১৬ টা ডিম খাওয়ার স্মরণীয় গল্প।।
আস্সালামু আলাইকুম /আদাব 🤝
আমার প্রাণ প্রিয় বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা সবাই। আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো ও সুস্থ আছি ।আমি @mahfuzur888, বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে আপনাদের সাথে আছি ।
আমি ১৯৯৯ সালে এসএস সি পরীক্ষা দেওয়ার পর ভালো কলেজে ভর্তি হতে চেয়েছিলাম। তো কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য আমার এক প্রফেসর চাচ্চু আমাকে তার কলেজে নিয়ে ভর্তি করে দেন। কলেজে ভর্তি হয়ে আমি রীতিমতো ক্লাস শুরু করে দিলাম। কিন্তুু আমার বাসা থেকে কলেজে যেতে অনেক সময় লাগতো। যা আমার জন্য মোটামুটি কষ্টদায়ক ছিল। তাই আমার ছোট ফুফু বললেন তার বাসা থেকেই কলেজে পড়াশোনা করতে। কারন আমার ছোট ফুফুর বাসা থেকে আমার কলেজে যেতে মাত্র ৫ মিনিট সময় লাগতো। আমার ছোট ফুফু বলার সাথে সাথে আমিও রাজি হয়ে গেলাম। এবং বই পত্র গুছিয়ে প্রথমে বাস পড়ে রিকশাযোগে ফুফুর বাসায় চলে গেলাম । সেখানে আমাকে এবং আমার ছোট ফুফাতো ভাইকে একটি রুম দেওয়া হল। যদিও আমার ফুফাত ভাই আমার থেকে আট বছরের ছোট ছিল।
যাইহোক ভালোভাবে ক্লাস করতে লাগলাম। এভাবে চলতে চলতে দু মাস পর কলেজ থেকে তিন দিনের ছুটি দেওয়া হয়েছিল। সেই ছুটিতে আমি বাড়িতে আসলাম এবং আমার ফ্রেন্ডদের সাথে বিকালে আড্ডা দিতে বিকালে আমি যে হাইস্কুলে পড়তাম সেই হাইস্কুলের মাঠে চলে গেলাম। সেইখানে গল্প করতে করতে এক পর্যায়ে আমার এক ফ্রেন্ড বলে উঠলো আমি রাতে একসাথে পাঁচটা ডিম খেয়েছিলাম। খাওয়ার পরে রাতে আর ঘুমাতে পারিনি। আর এক ফ্রেন্ড বলল আমি তিনটা ডিম খেয়েছিলাম আমারও সেম রাতে ঘুমাতে পারিনি। অন্য আরেকটি ফ্রেন্ড বলল আমি আটটা ডিম খেয়েছিলাম কিন্তুু আমার কিছুই হয়নি আমি অনেক সুন্দর ভাবে রাতে ঘুমাতে পেরেছিলাম।
তো আমি ছোটবেলা থেকেই এক রক্ষা টাইপ ছিলাম যদিও কারো সাথে ঝগড়া ঝাটি মারামারিতে লিপ্ত হতাম না। কিন্তুু কেউ একটা কাজ করতে না করলে সেই কাজটা আমাকে করতেই হবে এরকম একটা মন মানসিকতা আমার ছিল। সেই সময়টাতে অবশ্য বেশি টাকা-পয়সা হাতে থাকতো না। ওই গাড়ি ভাড়া, খাতা কেনা,এবং মাঝে মাঝে টিউশনির কথা বলে কিছু টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরে যে টাকা থাকতো সেই টাকাটাই খরচ করতাম মাঝে মাঝে। তো এবারও সেম আমার কাছে ২৫০ টাকা ছিল। আমি আগেই বলেছিলাম যে আমি একটু এক রোগা জেদি টাইপ ছিলাম। তাই টাকা যেহেতু হাতে আছে মনস্থির করলাম আমি ডিম খাবো। তাই ভাবলাম এখন যদি আমি এইখানে বেশি ডিম খাই তাহলে বাসার সবাই টের পাবে এবং আমাকে বকাবকি করবে। তাহলে কি করবো আমার তো ডিম খেতেই হবে। তখন মনে পড়ে গেল ছোট ফুফুর বাসার কথা। সেখানে যেহেতু আমার ফুফাতো ভাই আমার থেকে বয়সে ছোট কাজেই ওখানে খাওয়াটাই সবচাইতে ভালো হবে।
যেই ভাবা সেই কাজ তিনদিন পর আমি যখন ছোটফুফুর বাসায় যাচ্ছিলাম তখন প্রায় সন্ধ্যা নেমে এসেছিল। এবং ঔই সময়টাতে আমাদের বাজারে সিদ্ধ ডিম পাওয়া যেত। তো আমি সেই সিদ্ধ ডিমের দোকানে ডিমের দাম জিজ্ঞেস করতে সে বলল ৫ টাকা পিস। তো আমার ইচ্ছা ছিল আমি ষোলটা ডিম খাবো তাই জিজ্ঞেস করলাম ষোলটা ডিমের দাম কম করে কত নিবেন। সে তখন টোটালি আমার কাছ থেকে ১৫ টাকা কম নিল। এবং আমি ৬৫ টাকা দিয়ে ষোলো টা ডিম কিনে ফুফুর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করলাম। ফুফুর বাড়ি যাওয়ার পরে রাত্রিবেলায় খাবার খেতে ডাকলে আমি আর ঐদিন খাবার খাইনি। এদিকে ফুফাতো ভাই খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে আর এই সুযোগে আমি ডিমগুলো বের করে একে একে খেতে লাগলাম। বারোটা ডিম খাওয়া পর্যন্ত্য আমার অতটা খারাপ লাগছিল না। শেষের চারটা ডিম খেতে আমার ভালোই পানি খেতে হয়েছিল।
শেষ পর্যন্ত্য ১৬টা ডিম খেয়ে আমি শুয়ে পড়লাম। এবং ঠিক ৩০ মিনিট পর থেকে শরীর হালকা ঘামতে শুরু করলো। যদিও তখন শীতকাল ছিল। যখন শরীরে ঘামটা একটু বেশি দিচ্ছিল তখন রাত্রিতে একা একা পুকুরে গিয়ে বেশ কিছুক্ষণ গোসল করলাম তারপর শরীরের মধ্যে ভালোলাগা শুরু হলে পুনরায় বাসায় এসে ঘুমিয়ে পড়লাম। আর এই ছিল আমার ১৬ টা ডিম খাওয়ার স্মরণীয় ঘটনা। এতগুলো ডিম খাওয়ার পরেও আমার অন্যরকম প্রতিক্রিয়া হতে পারতো। কাজেই পুরুষ মানুষের জেদ জিনিসটা ভালো কিন্তু এরকম একঘেয়েমি জেদ জিনিসটা ভালো না । আমি তখন হয়তো রক্তের গরমে এই কাজটা করেছিলাম কিন্তুু এখন বুঝতে পারছি।এ ধরনের কাজ তখন করা ঠিক ছিল না। হয়তো হিতে বিপরীত হতে পারতো।💗🙏💗।
ফোনের বিবরণ
ক্যামেরা | স্যামসাং গ্যালাক্সি |
---|---|
ধরণ | গল্প । |
মডেল | এম ৬২ |
ক্যাপচার | @mahfuzur888 |
অবস্থান | রাজশাহী- বাংলাদেশ |
আমার পরিচয়
আমার নাম মোঃমাহফুজুর রহমান।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের একজন সুনাগরিক। সর্বদাই নিজেকে দেশের মঙ্গল কামনায় ব্যস্ত রাখি। আমার জন্মভূমিকে আমি মায়ের মতো ভালোবাসি।আমি ভ্রমণ করতে খুবি ভালোবাসি।তাছাড়া ফটোগ্রাফি করতে আমার ভালো লাগে,আর রান্না করা আমার নেশা, এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে নতুন কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। তাই আমি আমার সৃজনশীলতা ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে চাই। এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়,ধন্যবাদ সবাইকে।🌹💖🌹।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
https://x.com/mahfuzur888/status/1867598564161151364?t=Lz2I5i0876p_1JS1dMBRfQ&s=19
মাঝেমধ্যে একরুখা আর জিদ মানুষের ভালো কিছু করতে শেখায় আবার ক্ষতির দিকেও নিয়ে যায়। তবে ভালো যে ক্ষতির পরিমাণটা বেশি হয়ে থাকে যতটা জানি। তবে যাই হোক ভাইয়া আপনার পুরা ঘটনাটা পরিবেশ ভালই লাগলো। অজানা কিছু জানার সুযোগ হলো আজ।
১৬ টা ডিম খেয়েছিলেন, আপনার স্মৃতিময় এই গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আসলে একসাথে এতগুলো ডিম খাওয়া যায় এটা আমি কল্পনাই করিনি। আমি সর্বোচ্চ চারটা ডিম খেয়েছিলাম।
প্রথমে আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না যে আপনি ১৬ টি ডিম খেয়েছেন। তবে আপনার লেখাটি পড়ে বুঝতে পারলাম যে আপনি আসলেই খেয়েছেন কারণ খাওয়ার পরে হালকা শরীর ঘেমেছে এরপরে পুকুরে গোসল করেছেন এরপর আপনার শরীরটা একটু ভালো লেগেছে। তবে কি ধরনের গরমে যে আপনাকে লেগেছিল। যে আপনাকে এই শীতের মধ্যে পুকুরে গোসল করতে হয়েছে।