ভ্রমণ।। শরীফ ফুড কোর্ট এন্ড ড্রিম পার্ক।।10% beneficiary to @shy-fox

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আজ আপনাদের সাথে একটি পার্কে ঘুরতে যাওয়ার কিছু মুহূর্ত শেয়ার করব। গতকাল ছিল ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস। এই দিনে আমরা বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ পরাধীনতা থেকে মুক্তি পায়। যাই হোক শুক্রবার সাপ্তাহিক বন্ধ তার উপর ১৬ ডিসেম্বর পরিবার নিয়ে বের না হলে কি হয়। ১৫ ডিসেম্বর রাতে ফেসবুক ঘাটতে ঘাটতে দেখলাম বাচ্চাদের একটি সুন্দর পার্কের এড দেয়া। কিছুটা ঘাটাঘাটি করে আমার কাছে পছন্দ হয়েছে জায়গাটি। বিশেষ করে আমার মেয়ের জন্য অনেক ভাল হবে। আমি যে পার্কের কথা বলছি তার নাম শরীফ ফুড কোর্ট এন্ড ড্রিম পার্ক। এই পার্ক ঢাকা থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত। ঢাকা আর কেরানীগঞ্জের সংযোগস্থল বুড়িগঙ্গা নদীর ব্রিজের উপর দিয়ে যেতে হয়।

১৬ ডিসেম্বর দুপুরের খাবার খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম। রিকশা নিয়ে চলে গেলাম সোজা বাবুবাজার ব্রিজ এর গোড়ায়। এই ব্রিজ ঢাকা আর কেরানীগঞ্জের সংযোগস্থল। সেখান থেকে অটো রিকশা নিয়ে ব্রিজ পার হয়ে কদমতলী মোড় দিয়ে ডানে গিয়ে সোজা শরীফ পার্কের সামনে নেমেছি। ব্রিজের ওখান থেকে লেগুনা, বাস, অটোরিকশা, সি এন জি পাওয়া যায় যা কদমতলী পর্যন্ত যায়। কেউ চাইলে বাবু বাজার ব্রিজের গোড়া থেকে সরাসরি সি এন জী দিয়ে চলে যেতে পারবে তবে ভাড়া অনেক বেশি চায়। ব্যাস্ত ঢাকা থেকে কিছু দূরে মনোরম পরিবেশে অবস্থিত এই পার্ক। যখন অটো করে যাচ্ছিলাম খুব ভাল লাগছিল। শীতের বাতাস হলেও খুব শান্তি লাগছিল ।

IMG-20221217-WA0010.jpg

পার্কের সামনে নেমে ঢুকে গেলাম ভিতরে। পার্কে ঢুকে সুন্দর রাস্তা আছে । রাস্তা দিয়ে ঢুকে বামে তাকালেই ফুড কোর্ট। সোজা বের হয়ে ডান পাশে সুইমিং পুল। বাম দিকে তাকালেই বাচ্চাদের রাইড দেখা যায়। আমরা সেদিকে রওনা করলাম। গিয়ে দেখলাম অনেক ধরনের রাইড আছে। রাইড গুলোর মধ্যে মেরিগোল্ড, টয় ট্রেন, কর চেজ, অক্টোপাস এগুলো উল্লেখযোগ্য ছিল। আমি কিছু ছবি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। প্রতিটি ছবি নিয়ে কিছু কথা ঠিক ছবির নিচে লেখা আছে ।

IMG-20221217-WA0011.jpg

রাইডের যোন এ যেতেই প্রথম চোখে পরে জায়ান্ট রক ও প্লেন। আমার দেখা তুলনামূলক অনেক বড় রক ও প্লেন এটি। আমি চেয়েছিলাম মেয়েকে নিয়ে উঠতে কিন্তু মেয়ের চঞ্চলতার জন্য এত উপরে উঠতে সাহস পাচ্ছিলাম না।

IMG-20221217-WA0004.jpg

এটি হচ্ছে অক্টোপাস রাইড। অক্টোপাস এর মত দেখতে। বাচ্চাদের আকৃষ্ট করার জন্য এই শেপ্ গুলো দেয়া। এই রাইড একটু দ্রুত গতিতে চলে। তাই একটু বড় বাচ্চা না হলে না উঠাই ভাল। এখানে সুবিধা হচ্ছে ছোট বড় সব বাচ্চা রাইড করতে পারে সাথে বড়দের ও আছে।

IMG-20221217-WA0008.jpg

এটি হচ্ছে পাইরেট শিপ। শিপ বা জাহাজের আকার দেয়া এই শিপেও একটু বড় বাচ্চা বা বড়রা উঠা ভাল। এই শিপ মোটামুটি ভাল উচুতে উঠে এবং এপাশ থেকে ওপাশ দোলে।

IMG-20221217-WA0000.jpg

এটা হচ্ছে রকেট রাইড। রকেটের আকার দেয়া এই রাইড ও অনেক দ্রুত চলে। যেহেতু আমার মেয়ে এই রাইড এ উঠতে পারবে না তাই শুধু দেখলাম।

IMG-20221217-WA0007.jpg

এটি হচ্ছে ফ্লাইং চেয়ার। এই রাইড প্রাপ্ত বয়স্ক দের জন্য। এই পার্কের মজার ব্যাপার হল সব বয়সের মানুষের জন্য রাইড আছে। এটাতে আমি উঠেছি।

IMG20221216153354.jpg

IMG20221216153530.jpg

এই দৃশ্য টয় ট্রেন এর ভিতর থেকে তোলা। পুরো পরিবার নিয়ে উঠা যায় এরকম রাইড এটাই পেলাম। ট্রেন কিছুক্ষণ চলার পর একটি ভুতুড়ে গুহার ভিতর দিয়ে যায় যেটা বাচ্চারা খুব মজা পায়।

IMG_20221217_193123.jpg

ঘোড়ায় বসার পর ঘোড়া চলে না দেখে সে নেমে যাচ্ছিল। অনেক বুঝিয়ে জোর করে তাকে বসিয়ে রেখেছে। যখন ঘোড়া চলা শুরু করেছে তখন সেও ঘোড়ার সাথে দুলছিল।

IMG-20221217-WA0009.jpg

IMG20221216160047.jpg

IMG20221216160032.jpg

রাইড শেষে সেখানকার খুব সুন্দর একটি শপ রং বেরংয়ের ভিতরে গেলাম। ছবি তোলা নিষেধ তাও কিছু ছবি তুলেছি।

IMG20221216163358.jpg

IMG20221216163402.jpg

IMG20221216163411.jpg

IMG20221216163406.jpg

সবশেষে খাওয়া দাওয়া পর্ব। বিকেল হওয়াতে ভারী কিছু খাইনি। একটি রেগুলার চিকেন শর্মা, একটি এড়াবিয়ান শর্মা, মেয়ের জন্য দধি, আর সফট ড্রিংকস খেয়ে উঠে পড়েছি। সেখান থেকে আরেকটি সুন্দর জায়গায় গিয়েছি। সেই জায়গা নিয়ে আরেকদিন লিখব ।

ডিভাইসঅপ্পো এ ৫৪, ভিভু‌ ওয়াই ৩৩
বিষয়ভ্রমণ
ক্রেডিট@miratek
what3words locationhttps://what3words.com/imagined.motive.pickles

নোট: এখানে এন্ট্রি ফি ফ্রি এবং বেশিরভাগ রাইড ৭০ টাকা করে। আমার মতে খুবই রিজনেবল এবং ঢাকা থেকে যেতে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট লাগে।

আশা করি আমার পোস্ট আপনাদের ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ সবাইকে।

Sort:  
 2 years ago 

এক কথায় দারুন জায়গাটি। প্রত্যেকটা অংশের ব্যাখ্যা দিতে গেলে হয়তো বলে শেষ করা যাবে না। আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। বড়রা এবং বাচ্চারা এখানে গিয়ে খুবই আনন্দ পাবে। বিশেষ করে ফ্লাইং চেয়ারে উঠতে আমার বেশ ভালো লাগে। একবার উঠেছিলাম। টয় ট্রেন যেটা সেটাতে ওঠার পর যখন ভিতরের গুহার দিকে যায় তখন যেন ভয় লাগে। আমি একবার চট্টগ্রামের পার্কে গিয়েছিলাম। সেখানে টয় ট্রেনে করে ভেতরের দিকে যাওয়ার পর সিংহের গর্জন এবং আরো অন্যান্য আওয়াজ শুনে আমি ভয়ে চিৎকার করে কান্না করে দিয়েছিলাম। যদিও তা খুব ছোটবেলার ঘটনা ছিল। খুবই ভালো লাগলো আজকে আপনার পোস্ট পড়ে।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

ভাইয়া আপনার করা পোস্ট দেখে বোঝা যাচ্ছে জায়গাটি এক কথায় অত্যন্ত সুন্দর হয়েছে। ঢাকার অধুরে কেরানীগঞ্জে এত সুন্দর একটি পার্ক আছে, তা আজকে আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম। পার্কের ভিতর প্রতিটি দৃশ্যের সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

১৬ই ডিসেম্বর উপলক্ষে আপনি আপনার পরিবার নিয়ে খুব সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন। ঢাকা থেকে বাইরে ১০ কিলোমিটার দূরে পার্কটি। এই ধরনের পার্ক গুলোতে বাচ্চাদের মন অনেক ভালো লাগে। তবে আপনি সুন্দর করে প্রত্যেকটি জায়গার ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। তবে আপনি খুব পছন্দের কিছু নাস্তাও খেলেন। আশা করি জলদি অন্য একটি জায়গায় ঘুরতে গেলেন তা আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর করে আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করার জন্য।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

আপনার শরীফ ফুড কোর্ট এন্ড ড্রিম পার্কের ছবি আর বণর্না পড়ে যা বুঝতে পারলাম যে এখানে বাচ্ছাদের কিছু রাইড আছে আর তাদের নিজস্ব কিছু পন্য বিক্রয় করে। যেহেতু এন্ট্রি ফি ফ্রী এই জন্যই মানুষ বেশি দেখা গেছে। মাঝে মাঝে ঘুরতে যাবেন আর আমাদের নিকট ছবি শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

এই ধরনের অ্যামিউজ পার্কে বাচ্চাদের নিয়ে ছেড়ে দেওয়া উচিত তারা আর কোথাও যেতে চাইবে না। দেখে খানিকটা মনেস্ট্রির মতোই মনে হল। নাগরতলা টা দেখে আমি সবচেয়ে বেশি আনন্দ পেয়েছি কি সুন্দর ক্যাপসুল এর মত বাক্স করা। নিজেদের ছোটবেলার কথাগুলো মনে পড়ে সেই সময় বাবারও তো উৎসাহ ছিল না যে কোথাও নিয়ে যাবে এরকম আর অন্য কেউ তো ছিলইনা নিয়ে যাওয়ার মত। বাড়ি থেকে নিকো পার্কের দূরত্বটা অনেক হওয়াতে যখন তখন যাওয়াও সম্ভব ছিল না। আর সত্যি বলতে ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম এখনকার মত এতটাও উন্নত ছিল না বা এভেলেবল ছিল না। যাই হোক সময়ের সাথে সাথে সব পরিবর্তন হয়। বেশ ভালই সময় কাটিয়েছেন আর খাওয়া-দাওয়া করেছেন বোঝা যাচ্ছে।

 2 years ago 

আমিও বাচ্চাকে এরকম জায়গায় ছেড়ে দিয়ে নজরে রাখি। ধন্যবাদ দিদি সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 58363.73
ETH 2484.43
USDT 1.00
SBD 2.39