সুস্বাদু রসমঞ্জুরি তৈরির রেসিপি || ১০% বেনিফিশিয়ারি shy-fox এর জন্য
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন আরো একটি রেসিপি পোষ্ট নিয়ে। রেসিপিটি হচ্ছে রসমঞ্জুরি। আর এই রসমঞ্জুরি নিয়ে আমি ছোট্ট একটি গল্প বলতে চাই। আমাদের এখানে বেশ কয়েকদিন থেকে বৃষ্টি চলছে। আর তাই বৃষ্টির কারণে শপিং করতে গেলেও খুব বেশি একটা মজা পাচ্ছিলাম না। সেদিন আমার ছেলেকে রেখে বাজারে গিয়েছি শপিং করতে। শপিং করা শেষে আমরা বাজার থেকে ফেরার সময় বৃষ্টিতে কাক ভেজা হয়ে বাসায় প্রবেশ করলাম। আমার ছেলে হঠাৎ করে মোটরসাইকেলের শব্দ শুনতে পেয়ে বাইরে এসে আমাদেরকে ভেজা অবস্থায় দেখতে পেয়ে, বায়না ধরল তাকে নিয়ে বাজারে যেতে হবে। আমরা বললাম বাজারে যাওয়া যাবে না প্রচন্ড বৃষ্টি পড়ছে, কিন্তু সে কোন কথাই মানতে চাচ্ছেনা। যদিও বা সে আমাদের কথা শুনে একটু মানার চেষ্টা করল কিন্তু তখনই আবার নতুন আরেকটা বায়না ধরে বসলো। তার কথা আমি বাজারে যাব না, কিন্তু আমি এক্ষুনি রসমঞ্জুরি খাব। আমরাতো পড়ে গেলাম মহা বিপদে। এই ঝড় বৃষ্টির রাতে বাজারে কিভাবে গিয়ে রসমঞ্জুরি কিনে আনব তাই চিন্তা করতে লাগলাম। তখনই আমার অর্ধাঙ্গিনী চটজলদি রসমঞ্জুরি বানিয়ে ফেলার চিন্তাভাবনা করল। যেই কথা সেই কাজ আমরা দুজনে মিলে রসমঞ্জরী তৈরি করতে কাজ শুরু করে দিলাম। আর সেই বায়নার রসমঞ্জুরি রেসিপিটি আজ আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। যদিওবা রসমঞ্জুরি তৈরি করার উপকরণ গুলো খুবই সীমিত ছিল তবুও এই রসমঞ্জুরি খেতে অনেক অনেক সুস্বাদু হয়েছিল। তো বন্ধুরা চলুন দেরী না করে শুরু করা যাক সেই বায়নার রসমঞ্জুরি তৈরীর রেসিপি।
ক্রমিক নং | উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | গুঁড়ো দুধ | ১ কাপ |
২ | গাভীর দুধ | ১ লিটার |
৩ | চিনি | পরিমাণ মতো |
৪ | দারচিনি | ২ টুকরা |
৫ | সাদা এলাচ | ২টি |
" ধাপ : ১ "
প্রথমে উপকরণে নেয়া ১ লিটার গাভীর দুধ থেকে অর্ধেক ৫০০মিলিলিটার দুধ লেবুর সাহায্যে ছানা করে নিতে হবে।
" ধাপ : ২ "
এবার ছানাগুলো কে ছাকনির সাহায্যে ভালোভাবে ছেঁকে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন এক ফোঁটা পানিও না থাকে।
" ধাপ : ৩ "
এবার ভালোভাবে ছেঁকে নেওয়া দুধের ছানা গুলো হাতের তালু দিয়ে ভালোভাবে চেপে চেপে ময়ান করে নিতে হবে। এমনভাবে ময়ান করতে হবে যাতে করে দুধের ছানা গুলো একদম সফট হয়ে যায়। ভালোভাবে সফট হলে সেই রসমঞ্জুরি খেতে অনেক সুস্বাদু হবে। তাই একটু সময় নিয়ে ভালোভাবে দুধের ছানাগুলোকে ময়ান করে নিতে হবে।
" ধাপ : ৪ "
এবার ময়ান করে নেয়া ছানা গুলোকে রসমঞ্জুরির রূপ দেয়ার জন্য হাতের তালুতে করে ছোট ছোট বলের মত গোল করে নিতে হবে।
" ধাপ : ৫ "
এবার চুলায় কড়াই বসিয়ে দিয়ে পরিষ্কার ঠান্ডা পানি ঢেলে দিতে হবে। এবং ঢেলে দিয়ে পানি গুলো ফুটিয়ে নিতে হবে।
" ধাপ : ৬ "
এবার ফুটন্ত পানিতে বানিয়ে নেয়া রসমঞ্জুরির বল গুলো কড়াইতে ঢেলে দিতে হবে। তবে একটু সাবধানে ঢেলে দিতে হবে যাতে রসমঞ্জুরির বল গুলো ভেঙে না যায়। প্রায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট বলগুলোকে ভালোভাবে সেদ্ধ করে নিতে হবে। বলগুলো সিদ্ধ হয়ে গেলে আমি এবার রসমঞ্জুরির বলগুলোকে ছাঁকনিতে ছেঁকে নিব।
" ধাপ : ৭ "
তারপর আবার চুলায় কড়াই বসিয়ে দিয়ে উপকরণে নেয়া ছানা করার পরে অর্ধেক দুধটুকু কড়াইতে ঢেলে দিতে হবে। এবং পরিমাণমতো চিনি ও উপকরণে নেয়া এককাপ পাউডার দুধ কড়াইতে ঢেলে দিতে হবে। তারপর দুধগুলোকে জাল করে করে ঘন করে নিতে হবে।
" ধাপ : ৮ "
এবার দুধ ঘন হয়ে আসার পর, পূর্বে বানিয়ে নেয়া রসমঞ্জুরীর বলগুলো ঘন দুধে ঢেলে দিতে হবে। তারপর ঘনদুধ ও রসমঞ্জুরীর বল সহ প্রায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট জাল করে নিতে হবে।
" ধাপ : ৯ "
জাল করে নিলেই তৈরি হয়ে গেল আমাদের সুস্বাদু রসমঞ্জুরি।
রসমঞ্জরী গুলো বানিয়ে নেয়ার পর অন্ততপক্ষে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত ভিজিয়ে রাখতে হবে। কিন্তু আমি যেদিন এই রসমঞ্জুরি তৈরি করেছিলাম সেদিন আমার ছেলের কারণে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা অপেক্ষা করার সময় ছিল না। আর তাই বানানোর সাথে সাথেই আমার ছেলের বায়না পূরণের জন্য তাকে খাওয়াতে বসে গেলাম। আমার এই সুস্বাদু রসমঞ্জুরি রেসিপিটি আশা করি আপনাদের সকলের কাছেই ভালো লাগবে। আমার তৈরি রসমঞ্জুরী দেখতে যতটা সুস্বাদু দেখাচ্ছে খেতেও ততটা সুস্বাদু হয়েছিল। আর তাই আপনাদের মাঝে আমি এই রেসিপিটি শেয়ার করছি।
আশা করি আমার রেসিপি পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ সুন্দর বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
আপনি সুস্বাদু রসমঞ্জুরি রেসিপিটা অসাধারণ ভাবে তৈরি করেছেন। দেখে আমার লোভ লেগে গেল। আপনি চমৎকার ভাবে এটা উপস্থাপন করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই ধরনের রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
রেসিপিটি অনেক অনেক সুস্বাদু হয়েছিল ভাইয়া। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সুস্বাদু রসমঞ্জুরি তৈরির রেসিপি দেখে খুবই মজাদার মনে হচ্ছে। আপনি খুবই দক্ষতার সাথে ধাপে ধাপে উপস্থাপন করলেন। আপনার উপস্থাপন দেখে আমি শিখতে পারলাম। আসলে এই রেসিপিটি আমিও পরে কোনদিন তৈরি করব ইনশাল্লাহ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য দিয়ে আমার পাশে থাকার জন্য। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
ঈদ না আসতে এত সুন্দর রেসিপি প্রস্তুত করে ফেললেন আপনি। এত সুন্দর রেসিপি দেখলে তো যে কেউ লোভে পড়ে যাবে। সত্যি অনেক লোভনীয় হয়েছে। এত সুন্দর দক্ষতা দেখে আমার খুবই ভালো লাগলো ভাই।
ছেলের বায়নার জন্য ঈদের আগে রেসিপিটি তৈরি করতে বাধ্য হয়েছিলাম। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
বাজার নিয়ে যাও না হলে রসমঞ্জুরি খাব আয়ান বাবু বেশ ভালোই জেদ ধরেছে হাহাহা। যাইহোক আয়ান বাবুর জেদের কারণে এত সুন্দর রসমঞ্জুরি তৈরির রেসিপি আমরা দেখতে পারলাম। রসমঞ্জুরি গুলো দেখে মনে হচ্ছে খেতে বেশ সুস্বাদু হয়েছে। ধন্যবাদ মামা এত সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
সত্যিকার অর্থেই আয়ান বাবুর প্রচুর জেদ বেড়ে গেছে। তাই তো ওর জন্য বাধ্য হয়ে রেসিপিটি তৈরি করতে হয়েছে। সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সুস্বাদু রসমঞ্জুরি তৈরির রেসিপি দেখি অনেক সুস্বাদু মনে হচ্ছে। এই রেসিপিটি যদি খেতে পারতাম তাহলে খুবই ভাল লাগত। আপনি খুবই সুন্দরভাবে ধাপে ধাপে উপস্থাপন করলেন। আপনার রেসিপির উপস্থাপন দেখে আমিও শিখতে পারলাম। শুভকামনা রইল ভাইয়া।
আমার বাসায় চলে আসেন ভাইয়া, এই সুস্বাদু রেসিপি আবারো তৈরি করে খাওয়াবো আপনাকে। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
আপনার মাধ্যমে আজ একটি দারুন রেসিপি শিখতে পারলাম। আপনি খুব সুন্দর ভাবে রসমঞ্জুরি রেসিপি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। রসমঞ্জুরি খেতে আমার খুবই ভালো লাগে এটি স্বাদ মুখে লেগে থাকার মত। এত চমৎকার একটি রেসিপি আপনি খুব সুন্দর ভাবে ধাপে ধাপে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন এবং সেইসাথে নিখুঁতভাবে বর্ণনা করেছেন। আপনার রেসিপি দেখে আমার খুবই ভালো লেগেছে। এত সুন্দর একটি রেসিপি ধাপে ধাপে আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
সত্যিই তাই আপু, রসমঞ্জুরির স্বাদ মুখে লেগে থাকার মতই। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সাধের রসমালাই, চমৎকার ভাবে উপস্থাপন করেছেন, একদম দেখতে দোকানের রসগোল্লার মতই মনে হচ্ছে পারফেক্ট রসগোল্লা তৈরি করেছেন। আপনার জন্য রইল অনেক অনেক শুভকামনা।
যখন রেসিপিটি তৈরি হয়েছিল তখন পর্যন্ত বুঝতে পারিনি ঠিক কতটুকু সাধ হয়েছে। কিন্তু যখন খেয়েছি ঠিক তখনই বুঝতে পারলাম একদম দোকানের রসমঞ্জুরীর মতই একই স্বাদ হয়েছে। ধন্যবাদ
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Please check my new project, STEEM.NFT. Thank you!
রসমঞ্জুরি রেসিপি টা আমার কাছে সম্পূর্ণ নতুন ভাইয়া। এর আগে কখন আমি দেখেনি এবং এর নামও শুনিনি ।আপনার রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে এটি খেতে খুবই সুস্বাদু এবং মজাদার। আমার তো দেখে খুব খেতে ইচ্ছে করছে ভাইয়া ।আপনার কাছ থেকে শিখে নিয়েছে ।আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ।আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
খুবই সুস্বাদু একটি রেসিপি রসমঞ্জুরি। তাই যদি কখনো না খেয়ে থাকেন, তাহলে আমার রেসিপিটি অনুসরণ করে একদিন তৈরি করে খাবেন। ধন্যবাদ
আপনার ছেলে বায়না ধরাতে রসমঞ্জুরি খেতে পারলেন ভাইয়া । পাঁচ-ছ ভিজিয়ে না রেখে কি হয়েছে দেখতে কিন্তু খুবই লোভনীয় হয়েছে। মনে হচ্ছে যে খুবই মজাদার হয়েছিল খেতে। তাছাড়া রসমঞ্জুরি তৈরির প্রতিটি ধাপ খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন । শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
জি আপু, ছেলের বায়না পূরণের জন্যই এই রসমঞ্জুরি রেসিপি তৈরি করেছিলাম। সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।