তাজমহল ও ঈসা খাঁর রাজধানী ভ্রমনের ২য় পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও কিন্তু বেশ ভালো আছি। আর এই পৃথিবীতে আমাদের সুস্থ এবং সুন্দর করে জীবন যাপন করতে হলে সকল হতাশা দুঃখ কষ্টগুলো দূরে ঠেলে দিয়ে মনটাকে ভালো রাখতে হবে। আর ভালো রাখার জন্য আমাদের মাঝে মাঝে সময় নিয়ে হারিয়ে যেতে হবে প্রকৃতির মাঝে । যেন নিজেকে ও নিজের মনকে ভালো রাখা যায়। নিজের মনের মধ্যে পুষে রাখা সকল কষ্ট এবং অশান্তিগুলোকে পেছনে ফেলে রেখে চলে যেতে হবে অজানা কোথাও। আমি ঘুরতে অনেক পছন্দ করি। আর তাই তো মাঝে মাঝে মনকে সতেজ ও উৎফুল্ল রাখতে ছুটে যাই দূর দূরান্তে কোন অজানা প্রকৃতির মাঝে। আজ তাই আপনাদের মাঝে আমি একটি ভ্রমন কাহিনী পোস্ট নিয়ে এলাম। আশা করি আমার মত আপনাদেরও ঘুরে বেড়াতে অনেক ভালে লাগে। আর তাই আমার আজকের এই ভ্রমন পোস্টি আশা করি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে চলুন দেখে আসি আমার আজকের ভ্রমন কাহিনী।

WELCOME.png

Banner credit --@mahfuzanila

কিছুদিন আগে আপুদের সাথে ঘুরতে গিয়েছিলাম সম্রাট শাহজাহানের মমতাজের জন্য ভালোবেসে গড়ে যাওয়া সেই বাংলার প্রেমের তাজমহল ও মিশরের পিড়ামিড দেখার জন্য। কখনও তাজমহল বা পিরামিড দেখা হয়নি। শুধু শুনেছি যে সোনারগাঁও নাকি দেখার মতো অনেক সুন্দর তাজমহল আর পিরামিড রয়েছে। আর তাই প্রকৃতির মাঝে নিজেকে কিছুটা সময় হারাতে চলে গেলাম সেখানে ঘুরতে।তো বাসা থেকে খুব সকাল সকাল বের হলাম ।খুব সকালে বের হলেই কি ঢাকা শহর কি আর ফাঁকা পাওয়া যায়? এখান রাস্তায় বের হলেই জ্যাম। তারপরও সকালেই বের হলাম।আর হাজার জ্যামের মাঝেও গিয়ে পৌঁছালাম। আর প্রথমে গেলাম মিশরের পিরামিড দেখতে। তবে যারা আমার প্রথম পর্ব টি পড়েননি তাদের জন্য নিচে প্রথম পর্বের লিংক দেওয়া হলো।

প্রথম পর্ব

image.png

তো সেদিন প্রথমে মিশরের পিরামিডে গিয়েই আমি এততা মুগ্ধ হয়েছি যে সেখানেই অনেকটা সময় পার করে নিলাম। কারন সেখানে গিয়ে আমি অনেক অজানা কিছু জানতে পারলাম এবং তার সাথে অনেক মনোমুগদ্ধকর জিনিস দেখে অনেকগুলো ফটোগ্রাফি ও অনেক ভিডিওগ্রাফি করে নিলাম।আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো মিশর পিরামিডে ঘুরে বেড়ানোর দ্বিতীয় পর্ব। এর আগে আমি এর প্রথম পর্ব আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি। তাহলে চলুন দেখে আসি আমার মিশর পিরামিড ভ্রমন এর দ্বিতীয় পর্ব। আসতে আসতে আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো তাজমহলের পর্বগুলোতে। যাই হোক সেদিন আমরা বেহুলার ঐখান থেকে বের হয়ে ঘুরতে থাকলাম। আর তার মাঝে কিছু ফটোগ্রাফি করতে লাগলাম। ঘুরতে ঘুরতে দেখলাম যে, একটি সুন্দর মেয়ের মূর্তি । যেটি সুন্দর কালারফুল করা মেয়েটি এবং তার আশে পাশে কি সুন্দর সবুজ গাছ এবং প্রকৃতির মাঝে মেয়েটি বাশিঁ বাজাচ্ছে। আসলে এই ধরনের কিছু দেখলে মনটা এমনিতেই ভালো হয়ে যায়।

image.png

আপনারা যেই গাড়িটি দেখছেন এটি অনেক পূরনো একটি গাড়ি। এর গায়ে লেখা আছে যে, এই গাড়িটি হচ্ছে ১১২ বছর আগের গাড়ি। হতে পারে এই গাড়ি হচ্ছে ব্রিটিশদের। যারা নাকি ক্ষুদিরামকে নির্মম ভাবে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে। হয়তো এই গাড়ি করেই ক্ষুদিরামকে ফাঁসির মঞ্চে আনা হয়েছিল। আসলে এত বছর আগের কোন জিনিস দেখলে অনেক ভালো লাগে। আর সেই জিনিসটি ঘিরে যদি কোন পুরনো ঘটনা থাকে যা আমাদের অজানা তাহলে সেটি নিয়ে দেখার বা জানার আরও আগ্রহ বেরে যায়। আর তাই আমারও গাড়িটি দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। কাছে গেলাম গাড়িটির চারিপাশে ঘুরে দেখলাম আর তার মাঝে কিছু ছবিও তুলে নিলাম।

image.png

এবার দেখতে পেলাম যে, একটি জেলখানা। দেখেতে পেলাম যে, সবাই ওইটার মধ্যে গিয়ে ছবি তুলছে আর সবাইকে দেখে মনে হচ্ছে যে,সবাই ঐ জেলখানা দেখে আনন্দ পেয়েছে। তারা খুব ইনজয় করছে। আবার কেউ আগ্রহ হয়ে দেখছে। আবার কেউ ভেতরে গিয়ে ছবি তুলছে। কেউ বা ভিডিও গ্রাফি করছে। আর সবার আনন্দ দেখে আমারও ভীষণ ভালো লাগছিল। আর এই আনন্দর মাঝেও হঠাৎ ক্ষুদিরামের কথা মনে পড়ে গেল।তাই জেলখানা দেখে কিছুটা মন খারাপ লাগছিল।ক্ষুদিরামকে তো দেখা হয়নি। এখানে ক্ষুদিরামের ফাঁসির মঞ্চ আর এই জেলখানা দেখে হঠাৎ ভাবছিলাম হয়তো এই জেলখানায় ক্ষুদিরাম কে এনে রাখা হয়েছিল।

image.png

এবার মনে মনে ভাবলাম যে, আমিও একটু সবার মত করে জেলখানার মধ্যে গিয়ে একটু দেখি কেমন লাগে। তারপর আমিও গেলাম জেলখানার ভেতরে। আর যখন তার মধ্যে গেলাম তখন আমার ক্ষুদিরামের একটি গানের কথা মনে পড়ে গেলো। গানটি আমাদের সবার প্রিয়। গানটি হচ্ছে আমি বন্দিকারাগারে। আছি গো মা বিপদে বাহিরের আলো চোখে পরে না মা। এত আলো আর খোলামেলা হলেও জেলখানার মধ্যেই আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিল। আর যারা সত্যি এমন অন্ধকার এবং নিস্তব্ধ কারাগারে থাকে তাদের অবস্থার কিছুটা অনুভুতি আমি পেয়েছিলাম সেদিন।

image.png

এবার যেখানে যাবো সেটা হচ্ছে মিশরের পিরামিডের অনুকরণে রাজা-রাণীদের মৃতদেহের মমি পোশাক ও অলংকার রাখার স্থান।এখানে আপু আগে গিয়েছিল ও বলছিল এর আগের বার গিয়ে নাকি ভয় পেয়েছিল। তাই আমিও ভাবছিলাম যে, যাবো কিনা। তারপর ভাইয়া যখন বললো যে, কোন ভয় নেই তাই চলে গেলাম ভেতরে। আর গিয়ে দেখি যে, ঘুটঘুটে অন্ধকার আর মমিগুলো দেখে সত্যি এই অন্ধকারে আমার ভয়ই লাগছিল।কিছুই দেখা যাচ্ছে না। তবে আমি মমিগুলোর ফটোগ্রাফি করিনি। আমরা যারা ওখানে গিয়েছি তারা সবাই নিজেদের মোবাই এর আলো জ্বালিয়ে সকলকিছু অনুসন্ধান করছিলাম। আর সবাই ওই অন্ধকারে একটি ভয়ংকর আওয়াজ করছে। শুনেছি যে, সন্ধ্যার সময় নাকি ঐ স্থানটার ভেতরে এমন একটা ভয়ংকর আওয়াজ হয়। আর যারা বেড়াতে যায় তারা ভয় পেয়ে যায়।

image.png

এবার একে একে আরও অনেক কিছু দেখতে পেলাম। এবার দেখছি রাণীদের পোশাক রাখা আছে। অন্ধকারে ভয় লাগছিল আর এই অন্ধকারে হাত কাপতে কাপতে কিছু ছবি তুললাম আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো বলে। আসলে কোথাও না গেলে কোন কিছু দেখা বা জানা যায় না। তাই মাঝে মধ্যে কোথাও গেলে অনেক কিছু জানা বা দেখা যায়।তবে আমার এখান ঘুরতে গিয়ে ভালোই লেগেছে। আপনারাও চাইলে ঘুরে আসতে পারেন।

image.png

তারপর বহু পুরনো রাণী বা মহিলাদের অলংকার কিছু জিনিস দেখতে পেলাম এই ধরনের অলংকার এখন দেখতে পাওয়া যায় না। অন্ধকারের মধ্যে যেনো ঝলমল করছে। ইচ্ছে হচ্ছিল যে, অলংকারগুলো একটু স্পর্শ করতে এবং এত আগের পুরনো কিছু স্মৃতির অনুভুতি নিতে। চোখের সামনে ভাষছিল সেই আগের দিনের রাণীদের চেহারা যা কিছু ছবির মধ্যে দেখেছিলাম। যেমন নবাব সিরাজ-উদোল্লাহ এই ছবিটি আমার খুব প্রিয় একটি ছবি।

image.png

এবার দেখলাম আরও একটি ছেলের মূর্তি সাজিয়ে রেখেছে মাথায় একটি টুকরি দিয়ে। আসলে আমরা বাঙ্গালি আর আমাদের দেশে এত সুন্দর সুন্দর ঘুরতে যাওয়ার স্পটগুলোতে এত মনমুগ্ধকর বৈচিত্র জিনিস থাকবে না তা কি কখনও হয় নাকি। আর এই অপুরূপ সৌন্দর্য দেখে যেনো নিজেকে হারিয়ে দিতে ইচ্ছে করছিল। মনে হচ্ছিল যেনো আরও অনেকটা ক্ষন ধরে একি জিনিস বার বার দেখতে থাকি।

কেমন লাগলো আমার আজকের এই তাজমহল আর মিশরের পিরামিড ভ্রমন এর দ্বিতীয় পর্ব ।আশা রাখি আপনাদের সবার অনেক ভালো লেগেছে। আমার আজরের এই পোস্ট। সবার জীবনের মঙ্গল কামনা করে আমার আজকের ব্লগটি এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন।

পোস্টের বিবরন
পোস্টের ধরনভ্রমন
ডিভাইসVIVO
মডেলVIVO-Y22S
স্থাননারায়ণগঞ্জ, বাংলাদেশ

পরিচিতি

আমি মাহফুজা আক্তার নীলা আমার ইউজার নাম @mahfuzanila আমার পছন্দ ঘোরাঘুরি ভ্রমন করা ,ছবি আঁকা, বিভি ন্ন ধরনের মজার মাজার গল্পের বই পড়তে, ফটোগ্রাফি,ডাই প্রজেক্ট বানাতেও দারুণ পছন্দ করি। আর বেশী পছন্দ করি মজার রেসিপি করতে,মন খারাপ থাকলে গান শুনতে ও গান গাইতে আর সবচেয়ে বেশী ঘুমাতে।

❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 3 months ago 

বেশ সুন্দর কিছু মূূূহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করে নিলেন। সেদিন বেশ ভালো সময় কেটেছিল। এমন সুন্দর করে পিরামিড ভ্রমন কাহিনী আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু।

 3 months ago 

ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 3 months ago 

আপনি আজকে তাজমহল ও ইসা খাঁর রাজধানী ভ্রমণের খুবই সুন্দর একটি মুহূর্ত শেয়ার করেছেন৷ আসলে এরকম ঘটনা গুলো বেশিরভাগ সময় বইয়ের মধ্যে দেখা হতো এবং সেখানে কিছু ছবির মাধ্যমে সে বিষয়গুলো ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হতো৷ তবে আজকে আপনি আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে অনেক কিছুই শেয়ার করেছেন৷ অনেক সুন্দর সুন্দর কিছু মুহূর্ত উপভোগ করে তা আমাদের মাঝে ফুটিয়ে তুলেছেন৷ অসংখ্য ধন্যবাদ৷

Coin Marketplace

STEEM 0.23
TRX 0.12
JST 0.029
BTC 66541.28
ETH 3559.45
USDT 1.00
SBD 3.05