গল্প।। তুমি কি আমার হবে?।। চতুর্থ পর্ব ।। 10% beneficiary to @shy-fox
চতুর্থ পর্ব
শান্তার আজ প্রথম ইউনিভার্সিটিতে যাওয়া। প্রথম বলছি এই কারনে শান্তা তার খালার সাথে ইউনিভার্সিটির বাহির থেকে দেখে গিয়েছিল। ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস দেখে শান্তা রীতিমত অবাক, এত বড় ইউনিভার্সিটি আর এত সুন্দর। ঘাসগুলো মনে হচ্ছে বিছানার চাদরের মত। যাই হোক সে জিজ্ঞেস করে করে এডমিশন অফিস পর্যন্ত গিয়ে তার ফেলো প্রফেসরের সাথে দেখা করেছে। শান্তার প্রফেসর আমেরিকান বংশোদ্ভূত। তার স্যার তাকে পেয়ে অনেক খুশি। খুব ভালভাবে স্বাগতম জানালো আর কখন কিভাবে কি করতে হবে তা বুঝিয়ে দিল। প্রফেসর বললেন তোমার পাব্লিকেশন আমার খুব ভাল লেগেছে। তুমি যে মেধাবী ছাত্রী তা তোমার পাব্লিকেশন পড়েই আমি বুঝেছি। তুমি কিছু টপিক সিলেক্ট কর তারপর সেই টপিকের উপর আমি তোমাকে কিছু টাস্ক দিব। তুমি ফাইটোকেমিস্ট্রি থেকে টপিক সিলেক্ট করতে পার। তিন-চার মাস তুমি সেই টপিকের উপর ধারনা নিবে। তারপর আমি আমার খুব জিনিয়াস একজন স্টুডেন্ট আছে তার সাথে তোমাকে কাজ করাব। তার সাথে কাজ করলে তুমি অনেক কিছু শিখতে পারবে এবং তোমার পি এইচ ডি যথাসময়ে শেষ করতে পারবে।
শান্তা নতুন প্রফেসরের কথা শুনে খুবই মুগ্ধ এবং তার আরো বেশি আগ্রহ সেই জিনিয়াস স্টুডেন্টের প্রতি যার সাথে সে কাজ করবে। যাই হোক সেদিন শান্তা মনে আনন্দ নিয়ে আরো অনেকক্ষন ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন জায়গা ঘুরে ঘুরে দেখে বাসার দিকে রওনা দিয়েছে। বাসায় আসতে শান্তার কিছুটা বেগ পোহাতে হয়েছে কারন উবার নিয়ে আসতে হয়েছে। বাসায় আসার সময় চিন্তা করছিল গিয়েই ফ্রেশ হয়ে টপিক সিলেকশনে বসে যাবে। বাসায় এসে শান্তার মাথায় হাত। রাতে খাওয়া দাওয়া করার ঝুটা পড়ে আছে টেবিলে যা থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে, সকালে ফেলে যাওয়া কাপড় পরে আছে ঝুরিতে, সিনকে ময়লা থালা বাটি পরে আছে। তাড়াতাড়ি করে সে নেমে পড়েছে পরিষ্কার কর্মসূচিতে। পরিষ্কার করতে গিয়ে সে কিছুই পারছে না কারন তার জীবনে এই প্রথম কোন কিছু পরিষ্কার করছে। কোন রকম পরিষ্কার করে সে বিছানায় গা এলিয়ে শুয়ে পড়েছে। ঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখে সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। হঠাৎ মনে হল অনেক জামা কাপড় ময়লার ঝুরিতে আছে। এখনই লন্ড্রি তে নিতে হবে কারন আগামীকাল আবার সকালে বেরোতে হবে ইউনিভার্সিটির উদ্দেশ্য। লন্ড্রিতে যেতে হাটার রাস্তা হলেও শান্তার জন্য ১০ মিনিট হাটা মানে অনেক সময়। যেতে ত হবেই। শান্তা চিন্তা করল নিজের গাড়ি হলে কত ভাল হত। কোনরকম এলিয়ে দুলিয়ে গিয়ে দেখে লন্ড্রি বন্ধ। সে আবার সেই কাপড়ের ঝুলি নিয়ে ফ্ল্যাটে চলে আসে। এসে শান্তা এতটাই ক্লান্ত যে আবার শুয়ে পড়েছে। যখন তার মনে হল টপিক সিলেকশনের কথা সে কেদেই দিল। এই কান্না বাসার কাজের চাপ এবং টপিক সিলেক্ট করতে না পারার কান্না। কান্না করতে করতে কখন শান্তা ঘুমিয়ে পরেছে টের পায়নি।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই শান্তা কোন রকম রেডি হয়ে ব্রেকফাস্ট না করে সোজা ইউনিভার্সিটির দিকে রওনা হল। তার সারা শরীরে ব্যথা। বের হয়ে আবার সেই উবারের ঝামেলা। উবারে উঠেই শান্তা বাবাকে ফোন দিয়ে বলল যে আমার গাড়ি লাগবে এভাবে আমি প্রতিদিন উবারে যেতে পারব না। শান্তার বাবা বললেন ঠিক আছে তুমি দেখ কি গাড়ি কিনবে। আর দু একদিনের মধ্যে তোমার মাস্টার কার্ড করে নাও। এরই মধ্যে ইউনিভার্সিটি পৌঁছে গিয়েছে। গিয়েই প্রফেসরের সাথে দেখা করার পর প্রফেসর জিজ্ঞেস করেছে কি টপিক সিলেক্ট করেছে? শান্তা কিছু বলতে যাবে তখনি প্রফেসর মুখ কিছুটা অন্ধকার করে বললেন সিলেক্ট করনি তাইত? শান্তা প্রফেসরের এমন উত্তরের আশা করেনি। সে বুঝছে প্রফেসর কিছুটা মন খারাপ করেছে। প্রফেসর বললেন ঠিক আছে তুমি ১ ঘন্টা পর আমার সাথে দেখা কর। শান্তা বের হয়ে একটু হাটাহাটি করছে তখনি পিছন থেকে এক মেয়ে কন্ঠ বলে উঠল আর ইউ ফ্রম ইন্ডিয়া? শান্তা প্রতি উত্তরে বলল নো আই এম ফ্রম বাংলাদেশ। তখন মেয়েটি বলল ও তুমি বাংলাদেশি? আমিও বাংলাদেশি তবে যাওয়া হয় না। কিন্তু বাংলাদেশের কালচার আমার খুব ভাল আগে।
মেয়েটি তখন বলল বাই দা ওয়ে আমি মৌমিতা, এখানে পি এইচ ডি এর ফেলো। ৬ মাস হল এডমিশন নিয়েছি। মৌমিতা শান্তাকে জিজ্ঞেস করল তোমাকে দেখেছি মরগান স্যার এর সাথে কথা বলছিলে, তুমি নিশ্চয়ই স্যারের ফেলো হিসেবে এসেছ। শান্তা মাথা ঝাকিয়ে হ্যা বলল। মৌমিতা বলল তাহলে ত তুমি খুব জিনিয়াস স্টুডেন্ট কারন মরগান স্যার বিশ্বের প্রথম কয়েকজন ফার্মেসি বিভাগের ফেলো টিচার দের মধ্যে একজন। উনি খুব বেছে ফেলো স্টুডেন্ট সিলেক্ট করেন। তুমি লাকি বলা চলে। মৌমিতা আবার জিজ্ঞেস করল তোমাকে কি স্যার সেই জিনিয়াস বড় ভাইয়ের কথা বলেছে? চলবে....
আজ এই পর্যন্ত। ধন্যবাদ সবাইকে।
ধন্যবাদ ভাইয়া আমার গল্প পড়ে মন্তব্য করার জন্য।
গল্পটা পড়ে বেশ ভালো লাগলো।প্রথম পর্ব গুলো না পড়লে ও মাঝ খানে এসে কিছুটা বুঝতে পারতেছি। সময় পেলে প্রথমের পর্ব গুলো পড়ে নিব।গল্পটা বেশ মজার মনে হচ্ছে।এখানে শান্তা পড়া লেখা করার জন্য এসেছে। সাথে বাসার টুকটাক কাজ করতে গিয়ে সে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে। আশা করি পরবর্তী পর্ব পাব। আপনার পরবর্তী পর্ব পড়ার জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
গল্পটা প্রথম পর্ব থেকে স্কিমিং করে পড়ে নিতে পারেন তাহলে আরো ভাল লাগবে। ধন্যবাদ আপু।
আপনার আগের সব পর্ব গুলো মনে হচ্ছে আমার পড়া হয়নি। তবে শান্তার একা একা থাকা মনে হচ্ছে আর ভালো লাগছে না। আর ভালো লাগবে কি করে পড়ালেখার পাশাপাশি তাকে বাসার জাজ গুলো করতে হচ্ছে। এত সব কিছুর চাপ তার জন্য অস্বস্তিকর মনে হচ্ছে । প্রফেসার ফাইটোকেমিস্ট্রি থেকে টপিক সিলেক্ট করতে বলেছি কিন্তু শান্তা পারেনি। যাইহোক পরিবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।
ধন্যবাদ আপু গল্প পড়ে মন্তব্য করার জন্য। খুব শীগ্রই পরবর্তী পর্ব নিয়ে আসব।