমরা জীবনে প্রত্যেকেরই কোন না কোন সমস্যা রয়েছে আর ওই সকল সমস্যাগুলোতে যদি মনোবল হারিয়ে ফেলি তবে কখনো সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছাতে পারবো না। নাটকটি হচ্ছে একজন নারীর একজন মায়ের যার সন্তান কিনা স্পেশাল চাইল্ড। যে কিনা অধিক মনোবল নিয়ে নিজের ভাগ্যের চাকা পরিবর্তন করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এক কথায় বলতে গেলে একজন নারী জীবনে ঘুরে ওঠার গল্পই নাটকটিতে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

নাটকটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। এটি একটি অনুপ্রেরণামূলক নাটক। মাঝেমধ্যে এধরনের নাটক দেখতে খুবই ভালো লাগে। নাটকের গল্পটি খুবই অসাধারণ ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। তিশার যে কোন নাটকে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আর এ নাটকের মুনি চরিত্রে অভিনয় করা শিশু শিল্পী আরিত্রার অভিনয় খুবই অসাধারণ হয়েছে। আর নাটকের মিউজিক টি অসাধারণ লেগেছে আমার কাছে। আপনারা চাইলে নাটকটি দেখতে পারেন। আশা করি আপনাদেরও ভালো লাগবে।