জেনারেল রাইটিং- কষ্টের ভবনে কেউ কারও নয় | | written by@maksudakar ||

in আমার বাংলা ব্লগ7 months ago (edited)

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই বেশ ভালোই আছেন। এখন তো ভালো থাকারই কথা। কারন নতুন চাল আর নতুন পিঠায় চারদিক এখন মুখরিত। গ্রামের পথে পথে নতুন পিঠা আর পায়েসের ঘ্রাণে সবাই মেতে উঠেছে বিশাল আনন্দে। আর আমার বিশ্বাস সেই আনন্দে মেতে উঠেছেন আপনারাও সবাই। আর এ বিষয়টি আপনাদের পোস্ট দেখেই কিন্তু বুঝা যায় বেশ ভালো করেই। তবে সেই আমেজের আনন্দ পাই আর নাই বা পাই , আপনাদের ভালো থাকাটাই কাম্য। আজ আবার চলে আসলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে। আশা করি আমার আজকের কথা গুলো আপনাদের মন কে কিছুটা হলেও ছুঁয়ে দিবে।

কষ্টের ভবনে কেউ কারও নয়

দু চোখে ঘুম আসে না.png

Banner credit --@maksudakawsar

ওরে আমার পাগল মন চিন্তা ভাবনা কইরা তুুমি দিও তোমার মন- সত্যি কিন্তু তাই। মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত। আর আশরাফুল মাখলুকাত বলেই মানুষ হলো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব। কোথায় যেন পড়েছিলাম-জীবে প্রেম করে যেই জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর । ভালোবাসা পবিত্র, ভালোবাসা নিষ্পাপ আর ভালোবাসা হলো স্বার্থহীন। পৃথিবীতে হাজারও মানুষ আছে যারা নিজেদের ভালোবাসা কে ছড়িয়ে দেয় চারদিকে নিঃস্বার্থ ভাবে। চায় না কোন প্রতিদান। চায় না কোন বিনিময়। তবে ভালোবাসা কিন্তু শুধু মাত্র একজন বালক বালিকা বা স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। ভালোবাসার প্রসার চারদিকের সকল কিছুকে নিয়েই।

তবে এই ভালোবাসার অপর পিঠে রয়েছে কষ্ট বা বেদনা। আমরা কিন্তু চারদিকে শুধু ভালোবাসার রং দেখি। আমরা কি কখনও মানুষের ভিতর লুকানো কষ্ট গুলো দেখতে পা্ই? বা কষ্টের রং কে বুঝার চেষ্টা করি? না না। আমরা তো কষ্টকে পছন্দই করি না। আমরা শুধু কষ্ট দেখলে পিছিয়ে পড়তে চাই। আবার কারও কষ্ট দেখলেও দূরে সরে যাই। অথচ কষ্টে থাকা মানুষ গুলোর সুখের মূহূর্ত গুলোতে আমরা কিন্তু তাদের সান্নিধ্যে মিশে থাকি আষ্টেপিষ্টে। একবার ভেবে দেখুন তো আমরা কতই না স্বার্থপর! অন্যের সুখের ভাগিদার আমরা ঠিকই হই, কিন্তু অন্যের কষ্টগুলোর দ্বার প্রান্তেও আমাদের কে পাওয়া যায় না।

পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছে যাদের ভিতরে কষ্টের পাহাড়। অথচ বাহিরে তাদের হাসি মাখা মুখ। পৃথিবীতে এমন হাজারও মানুষ আছে যারা মনের ভিতরে হাজারও কষ্ট নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। কারন মানুষের জীবনে এমন কিছু কষ্ট থাকে যে গুলো সে কাউকেউ বলতে পারে না। অথবা কেউ বুঝতেও চায় না তার কষ্ট। আবার হয়তো বা তার কষ্টগুলো কে অন্যরা হাসি তামাশায় উড়িয়ে দেয়। আর এই কষ্টে থাকা মানুষ গুলো ভিতরে ভিতরে শেষ হয়ে যায় দিনের পর দিন। ঘুন পোকা যেমন করে কাঠ কাটে, তেমনি করে কষ্টগুলো কিন্তু মানুষের দেহের ভিতরে কেটে কেটে নিঃশ্বেষ করে দেয়।

হাজারও ব্যাথা বেদনা আর কষ্টে থাকা এসব মানুষগুলো রাতের আঁধারে চোখের জলে বালিশ ভিজিয়ে যায় রাতের পর রাত। আর এক সময় রাতের আধাঁর গুলো হয়ে যায় তাদের ভালোবাসার প্রহর। দিনের আলোতে যে হাসি মাখা মুখ সবাই কে আনন্দ বিলিয়ে বেড়ায়। রাতের আধাঁরে সে তার কষ্টগুলো কে বিলিয়ে দেয় বালিশে মুখ গুজে। আর না হয় আকাশের তারা গুনে। আর আমরা মানুষগুলো কখনওই জানতে পারি না এমন মানুষ গুলোর না বলা কষ্টগুলো। অথবা জানলেও বোঝার চেষ্টা করি না।

আর এমন হাজারও কষ্টের কারন যদি আপনি আর আমি খুঁজে বেড়াই তাহলে কিন্তু কিছুই পাবো না। কারন পৃথিবীতে এক এক জন মানুষের কষ্ট এক এক রকমের হয়ে থাকে। হাজার খুঁজেও পাওয়া যাবে না সে সকল কষ্টের কারন। পাওয়া যাবে না তাদের বিভীষিকাময় জীবনের আত্মকাহিনী। কারন কষ্টে থাকা মানুষ গুলো ততদিনে কষ্টের প্রেমে পড়ে যায়। তাই বুক পেতে নিতে পারে হাজারও পাহাড়ের সমপরিমান আঘাত কে হাসি মুখে। আর এক সময়ে সেই কষ্টগুলোই হয়ে পড়ে ভালোবাসা আর ভালো লাগার স্থান। আর বেঁচে থাকে হাজারও কষ্ট নিয়ে এই বিষাদে ভরা পৃথিবীর বুকে যুগের পর যুগ। হয়তো কখনও হারিয়ে যায় হাজারও কষ্টকে বুকে নিয়ে পৃথিবী থেকে। আর অজানা রয়েই যায় হারিয়ে যাওয়া মানুষটির হাজারও কষ্ট গুলো।

image.png

শেষ কথা

হাসিমাখা মুখ বা আনন্দে ভরা সময় সে সকল মানুষই কাটাতে পছন্দ করে, যাদের চারদিকে কষ্টের দেয়ালে ছেয়ে আছে। আর এই সমস্ত কষ্ট হতে নিজেকে কিছুটা আনন্দ বা সুখ দিতেই কষ্টে থাকা মানুষগুলোর স্বার্থপরের মত ভালো থাকার অভিনয় গুলো দেখেই আমরাও হয়ে যাই মুগ্ধ।

image.png

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।

আমার ব্লগটির সাথে থাকার জন্য এবং ধৈর্য সহকারে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য সবাই কে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। সেই সাথে সবার প্রতি আমি আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

image.png

Screenshot_1.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 7 months ago 
 7 months ago 

আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে আপু কারো কষ্ট কেউ বোঝে না বলেই চলে। এক জনের কষ্ট এক এক ধরনের। সত্যি অনেক জন কষ্টকে চেপে রেখে হাসি মুখে চলে। ধন্যবাদ আপু সুন্দর লিখেছেন।

 7 months ago 

ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 7 months ago 

আসলে কষ্ট প্রতি টি মানুষের জিবনে কম বেশি আছে।একেক জনের কষ্ট একেক রকম হয়ে থাকে।ঠিক বলেছেন হাজারো কষ্ট নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। কেউ বা কষ্ট গুলোকে ধামাচাপা দিয়ে ভালো থাকার নাটক করে চলে যুগের পর যুগ।ধন্যবাদ

 7 months ago 

ধন্যবাদ আপু ব্লগটি পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 7 months ago 

কিছু কিছু মানুষ প্রতিনিয়ত ভালো থাকার অভিনয় করে যায়। সেসব মানুষদেরকে দেখলে আমরা মনে করি, তারা কতোটা সুখী। কিন্তু দিনশেষে তারা সবচেয়ে অসুখী। আমরা কারো ভিতরের খবর রাখি না। তবে এটা ঠিক যে আমরা মানুষ হিসেবে প্রচন্ড স্বার্থপর। কারণ আমরা অনেক মানুষের সাথে চলাফেরা করি এবং তাদের ভালো সময়ে আমরা পাশে থাকি, কিন্তু খারাপ সময়ে আমরা তাদের কাছ থেকে দূরে দূরে থাকি। এই কথাটি তেঁতো হলেও সত্যি। সুতরাং অন্যের আশা না করে, নিজের ভালোমন্দ নিজেকেই বুঝতে হবে এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটে নিজেকে যতোটা গুটিয়ে নেওয়া যায় ততই মঙ্গল। যাইহোক এতো চমৎকার একটি টপিক নিয়ে পোস্ট শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 58132.39
ETH 3138.08
USDT 1.00
SBD 2.44