গল্প।। তুমি কি আমার হবে?।। দ্বিতীয় পর্ব ।। 10% beneficiary to @shy-foxsteemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আমি আজ আমার লেখা গল্প সে কি আমার হবে এর দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করছি। যারা প্রথম পর্ব পড়েননি তাদের জন্য লিঙ্ক দেয়া হয়েছে।

প্রথম পর্ব



শান্তা লাগেজ কালেক্ট করে চেক আউট করে বের হয়েছে। ও বলে রাখি শান্তার ছোট খালা আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় থাকে। শান্তার খালা যে সিটিতে থাকে সে সিটি স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে। তাই সেখান থেকে এসে যেয়ে শান্তার পক্ষে ইউনিভার্সিটিতে ক্লাশ করা সম্ভব না। আর এই কারনেই শান্তার খালা আগে থেকেই স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির কাছেই শান্তার জন্য একটি দুই রুমের ফ্ল্যাট ভাড়া করে রেখেছে। শান্তা কিছুদিন তার খালার বাসায় থাকবে এবং ক্লাশ শুরু হলেই চলে যাবে। লাগেজ নিয়ে বের হয়ে শান্তা কাউকে দেখতে পায়নি। শান্তার খালা তাকে এয়ারপোর্ট থেকে পিক করার কথা ছিল। প্রায় ১ ঘন্টা কেটে গিয়েছে কেউ আসছে না। এখন শান্তাকে অনেক চিন্তিত মনে হচ্ছে।

sea-1111483_1920.jpg



সোর্স pixabay


এমন সময় একটি পোরসে ৯১১ গাড়ি এসে শান্তার সামনে দাড়াল। গাড়ির গ্লাস খুলে মাস্ক পড়া একটি হ্যান্ডসাম ছেলে জিজ্ঞেস করল আর ইউ ফ্রম ইন্ডিয়া? শান্তা কি বলবে ভেবে পাচ্ছিল না। তারপর চিন্তা করল এত দামী গাড়ি থেকে বলছে তার মানে নিশ্চয়ই অনেক ধনী এবং সম্মানিত ব্যাক্তি হবে। তখন শান্তা বলল আই এম ফ্রম বাংলাদেশ। তারপর মাস্ক পড়া ছেলেটি জিজ্ঞেস করল ও আচ্ছা আমি গেস করেছিলাম আপনি বাঙালিই হবেন। যাই হোক আমিও বাংলাদেশি। আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোন ঝামেলায় পড়েছেন। আপনি মনে হচ্ছে আজই প্রথম ক্যালিফোর্নিয়ায় এসেছেন এবং আপনাকে যারা পিক করার কথা তারা আসেননি। শান্তা জিজ্ঞেস করল আপনি কিভাবে বুঝেছেন, আমিত আপনাকে বলিনি? তখন মাস্ক পড়া ছেলে বলল আপনাকে দেখে যে কেউ বলে দিতে পারবে। তারপর ছেলেটি বলল আপনার কাছে ফোন নাম্বার বা বাসার ঠিকানা নেই? শান্তা বলল ফোন নাম্বার নেয়া হয়নি তবে আমি বাসার ঠিকানা ছবি তুলে রেখেছিলাম।

i-love-you-673301_1920.jpg



সোর্স pixabay



ছেলেটি বলল আপনার যদি আমার উপর বিশ্বাস থাকে আর কিছু মনে না করেন তাহলে আমি আপনাকে এই ঠিকানায় পৌছে দিতে পারি। শান্তা কিছুক্ষণ চিন্তা করে দেখল, এতক্ষণ হয়ে গিয়েছে কেউ আসেনি। যদি কেউ না আসে তাহলে ত আমাকে এখানেই বসে থাকতে হবে একা একা। যেহেতু ছেলেটি নিজেকে বাংলাদেশি বলছে আর এত দামী গাড়ি আছে তার মানে সে ফ্রড হতে পারে না। লাগেজগুলো বেক ডালার কাছে নিয়ে যেতেই ছেলেটি দৌড়ে গিয়ে লাগেজ তুলতে সাহায্য করল। শান্তার ছেলেটির এই কাজটি ভাল লেগেছে। শান্তা প্রথম ছেলেটিকে দেখল এবং ভালভাবে খেয়াল করল। ছেলেটি অনেক লম্বা, টি-শার্ট আর জিন্স পড়ে আছে, দেখে মনে হচ্ছে রেগুলার জিম করে। বেকডালা লাগিয়ে ছেলেটি সামনের দড়জা খুলে দাঁড়িয়ে আছে যেন শান্তা উঠে। কিন্তু ছেলেটির এত অতিথিপরায়ণতা শান্তার ভাল লাগল না। শান্তা বলল আপনি গাড়ি চালান আমি পিছনে বসছি। শান্তা পিছনের দড়জা খুলে বসল। ছেলেটি মুচকি হেসে দড়জা বন্ধ করে ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি স্টার্ট করল। তখন প্রায় বিকেল হয়ে গিয়েছে। গাড়ি চলছে রাস্তা ধরে। শান্তা প্রথম আমেরিকা এসেছে তাই সে মন ভরে বাহিরের সুন্দর দৃশ্য দেখছে৷ শান্তা চিন্তা করছে কত ভিন্নতা আমাদের দেশ আর আমেরিকার মধ্যে। এখানে এত উচু উচু দালান, রাস্তা কত পরিষ্কার, গাড়ি নির্দিষ্ট গতিতে চলছে, কোন হর্নের আওয়াজ নেই আরো কত কি। এসব দেখতে দেখতে শান্তা হঠাৎ খেয়াল করল সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। এখন শান্তার কিছুটা ভয় হচ্ছে। দুজনেই চুপ হয়ে আছে। শান্তা খেয়াল করেছে ছেলেটি মাঝে মাঝে লুকিং গ্লাসে শান্তার দিকে তাকাচ্ছে। শান্তার অবস্থা বুঝতে পেরে ছেলেটি বলল আপনি চিন্তা করবেন না। আমরা কাছাকাছি চলে এসেছি। শান্তা একটু নড়েচড়ে বসে বলল না ভয় পাব কেন? আর আপনি ত বাঘ বা ভাল্লুক না যে খেয়ে ফেলবেন, বলেই শান্তা একটি ফেক হাসি দিয়েছে। শান্তা চিন্তা করল একটু কথা বলে ব্যস্ত রাখি যেন অন্য কিছু চিন্তা না করে।

friendship-2156174_1920.jpg



সোর্স pixabay



চলবে...


আজ এই পর্যন্ত। আবার পরবর্তীতে পরের পর্ব নিয়ে হাজির হব।ধন্যবাদ সবাইকে।


Sort:  
 2 years ago 

শান্তার ছোট খালা আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় থাকে। তাই শান্তাকে নিতে না আসায় শান্ত অনেক অসুবিধা ভোগ করে। অবশেষে যখন একটি ছেলে এসে শান্তকে গাড়িতে উঠতে বলে, শান্ত এক পর্যায়ে বাধ্য হয়েই গাড়িতে উঠে।কিন্তু ছেলেটির এত অতিথিপরায়ণতা শান্তার ভাল লাগল না। শান্তা সন্ধ্যা হওয়াতে কিছুটা ভয় পেল। ছেলেটি যখন শান্তাকে বলল ভয় পেয়েছেন নাকি। তখন শান্তা বলল আপনি বাঘ বা ভালুক যে আপনাকে দেখে ভয় পাব।যাইহোক পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।

 2 years ago 

আপনি আমার গল্প পড়েছেন দেখে খুব ভাল লাগছে। খুব শীগ্রই পরবর্তী পর্ব নিয়ে হাজির হব। ধন্যবাদ আপু।

 2 years ago 

কেন যেন মনে হচ্ছে শান্তা বিপদে পড়তে যাচ্ছে।আবার এই ছেলেটা শান্তার নতুন ছেলে বন্ধুও হয়ে যেতে পারে।দারুন ভাবে এগোচ্ছে গল্প।পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago 

আমার গল্প আপনার কাছে ভাল লেগেছে দেখে আমারো ভাল লাগছে। খুব শীগ্রই পরবর্তী পর্ব নিয়ে আসব । ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

মানুষ মানুষের জন্য। আর আপনার গল্পটিতে শান্তার বিপদে পড়ায় সময় হয়তো সৃষ্টিকর্তা অন্য একজনকে পাঠিয়ে দিয়েছিল। কারণ একজন মানুষ অন্য মানুষের উপকার করার জন্য থাকে। কিন্তু এখনকার সময়ে মানুষেরা শুধু সমালোচনা নিয়েই পড়ে থাকে। তাছাড়া অজানা অচেনা ছেলের গাড়িতে বসলে মনের ভিতর অন্যরকম একটা ভয়ের অনুভূতি কাজ করবে। আপনার গল্পটি অনেক সুন্দর হয়েছে ভাইয়া।
আপনার জন্য শুভ কামনা রইল

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

আসলে অপরিচিত মানুষকে বিশ্বাস করবে নাকি বিশ্বাস করবে না এটা ভাবতে ভাবতে ই সমস্যা হয়ে যায়। শান্তা তারপরেও ছেলেটিকে বিশ্বাস করে গাড়িতে উঠেছে। কিন্তু যেহেতু ও নতুন আমেরিকায় এসেছে এজন্য বাহিরের দৃশ্যগুলো উপভোগ করছিল। দেখতে দেখতে আবার সন্ধ্যে হয়ে গেল। কিছুই বুঝতে পারছি না ছেলেটি কি ভালো নাকি খারাপ। প্রথম দিক থেকে মনে হচ্ছে ভালই হবে। গল্পটা বেশ সুন্দরভাবে এগিয়ে নিচ্ছেন। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু আমার পুরো গল্প পড়ে মন্তব্য করার জন্য। পরের পর্ব খুব শীগ্রই নিয়ে হাজীর হব।

 2 years ago 

অপরিচিত মানুষ ঠিক ভাল না খারাপ হবে? বুঝতে পারছি না। লেখক ই জানে কি হতে চলেছে শান্তা মেয়েটির সাথে।অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। পরের পর্বের জন্য ওয়েট করছি।

 2 years ago 

দেখি লেখক কি রেখেছে শান্তার ভাগ্যে। গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 63977.42
ETH 2760.27
USDT 1.00
SBD 2.65