শীতের আমেজ (অভাবগ্রস্তদের নিয়ে আমার কিছু কথা)।

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

আজ - ৬ই অগ্রাহায়ণ ১৪২৮ , বঙ্গাব্দ |রবিবার | হেমন্ত-কাল |


আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।

আজ আমি আপনাদের সাথে শীতের আমেজ এই শিরোনামে আমার কিছু মতামত শেয়ার করব।




man-g3a7fd9ac6_1920.jpg
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

সবাই কেমন আছেন আশা করি ভালই আছেন। এ কয়েকদিন ধরে আমাদের এদিকে বেশ ঠান্ডা পড়ছে। যদিও শীতকালে হাড় কাঁপানো ওরকম ঠান্ডা এখনো পড়েনি। আর শীতকালে আমার কাছে অনেক মজা লাগে যখন কথা বলার সময় মুখ থেকে ধোঁয়া বের হয়। ছোটবেলায় এই জিনিসটাকে খুব এনজয় করতাম।

ঘনবসতি,অতিরক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড, যানবাহনের চলাচল এসবকিছুর কারণে গ্রামের তুলনায় শহরের দিকে ঠান্ডা টা একটু কমই হয় প্রতিবছর। গ্রামে খোঁজ নিয়ে জেনেছি গ্রামেও নাকি বেশ ঠান্ডা পড়ছে। তবে গ্রামে যতই ঠান্ডা পড়ুক না কেন শীতকাল মানেই গ্রামে আলাদা একটা আমেজ। খেজুরের রস, অনেক রকমের পিঠা, পুকুরের তাজা মাছ, এসব ভাবতে জিভে জল চলে আসছে। খুবই ভালো লাগে শীতের সময়টায় গ্রামে বেড়াতে। আর শীতকালে গ্রামে মোটামুটি সকলের বাসায় আত্মীয়-স্বজন ভরপুর থাকে। শহর থেকে সকলেই যায় গ্রামে বেড়াতে। কেননা গ্রামের এই শীতের সময়টার মজাটা কেউ হারাতে চায় না, আমার মত। জানিনা এবারের শীতে গ্রামে বেড়াতে যাওয়া হবে কিনা। তবে গেলে খুব মজা হবে।




homeless-gebb7853a5_1920.jpg
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

আমি মনে করি শীতকাল মানেই আলাদা একটা আমেজ। কিন্তু শীতকালটা সকলের জন্য উপভোগ করার সময় নয়। কেননা অনেক মানুষ আছে যাদের এই শীতের রাতে মাথা গোঁজার ঠাঁই টুকুও পর্যন্ত নেই। রাস্তার ধারে আগুন জ্বালিয়ে কোনমতে গুটিসুটি হয়ে রাতটা পার করে। আর অপেক্ষা করতে থাকে কখন ভোর হবে সূর্য উঠবে আর এই ঠান্ডাময় পরিবেশটা একটু উষ্ণ হবে। এছাড়া এমনও মানুষ আছে যাদের এই শীতে গায়ে দেওয়ার মতো কোনো গরম জামা কাপড় নেই রাতে ঘুমানোর জন্য লেপ কম্বল কিছুই নেই। শুধুমাত্র মোটা কাপড়ের ছিড়া কয়েকটি কাঁথা ছাড়া। তাদের কাছে এই শীতের সময় টা যেন কাল হয়ে দাঁড়ায়। কষ্ট যেন আরও দ্বি গুন বেড়ে যায় তাদের। আমার কাছে খুবই কষ্ট লাগে যখন এই উচ্চ বিলাসী জীবন যাপন, বিভিন্ন রিসোর্টে ঘোরাফেরা, লেট নাইট বারবিকিউ পার্টি, এই সব কিছু করে অসহায় দরিদ্র মানুষের অনুদানের টাকা মেরে।

আমাদের ইসলাম ধর্মে একটি কথা আছে দান করতে হয় গোপনে যাতে ডান হাতের খবর বাম হাতে না জানে। কিন্তু এখন আমাদের দান করার বিষয়টি হয়ে গেছে প্রকাশ্যে। যে যত বেশি দেখিয়ে দান করবে সে তো দানশীল ব্যক্তি হিসেবে সমাজের কাছে প্রশংসায় ভাসবে। আর এই ধরনের কিছু ব্যক্তি আছে যারা সমাজের মানুষকে দেখিয়ে দান করবে।




people-g195ab1b4e_1920.jpg
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

আসলে সমাজের সকল ব্যক্তিরা এক না এখনো অনেক মানুষ আছে যারা এই সকল অভাবগ্রস্ত মানুষদের কথা ভাবে। তাদের দুঃখে তারা দুঃখী হয় আর তাদের সাহায্য করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করে। প্রত্যেক বছরই শীতের সময় কিছু স্বহৃদয় আছেন যারা অভাবগ্রস্তদের সাহায্য করে গরম জামা কাপড় এবং লেপ, কম্বল দান করে। কিন্তু এই সব কিছু সকল অভাবীদের জন্য যথেষ্ট। কেননা আমাদের দানশীল ব্যক্তি থেকে অভাবীদের সংখ্যায় বেশি। তাই আমরা যদি নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী এই শীতে ঐসকল অভাবীদের পাশে দাঁড়ায় তবে তাদেরও ভালো থাকা হবে। এবং আমাদেরও কিছু ভালো কাজ করা হবে।

তো আজ এ পর্যন্তই। সকলে ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 3 years ago 

ভাইয়া আপনার লিখাটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। শীতকাল আমাদের জন্য অনেক বেশি উপভোগের হলেও আমাদের দেশে এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা এই শীতকালকে অভিশাপ মনে করেন। কারণ তাদের গায়ে দেওয়ার মতো কোন শীতের কাপড় নেই। রাত্রে ঘুমানোর জন্য কোন কম্বল নেই। প্রতি রাত তাদের কষ্টের মধ্য দিয়ে কাটে। তারা প্রতীক্ষায় থাকে কখন ভোরের আলো দেখতে পাবে। এসব মানুষগুলোর কথা ভাবলে নিমিষেই মনটা খারাপ হয়ে যায়। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে এসব মানুষদের জন্য যদি কিছু করতে পারতাম তাহলে নিজেকে ধন্য মনে করতাম। আমাদের সমাজে এমন কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি রয়েছেন যারা শুধুমাত্র লোক দেখানো এবং কিছু ছবি ক্যাপচার করার জন্য দান করেন। হয়তো সেটা শুধুমাত্র লোক দেখানোর জন্যই। মানবিকতার দিক থেকে যদি কেউ দান করেন তাহলে হয়তো এসব গরীব দুঃখী মানুষ গুলো আরো বেশি সহায়তা পেতো। ধন্যবাদ আপনাকে দারুণ একটি বিষয়ের উপর পোস্ট করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপু আপনার মূল্যবান মতামতের জন্য।

 3 years ago 

আমাদের প্রত্যেকেরই নিজ নিজ অবস্থান থেকে এই শীতে গরীব দুঃস্থদের মধ্যে কিছু নগদ অর্থ কিংবা শীতের গরম পোশাক বিতরণ করে তাদের সাহায্য করা উচিত। আর আমাদের সাহায্য টি গোপনে করলে সবচেয়ে বেশি ভালো হয়। ভাইয়া আপনার পোস্টটি পড়ে অনেকেই এই শীতে গরীব দুঃস্থদের মাঝে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি পোষ্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

ধন্যবাদ ভাই, সুন্দর মতামতের জন্য।

 3 years ago 

শীতকালটা সত্যি অনেক মজার ভাই। সকালবেলা লেপ মুড়ি দিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে শুয়ে থাকা, মুখ দিয়ে ধোঁয়া বের করা এসব আমার কাছে ভীষণ মজার। এছাড়াও শীতের সকালে খেজুরের রস,বিভিন্ন ধরনের পিঠা খাওয়া সত্যিই খুব উপভোগের। অনেকে আবার শীতের মধ্যে লোক দেখিয়ে বিভিন্ন ধরনের কম্বল এবং শীতবস্ত্র বিতরণ করে। যা বড় বড় রাজনীতিবিদদের একপ্রকার ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুন্দর লিখেছেন ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে।

কিন্তু এখন আমাদের দান করার বিষয়টি হয়ে গেছে প্রকাশ্যে। যে যত বেশি দেখিয়ে দান করবে সে তো দানশীল ব্যক্তি হিসেবে সমাজের কাছে প্রশংসায় ভাসবে।

এগুলোর কারণেই আজকে আমাদের সমাজ এত নিচে আজকাল মানুষকে দান করা ও যেন একটা সোআপ হয়ে গিয়েছে। এগুলো আসলে মানুষের চিন্তাধারা এর মধ্যেই আছে। তবে এখন সমাজে বেশিরভাগ মানুষ এমন। কিছু মানুষ এখনো ভালো আছে যারা এরকম করে না। কিন্তু এখন ভালো থেকে খারাপ মানুষের সংখ্যাই বেশি।

আর সত্যিই শীতকাল মানে অন্যরকম একটা আনন্দ। শীতের দিনে পিঠে পুলি উৎসব এবং বিভিন্ন রকমের উৎসব লেগেই থাকে বাঙালির মনে। শীতকাল যেন একটা আনন্দের ছোঁয়া।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার অভিজ্ঞতা টি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

শীতকাল একেক মানুষের জন্য একেক রকম । কারো জন্য শীতের রাত খুবই আরামের এবং কারো জন্য অতি কষ্টের। দান সদকা অবশ্যই গোপনে করা অত্যন্ত ভালো একটি কাজ তবে ধনীদের এই প্রকাশ্যে দান করার প্রতিযোগিতার প্রভাবে যদি গরীব মানুষেরা একটু বেশি সুবিধা পেয়ে থাকে তাহলে মন্দ হয় না। আসলে কার উদ্দেশ্য লোক দেখানো এবং কার উদ্দেশ্য দান সদকা করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা আল্লাই ভাল জানেন। এই শীতে আমাদের সকলের উচিত যে যার অবস্থান হতে গরিব এবং অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানো । ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

আপনার লেখাটা পড়ে আসলে খারাপ লাগল। আমি শুধু ভাবছি আমরা এই রাতের বেলা ফ্যান ছেড়ে মোটা কম্বল গায়ে দিয়ে ঘুমাবো।এইদিকে কম্বল ও গায়ে দিবো আবার ওই দিকে ফ্যান ও চালাবো যাতে আমাদের আরাম একটু বেশি লাগে। কিন্তু অপর দিকে রাস্তার মানুষ গুলো ছিড়া কিছু কাপড় নিয়ে এই শীতকে জয় করার চেষ্টা করবে। কিন্তু আমরা তো জানি এই জয় কখনোই সম্ভব না। তারা তা তখনই জয় করতে পারবে যখন আমাদের সমাজের বিত্তশালীরা আসলের ন্যায়ের পথে আসবে, আলোর পথে আসবে, দানশীল হবে।

 3 years ago 

গ্রামের শীত আসলেই শহর থেকে ভিন্ন অনেকক্ষেত্রেই যারা রাতে ভোগ বিলাশ পার্টি করে তাদের টাকা দুর্নীতি হতে আসে যা আসলে ওই গরীবদের হক। গোপনে দানের অনেক মাহাত্ম্য আছে।

 3 years ago 

ঠিক বলেছেন ভাই, গোপনে দান করার অনেক বড় মাহাত্ম্য।

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



 3 years ago 

শীতকাল মানে আমাদের জন্য এক উৎসব মুখোর পরিবেশ। চারিদিকে যেমন পিঠা খাওয়ার উৎসব শুরু হয়ে যায় তেমনি আত্মীয়-স্বজনের আগমনে সময় বেশ ভালোই কাটে। কিন্তু আজ আপনার লিখাটি পড়ে কেন জানি মনের মধ্যে চাপা কষ্ট অনুভব হচ্ছে। আপনি আমাদের দেশের অভাবগ্রস্ত এসব মানুষদের নিয়ে অনেক চিন্তা করেছেন। সত্যি কথা বলতে আপনার মত করে সবাই যদি ভাবতো তাহলে এসব মানুষগুলো শীতে এভাবে কষ্ট পেতোনা। আপনি অনেক ভালো মনের মানুষ সে জন্য আপনার চিন্তা ধারা গুলো অনেক গভীর। আমরা সামান্য শীতে বের হতে চাই না ঠাণ্ডা লাগবে বলে। অন্যদিকে আমাদের দেশের হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় বসে রাত কাটায়। শীতের তীব্রতা, কুয়াশা সবকিছুকে উপেক্ষা করে তারা তাদের জীবন সংগ্রামে লিপ্ত রয়েছে। এসব মানুষদের কথা চিন্তা করলেই অনেক খারাপ লাগছে। সত্যিই তারা অনেক অসহায়। আমরা সবাই যদি এসব অভাবগ্রস্ত মানুষের সেবায় এগিয়ে আসতে পারি তাহলে হয়তো কিছুটা হলেও তাদের উপকার হবে। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে আপনি যে কথাগুলো তুলে ধরেছেন তা সত্যি আমাদের সমাজের অভাবগ্রস্ত মানুষের বাস্তব জীবনের দিকগুলো তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।

 3 years ago 

ভাই আমরা যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী গরিবদের সাহায্য করা উচিত। কিন্তু সেটা হতে হবে অবশ্যই গোপনে।

আপনি এতো সুন্দর করে আপনার মতামত শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাতে বাধ্য হচ্ছি। খুবি সুন্দর করে আপনি আপনার মতামত শেয়ার করেছেন।

আসলে ভাই আপনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো বলেছেন।

আমাদের ইসলাম ধর্মে একটি কথা আছে দান করতে হয় গোপনে যাতে ডান হাতের খবর বাম হাতে না জানে

এখন বেশিরভাগ মানুষ নিজের নাম ছড়ানোর জন্য দান করে থাকে। কেউ পরকালের কথা চিন্তা করে দান করে না।তবে এখনো কিছু কিছু মানুষ আছে পরকালের কথা চিন্তা করে দান করে।
আমাদের সবারই উচিত ঠান্ডায় এসব দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো।

ধন্যবাদ ভাই আপনাকে। অনেক জ্ঞান মূলক একটা পোস্ট করেছেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.026
BTC 56776.60
ETH 2424.08
USDT 1.00
SBD 2.37