💕ক্লান্তিময় জীবনে ভালবাসার ছোঁয়ায় ঘুরে বেড়ানো কিছুটা সময়💕

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম

আজ মঙ্গলবার, ২২ই নভেম্বর ২০২২ ইং
৫ই অগ্রাহয়ণ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

💕কেমন আছেন সবাই? বেশ ভাল আছেন তো মনে হচ্ছে। মহান রাব্বুল আলামিন এর কাছে পৃথিবীর সকলের জন্য দোয়া করি, সবাই যেন সুস্থ্য এবং ভাল থাকেন। আমিও বেশ ভাল আছি। তবে একটা কথা সাধারণত আমি যেমনই থাকিনা কেন চেষ্টা করি ভাল থাকার।💕

দিন যতই যাচ্ছে আমাদের জীবনযাপন খুব যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে। আমরা সবাই ছুটে চলছি এক অজানা গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। কিসের নেশায় আমাদের এই ছুটে চলা? এই আমার কথাই বলি না কেন? বেশ কিছুদিন যাবৎ খুব ব্যস্ততম সময় পার করছি। আর ব্যস্ত হবোই না কেন, বলতে পারেন? জীবিকার তাগিদে সেই ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠতে হয়। তারপর সকাল ৮.০০ টার মধ্যে বাহির হতে হয় অফিস যাওয়ার উদ্দেশ্যে। আবার বিকেল পাঁচটার পর বাসায় ঢোকা। বাসায় এসে সাংসারিক কাজ, রান্না বান্না এ সকল কিছুই তো এক হাতেই সামলাতে হয়। আর এরমধ্যেই তো লেগে আছে পারিবারিক দায়িত্ববোধ। এজন্য কখনও কখনও ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা ৭.০০-৮.০০ ও বেজে যায়। কিন্তু কি আর করার বলেন, বর্তমান যে পরিস্থিতি তাতে একজনের আয়ের উপর টিকে থাকা বেশ মুশকিল। মাঝে মাঝে মনে হয় বাবা আলাদ্দিন এর দেখা কল্পতরু না হয়ে যদি বাস্তবে পেতাম তাহলে বলতাম, আমার বেশি কিছু নয় শুধু পাঁচতলা একটা বাড়ি আর একটা গাড়ি দিলেই হবে।হাহাহা।

বেশ কিছুদিন যাবৎ এরকম ব্যস্ততা দেখে পাশের মানুষটি আর নিরব থাকতে পারচ্ছে না।কারন আমি ভাল থাকলেই যে তার ভাল থাকা। আর তাইতো কয়েকদিন ধরে খুব অনুরোধ করছে । আসে পাশে কিছুটা সময় ঘুরে বেড়ানোর জন্য। আমি সময় না পাওয়ায় সে মাঝে মাঝে খুব রাগ করে। তাই তার রাগ ভাঙ্গানোর জন্যই সময় করে চলে গেলাম তার সাথে বাহিরে ঘুরতে। উদ্দেশ্য দুজনে কিছুটা সময় পার করা আর ঘুরে বেড়ানো। যেহেতেু সময় কম তাই বেশী দূরে নয়। কাছাকাছি তালতলা মার্কেটে চলে গেলাম তাকে নিয়ে। তালতলা মার্কেট হচ্ছে খিঁলগাও এলাকায় নাম করা। সন্ধ্যা হলে এই মার্কেটের ভিতরে হাঁটার জায়গাটুকুও পাওয়া যায় না। এখানে রাস্তার ধারে মুখে সাধ লাগার মত অনেক রকম খাবার পাওয়া যায়। আর রাস্তার ধারের খাবার আমার খুবই প্রিয়। আমার মত আপনাদের কাছেও প্রিয় হলে আমাকে জানাতে ভুলবেন না যেন।

image.png

💕ক্লান্তিময় জীবনে ভালবাসার ছোঁয়ায় ঘুরে বেড়ানো কিছুটা সময়💕

তখন প্রায় বিকেল পাঁচটা। আমরা দুজনেই বের হয়ে গেলাম কিছুটা ক্লান্তির আর অবসাদ থেকে নিজেদের কে শান্তির ছাঁয়াতলে ফিরিয়ে আনতে। যেহেতু বাসা থেকে তালতলা মার্কেট বেশী দূরে নয়। তাই আর সেদিন রিক্সাও নিলাম না। উদ্দেশ্য দুজন হাঁটবো। কিছুদূর যেতেই সে আমার হাতটা ধরে ধরে হাঁটছে। আর তার সেই ভালবাসার হাত ধরার ছোঁয়াই যেন আমার ভিতরের সকল ক্লান্তি এক নিমিষেই চলে গেল। তারপর হাঁটতে হাঁটতে আমরা চলে গেলাম মার্কেটের গেইটে। সেখানে যাওয়া মাত্র একটা সুন্দর ফুলের দোকান চোখে পড়লো। তখন সে সেখান থেকে আমার জন্য এক গুচ্ছ গোলাপ ফুল কিনে নিলো। কারণ গোলাপ আমার খুব প্রিয়।

image.png

লোকেশন

অনেকটা সময় ধরে আমরা কিছু কেনাকাটা করলাম। তারপর দেখলাম ক্ষিদায় পেট পুড়ছে। তাই আর দেরি না করে চলে গেলাম আমাদের প্রিয় ঝালমুড়ি মামার দোকানের বিখ্যাত মাসালা ঝালমুড়ি আর কাবাব খাওয়ার জন্য। আপনাদের বলে রাখি, আমরা যখন তালতলায় কোন কিছু কেনাকাটা করার জন্য যাই। তখন এই মামার দোকানে মাসালা ঝালমুড়ি না খেয়ে বাড়ি ফিরি না। আর মামার মাসালা ঝালমুড়ির স্বাদ ১০০/১০০।

image.png

লোকেশন

বন্ধুরা আমার পরিবার পরিজন, বন্ধুমহল বা আত্নীয়-স্বজন যার কথাই বলি না কেন, সবাই জানে যে ঝাল ঝাল চটপুটি আমার খুবই প্রিয় একটি ফাস্টফুড। আর আজ একথা আমার পাশের মানুষটিও খুব ভালভাবে জানে। তাইতো সে আমাকে ঝাল ঝাল চটপুটি না খাইয়ে বাসায় আসবে না। বলেন তো কেমন লাগে? একে তো পেট ভর্তি, তার উপর আবার ঝাল ঝাল চটপুটি খাওয়ার একটা লোভ। তাই আবার কিছু সময় টুকটাক কিনাকাটা করে সময় পাড় করলাম। যাতে ক্ষুদাটা ভালভাবে লেগে যায়। ভাবছিলাম @TheLanchan গল্পের সেই ভদ্র মহিলার মত হলে মন হয় ভাল হত। তাহলে মজার মজার সব খাবারই আজ খেতে পারতাম। কারন এরকম ভালবাসার দিনতো আর প্রতিদিন আসে না। যাক বেশ কিছুটা সময় পর আমরা আমার সেই প্রিয় ঝাল ঝাল চটপুটি খেতে গেলাম। আমি আবার চটপুটিতে টক একটু কম খাই। বেশ ভাল লাগলো ঝাল ঝাল চটপুটি খেয়ে শুধু হু হা করছি।

image.png

লোকেশন

এবার আমাদের বাসায় ফেরার পালা। তাই রওনা দিলাম বাসার দিকে। কিন্তু না আবার একটু অপেক্ষা করতে হলো। কারন উনার আবার ঝাল খাওয়ার পর একটু মিষ্টি কিছু নাকি খাওয়া লাগবে। আর তালতলার গরম গরম জিলাপি ভাজার কথা তো অনেকেই জানে। এখানে অনেক মজার এবং সুস্বাদু গরম গরম ভাজা জিলাপি পাওয়া যায়। তাই চলে গেলাম এবার জিলাপি মামার দোকানে। সেখানে যেয়ে শুধুমাত্র তার জন্য জিলাপি নিতে বললাম। কারন আমার পেটে আর জায়গা নেই । আমি তো আর ক্ষাদক নয়। কতটুকুই খাই আমি আর? যাক মামাকে বললাম কড়াইতে ভাজা জিলাপির মধ্যে হতে একটা জিলাপি দিতে। এই নিয়ে মামার সাথে একটু কথা কাটাকাটিও হলো। মামা কড়াই থেকে দিবে না। সে আগে ভেজে রাখা থেকে জিলাপি খেতে বলে। অবশেষে আমরাই জিতলাম অনেক ঝগড়া করে এলাকার গরম দেখিয়ে কড়াই থেকে ভাজা গরম গরম জিলাপি তাকে খাওয়াতে পারলাম। আর যতক্ষনে উনি জিলাপি খাচ্ছিলো ততক্ষনে্ আমি মামার সাথে আবার নতুন করে ভাব জমিয়ে নিলাম। অনেক গল্প করলাম জিলপি মামার মন ভাল করার জন্য।

image.png

লোকেশন

এরপর জিলাপি খাওয়া শেষ হলে ভালবাসার উপহার পাওয়া সেই গোলাপ নিয়ে আবার দুজনে হাতে হাত রেখে হাঁটতে হাঁটতে চলে আসলাম আমাদের সেই স্বর্গ নিড়ে। ততক্ষনে মুছে গেছে আমার সকল ক্লান্তি। রয়ে গেছে শুধু ভালবাসার কিছুটা ‍মুহূর্ত। যা আজ আপনাদের সাথে শেয়ার না করে থাকতে পারলাম না।

image.png

লোকেশন

বিশ্বকাপের উম্মাদনায় সবাই প্রাণবন্ত, ভাল ও সুস্থ্য থাকুন।

কেমন লাগলো বন্ধুরা আপনাদের কাছ আমার আজকের ভালবাসা ছোঁয়ায় হাতে হাত রেখে ঘুরে বেড়ানো কিছুটা সময় নিয়ে আমার আজকের ব্লগটি? জানার অপেক্ষায় রইলাম।

❤️ধন্যবাদ সকলকে।❤️

@maksudakawsar

image.png

image.png

Sort:  
 2 years ago 

ঝালমুড়িটি দেখে আবার খুবই খেতে ইচ্ছে করছে। আপনার পোস্টটি তে এত সুন্দর সুন্দর সুন্দর খাবার দেখে আমার তো এখন খেতে ইচ্ছে করছে। 🤤 মার্কেটে গেলে আমি ফুলের দোকান সামনে একবার গিয়ে সব ফুল দেখে আসি। ফুল আমার অনেক ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করুন। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

আপু আসলে আমরা সবাই রাস্তার পাড়ের খাবার গুলো বেশি পছন্দ করি। এটা প্রকৃতি একটা নিয়ম।

 2 years ago 
আপু ব্যস্ততার কথা ভুলে গিয়েছিলাম কিছুক্ষণের জন্য আপনি আবার মনে করিয়ে দিলেন। যাই হোক আপনার লেখা পড়ে মনে হচ্ছিল কোন ভালোবাসার উপন্যাস পড়ছি। আপনাদের হাতে হাত রেখে রাস্তায় হাঁটার ব্যাপারটা খুবই রোমান্টিক। মজার কিছু খাবারের ছবি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। দেখেই খেতে ইচ্ছে করছে। একগুচ্ছ গোলাপ নিয়ে বাসায় ফিরে আসা এ যেন পরম তৃপ্তি। ধন্যবাদ আপু।
 2 years ago 

জী ভাই ঠিকই বলেছেন এক গুচ্ছ গোলাপ নিয়ে বাসায় ফিরে ভীষণ তৃপ্তি পেয়েছিলাম ।

 2 years ago 

আমাদের শত ব্যস্ততার মাঝেও প্রিয় মানুষগুলোর সাথে ঘুরতে বেড়াতে মনটা চায়।আর এভাবেই জীবন থেকে অনেকটা বোরিং ফিল কেটে যায়। আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো তবে খাবারগুলো অনেক লোভনীয়। আর ফুলগুলো অনেক সুন্দর ছিল। ধন্যবাদ আপনার ঘুরে বেড়ানোর অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

তবুও প্রয়োজনই মাঝে সময় করে নিতে হয়। তবুও যদি কিছুটা সময় আনন্দে কাটানো যায়।

আপু আপনার মত আমিও পাঁচ তলা একটা বাড়ি আর একটা গাড়ি চেয়ে নিতাম যদি সুযোগটা পেতাম 😉। খিলগাঁওয়ের তালতলা মার্কেটে আমিও বেশ কয়েকবার গিয়েছি। কোন কিছু কেনাকাটার উদ্দেশ্যে নয়। এমনি ঘোরাঘুরি করতে। ওখানে আমার এক বোনের বাড়ি। তাই মাঝেমধ্যে যাওয়া হয় ওই দিকটায়। ভালোই লাগলো দুজন একসাথে করে বেশ ঘোরাফেরা করেছেন এবং খাওয়া দাওয়া করেছেন। সবশেষে জিলাপি ওয়ালার সাথে কথা কাটাকাটির ব্যাপারটা বেশ মজার ছিল। আমিও দেখেছি বেশিরভাগ সময় সব দোকানদার ঠান্ডা জিলাপি গুলোই আগে দিতে চায়। গরম জিলাপি ছাড়া জিলাপি খাওয়ার মজা আছে নাকি! এই কথা তো তারাও বোঝে। কেন যে এমন করে সেটাই বুঝে পাই না।

 2 years ago 

যাক ভালো লাগলো আমার মত আপনিও একই ধরনের স্বপ্ন দেখেন। তারপর ভালো লাগলো এটার জন্য যে আপনি আমাদের এই এলাকায় অনেক এসেছেন। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য

 2 years ago 

আপনা তো দেখছি খুব ঘোরাঘুরি আর স্ট্রিট ফুড খাওয়া দাওয়া করেছেন দিদি! দারুন লাগলো স্ট্রিট ফুডগুলো দেখে। জিভে জল চলে এলো।এই রাতে এখন পাই কোথা থেকে? আহা কি সুস্বাদু লাগছে মুড়ি মাখা, ঘুগনী,জিলিপি সবগুলো প্রিয়। 😋

 2 years ago (edited)

দিদি আকাশি কুরিয়ারে পাঠিয়ে দিলাম খেয়ে নেন। বেশ ভাল ছিল আপনার মন্তব্যগুলো।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64041.25
ETH 2762.17
USDT 1.00
SBD 2.66