গল্প।। তুমি কি আমার হবে?।। ষষ্ঠ পর্ব ।। 10% beneficiary to @shy-fox

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আজ আবার আপনাদের সাথে আমার গল্প শেয়ার করার জন্য চলে এসেছি। গল্প আমি খুব দ্রুতই শেষ করে দিব। আগের পর্ব গুলোতে আনিস আর শান্তার আলাদা আলাদা গল্প পড়েছেন আপনারা। এই পর্ব থেকে তাদের একে অপরের পাশে থাকার গল্প পড়তে পারবেন । আশা করছি আপনাদের ভাল লাগবে। তাহলে আমি আপনাদের সাথে আমার গল্প তুমি কি আমার হবে এর ষষ্ঠ পর্ব শেয়ার করছি। যারা পঞ্চম পর্ব পড়তে পারেননি তাদের জন্য নিচে লিঙ্ক দিয়েছি সময় করে পড়ে নিবেন।

পঞ্চম পর্ব

sea with heart sign.jpeg

সোর্স pixabay

ষষ্ঠ পর্ব

পরদিন আনিস শান্তার বাসায় সকালেই চলে এসেছে। এসে কয়েকবার কলিংবেল বাজানোর পরেও দরজা খুলছিল না। তারপর আনিস বাসার আশেপাশে ঘুরঘুর করছিল।প্রায় আধ ঘন্টা পর শান্তা দরজা খুলে দেখে আনিস হাঁটছে। শান্তা একটু গম্ভীর গলায় বলল আপনি কখন এসেছেন? আনিস বলল প্রায় আধ ঘন্টা হল। শান্তার কাছে যেন কিছু মনেই হল না কারণ তার মাথায় আছে আনিস তার বাসার চাকর। আনিস বাসায় ঢুকেই বলল আমি কিচেন এ যাচ্ছি। শান্তা বলল আজ কিচেনে কিছু নেই। আপনি বরং ফ্লোর মপ দিয়ে দেন। তারপর আপনাকে নিয়ে বের হব। আনিস কিছু ডিটারজেন্ট এবং কেমিক্যাল মিশিয়ে খুব সুন্দরভাবে ফ্লোর মপ দিয়ে দিল। ফ্লোর আয়নার মত চিকচিক করছিল। শান্তা ফ্লোর এত পরিষ্কার দেখে অবাক, কিন্তু আনিস কে বুঝতে দেয়নি। শান্তা বলল ফ্লোর মোটামুটি পরিষ্কার হয়েছে। বলেই শান্তা বলল চলেন আমার সাথে। শান্তা আনিসকে নিয়ে একটি গাড়ির শো রুম এ গিয়েছে। শান্তা তার মত করে সব ওল্ড মডেলের গাড়ি খুঁজছিল (কারন এই দেশের গাড়ি সম্পর্কে তার ধারনা কম)। আনিস বলল আপনি সব ওল্ড মডেল দেখছেন । ওই যে কর্নারে যে গাড়িটা আছে সেটা লেটেস্ট মডেলের। শান্তা আনিস কে পাত্তা না দিয়ে তার পছন্দের পুরনো এক মডেলের গাড়ি বেশি দাম দিয়ে কিনেছে। আনিস গাড়ি চালিয়ে শান্তা কে নিয়ে বাসায় চলে এল। আনিসের ড্রাইভিং দেখে শান্তা খুশি। অনেক ভাল চালায়। বাসায় এসে আনিস তার অন্যান্য কাজ করে তার বাসায় চলে গেল। শান্তা দুপুরে ফ্রিজ থেকে খাবার নামাতে গিয়ে দেখল ডাইনিং টেবিলে কিছু খাবার সাজিয়ে ঢাকনি দেয়া। কাছে গিয়ে দেখে ভাত, চিকেন কারি, চিংড়ি কারি রান্না করে টেবিলে রাখা আছে। শান্তা বুঝল আনিস রান্না করেছে। শান্তা প্রথমে খেতে চায়নি টেস্ট খারাপ হবে ভেবে কিন্তু পরে খেয়ে দেখল খুবই টেস্টি হয়েছে। অনেকদিন পর তৃপ্তি করে চেটে পুটে ভাত খেয়েছে। শান্তার ইচ্ছা হল আনিস কে একটি স্পেশাল ধন্যবাদ দেয় কিন্তু সে চিন্তা করল কাজের ছেলেকে আর কি ধন্যবাদ দিব, কি দরকার আছে ধন্যবাদ দেয়ার। শান্তার মনে হল আনিস এত আগে চলে গেলো কেন? গিয়ে দেখে বাসার সব কাজ করেই আনিস চলে গিয়েছে। কিন্তু তাকে কেন বলে গেলো না। শান্তা আনিস কে ফোন দিতেই আনিস বলল আমি ত বাসার সব কাজ করে এসেছি, আর আমার বাসায় কিছুটা প্রবলেম হয়েছে তাই চলে এসেছি। কিন্তু আপনাকে বলার জন্য দরজায় নক দিলেও আপনার কোন রেস্পন্স পাইনি। শান্তা বলল কাজে ফাঁকি দেয়া যাবে না। কাল থেকে আমি আর এক্সকিউজ শুনব না।

whitw love sign.jpeg

সোর্স pixabay

পরের দিন আনিস বাসায় যেতেই শান্তা বলল ঝটপট হাতের কাজ শেষ করেন আমি ইউনিভর্সিটি যাব। আনিস শান্তাকে ড্রাইভ করে ইউনিভার্সিটি গেট পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে নিজেও ভাবল একটু ঘুরে যাই। কিন্তু শান্তা বলল আপনি জানেন এই ইউনিভার্সিটিতে কারা পড়ে আর তাদের কত ভ্যালু। আর আপনাকে ত আইডি ছাড়া ঢুকতেও দিবে না, আপনি এখানেই থাকুন। আনিস কিছু না বলে গাড়িতে বসে রইল। এভাবে আনিস শান্তার বাসায় বেশ ভালভাবেই কাজ করছিল। তবে যতই দিন যাচ্ছে শান্তার প্রতি আনিস ততই দুরবল হয়ে যাচ্ছে। শান্তার প্রতি ভাল বাসা বেড়েই চলছে যার ছিটাফোটাও শান্তার মধ্যে ছিল না।
একদিন আনিস কাজ করার সময় দেখে শান্তা কিছু নিয়ে স্টাডি করছে। আনিস কিছু কারেকশনের কথা বলতে যাবে শান্তার কথা শোনার ভয়ে কিছু বলল না। আনিস আড়াল থেকে শান্তাকে দেখে আর তার ভাল লাগে । শান্তা ইয়াহু বলে লাফ দিয়ে উঠে। আনিস জিজ্ঞেস করতে গেলেই বলে আপনি বুঝবেন না, আমি ইউনিভার্সিটির এক বড় ভাইয়ের জন্য অনেক ভাল একটি টপিক সিলেক্ট করেছি এবং উনি অনেক খুশি হবেন।

two hands.jpeg

সোর্স pixabay

এইভাবেই কাজ চলছিল আনিসের। এইভাবে প্রায় ১.৫ মাস কেটে গিয়েছে। একদিন ঘটে গেল এক মজার ঘটনা। আনিস এসে কাজ শেষ করে বিকেল বেলায় বিদায় নিবে এমন সময় চিন্তা করল সারাদিন শান্তা ম্যাম কে দেখিনি উনাকে বলে যাই। শান্তার রুমে কয়েকবার নক করেও যখন রেসপন্স পেল না আমি ভিতরে ঢুকছি বলে ঢুকে গেল। আনিস দেখল শান্তা শুয়ে আছে আর গোঙাচ্ছে। কাছে গিয়ে দেখে শান্তা রীতিমত কাপছে। অনুমতি নিয়ে কপালে হাত দিয়ে দেখে গা পুড়ে যাচ্ছে। আনিস তাড়াতাড়ি শান্তার জ্বর মেপে দেখল ১০৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা। সে তাড়াতাড়ি শান্তা কে বলল আপনি কষ্ট করে হেঁটে গাড়ি পর্যন্ত আসুন। শান্তা কিছুই শুনল না শুয়েই রইল। আসলে এত জ্বরের মধ্যে তার হুশ জ্ঞান নেই। আনিস অবস্থা বেগতিক দেখে শান্তাকে পাঁজাকোলা করে নিয়ে গিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দিয়ে সোজা হাসপাতালে চলে গিয়েছে। হাসপাতাল তাকে ইমারজেন্সি সেবা দিয়ে কিছুটা জ্বর কমিয়েছে আর সাথে ঔষধ দিয়েছে। রাত ৯ টা নাগাদ হাস্পাতাল শান্তাকে ছেড়ে দিয়েছে। আনিস শান্তাকে বাসায় এনে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে চলে আসবে তখনই শান্তার দিকে চোখ পড়ল। আনিসের ওকে দেখে খারাপ লাগল আর ভাবল একা অসুস্থ অবস্থায় এই মেয়েকে কীভাবে রেখে যাই? যাই হোক আনিস রয়ে গেল এবং পাশেই বসে রইল।

আশা করি আমার গল্প আপনাদের ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ সবাইকে।

Sort:  
 2 years ago 

আপনার এই গল্পটার মনে হয় একটা, দুইটা পর্ব আমি পড়েছিলাম। আসলে সব সময় প্রত্যেকটা পর্ব চোখে পড়ে না এজন্য পড়তে পারি না। আজকের পর্বটা পড়লাম। আজকের পর্বে দেখলাম আনিস শান্তাকে ভিষন ভালোভাসে। বিশেষ করে আনিস কিন্তু শান্তার জন্য প্রায় অনেক কিছুই করতো। যদিও প্রথমে অ্যাটিটিউড দেখায় শান্তা, কিন্তু তার ভালো লাগলেও কাজের ছেলে বলে ধন্যবাদ পর্যন্ত দিত না। এমন কি শান্তা অসুস্থ হলে, নিজে ওকে হাসপাতালে নিয়ে গেল এবং কি তার পাশে বসে রইল। গল্পটি বেশ ভালোই লেগেছে।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

তুমি কি আমার হবে গল্পের হয়তো আগের সব পর্ব আমার পড়া হয়নি।তবে এই পর্ব পড়ে যা বুঝতে পারলাম, আনিস শান্তাকে অনেক ভালো বাসে।কিন্তু শান্তা আনিসকে পাত্তা দেয় না।তবে শান্তার জ্বর থাকায় আনিস শান্তাকে ডাক্তার দেখিয়ে ৯ টার সময় বাসায় আসে, শান্তার পাশে রয়েছে ভালো কাজ করছে।শান্তা কি বলে দেখা যাক। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু গল্পের ষষ্ঠ পর্ব পরে আপনি সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

আপনার এই গল্পটির আমি আগের পর্ব গুলো দেখিনি এবং কি পড়িনি। যার কারণে সম্পূর্ণ গল্পটি বুঝতে পারলাম না। যতটুকু বুঝলাম আনিস শান্তাকে প্রচুর পরিমাণে ভালোবাসতো। কিন্তু সে তাকে সহ্য করতে বা পাত্তাও দিত না। আনিস শান্তার জন্য অনেক কিছু করেছে। শান্তা অসুস্থ হওয়ার কারণে সে তাকে হসপিটালে নিয়ে গিয়েছিল। রাত নয়টা পর্যন্ত থেকে ছিল। বাড়িতে এসেও তার সেবা যত্ন করেছিল। খুবই ভালো একটি গল্প ছিল।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া আমার গল্পের এই পর্বটি পড়ে গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

ভাইয়া এ গল্পের সব পর্ব চোখে পরেনি তাই পড়া হয়ে উঠেনি। তবে প্রথম পর্বটা পড়েছিলাম।গল্পটা ভালো লাগলো আজকের পর্ব।আনিস শান্তাকে ভালবাসে কিন্তু শান্তা পাত্তা দেয়না।কিন্তু শান্তার জ্বর হলে তাকে ডাক্তার দেখানো, ভাল কাজ করা আনিস করেই যাচ্ছে।দেখা যাক কি হয়, অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

গল্পের ষষ্ঠ পর্ব পড়ে গুছিয়ে কমেন্ট করেছেন দেখে ভাল লাগছে। ধন্যবাদ আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 68152.98
ETH 3536.22
USDT 1.00
SBD 2.86