ভ্রমণ।। পানাম নগর।।
পানাম নগর নিয়ে কিছু কথা বলে নেই। পানাম নগর একটি ঐতিহ্যবাহী জায়গা। নারায়ণগঞ্জ জেলার, সোনারগাঁ উপজেলায় এই নগর অবস্থিত।এই নগরকে এক সময় ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন শহর বলেও জানত। ইসা খা ১৫ শতাব্দীতে এই সিটি বানিজ্য করার জন্য তৈরি করেছিলেন। শোনা যায় সেই সময় শীতলক্ষা এবং মেঘনা নদী দিয়ে বিদেশ থেকে অনেক নৌকা বোঝাই মালামাল নিয়ে আসত ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে কাপড়, খাবারের জিনিস এগুলোর বেশি বানিজ্য হত। পরবর্তীতে এই জায়গা ইংরেজরা দখল করে নেয় এবং নীল বানিজ্য গড়ে তোলে। ব্রিটিশ শাসনের পর এই সিটি আবার ধনী ব্যবসায়ীদের তত্ত্বাবধানে চলে আসে। তখন বাংলাদেশ আর কলকাতার মধ্যে ভাল একটি বানিজ্য গড়ে উঠে।
পানাম নগর খুব আকর্ষণীয় একটি ঘুরার জায়গা। এখানে অনেক পুরনো দালান আছে। দালানগুলোর মাঝে একটি রাস্তা আছে যাকে পানাম সড়ক বলা হয়। মূলত এই পানাম সড়কের দুই পাশেই সব দালানগুলো অবস্থিত। দালানগুলো প্রায় একই রকম দেখতে মনে হলেও ভাল করে দেখলে অনেক ভিন্নতা দেখা যায়। একসময় দালানগুলোর রঙ সব লাল মনে হত কিন্তু সময়ের সাথে সাথে রঙ নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
আমি ঢাকা থেকে গিয়েছি । ঢাকার গুলিস্থান থেকে বাসে উঠে সরাসরি মুগড়াপাড়া বাস স্ট্যান্ডে নেমেছিলাম। যাওয়ার পথে শীতলক্ষা নদী পার হয়ে যেতে হয়। সেখান থেকে অটোরিক্সা নিয়ে সোজা চলে গিয়েছি পানাম সিটির গেটে। মোগড়াপাড়া থেকে পানাম সিটি যেতে আবার সোনারগাঁ জাদুঘর পরে। সেখানেও গিয়েছিলাম। সোনারগাঁ নিয়ে অন্য একটি পোস্টের মাধ্যমে শেয়ার করব। পানাম নগর বেশ কিছুদিন আগে গিয়েছিলাম তাই এন্ট্রি ফি মনে নেই।
ঢুকেই সোজা লম্বা রাস্তা দেখা যায়। রাস্তার শেষ দিকে তাকালেই বোঝা যায় লম্বা রাস্তার দুপাশে একই রকম দেখতে দালানগুলো দাড়িয়ে আছে।
রাস্তা ধরে হাটছিলাম আর চিন্তা করছিলাম সেই আগের মানুষগুলো এখানে কি করত তখন। দালানগুলো পুরনো হলেও দেখতে বেশ দারুন লাগছিল। মাঝে মাঝে দু একটা ছবিও তুলে নিয়েছিলাম।
হেটে একসময় রাস্তার শেষ মাথায় পৌছে গেলাম। আমি যেখানেই যাই যাওয়ার আগে সেই জায়গা নিয়ে একটু স্টাডি করে নেই। আমি শুনেছিলাম ৫২ টা দালান আছে। তখন আমি খুব একটা খেয়াল করিনি। আমি আজ শেয়ার করতে গিয়ে দেখি কয়েকটি দালানের নাম্বার আমার ছবিতে আছে। কিছু দালান দেখলাম খুবই নাজুক অবস্থায় আছে। দেখে আমার মনে হল আরো টেক কেয়ার করার দরকার আছে এই পানাম নগরের। চাইলেই আরো সুন্দর করা যায়।
রাস্তার শেষ মাথায় গিয়ে টায়ার্ড হয়ে গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম একবারে বের হয়ে একটু রেস্ট নিব। কিন্তু কিছুদূর হেটে ক্লান্তি আরো বেড়ে গেল। এক পর্যায়ে এসে দেখি একটি গলির মত আছে এবং গলির শেষ মাথায় পুকুরের মত দেখা যায়। কিউরিসিটির জন্য ঢুকে পরলাম গলির ভিতর। দেখি বসার জায়গা আছে । আর কে ঠেকায় বসে পড়লাম। খালি জায়গাটা দেখতে খারাপ লাগছিল না।
কিছুক্ষন রেস্ট নিয়ে বের হয়ে গেলাম। তারপর চলে গেলাম সোনারগাঁ তে।
ডিভাইস | স্যামসাং |
---|---|
ক্রেডিট | @miratek |
বিষয় | ভ্রমন |
লোকেশন | https://what3words.com/reworked.unusually.copies |
আজ এই পর্যন্ত। আশা করি আমার লেখা সবার ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ সবাইকে।
পানাম নগরে কখনো যাওয়া হয়নি। একবার স্কুল থেকে যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু সেটা পরে ক্যান্সেল হয়ে যায়। আপনি পানাম নগরের খুব সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন। তার পাশাপাশি পানাম নগর সম্পর্কে অনেক কিছু আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আসলে এরকম প্রাচীন জায়গা গুলোতে গেলে অন্যরকম একটা অনুভূতি কাজ করে। আপনার ভ্রমণের অনুভূতিগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমি চেষ্টা করেছি সুন্দরভাবে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার জন্য। ধন্যবাদ আপু।
সময় যেন স্থির হয়ে আছে এসব প্রাচীণ জায়গায়।ইতিহাস থমকে আছে।যদি দেওয়াল গুলো কথা বলতে পারত তবে শোনা যেত কত ইতিহাস।এরকম প্রাচীণ জায়গায় গেলে আমার মনে এরকম অনুভূতি জেগে ওঠে।পানাম নগরে যাওয়া হয়নি।পাঠ্যপুস্তকেই শুধু পড়েছি।আপনার কল্যানে তা দেখাও হয়ে গেল ভার্চুয়ালি।ধন্যবাদ ভাইয়া এমন ঐতিহাসিক জায়গা আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।আর ছবি গুলো সুন্দর ছিল।
পানাম নগরের ইতিহাস জেনে মনে হল কত সুন্দর ছিল এই নগর। আর এখন শুধু দালানগুলো পড়ে আছে নিথর হয়ে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
পানাম নগর জায়গাটার নাম শুনেছি অনেক। কখনো যাওয়া হয় নি। আর পানাম নগরের ইতিহাস নিয়ে জানা ছিল না একদম। আজ বেশ ভালো লাগলো নতুন কিছু জানতে পেরে। একটা জিনিস বেশ অবাক করা, এত বছরের পুরানো সব স্থাপত্য, কিন্তু এখনও তাকিয়ে দেখতেই ইচ্ছে করে। কি অপূর্ব কারুকার্য 👌👌। কখনো সময় পেলে সামনা সামনি একবার দেখে আসবো ভাই। সোনার গাঁ পর্বটার অপেক্ষায় রইলাম।
লাইনে একটু সংশোধন দরকার আছে বোধ হয় ভাই 🙏,,,,
এই স্থাপত্যগুলো আরো সুন্দর করে রাখা যায়। কেন যে এগুলোর প্রতি তেমন নজর নেই আমি বুঝিনা। ধন্যবাদ দাদা গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য।
বাহ! বেশ ঘোরাঘুরি হচ্ছে দেখা যাচ্ছে।পানামা নগরে গেছেন পানামা নগরীর ছবি দেখলাম। কিন্তু সাথে কি খাওয়া দাওয়া হয় নাই?পানামা নগরীর বিল্ডিং এর ছবিগুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে ওখানে কোন মানুষ বসবাস করে না
ঘুরাঘুরি একটু না করলে ভাল লাগে না আপু। ওখানে তেমন ভাল খবার নেই আপু। সাথে করে বাসা থেকে খাবার নিয়ে গিয়েছিলাম। ধন্যবাদ আপু।
সোনারগাঁও পানামা শহরের নাম শুনেছি ও অনেকপড়েছি বইতে, তবে কখনো যাওয়া হয়নি। আসলে শত বছরের পুরনো জিনিস গুলো আজ ও দেখে মুগ্ধ হয়ে যায়।সময় পেলে অবশ্যই একদিন যাব। আপনার ফটোগ্রাফি গুলোর মধ্যে অনেক কিছু দেখতে পেলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য
পানাম নগর সমর্পকে অনেক শুনেছি নিজে চোখে দেখিনি কখুনো।আপনার পোস্ট থেকে আবারো দেখলাম।আসলে আমাদের দেশের জন্য এক দারুন নিদর্শন প্রাচিন কালে আমাদের দেশে বড় বড় বাণিজ্য হতো তারিও নিদর্শন দারুন লিখেছেন ভাই।
সামনে থেকে দেখতে ভাল লাগে ভাইয়া। ধন্যবাদ ।
সোনারগাঁও পানাম নগর বেশ কয়েক বছর আগে গিয়েছিলাম।মেয়ের স্কুল থেকে পিকনিক এ। পানাম নগর সম্পর্কে এতকিছু জানা ছিল না আপনার পোস্টের মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে পারলাম। কোথায় থেকে কিভাবে যেতে হবে সবকিছুই বিস্তারিত জানিয়েছেন সকলের জন্য অনেক সুবিধা হলো যদি কেউ যেতে চায়। আপনার প্রতিটি ফটোগ্রাফি অসাধারণ হয়েছে। সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
পানাম নগর জায়গাটি সুন্দর তবে বেশিক্ষন ঘুরার মত অত প্লেস নেই। আমি চেষ্টা করেছি কিছু তথ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। ধন্যবাদ আপু।
ঢাকায় থেকে ও আমার পানাম নগর যাওয়া হয়নি এখনো। অনেককিছু আপনার পোস্ট পড়ে জানলাম।আশাকরি সময় করে যাব।পুরনো কিছু স্থাপত্য দেখতে ভালোই লাগে। পুরনো সব কিছুর মধ্যে অনেক ইতিহাস লুকিয়ে আছে, যা আমাদের সকলের দেখা ও জানা উচিত।অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া ব্লগটিতে তুলে ধরার জন্য।
একদিন গিয়ে ঘুরে আসতে পারেন, ভালো লাগবে। ধন্যবাদ আপু।
এই পানামনগর ইতিহাস ঐতিহ্য এর প্রতিক। একটা সময়ের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। বইয়ের পাতায় অনেক পড়েছি। তবে ভাই আমাদের কুমারখালীতে এখনো কিছু ভবন বাড়ি আছে যেগুলো একেবারেই এইরকম। এবং সেগুলো ঐ সময়েই তৈরি। আপনাকে নিয়ে আসলে আপনি পানাম নগরের সঙ্গে ঐ এলাকা কে গুলিয়ে ফেলতে বাধ্য হবেন। বেশ দারুণ লাগল আপনার পানাম নগর ভ্রমণের সম্পূর্ণ টা পড়ে এবং ফটোগ্রাফি গুলো দেখে।।
কখনও সুযোগ হলে কুমাখালীতে গিয়ে ঘুরে দেখে আসব। ধন্যবাদ ভাইয়া।