গল্প।। তুমি কি আমার হবে?। প্রথম পর্ব।। 10% beneficiary to @sshy-fox)steemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। এই সপ্তাহে অনিশ্চয়তার ভালবাসা নামক গল্প শেষ করেছি। সেখানে আমি লিখেছিলাম আরেকটি গল্প লিখছি। আজ সেই গল্পের প্রথম পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আমার আজকের গল্পের নাম তুমি কি আমার হবে?


sea-1111483_1920.jpg

সোর্স pixabay



শান্তার মাস্টার্স এর আজ শেষ পরীক্ষা। পরীক্ষা শুরু হয়েছে বেলা ১০ঃ০০ টার সময় আর শেষ হবে বেলা ২ঃ০০ টার দিকে। আজ তার ফারমাকোলোজি পরীক্ষা। শান্তার পরীক্ষা ভাল হচ্ছে। আগের পরীক্ষাগুলোও খুব ভাল হয়েছে। আসলে শান্তার সব পরীক্ষাই ভাল হয়। অনার্স এ সে গোল্ড মেডেল পাওয়া ছাত্রী। শান্তা বেলা ১ঃ৪০ বাজতেই খাতা জমা দিয়েছে। শফিক স্যার আজ গার্ডে ছিলেন এবং শান্তার সময় শেষ হওয়ার আগেই খাতা জমা দেওয়াতে অবাক হলেন না। শফিক স্যার শান্তাদের ফারমাকোলোজির শিক্ষক এবং শান্তাকে খুব ভাল করেই চিনেন। শান্তা এত ভাল স্টুডেন্ট যে ২০ মিনিট আগে পরীক্ষার খাতা জমা দেওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু না। শান্তা পরীক্ষা দিয়ে বাহিরে তার বান্ধবী শিমুর জন্য অপেক্ষা করছিল। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর রবিউল (শান্তার ক্লাশমেট) শান্তাকে দেখে কাছে গিয়ে বলল আজও সময়ের আগেই পরীক্ষার খাতা জমা দিয়ে দিয়েছ, তুমি আসলেই জিনিয়াস। শান্তা একটু গম্ভীর হয়েই বলল ও তেমন কিছু না। রবিউল শান্তাকে বলল আজ ত মাস্টার্স পরীক্ষা শেষ, তা তোমার নেক্সট প্ল্যান কি? শান্তা কিছুটা অহমিকা দেখিয়েই বলল অবশ্যই ভাল কোন ইউনিভার্সিটিতে পি এইচ ডি করা। রবিউল জানে শান্তার কিছুটা অহংকার আছে তার পরও সে কেন জানি শান্তাকে খুব পছন্দ করে। কিন্তু শান্তা তাকে পাত্তা দেয় না। পরীক্ষা শেষে শান্তা শিমুকে নিয়ে গাড়ি করে বাসায় চলে গেল।
শান্তা সম্পর্কে কিছু তথ্য শেয়ার করি। শান্তা ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে ফার্মেসী তে অনার্স করেছে। সে জি পি এ ৪ (৪ এর মধ্যে) পেয়ে গোল্ড মেডেল পেয়েছে। মাস্টার্স এ ও সে গোল্ডেন প্লাস পাওয়ার অনেক সম্ভাবনা আছে। শান্তা দেখতে অনেক সুন্দরী। তার সৌন্দর্য নিয়েও অনেক অহংকার আছে। ক্লাসের অনেক ছেলেই তাকে প্রপোজ করেছে, কিন্তু সে কাউকেই পাত্তা দেয় না। শান্তার বাবা একজন শিল্পপতি। শান্তার কোন ভাই বোন নেই। সে তার বাবা মার একমাত্র আদরের মেয়ে।শান্তা সেই অনার্স থেকেই ইউনিভার্সিটিতে দামী দামী গাড়ি নিয়ে আসত। এই পর্যন্ত অনেকগুলো গাড়ি সে চেঞ্জ করেছে। শান্তার ইচ্ছা সে মাস্টার্স করে আমেরিকার ভাল কোন ইউনিভার্সিটি থেকে পি এইচ ডি করবে।


i-love-you-673301_1920.jpg

সোর্স pixabay


শান্তা এরই মধ্যে জি আর ই পরীক্ষার প্রিপারেশন নিয়েছে। মাস্টার্স এর থিসিস করা শেষ করে জি আর ই পরীক্ষা দিয়েছে। জি আর ই তেও সে অনেক ভাল রেজাল্ট করেছে। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার বিখ্যাত স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে শান্তার অফার লেটার এসেছে। শান্তা এরই মধ্যে তার আমেরিকা যাওয়ার ফরমালিটিস শেষ করেছে। এম্বাসি ফেস করে ভিসাও পেয়েছে। শান্তার মা শান্তাকে অনেক বলেছে না যাওয়ার জন্য। শান্তা মনস্থির করেই রেখেছে বিদেশ থেকে ডিগ্রি আনবেই। শান্তার বাবা আবার শান্তার পক্ষেই আছে। দেখতে দেখতে শান্তার আমেরিকা যাওয়ার দিন চলে এসেছে। শান্তার বাবা শান্তাকে এগিয়ে দেয়ার জন্য রেডি। শান্তার মা সকাল থেকেই কান্না করছে। শান্তা উনাকে বলেছে কমপক্ষে ২ বছরের আগে আসতে পারবে না। শান্তা তার মাকে কোনরকমে বুঝিয়ে বিদায় নিয়ে বের হল। শান্তা আর শান্তার বাবা গাড়িতে বসে আছে চুপচাপ। শান্তার তেমন মন খারাপ নেই বরং তার চোখেমুখে আনন্দের এক আভা দেখা যাচ্ছে। শান্তার বাবা বললেন তুমি সেখানে গিয়ে একজন এসিস্ট করার মত কাউকে রেখে দিবে। কোন রকম পার্টটাইম জব করবে না। যত টাকার সাপোর্ট লাগে আমি দিব। শান্তাও বলল তুমি চিন্তা করবে না। আমি ঠিকই কাউকে মেনেজ করে নিব। আমি শুধু পড়াশোনা করব। কথা বলতে বলতে শান্তা এয়ারপোর্টে পৌঁছে গিয়েছে। শান্তার বাবা শান্তাকে ইমিগ্রেশনে দিয়ে চলে এলেন। শান্তা সব ফরমালিটিস শেষ করে বিমানে উঠে বসেছে। শান্তা বিজনেস ক্লাশে বসেছে। এখন শান্তার একটু খারাপ লাগছে তার মার জন্য। আফটার অল মা বলে কথা।


friendship-2156174_1920.jpg

সোর্স pixabay


বিমান যথাসময়ে ছেড়ে দিয়েছে। দুবাই পৌঁছাতে প্রায় ৫ ঘন্টা সময় লেগেছে। পুরো সময় শান্তা গান কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনেছে। দুবাই ৪ ঘন্টার ট্রাঞ্জিট শেষে আবার বিমানে উঠেছে। প্রায় ১১ ঘন্টা ভ্রমনের পর শান্তা ক্যালিফোর্নিয়ার বিমানবন্দরে পৌছাল। শান্তা লাগেজ কালেক্ট করে চেক আউট করে বের হয়েছে।

আজ এই পর্যন্ত। আশা করি আমার লেখা গল্প আপনাদের ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ সবাইকে।

Sort:  
 2 years ago 

আপাততঃ ইন্ট্রোডাক্টারি পার্ট টা পড়ে ভালোই লাগলো। আচ্ছা বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই দেখি পড়াশোনায় একটু ভালো হলেই হয় মিথ্যে কথা বলে। অথবা অহংকার দেখাবে। এই মেয়ে তো চরম। মায়ের জন্যও মন গললো না। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago 

হুম ঠিক বলেছেন কিছু ধনীর আলালের অহংকারী দুলাল থাকে যারা মাটিতে পা ফেলতে চায় না। আশা করি পরবর্তী পর্ব ভাল লাগবে। ধন্যবাদ দিদি।

 2 years ago 

গল্পটির শান্তা চরিত্রে ছাত্রী শান্তা কে খুব ভালোই লাগলো।অনেক কিছুই সে অর্জন করে ফেলেছে। শান্তা ক্যালিফোর্নিয়াও চলে গেল। এরপর কি হবে? জানার জন্য ওয়েট করছি।ধন্যবাদ ভাইয়া গল্পটি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আপনি আমার গল্প সম্পুর্ন পড়েছেন বলে আপনাকে ধন্যবাদ। পরবর্তী পর্ব খুব শীগ্রই পোস্ট করব।

 2 years ago 

ক্যারেক্টার ডেভলপমেন্ট অনেক সুন্দর হয়েছে।ছাত্র হিসেবে শান্তা কে হিংসে হচ্ছে।সব কিছুই প্রায় সে অর্জন করে ফেলেছে।তবে মনে হচ্ছে অহংকার তাকে বিপদে ফেলবে। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago 

শিল্পপতি বাবার একমাত্র মেয়ে। ছোটবেলা থেকেই সোনার চামচ মুখে দিয়ে বড় হয়েছে। দেখি সামনে ঘটনা কোনদিকে যায়। ধন্যবাদ আপনাকে বরাবরই আমার গল্পগুলো পড়ে সাপোর্ট করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64105.03
ETH 2757.74
USDT 1.00
SBD 2.66