গল্প। পর্ব ০২। অনিশ্চয়তার ভালবাসা।। 10% Beneficiary to @shy-fox
সঞ্জয় এর আগেও অনেকবার খেয়াল করেছে সাহেদ সুচির সাথে কিছুটা অন্যরকমভাবে মিশে। এই মিশাটা বন্ধুত্বের থেকে একটু আলাদা। সঞ্জয় মনে মনে ধরে নিয়েছে সাহেদ সুচিকে পছন্দ করে। সঞ্জয় এর আগেও কয়েকবার সাহেদ কে জিজ্ঞেস করেছে কিন্তু সাহেদ স্বীকার করতে চায় না। যাই হোক আজও ক্লাসে সঞ্জয়ের চেহারায় সেই একই ফিলিংস দেখতে পেল। স্কুল ছুটির পর সাহেদ, সঞ্জয়, তানিয়া আর সুচি স্কুলের পাশে পুকুর ঘাটে গিয়ে বসল। তানিয়া বলল আজও আমাদের কানে ধরতে হল। সুচির মন খারাপ, কারো দিকে তাকাচ্ছে না। কিছুক্ষণ পর সুচি উঠে বলল আমি গেলাম বলেই বাড়ির দিকে রওনা দিল। সাথে তানিয়াও বাই বলে উঠে সুচির পিছন পিছন হাটা ধরল। সাহেদ সুচির চলে যাওয়া দেখছিল। সঞ্জয় তখনি সাহেদ কে জিজ্ঞেস করল তুই কি সুচি কে পছন্দ করিস? সাহেদ কথাটাকে উড়িয়ে দিয়ে বলল কি যে বলিস? চল্ বাসায় যাই বলেই সাহেদ উঠে পড়ল। সাহেদ আর সঞ্জয় দুজনে যার যার বাড়ি চলে গেল।
সামনে এইচ এস সি এর টেস্ট পরীক্ষা। ক্লাস বন্ধ। সবাই পরীক্ষার প্রিপারেশন নিয়ে ব্যস্ত। আজ ম্যাথের টিউশন থেকে বের হয়ে সাহেদরা আবার কলেজের ঘাটে গিয়ে বসল। সবাই যার যার প্রিপারেশন নিয়ে আলাপ করছে। সঞ্জয় হঠাৎ বলল এখান থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে নতুন একটি পার্ক হয়েছে, চল্ ঘুরে আসি। তানিয়া বলল চল্ যাই মজা হবে। সাহেদ তাকিয়ে আছে সুচির দিকে। সঞ্জয় আজও খেয়াল করল আর বুঝল সুচি গেলেই সাহেদ যাবে। সঞ্জয় সুচি কে বলল এখন তুই রাজি হলেই যাওয়া হয়। সুচি সঞ্জয়ের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল। এই তাকানোর মধ্যেও একটি অন্যরকম বেপার আছে।
তানিয়ার ধাক্কায় সুচি হকচকিয়ে গিয়ে সঞ্জয়ের দিকে তাকিয়ে বলল ঠিক আছে চল্ কিন্তু গিয়ে বেশি দেরি করব না। সবাই রওনা দিল পার্কের উদ্দেশ্যে। পার্কে পৌঁছাতেই সঞ্জয় টিকেট কাটার জন্য টাকা দিতে বলল সবাইকে। সুচি আজ টাকা আনেনি সাথে। সঞ্জয় কে বলল তুই আমার টা আজ দিয়ে দে, আমি পরে তোকে দিয়ে দিব। সাহেদের চেহারা একটু অন্ধকার হয়ে গেল। সঞ্জয় বুঝতে পেরে টেক্নিক্যালি সুচিকে বলল আমার কাছেও বেশি নেই তুই সাহেদের কাছে চা। বলতেই সাহেদ পকেট থেকে টাকা বের করে সঞ্জয় কে দিয়ে বলল এটা সুচির টিকেটের। সুচি সাহেদ কে বলল আমি তোকে পরে দিয়ে দিব। তারা টিকেট কেটে পার্কের ভিতরে ঢুকল। সাহেদ আইস্ক্রিম কিনে সবার আগে সুচিকে দিল তারপর তানিয়া আর সঞ্জয় কে দিল। সুচি বলল আমি ত টাকা আনিনি তোকে এখন দিতে পারব না। সাহেদ বলল এটা আমার পক্ষ থেকে। সঞ্জয় দুষ্টুমি করে সাহেদ কে বলে তুই ত আমাকে একটি ২ টাকার চকোলেটও খাওয়াস না, আর আজ সবাই কে কোন্ আইস্ক্রিম খাওয়াচ্ছিস। সাহেদ বলল আরে ঘুরতে এসেছি তাই খেতে ইচ্ছে করল। ঘুরাঘুরি করে অনেক মজা করে আনন্দ করে সাহেদরা বাসার দিকে রওনা দিল। স্কুলের কাছে পৌঁছে সবাই আবার দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ কথা বলছিল।
টেস্ট পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে। সঞ্জয় বরাবরই প্রথম হয়েছে। তানিয়া আর সুচি আগের থেকে কিছুটা ভাল করেছে। খারাপ অবস্থা হচ্ছে সাহেদের। সাহেদের বাবা খুবই বিরক্ত সাহেদের উপর রেজাল্ট খারাপ হওয়ায়। আর দুমাস বাকি এইচ এস সি পরীক্ষার। সাহদের পড়ায় মন বসছে না। সাহেদ একদিন বিকেলে সঞ্জয়ের বাড়ি গেল। গিয়ে দেখে সঞ্জয় বাড়ির উঠানে কেরম খেলেছে। সাহেদ কে দেখে সঞ্জয় বাসার ভিতরে নিয়ে গেল। দুজনে বসে কিছুক্ষণ গল্প করল। কলেজের বিভিন্ন বেপার নিয়ে আলোচনা করল। পড়াশোনা নিয়ে কথা বলল। তারপর সাহেদ চলে যাবে বলে দড়জা পর্যন্ত গিয়ে আবার সঞ্জয়ের কাছে এসে বলল দোস্ত্ আমার কিছু কথা ছিল। বেশ কদিন ধরে বলব বলব করে আর তোকে বলা হচ্ছে না। সঞ্জয় বলল তুই নিশ্চয়ই অনেক দিন পর আজ আমার বাসায় হঠাৎ করে এসেছিস তোর সেই না বলা কথা বলার জন্য। বলেই হাসি দিল। সাহেদ ইতস্তত হয়ে সঞ্জয় কে বলল অনেকটা সেরকম ই। সাহেদ বলল বাহিরে কোথাও গিয়ে বলি, একটু সিক্রেট।
আজ এই পর্যন্ত। আশা করি আমার লেখা গল্পের দ্বিতীয় পর্ব আপনাদের ভাল লেগেছে। গল্পের শেষ পর্ব নিয়ে আবার আসব। ধন্যবাদ সবাইকে।
শুরুতেই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপনি পুরো গল্পটি মনযোগ দিয়ে পড়েছেন। আপনি খুব ভাল একটি টুইস্ট ধরেছেন। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়। ধন্যবাদ ভাইয়া।
পড়লাম আপনার অনিশ্চয়তার ভালবাসার গল্পটি। বাকিটা জানার জন্য পরের পর্বের জন্য ওয়েট করছি। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। অনেক অভিনন্দন আপনাকে।
ধন্যবাদ আপু আমার লেখা গল্প পড়ার জন্য। পরের পর্ব খুব শীগ্রই শেয়ার করব। ধন্যবাদ আপু।
আপনার গল্পটি পড়ে সত্যি খুব ভালো লাগলো অনেক চমৎকার লেখনি মাধ্যমে গল্পটি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আসলে গল্পটি বেশ রোমাঞ্চকর। আগামী পর্বের জন্য অপেক্ষা রইলাম।
আমার গল্প পড়ে আপনার ভাল লেগেছে এটাই আমার স্বার্থকতা। পরের পর্ব খুব শীগ্রই শেয়ার করব। ধন্যবাদ ভাইয়া।