গল্প।। তুমি কি আমার হবে?।। তৃতীয় পর্ব ।। 10% beneficiary to @shy-foxsteemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। তবে শারীরিকভাবে একটু গলা ব্যাথা আর কাশি আছে। যাই হোক আমি আজ আপনাদের সাথে আমার লেখা গল্পের তৃতীয় পর্ব শেয়ার করব। আমার গল্পের নাম সে কি আমার হবে? যারা আমার, দ্বিতীয় পর্ব পড়েননি তাদের জন্য নিচে লিঙ্ক দিয়েছি সময় হলে পরে নিতে পারেন।

দ্বিতীয় পর্ব

sea-1111483_1920.jpg


সোর্স pixabay



শান্তা চিন্তা করল একটু কথা বলে ব্যস্ত রাখি যেন অন্য কিছু চিন্তা না করে। শান্তা জিজ্ঞেস করল এই গাড়ি কি আপনার? ছেলেটি বলল না এটা আমার বাবার। শান্তা আবার জিজ্ঞেস করল আপনি কি করেন পেশায়? ছেলেটি বলল আপাতত কয়েক মাসের জন্য বেকার। কিছুক্ষণ পর একটি দুতলা বাড়ির সামনে গাড়ি থামিয়ে ছেলেটি গাড়ি থামিয়ে দিল। শান্তা ভয় পাচ্ছিল, কারন আলো নেই বললেই চলে। ছেলেটি নেমে কোমড়ে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ কি যেন দেখল বাড়ির দিকে তাকিয়ে। তারপর দড়জা খুলে শান্তাকে নামতে বলাতে শান্তা বলল আপনি আমাকে কোথায় নিয়ে এসেছেন? এত অন্ধকার কেন? আর এই বাড়ি কার? ছেলেটি বলল ঠিকানায় এসেছি নামলেই বুঝতে পারবেন। শান্তা ভাবল ঠিকানা বলতে কোন ঠিকানায় নিয়ে এসেছে, তার কোন আস্তানায় না ত। আর বাড়িটিও কেমন যেন ভূতুড়ে অন্ধকার মনে হচ্ছে। অল্প আলো জ্বলছে। তার ভয় আরো বেড়ে গেল। শান্তা এবার গাড়ি থেকে নামার সময় পিপার স্প্রে হাতে নিয়ে নেমে আশেপাশে দেখছে। কিছু উল্টাপাল্টা হলেই চোখে স্প্রে করে পালাবে। শান্তার কেন যেন ভাল লাগছে না। সে চিন্তা করছিল আমি কি কোন বিপদে পড়তে যাচ্ছি?


i-love-you-673301_1920.jpg


সোর্স pixabay


শান্তার এই অবস্থা ছেলেটি খেয়াল করল এবং ভুল ভাংগানোর জন্য দড়জা বেল বাজিয়ে পিছনে সরে এল। শান্তার খালা দড়জা খুলে শান্তাকে জড়িয়ে ধরে কেদে ফেলল। শান্তাও এত টেনশনের পর খালাকে দেখে আপ্লুত হয়ে গিয়েছে। শান্তার খালা বলল তোর খালু তোকে আনতে যাওয়ার জন্য বের হবে এমন সময় তার প্রেশার বেড়ে অবস্থা খারাপ, হাটতেই পারছিল না। আমি তাকে কোন রকম ঔষধ খাইয়ে মাথায় পানি দিয়ে ঘুম পারিয়ে রেখেছি। তাকে একা ফেলে আমিও বের হতে পারছিলাম না। ১ ঘন্টা আগে তোর খালুর পরিচিত একজনকে পাঠিয়েছি। কিন্তু তুই ত চলে এসেছিস। আমি অনেক চিন্তা করছিলাম তোর জন্য। শান্তা বলল তাই বুঝি তুমি লাইট অফ করে রেখেছ? শান্তা গাড়ি থেকে লাগেজ নিয়ে খালার সাথে ভিতরে চলে গেল। খালার সাথে ড্রইং রুমে বসে গল্প করছিল। কিছুক্ষণ গল্প করার পর শান্তার মনে হল, যে তাকে লিফট দিয়েছে তার কথা ভুলেই গিয়েছে। লোকটাকে শুধু শুধু সন্দেহ করেছে। শান্তার যেন খারাপই লাগছে। তাড়াতাড়ি বাহিরে এসে দেখে গাড়ি এবং লোক কেউই নেই। শান্তার মন খারাপ হল। খালা ছেলেটির কথা জিজ্ঞেস করাতে শান্তা পুরো ঘটনা খালাকে বলল আর তার খালা তখন বলল ছেলেটি এত বড় উপকার করল আর তাকে এক কাপ চাও খেতে দিলাম না?


friendship-2156174_1920.jpg


সোর্স pixabay



কিছুদিন খালার বাসায় থেকে শান্তা বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখছিল। এরই মধ্যে শান্তার ক্লাশ শুরু হওয়ার দিন ঘনিয়ে এসেছে। শান্তা তার খালার সাথে যাবতীয় শপিং করে নিয়েছে।

শান্তার খালা এবং খালু শান্তাকে তার ফ্ল্যাটে পৌঁছে দিল। তারা সারাদিন শান্তার সাথে থেকে তাকে আশেপাশের প্রয়োজনীয় জায়গা, দোকান, লন্ড্রি, ইউনিভার্সিটি সব ঘুরিয়ে চিনিয়ে দিল। শান্তাও এই কদিনে ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিয়েছে, তাই তার চিনতে বা বুঝতে তেমন সমস্যা হচ্ছে না। শান্তার খালা সন্ধ্যায় চলে গেলেন। শান্তাকে বলে গিয়েছেন কোন সমস্যা হলে যেন উনাদের জানায়। শান্তার খালা যাওয়ার পর বেশ কিছুক্ষন ফ্ল্যাটের গোছগাছ করেছে। ফ্রিজে বেশ কিছুদিনের খাবার মজুদ করেছে, আলমারি তা জামা কাপড় গুছিয়ে রেখেছে, সু রেকে জুতা সাজিয়ে রেখেছে, আমেরিকা এসে কিছু শো-পিছ কিনেছে সেগুলো গুছিয়েছে, তার পড়ার রুম ভাল করে সাজিয়েছে, আরো খুটিনাটি অনেক কাজ করে সে অনেক ক্লান্ত। তারপর কোনরকম ফ্রিজ থেকে কিছু খাবার ওভেনে গরম করে খেয়ে শুয়েছে। এখন শান্তার খুব টায়ার্ড লাগছে। কখন যে সে ঘুমিয়ে পড়েছে টেরই পায়নি। চলবে....

আশা করি আমার গল্প আপনাদের ভাল লাগছে। আবার আসব পরবর্তী পর্ব নিয়ে। ধন্যবাদ সবাইকে।

Sort:  
 2 years ago 

গল্প পড়ির পাঠক কম।তবে আমি পড়ি। লিখবেন। এই গল্পের আগের দুটো পর্বও পড়েছি।গল্প ভালো দিকে এগোলে পড়তে ভালো লাগে। আপনি ভালোই লেখেন। পাঠক কম বলে অনেক সময় উৎসাহ হারিয়ে যায়।আমিও অনেক সময় উৎসাহ পাই না। ওই কারণে কেউ গল্প লিখলে পড়ি। কারণ বুঝতে পারি যে আমআর যেই অনুভূতি হয়, অন্য লেখকেরও সেই অনুভূতি হবে। তাই অন্ততঃ একজষ পাঠক পাবেন আমার মত।

 2 years ago 

আসলেই গল্প অনেকেই পড়তে চায় না। পড়েনা তাই যদিও খারাপ লাগে তবে লিখে যাব। আপনার এত উৎসাহী কথাগুলো আমার কাজের আগ্রহ বাড়িয়ে দিয়েছে। ধন্যবাদ দিদি।

 2 years ago 

সত্যি ভাইয়া শান্তার গল্পটি পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। শান্তার ভয় পাওয়ারি কথা আলো ছাড়া বাড়ির সামনে দাড়ানো অপরিচিত কারোর সাথে । শান্তার চিন্তা ছিল সে কি কোন বিপদে পড়তে চলছে। কোন সমস্যা হলে মুখে স্প্রে মেরে পালাবে।শান্তার খালা খালু ইউনিভার্সিটি সব ঘুরিয়ে চিনিয়ে দিল।শান্তা অনেক ক্লান্ত কখন যে ঘুমিয়ে পড়ছে সে নিজেই টের পাইনি। ধন্যবাদ পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।

 2 years ago 

জী আপু অপরিচিত কারোর সাথে থাকলে বাংগালী মেয়ে ভয় পাওয়ারই কথা। ধন্যবাদ গল্প পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.034
BTC 64333.84
ETH 2760.35
USDT 1.00
SBD 2.65