গল্প।। তুমি কি আমার হবে?।। পঞ্চম পর্ব ।। 10% beneficiary to @shy-fox

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আজ শুক্রবার। শুক্রবার অনেক ব্যস্ত থাকলেও কিছু ফ্রি সময় আমি পাই যে সময়ে আমি নিজের মত করে কিছু কাজ করতে পারি। আজ কি পোস্ট করব চিন্তা করতে করতে ভাবলাম গল্পটা শেষ করতে হবে। তখনি গল্প লেখা শুরু করে দিয়েছি। আজ আর বেশি কথা না বাড়িয়ে আমার গল্পের পঞ্চম পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। যারা আমার চতুর্থ পর্ব পড়েননি তাদের জন্য নিচে লিঙ্ক দিয়েছি সময় করে পড়ে নিবেন।


চতুর্থ পর্ব


পঞ্চম পর্ব


শান্তা মৌমিতার এত কথা শুনে বুঝেছে যে মেয়েটি খুব কথা বলে যাকে বাংলায় আমরা আলাপি বলি। শান্তা বলল আমাকে এক বড় ভাইয়ের কথা বলেছে কিন্তু সেই বড় ভাইয়ের সাথে এখনো দেখা হয়নি। মৌমিতা বলল আমি বুঝেছি স্যার আনিস ভাইয়ের কথা বলেছেন। শান্তা জিজ্ঞেস করল আনিস ভাই কে? মৌমিতা উত্তরে বলল আনিস ভাই হচ্ছেন স্যারের সবচেয়ে প্রিয় এবং জিনিয়াস স্টুডেন্ট যাকে স্যার পারলে নিজের আশেপাশে ২৪ ঘন্টা রাখে। শান্তা খুশি হয়েছে নাম জানতে পেরে। শান্তা মৌমিতাকে জিজ্ঞেস করল স্যার বললেন আনিস ভাই ৩-৪ মাস পর আসবেন, উনি কি কোথাও গিয়েছেন? মৌমিতা বলল আনিস ভাই যেমন জিনিয়াস তেমন অদ্ভুত, কারন উনি যখনি অবসর সময় পান হঠাৎ করে কয়েক মাসের জন্য উধাও হয়ে যান। এইত ৪ দিন আগে আমাকে বললেন আমি কয়েক দিন আসব না। তবে আমি শুনেছি উনি অনেক পরিশ্রম করেন। সময় পেলেই যেকোন কাজে লেগে যান নিজের হাত খরচ চালানোর জন্য। ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড অনেক ভাল কিন্তু নিজের হাত খরচ নিজেই বেয়ার করেন। শান্তা আনিস ভাইয়ের বেপারে পজিটিভ কথা শুনে আরো আগ্রহ বেড়ে গেল কখন সেই মানুষের সাথে দেখা হবে।


sea with heart sign.jpeg

সোর্স pixabay


১ ঘন্টা পর মরগান স্যার শান্তাকে বললেন মৌমিতা তোমাকে সাহায্য করবে টপিক সিলেকশনে। শান্তা বের হয়ে মৌমিতাকে বলল কি বিষয়ে পি এইচ ডি করা যায়? মৌমিতা শান্তাকে বলল আসলে তুমি নিজেই টপিক খুজে নিতে পারবা। আমি একটি টপিক নিয়ে কাজ করছি তাই স্যার তোমাকে একটু গাইড করার কথা বললেন। শান্তা মৌমিতাকে বলল আমাকে একজন এসিস্ট্যান্ট খুজে দিতে পারবে, আমি বাসায় হাপিয়ে যাচ্ছি কাজ করতে করতে? মৌমিতা শান্তাকে বলল একটি ওয়েবসাইট আছে যেখানে তুমি সহজেই কাজ করার জন্য এসিস্ট্যান্ট পেয়ে যাবে এবং সেখানে বাংগালী ও পাবে, তবে পেমেন্ট বেশি দিতে হবে। শান্তা বলল পেমেন্ট ইস্যু না লোক পাওয়া হচ্ছে ইস্যু। শান্তা বাসায় গিয়ে আগে সেই ওয়েবসাইটে ঢুকে তার চাহিদা লিখে একজন এসিস্ট্যান্ট এর জন্য রিকুয়েষ্ট পাঠিয়ে দিয়েছে। তার চাহিদার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ড্রাইভিং জানতে হবে, ঘরের সব কাজ করতে পারতে হবে, যখন যেভাবে বলবে সেভাবে কাজ করে দিতে হবে, বাংগালী প্রেফারেবল। কিন্তু পেমেন্ট অনেক বেশি দিবে।


whitw love sign.jpeg

সোর্স pixabay


ঘর পরিষ্কার থাকায় শান্তা আজ একটু রিলাক্স। তাড়াতাড়ি টপিক সিলেক্ট করার জন্য ল্যাপটপ নিয়ে বসে পড়েছে। টপিক সিলেক্ট করার মাঝেই ফোন এসেছে। ওপাশ থেকে ফোন থেকে ছেলে কন্ঠের একজন জিজ্ঞেস করল ডু ইউ নিড এনি এসিস্ট্যান্ট ফর ইউর হাউজ? শান্তা বলল আই নিড এ বেঙ্গলি পারসন টু এসিস্ট মি। ওপার থেকে বললেন জি আমি বাংগালী । শান্তা বলল আপনি ত ছেলে, আপনি কি বাসার সব কাজ করতে পারবেন? ওপাশ থেকে বলল জী আমি সব করতে পারব। শান্তা বলল আপনি কি তাহলে আগামীকাল আসতে পারবেন? সামনাসামনি কথা বললে ভাল হয়। ওপাশ থেকে বলল ঠিক আছে, কখন আসব? শান্তা বলল আগামীকাল ত রবিবার আমি বাসায়ই আছি। আপনি সকাল ১১ টার সময় চলে আসুন। ওপাশ থেকে বলল জী ঠিক আছে। শান্তা মনে মনে অনেক খুশি। সে ভাবল এবার তাহলে আমি নিশ্চিন্তে পড়া চালিয়ে যেতে পারব। টপিক নিয়ে স্টাডি করতে করতে শান্তার অনেক রাত হয়ে গিয়েছে ঘুমাতে।
পরদিন সকাল ঠিক ১১ টায় বাসায় কলিং বেল বাজল। কেউ দরজা খুলছে না। কয়েক বার কলিং বেল বাজার পর শান্তা ঘুম থেকে চোখ মুছতে মুছতে এসে দরজা খুলে দেখে অনেক হ্যান্ডসাম ইয়াং একটি ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। শান্তা জিজ্ঞেস করল আপনি কাকে চান? ছেলেটি কিছুক্ষন শান্তার দিকে তাকিয়ে থেকে উত্তরে বলল এটা কি মিস শান্তার বাসা? ছেলেটির চুপ থাকার কারন হচ্ছে সে শান্তাকে চিনে। কীভাবে চিনে বলছি, সেদিন শান্তা যার গাড়ী করে এয়ারপোর্ট থেকে তার খালার বাসায় গিয়েছিল সেই ছেলেটিই এই ছেলে। শান্তা বলল জী আমিই শান্তা, বলুন কেন এসেছেন? উত্তরে ছেলেটি বলল আপনার একজন এসিস্ট্যান্ট দরকার, আমার সাথেই আপনার গতকাল ফোনে কথা হয়েছিল এবং আপনি আমাকে ১১ টায় আসতে বলেছিলেন। শান্তা বলল ও হ্যা আসুন ভিতরে আসুন। প্রথমে ছেলেটির ড্রেস-আপ, কথা বলার ভঙ্গি দেখে শান্তা খুব খুশি হয়েছিল এই ভেবে এত সুন্দর, হ্যান্ডসাম ছেলে এসেছে তার বাসায়। কিন্তু যখনই তার মাথায় ঢুকল ছেলেটি তার বাসায় কাজ করতে এসেছে তখনি ছেলেটির প্রতি আকর্ষণ চলে গেল। শান্তা ড্রইং রুমে ছেলেটিকে বসিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা শুরু করে দিল। ছেলেটি খেয়াল করল টেবিলে শান্তার স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির ফারমেসির পড়ার নোটস পড়ে আছে এবং তা দেখে আনিস বুঝেছে শান্তা তারই ইউনিভার্সিটিতে পড়তে এসেছে।


two hands.jpeg

সোর্স pixabay


শান্তা যা যা বলল তার মধ্যে কিছু আমি বলছি যেমন কাপড় লন্ড্রি তে নিয়ে যাওয়া, ঘর পরিস্কার করা, শান্তা বিড়াল কিনবে তার সেবা করা, শান্তা যেখানে যেখানে যাবে ড্রাইভ করে নিয়ে যাওয়া। প্রশ্নের উত্তরে সব হ্যা শুনে শান্তা জিজ্ঞেস করল এখন ত সব হ্যা বলছেন পরে আবার কাজে অনিহা দেখাবেন না ত। ছেলেটি বুজেছে শান্তা বাংলাদেশের কাজের মানুষের মত মনে করেছে কিন্তু সে কিছু মনে করছে না। শান্তা বলল আপনার নামই ত জানা হল না । উত্তরে ছেলেটি বলল আমি আনিস। এখানে বলে রাখি ইনি হচ্ছেন সেই আনিস যে হচ্ছে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভারসিটির শান্তার মরগান স্যারের প্রিয় স্টুডেন্ট। আনিস কাজকে অনেক বড় করে দেখে । আর যেহেতু সে পরিশ্রমী এবং সুযোগ পেলেই যেকোন কাজ করে সেহেতু আনিস তার আইডেনটিটি হাইড করেই কাজ করে। আনিস বলল আপনার সব কন্ডিশন আমি মানব কিন্তু আমার একটি কন্ডিশন আছে। শান্তা বলল আপনার আবার কিসের কন্ডিশন? আনিস বলল আমি আপনার এখানে ৪ মাস কাজ করব । তারপর আপনাকে অন্যজন খুজতে হবে। শান্তা কঠিন গলায় বলতে গিয়েও কিছু বলল না কারন সে বুঝেছে এখানে কেউ বাধ্য না কাজ করতে আর যদি বাংগালি না পায়। শান্তা ঝটপট রাজি হয়ে গেল। শান্তা আনিস কে বলল ঠিক আছে তাহলে আপনি আগামীকাল থেকে কাজে চলে আসবেন। আনিস আজকের মত বিদায় নিয়ে বের হয়ে গিয়েছে। শান্তার খারাপ এটিটিউড জেনেও আনিসের শান্তাকে অনেক ভাল লেগেছে।


আশা করি আমার গল্প আপনাদের ভাল লাগছে। পরবর্তী পর্ব নিয়ে আবার আসব। ধন্যবাদ সবাইকে।

Sort:  
 2 years ago 

খুব সুন্দর গল্পটি লিখেছেন। আপনার আগের পর্ব আমার পরের সৌভাগ্য হয়নি। তবে এই পূর্বে আনিস শান্তা দুজনে চরিত্র পড়ে মনে হল পূর্বের পর্বগুলো আমার পড়া দরকার। দেখি সময় করে পড়ে নিব।

 2 years ago 

খুবই খারাপ কথা হল আগের পর্ব গুলো পড়েছে কিনা তা আমার মনে পড়তেছে না। আজকের গল্পের দুটি চরিত্র পড়ে আগের পর্বগুলো পড়তে ইচ্ছে করতেছে। আমারও কিছু বন্ধু রয়েছে যারা সব প্রশ্নের হ্যাঁ বলে। কিন্তু পরে তা স্বীকার করতে অনিহা প্রকাশ করে।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 68092.03
ETH 3536.59
USDT 1.00
SBD 2.75