"OBLIVION" হলিউড মুভি রিভিউ || 10% Beneficiary To @shy-fox 🦊
সুপ্রিয় আমার বাংলা ব্লগের সকল বাংলাভাষী ব্লগার ভাই এবং বোনদের আমার সালাম এবং আদাপ। সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে অনেক ভাল আছি।
আমরা সকলেই প্রায় হলিউড সায়েন্স ফিকশন মুভি গুলো দেখতে খুবই পছন্দ করি। আর হলিউডে এরকম হাজার হাজার মুভি রয়েছে। তাই কোন মুভিটা দেখতে ভালো হবে আর কোন মুভিটা দেখতে খারাপ হবে এটা আমরা না বুঝেই মুভি দেখা শুরু করি, পরে মুভি দেখা শেষে ভালো না লাগলে বিরক্ত অনুভব করি।
আপনাদের জন্য এমনটা মনে না হওয়ার জন্য আমি মাঝে মাঝে আপনাদের মাঝে সুন্দর সুন্দর সব হলিউড মুভি রিভিউ নিয়ে হাজির হই। যে হলিউড মুভি গুলো দেখার পর আমার কাছে খুবই ভালো লাগে ঠিক সেই মুভি গুলো রিভিউ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করি।
আমার এই পোস্টে আমি মুভির কিছু উল্লেখযোগ্য কাহিনী এবং মুভির মূলভাব আমি আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব। ফলে আপনারা মুভিটি সম্পর্কে ধারণা নিতে পারবেন।
আমি আপনাদের সামনে যে মুভিগুলোর রিভিউ উপস্থাপন করি আশা করি সেই মুভি গুলো আপনাদের কাছে ভাল লাগবেই। কারণ মুভি গুলোর মধ্যে ভালো লাগার একটা ব্যাপার আছে , সাইন্স ফিকশন মুভি বলে কথা। তাহলে চলুন আর দেরি না করে শুরু করা যাক আজকের মুভিটির রিভিউ।
⊕ OBLIVION ⊕
মুভি | OBLIVION (২০১৩) |
---|---|
পরিচালক | জোসেফ কোচিনসকি |
লেখক | কারল জাজডুসেক, মাইকেল আরন্ড , জোসেফ কোচিনসকি |
অভিনয়ে | টম ক্রুজ, মর্গান ফ্রিম্যান, আদ্রিয়া রিসেবো, ওলগা কুরেলেনকো, নিকোলাস কোস্টার, মেলিসা লিও |
মুভির ধরন | একশন, অ্যাডভেঞ্চার, সাইন্স ফিকশন |
নাটকের সময় | ২ ঘন্টা ০৪ মিনিট |
⊕মুভির মূল কাহিনী ⊕
এই মুভিটার শুরু হয় ২০৭৭ সাল থেকে, শুরুতেই আপনারা দেখতে পারবেন জ্যাক নামের একজন ব্যক্তি একটা স্বপ্ন দেখছিল। সেই স্বপ্নে সে একটা অচেনা মেয়েকে দেখতে পায়। সে ওই মেয়েটিকে চেনে না। তবে তার কাছে স্বপ্নটি একদম বাস্তবতা মনে হয়। তারপর হঠাৎ করে তার স্বপ্ন ভেঙ্গে যায় এবং সে স্বপ্ন নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে। সে বুঝতে পারছিল না কেন সেই মেয়েটি তার স্বপ্নে আসছে।
তারপর মুভিটি কিছুক্ষণ চলার পর আমরা বুঝতে পারি অনেক বছর আগে পৃথিবীর মানুষের সাথে স্ক্যাভেঞ্জার নামের এলিয়েনদের যুদ্ধ হয়েছিল। এই স্ক্যাভেঞ্জার দের প্লানেট ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ফলে তারা পৃথিবী কে তাদের নতুন বাসস্থান হিসেবে গড়তে চেয়েছিল। তাই তারা পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ কে নষ্ট করে দেয়। চাঁদকে ধ্বংস করে দেয়ার ফলে পৃথিবীতে অনেক রকম মহাপ্রলয় সৃষ্টি হয়। এর ফলে পৃথিবীর প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়। স্ক্যাভেঞ্জার দের সাথে মানুষরা যুদ্ধ জিতেছিল কিন্তু পৃথিবীর অবস্থা একদম খারাপ হয়ে গিয়েছিল, এক কথায় বলতে গেলে পৃথিবী আর বসবাস উপযুক্ত ছিল না।
পৃথিবী যেহেতু আর বসবাস উপযোগী ছিলনা সেহেতু পৃথিবীর মানুষ গুলো কে অন্য স্থানে পাঠাতে হবে। সেজন্য পৃথিবীর মানুষরা ঠিক করে তারা শনি গ্রহের চাঁদ টাইটানে যাবে। এর জন্য তারা মহাকাশে একটি স্টেশন স্থাপন করে যেখান থেকে এই অপারেশনটি কন্ট্রোল করা হবে।
বেঁচে যাওয়া মানুষগুলোর মধ্যে জ্যাক এবং ভিক্টোরিয়াও পরে। পৃথিবীতে তাদের একটা অপারেশনের জন্য রাখা হয়। পৃথিবীর সমুদ্রের পানি থেকে পাওয়ার সংগ্রহ করে সেই পাওয়ার তারা টাইটানে নিয়ে যাবে। এই অপারেশনটি কন্ট্রোল করার জন্যই তাদের পৃথিবীকে রাখা হয় একটি নিরাপদ স্থানে।
মানুষের মতো অনেক স্ক্যাভেঞ্জার ও বেঁচে ছিল। স্ক্যাভেঙ্গেররা যেন এই অপারেশনটি নষ্ট না করতে পারে সেজন্য মানুষরা কিছু ডিফেন্স ড্রন সেখানে রেখেছিল। সেই ড্রোন গুলোর কিছু হলে সেগুলো ঠিক করার দায়িত্ব ছিল জ্যাক এর। এবং তাকে ইনস্ট্রাকশন দেওয়ার জন্য ছিল ভিক্টোরিয়া। তারা দুজনই পৃথিবীর এই অপারেশনটি কন্ট্রোল করতে। আপনাদের আগেই বলে রাখি তাদের এই মিশনে পাঠানোর আগে তাদের সকল পুরনো স্মৃতি মুছে দেয়া হয়েছে।
তারপর একদিন সকালে উঠে জ্যাক এবং ভিক্টোরিয়া দেখতে পায় তাদের একটি হাইড্রোলিক জেনারেটর ব্লাস্ট হয়ে গিয়েছে। তারপর জ্যাক সেখানে যায় এবং সেখানে কিছু সিগন্যাল পায়। সেই সিগন্যাল অনুসরণ করে জ্যাক একটি টাওয়ারের কাছে পৌঁছে যায় এবং সেখানে গিয়ে কিছু ট্রান্সমিটার দেখতে পারে। তারা ভাবে eight-hour থেকেই স্কাভেঞ্জাররা মহাকাশে তাদের সিগন্যাল পাঠায়। তাই জ্যাক সেখানের সিগন্যাল নষ্ট করে দেয়।
তারপর আমরা দেখতে পারি জ্যাক তার বানানো একটি গোপন জায়গায় যায় যেখানে সে মাঝে মাঝে গিয়ে সময় কাটায়। সেখানে সে অনেকটা সময় কাটানোর পর লেকের ধারে একটু শুয়ে পড়ে। তখন আবার সেই স্বপ্নটি সে দেখে এবং হঠাৎ করে ঘুম থেকে ওঠে। তারপর আকাশের দিকে চোখ নিতেই সে একটা অন্য রকম জিনিস দেখতে পায়।
তারপর জ্যাক সেখানে গিয়ে একটি স্পেসযানের ধ্বংসস্তূপ দেখতে পায়। এবং সেখানে এক গুলো চেম্বারের ভিতরে মানুষও থাকে। তারপর সেই মানুষগুলোকে জ্যাক বাঁচানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তাদের ড্রন এসে সবাইকে মেরে ফেলে। কিন্তু একটা মেয়েকে জ্যাক বাঁচাতে সক্ষম হয়। এই মেয়েটিকে দেখে জ্যাক অবাক হয়ে যায়। কারণ তার স্বপ্নে দেখা সেই মেয়েটিকেই জ্যাক উদ্ধার করে এবং তাদের থাকার জায়গায় নিয়ে আসে।
তারপর জ্যাক এবং সেই মেয়েটি আবার সেই ধ্বংসস্তূপের ওখানে যায়, কিছু একটা উদ্ধার করার। তখনই সেখানে স্কাভেঞ্জার চলে আসে, এবং তাদের বন্দি করে নিয়ে যায়।
তারপর স্কেভেঞ্জারদের কাছে গিয়ে জ্যাকের যখন জ্ঞান ফেরে তখন জ্যাক রীতিমতো অবাক হয়ে যায়। কারণ স্কেভেঞ্জাররা কোন এলিয়েন না তারা আসলে মানুষ। এবং তারা জ্যাককে এটাও বলে যে ড্রোনগুলো কোন এলিয়েন দের মারছে না তারা মানুষদেরই মারছে। জ্যাক প্রথমে এটা বিশ্বাস করে না। তখন সেখানকার লিডার বেচ জ্যাককে রেডিয়েশন এরিয়ার মধ্যে যেতে বলে।
তারপর জ্যাক এবং জুলিয়া সেই রেডিয়েশন এলাকার একটা ভবনে যায়। এবং সেখানে গিয়ে জ্যাকের সব মনে পড়ে যায়। এবং সে এটাও বুঝতে পারে যে এখানে টাইটান নিয়ে কোন মিশন চলছে না। এবং সে এটাও বুঝতে পারে যে জুলিয়া তার বউ।
তারপর জ্যাক এবং জুলিয়া তাদের স্টেশনে চলে যায়। সেখানে ভিক্টোরিয়া এমন কিছু একটা করে যে সেখানে ড্রন একটিভ হয়ে যায় তাদের মারার জন্য। শেষমেষ ড্রন ভিক্টোরিয়া কে মারতে সক্ষম হয়।
তারপর জ্যাক এবং জুলিয়া তাদের এয়ারক্রাফট নিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে পড়ে এবং তাদের পেছনে কিছু ড্রন লেগে পড়ে তাদের মারার জন্য। তারপর তারা হঠাৎ ক্রাশ করে মাটিতে। সেখানে পড়ার পর জ্যাক দেখতে পারে আরেকটি এয়ারক্রাফট সেখানে চলে আসে। সেখানে গিয়ে সে একদম অবাক হয়ে যায় কারণ সেখানে তার মতোই আরেকজন জ্যাক ছিল।
তারপর হঠাত চলে আসা জ্যাককে বন্দী করে প্রথম জ্যাক হঠাত চলে আসা জ্যাককের আস্তানায় যায় এবং সেখানে গিয়ে সে অবাক হয়ে যায় কারণ সেখানে সে আবার ভিক্টোরিয়া কে দেখতে পায়। কিন্তু ভিক্টোরিয়া তো একটু আগেই মারা গিয়েছিল। তারপর তার বুঝতে দেরি হয়না যে এখানে অনেক বড় সমস্যা চলছে।
তারপর জ্যাক এবং জুলিয়া বেচ এর কাছে চলে আসে তাদের সাহায্য করার জন্য। তাদের কাছে যে ড্রন আছে সেই ড্রোনটি ঠিক করে মহাকাশে থাকা সেই স্পেস স্টেশন কে নষ্ট করার জন্য। কারণ সেখান থেকেই সব সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে
কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হলো সেখানে জ্যাককে ট্রাক করে সেই ড্রোনগুলো চলে আসে। এবং তাদের ঠিক করা ড্রোনটি নষ্ট করে দেয়। তাই জ্যাক ঠিক করে সেই পরমাণু স্পেস স্টেশন নষ্ট করতে যাবে। যুলিয়া ও বলে সেও জ্যাক এর সাথে যাবে।
তারপর জ্যাক এবং জুলিয়া মহাকাশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। তখন জ্যাক স্পেস ক্রাফট এ থাকা সেই রেকর্ডিংটি চালু করে। এবং সে সব বুঝে যায় যে তার সাথে কি হয়েছে।
অতঃপর জ্যাক মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছে যায় এবং সে ভেতরে প্রবেশ করে। ভেতরে প্রবেশ করার সময় ড্রোনগুলো তাকে ভালোমতোই পাহারা দিচ্ছিল। এবং স্পেস স্টেশনের কন্ট্রোলার তাকে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করছিল। সে ভিতরে ঢুকে তার এবং ভিক্টোরিয়ার হাজার হাজার ক্লোন দেখতে পারে।
তারপর স্লিপিং ক্যাপসুল টি খোলার পর আমরা দেখতে পারি সেই ক্যাপসুল টির ভিতরে জুলিয়া না ভেতরে ছিল বেচ । তখন স্টেশন কন্ট্রোলার ছেলি জ্যাককে বলে যে এটা তো সেই মেয়েটি না এটা অন্য একজন লোক। তারা আসলে জুলিয়াকে পৃথিবীতেই রেখে এসেছে। স্পেস স্টেশন নষ্ট করার জন্য।
এদিকে পৃথিবীতে ড্রোনগুলো সবাইকে মারার চেষ্টা করছে। তখনই বেক এবং জ্যাক পরমাণু বিস্ফোরণ করে ছেলীকে ধ্বংস করে দেয় এবং সবগুলোকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়।
তারপর আমরা জুলিয়াকে দেখতে পাই জ্যাককের সেই বানানো বাড়িটিতে। এবং কিছুক্ষণ পর সেখানে বেচ দলের সবাই সহ জ্যাকও হাজির হয়ে যায়। সেটা আসলে ছিল মুভির মাঝে দেখা সেই দ্বিতীয় জ্যাক। তারা কোন হলেও তাদের স্মৃতি ঠিক একই। তাকে দেখে জুলিয়া খুবই খুশি হয়ে যায়। এবং সেখানেই মুভিটির সমাপ্তি ঘটে।
এই মুভিটি আমার কাছে দারুন লেগেছে। এই মুভিতে দেখানো সবগুলো দৃশ্য খুবই রিয়ালিস্টিক ছিল। আর মুভির কাহিনীর কথা কি বলব আপনি তো চোখ ফিরাতেই পারবেন না। সত্যিই অসাধারণ একটি মুভি এটি। আশা করি সবাই দেখবেন আপনাদের কাছে ভাল লাগবেই।
• ৭.০/১০ |
---|
অভিনয় | ৯.৫/১০ |
---|---|
কাহিনী | ৯/১০ |
সব মিলিয়ে | ৯/১০ |
YouTube |
---|
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Please check my new project, STEEM.NFT. Thank you!
টম ক্রুজ মানেই অন্য লেভেল এর একশন দেখতে পাবো সেটা জানা কথা😁।যখন প্রথম এই মুভি দেখি তখন মুভির সাউন্ড ইফেক্ট গুলো জাস্ট সেই লেগেছিল।আর ক্রুজের অভিনয় আর একসময় গুলো সেই লেগেছিল।সব মিলিয়ে বেশ উপভোগ করেছিলাম।আর আপনার রিভিউ টি অনেক সুন্দর ছিল।
আসলেই ভাই টম ক্রুজ মানেই ধামাকা 🤭।
তেমন এই মুভিটি ও সেই লেভেলের একটি মুভি। আপনি এই মুভিটি দেখেছেন জেনে ভালই লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া।
এই সিনেমাটি বহু আগেই দেখে ফেলেছি। সাইন্স ফিকশন মুভি গুলো আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আর যতগুলো সাইন্স ফিকশন মুভি আমার পছন্দ তার মধ্যে এটা একটি। তবে আপনার রিভিউটি আমি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লাম। সহজ ভাষায় খুব সুন্দর ভাবে গুছিয়ে লিখেছেন আপনি। মনে হচ্ছিল যেন আবারো সিনেমাটি দেখে ফেললাম। ধন্যবাদ
সাইন্স ফিকশন মুভি গুলো দেখার সময় শরীর শিরশির করে আর এটা আমার খুবই ভালো লাগে ভাইয়া। আপনি আমার পুরো পোস্টটি পড়েছেন জেনে খুশি হলাম ভাইয়া। ধন্যবাদ।
মুভিটির রিভিউ শুনে মুভিটি দেখতে ইচ্ছে করছে। সাইন্স ফিকশন মুভি গুলো অনেক সুন্দর হয় আর আমার কাছেও বেশ ভালো লাগে। মুভি দেখা হয় না অনেক দিন।পরের বার এই মুভিটাই দেখবো।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া এমন একটা সুন্দর মুভির রিভিউ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
এই মুভিটি অবশ্যই দেখবেন আপু আশা করি আপনার কাছে খুবই ভালো লাগবে। ধন্যবাদ।
বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী নিয়ে চমৎকার মুভি তৈরি করা হয়েছে বুঝলাম 🤗
তুমি যথেষ্ট বিস্তারিত বর্ননা করেছো, যা দেখে সত্যিই দেখার আগ্রহ জেগেছে মনে।
খুব শিগগিরই দেখে নেবো ইনশাআল্লাহ।
এই মুভিটা অবশ্যই দেখবেন ভাইয়া আশাকরি মুভিটি আপনার কাছে খুবই ভালো লাগবে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া আমার মুভি রিভিউ টি পড়ার জন্য। শুভকামনা রইল।