আজ আমি আপনাদের কাছে রুই মাছ দিয়ে মাস ডালের গুঁড়ার মজাদার একটি রেসিপি নিয়ে এসেছি। অন্য এলাকার কথা বলতে পারবোনা তবে আমার গ্রামের বাড়ির এলাকায় এটা একটা ঐতিহ্যবাহী খাবার। আমার মা কিছুদিন আগে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেই সময়ে গ্রাম থেকে বেশ কিছু মাস ডালের গুঁড়া নিয়ে এসেছেন। এই মাস ডালের গুঁড়া তৈরি করতে এখন বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়। কারণ এই গুড়া আমাদের গ্রামে ঢেঁকিতে তৈরি করে। তাদের ধারণা ঢেঁকিতে মাস ডালের গুঁড়া তৈরি করলে খেতে বেশি ভালো লাগবে। এখনকার সময়ে এসে এই ধরনের কাজ করার জন্য লোক খুজে পাওয়া খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার। কারণ এখন সবকিছু মেশিনে করা হয়। আমার মা এর কাছ থেকে জানতে পারলাম অনেক কষ্টে লোক জোগাড় করে ঢেঁকিতে এই মাস ডালের গুঁড়া করা হয়েছিল। যাইহোক মাস ডালের গুঁড়া রেসিপি করার পর আমি খেয়ে দেখেছি এবং অন্যকে খাইয়েছি। অসাধারণ হয়েছিল আমার আজকের রুই মাছ দিয়ে মাস ডালের গুঁড়ার মজাদার রেসিপিটি । এখন রেসিপির প্রস্তুত প্রণালীর দিকে চলে যাই।
প্রয়োজনীয় উপকরণ:
| উপকরণ | পরিমাণ |
|---|
| মাছ | ৫০০ গ্রাম |
| মাস ডালের গুঁড়া | ২৫০ গ্রাম |
| সয়াবিন তেল | পরিমাণমতো |
| লবন | স্বাদমতো |
| পেঁয়াজ | ৩-৪ টা |
| কাচা মরিচ | ৭-৮ টা |
| জিরা গুঁড়া | ১ চা চামচ |
| ধনিয়া গুঁড়া | ১ চা চামচ |
| পাঁচফোড়ন গুঁড়া | ১ চা চামচ |
| হলুদ গুঁড়া | পরিমাণমতো |
| শুকনা মরিচ গুঁড়া | পরিমাণমতো |
রান্না শুরু করা যাক:
ধাপ -১
রুই মাছের কাঁটা অংশ থেকে ৫০০ গ্রাম পরিমাণ মাছ আলাদা করে ভালো করে ধুয়ে একটি পাত্রে রেখেছি।
ধাপ -২
ঢেঁকিতে করা মাস ডালের গুঁড়া থেকে ২৫০ গ্রাম পরিমাণ নিয়ে আলাদা একটি পাত্রে রেখেছি।
ধাপ -৩
এখন মাস ডালের গুঁড়া গুলো পানি দিয়ে মেখে পেস্ট করে নিয়েছি।
ধাপ -৪
এখন কড়াইতে তেল দিয়ে তেলটা গরম হয়ে যাওয়ার পর সেখানে পেঁয়াজ কুচি ও মরিচ দিয়ে একটু ভেজে নিয়েছি।
ধাপ -৫
এখন লবণসহ প্রয়োজনীয় মশলা গুলো দিয়ে একটু কষিয়ে নিয়েছি।
ধাপ -৬
এখন কড়াইতে প্রয়োজনীয় মাছ গুলো দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে। কিছুক্ষণ কষিয়ে নেওয়ার পর একটু ঝোলের পানি দিয়ে মাছগুলো রান্না করে নিয়েছি।
ধাপ -৭
এখন রান্না করা মাছগুলো বাটিতে উঠিয়ে নিয়ে কড়াইতে কিছুটা ঝোল রেখে দিয়েছি। এবার সেই ঝোলের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সয়াবিন তেল, লবণ, পেঁয়াজ, মরিচ ও প্রয়োজনীয় মসলা গুলো দিয়েছি।
ধাপ -৮
অল্প পরিমাণ পানি দিয়ে মসলাগুলো কষিয়ে নেওয়ার পর সেখানে পূর্বে পেস্ট করে রাখা ডালের গুঁড়া গুলো দিয়েছি।
ধাপ -৯
১/২ কাপ পরিমাণ পানি দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিয়েছি। ডালের গুঁড়া গুলো কষিয়ে নেয়ার পর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেছি। ডালের গুঁড়া ভালোকরে কষিয়ে নেয়ার পর ডালের জন্য পানি ব্যবহার করেছি।
ধাপ -১০
এখন ডালের জন্য প্রয়োজনীয় পানি দিয়ে ভালো করে বলোক উঠা পর্যন্ত রান্না করেছি।
ধাপ -১১
এখন ডালের মধ্যে প্রয়োজনীয় মাছের মাথা সহ মাছের দুই তিনটা টুকরো দিয়েছি। এখানে খুব বেশি মাছ দিব না। ঝোল ও মাথাসহ কয়েক টুকরা মাছ দিয়েছি।
রেসিপি প্রস্তুত:
রুই মাছ দিয়ে মাস ডালের গুঁড়ার অনেক মজাদার ও সুস্বাদু রেসিপিটি প্রস্তুত হওয়ার পর আমি খেয়ে দেখেছি অনেক সুস্বাদু হয়েছিল। ইউনিক এই রুই মাছ দিয়ে মাস ডালের গুঁড়ার
মজাদার রেসিপি আপনারা যে কোন দিন বাসায় ট্রাই করতে পারেন আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। রুই মাছ ও মাস ডালের গুঁড়া রেসিপিটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন আশা করছি।
বন্ধুরা আজ আর লিখছিনা। অন্য কোনদিন অন্যকিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে আসবো। আজকের জন্য বিদায় নিচ্ছি। সবার জন্য শুভকামনা। আল্লাহ হাফেজ।
| পোস্ট | রেসিপি |
|---|
| ফটো | @mayedul |
| ডিভাইস | স্যামসাং গ্যালাক্সি A-10 |
রুই মাছ দিয়ে মাস ডালের গুঁড়ার মজাদার রেসিপি দেখে অনেক সুস্বাদু মনে হচ্ছে। আসলে এভাবে আমি রেসিপি কখনো তৈরি করিনি। আপনার রেসিপি আমার কাছে একদম নতুন মনে হয়েছে। আসলে আমিও তৈরি করে দেখব কেমন সুস্বাদু লাগে।
আমার রেসিপি আপনার কাছে খুব ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ছোট থকতে এই দৃশ্যটা অনেক দেখতাম ঢেঁকিতে মাস ডাল গুড়ো করতে এটা করার সময় ডালের গন্ধ চার দিকে ছড়িয়ে যায়। তবে এখন ঢেঁকির ব্যবহার খুব একটা দেখা যায় না। আপনার রেসিপি দেখে খুবই ভালো লাগছে ভাই। আমি মাসের ডাল অনেক পছন্দ করি।
ভেজে নিয়ে গুড়া করলে এর টেস্টটাও অন্যরকম হয়। এই খাবারটা আমরাও অনেক প্রিয়।
রুই মাছ দিয়ে মাস ডালের গুঁড়ার মজাদার রেসিপি যেটা আমার প্রথম দেখা। এই ধরনের খাবার আপনাদের দিকে ঐতিহ্যবাহী সেটা জানতে পারলাম কিন্তু আমাদের দিকে এ ধরনের খাবার খাওয়ার প্রচলন নেই ।আপনার মায়ের এই ধরনের খাবার তৈরি করে আপনাকে খাওয়ালো যেটা অনেক বড় অবদান রেখেছে ।শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাই।
একবার খেয়ে দেখেন আর ভুলতে পারবেননা। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার কথা শুনে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। কারণ ঢেঁকিতে কোন কিছু পিষতে ছোটবেলায় অনেক দেখেছি। এখন তো সবকিছু মেশিনে তৈরি হয়ে গেছে। কেউ আর ঢেঁকির চিন্তা-ভাবনা নেই এমনকি কারও বাড়িতে এখনো ঢেঁকি আছে কিনা মনে হয় না। আপনি মাস ডালের জন্য অনেকের ব্যবহার করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো। এগুলা কিন্তু আমাদের ঐতিহ্য আর এইগুলা বজায় রাখা উচিত। আপনার রেসিপি টা আমার কাছে দুর্দান্ত লেগেছে।
আসলেই এগুলো আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্য। কোথাও কোথাও কিছুটা এখনো ধারণ করে আছে।
কথাটি একদম যথার্থ, আমার কাছেও ঢেঁকিতে গুড়া করা মাস ডাল বেশি ভালো লাগে। ঢেঁকিতে মাস ডাল গুড়ো করলে অন্য রকম একটা সুগন্ধি আসে, সেই সুগন্ধের জন্যই খেতে মনে হয় আরো বেশি ভালো লাগে।
মামা আপনার শেয়ার করা রুই মাছ দিয়ে মাস ডালের গুঁড়া রেসিপিটি দারুন হয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে। এটা সবার জন্য সত্যিই উনিক একটি রেসিপি হবে বলে আমি মনে করি।
ধন্যবাদ মামা এত সুন্দর একটি ইউনিক রেসিপি আমাদের সকলের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।
এখন তো সবাই এই খাবার গুলো ভুলেই গেছে। আগে মাস ডালের সিজনের সময় আমরা যখন গ্রামে যেতাম তখন দেখতাম প্রত্যেকের বাড়িতে এই আয়োজন। এখন গ্রামেও ঢেঁকি খুব কম দেখা যায় ।
মাস কালাই ডাল অনেক পছন্দ করি। খেতে অনেক স্বাদ লাগে এই ডালটি। রুই মাছের মাথা দিয়ে মাস ডাল খেতে নিঃসন্দেহে অনেক ভাল লাগবে। ধাপগুলো ক্লিয়ার করে বলে দিয়েছেন। বাসায় রান্না করতে পারবো। ধন্যবাদ
যেকোনো মাছ দিয়েই খাওয়া যায় তবে রুই মাছের কাটা কম থাকায় এই মাছ দিয়ে বেশি খাওয়া হয়।
আপনার শেয়ার করা রূই মাছ দিয়ে মাস ডালের রেসিপিটা দেখতে খুবই ইউনিক ও সুস্বাদু দেখাচ্ছিলো।রেসিপিট ছবি দেখে জিভে পানি এসে টলমলয় অবস্থা।
আসলেই খেতে অনেক সুস্বাদু হয়েছিল।
মাসকলাই ডাল খেতে আমার খুবই ভালো লাগে। আমার আম্মু খুব মজা করে এই ডাল রান্না করে। তবে আমি তেমন একটা ভালো পারিনা। আম্মুর হাতের টা খেতে খুব ভালো লাগে। আপনার মাসকলাই ডালের রেসিপি টি খুবি সুন্দর হয়েছে। প্রতিটি ধাপ খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
মাসকলাই ভেজে নিয়ে গুড়া করলে খেতে আরও বেশি ভালো লাগে। এর ঘ্রাণ ও স্বাদ দুটোই অনেক চমৎকার হয়।
মাস ডাল দিয়ে রুই মাছের রেসিপি অনেক সুন্দর ছিলো ভাইয়া, এটা তো সত্যি যে এখন আর আগের মত মানুষ পাওয়া যায় না ভাইয়া, এখন সবাই সবার কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকে কাজ করে নেওয়ার জন্য মানুষ পাওয়া খুবই কঠিন, যাই হোক আপনার রেসিপিটি আমার খুবই ভালো লেগেছে, শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
আমার পোস্টে এসে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভকামনা রইলো