আমার স্মৃতির পাতা থেকে দুঃসাহসী এক অভিযান ||চতুর্থ পর্ব||
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম/আদাব। সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন আশা করছি। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার ব্লগ লেখা শুরু করছি।
![]() |
|---|
তারপর কামরুলের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে ওর খালাতো বোনের বাসার দিকে যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নিলাম। এত সকালে বাজারে খুব একটা দোকানপাট খোলা ছিল না তাই নিরাপদ একটি জায়গা বেছে নিয়ে কাপড় গুলো পরিবর্তন করে নিলাম। ব্যাগে গুছিয়ে রাখা কাপড় গুলো পড়ে মোটামুটি তৈরি হলাম যাওয়ার জন্য। এখন যখন জুতা পড়তে যাব ঠিক সেই মুহূর্তে আজব একটি ঘটনা লক্ষ্য করলাম। আমাদের জুতার ব্যাগ খুঁজে পাচ্ছি না। তাহলে কি রাতে দেখা স্বপ্ন সত্যি হলো। অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও জুতার ব্যাগ আর খুঁজে পাওয়া গেল না।
পিছন ফিরে যখন ঘটনাগুলো মনে করতে লাগলাম। তখন এক প্রকার নিশ্চিত হলো জুতার ব্যাগ আমরা তাড়াহুড়ো করে বের হওয়ার সময় ঘরেই রেখে এসেছিলাম। কাকতালীয় ব্যাপার রাতে স্বপ্নে দেখার পর অনেক সতর্কতার সহিত জুতাগুলো আলাদা করে রাখলাম। তারপরেও ইন্ডিয়ায় এসে দেখি জুতা নেই। এই নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ হাসাহাসি হল। কিন্তু খালি পায়ে তো আর বিদেশের মাটিতে এসে ঘুরে বেড়ানো সম্ভব নয়। তাছাড়াও কামরুলের বোনের বাসায় যাচ্ছি এভাবে তো আর যাওয়া যায় না।
বাজারে আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম দোকান সব খোলার জন্য। ক্ষুধার জ্বালায় পেট হালকা চিনচিন করছে। একটি হোটেল খুঁজে নিয়ে সকালের নাস্তা সেরে নিলাম। নাস্তা খেয়ে বের হয়ে দেখলাম একটু জুতার দোকান খুলছে। সীমান্তবর্তী এলাকায় খুব ছোট বাজার খুব ভালো মানের জুতা খুঁজে পেলাম না। চলনসই দুই জোড়া জুতা কিনে নিয়ে পায়ে দিলাম। তারপর ফিটফাট হয়ে একটা রিক্সা ডেকে নিয়ে কামরুলের খালাতো বোনের বাসায় যাওয়ার জন্য রওনা করলাম।
বাজারের কাছাকাছি কামরুলের বোনের বাসা। ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যেই ওর খালাতো বোনের বাসায় পৌছে গেলাম। রিক্সা থেকে নেমে রিক্সার ভাড়া মিটিয়ে বাসায় যখন ঢুকছি। সেই সময় অনেক বিব্রতকর অবস্থায় পড়লাম। কামরুলকে দেখে সবাই হাউমাউ করে কান্না শুরু করে দিল। আলাদা আলাদা দেশে থাকার কারণে নিকট আত্মীয় হওয়ার পরেও প্রায় এক যুগ পর দেখা হল। তাই সবাই একটু বেশি আবেগপ্রবন হয়ে পড়েছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেল। আমরা ওদের পিছু পিছু ভিতরে গিয়ে বসার ঘরে বসলাম।
কামরুলের খালার দুই মেয়ে এক ছেলে আজকে কাকতালীয়ভাবে সবাইকে একসঙ্গে পাওয়া গেল। গতরাত্রে ওরা ভাইবোন মিলে বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। যাইহোক আমরা গোসল করে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। তারপর সবাই মিলে ডাইনিং রুমে গেলাম সকালের নাস্তা করতে। কিন্তু আমি একটু লক্ষ্য করলাম কামরুলের খালাতো ছোট বোনটি আমার খুব যত্নআত্তি করছে। আমরা নাস্তা খেয়ে একটু বিশ্রাম নেয়ার পর বাইরে ঘুরতে যাওয়ার কথা বললাম। কিন্তু আমরা চোরাই পথে আসার কারণে আমাদের কিছুতেই বাইরে যেতে দিতে চাচ্ছেনা।
বাইরে চলাফেরা সময় অনেক জায়গায় চেকপোস্ট পাওয়া যায়। সেখানে যদি আটকে যাই তাহলে আর নিস্তার নেই। কামরুল কিছুটা ভয় পেয়ে বাইরে যাওয়ার ইচ্ছা দমন করল। কিন্তু আমি নাছোড় বান্দা ঘুরতে যখন এসেছি এতটা রিস্ক নিয়ে তাহলে তো আর বাসায় বসে থাকতে পারিনা। তাই বাসায় বললাম বাইরে গেলে সম্ভাব্য কি হতে পারে সেটা আমাদের বলে দেন। ওরা বুঝতে পারল এদেরকে আর দমিয়ে রাখা যাবে না এরা বাইরে যাবেই ঘুরতে। তাই আমাদের স্থানীয় এম এল এ এবং পঞ্চায়েতের নাম মুখস্ত করাতে লাগলো। চেকপোষ্টে কোথাও যদি আটকে যাই। তাহলে কোথায় থাকি তার নাম ঠিকানা এবং পঞ্চায়েতের বিষয়েও জিজ্ঞাসা করতে পারে। তাই সব মুখস্ত করে বেরিয়ে পড়লাম। দেখা যাক বাইরে গিয়ে কি হয় ঠিকমতো ঘুরতে পারি কিনা ??
বন্ধুরা আজ আর লিখছিনা। অন্য কোনদিন অন্যকিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে আসবো। আজকের জন্য বিদায় নিচ্ছি। সবার জন্য শুভকামনা। আল্লাহ হাফেজ।



