হাসপাতালে গিয়ে ছেলেকে রেবিক্স এর ভ্যাকসিন দেয়ালাম || ১০% বেনিফিশিয়ারি shy-fox এর জন্য
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন আরেকটি পোস্ট নিয়ে। এইতো কিছুদিন আগে আমার একমাত্র ছেলে, বয়স ৩ বছর ৬ মাস, তার নাম মো: আরছালান ইসলাম (আয়ান) সোনামানিক কে নিয়ে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল থেকে ঘুরে এলাম তাও আবার একটি বিড়ালের কারণে। বিড়ালটি ছিল আমার পাশের বাড়ির। এই বিড়ালটির কারনে আমাদেরকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। আমার ছেলে সন্ধ্যাবেলায় বাইরে উঠানে হাঁটা চলাচলের সময় বিড়ালটি হঠাৎ করে আমার ছেলের পায়ে আচর কেটে বসে। আমার ছেলে তখন ভীষণ ভয় পেয়ে যায়, আর আমি তখন দৌড়ে গিয়ে দেখি পায়ের কিছুটা জায়গায় রক্ত বের হয়ে গেছে। তখনই বুঝতে পারলাম আমার ছেলেকে হয়তোবা রেবিক্স ইঞ্জেকশন টা দিতে হবে। আর তাই পরের দিন আমার ছেলেকে নিয়ে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে পৌঁছাই।
হাসপাতালে পৌছানোর পরে আমি টিকিট কাউন্টারে গিয়ে পাঁচ(৫৳) টাকা দিয়ে একটি টিকিট সংগ্রহ করি। যেহেতু এই হাসপাতালটি সরকারি হাসপাতাল তাই যেকোনো ধরনের সেবা পাওয়ার জন্য শুধু মাত্র পাঁচ (৫৳) টাকা তে টিকিট কাটলে যথাযথ সেবা পাওয়ার আশা করা যায়। আর তাই আমিও আমার ছেলেকে এমার্জেন্সিতে কর্মরত একজন ডাক্তারকে দেখানোর জন্য পাঁচ(৫৳) টাকা দিয়ে একটি টিকিট কেটে নেই। টিকেট সংগ্রহের সময় আমি নিজের একটি সেলফি তুলে নেই।
টিকেট সংগ্রহের পর কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার ছেলেকে দেখার পরে, আমার ছেলেকে রেবিক্স ইনজেকশন দিতে হবে বলে, আমাদেরকে কক্ষ নম্বর ৪, জেলা জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র কক্ষে যাবার কথা বলে। আর তাই সেই কক্ষে গিয়ে আমার ছেলের ছবি তুলে নেই। তাকে কিছুটা রিল্যাক্স হওয়ার জন্য খেলাধুলা করতে বলি। আর যথারীতি আমার ছেলে সেই রুমে গিয়ে হাত-পা নেড়ে চেড়ে খেলতে শুরু করে দিল।
আমার ছেলেটি যখন রুমের ভেতরে খেলাধুলা করছিল তখন সেখানে কর্তব্যরত নার্সটি উপস্থিত ছিল না। কিছুক্ষণের মধ্যেই নার্সটি যখন রুমে চলে এল, তখন তাকে ইনজেকশন দেওয়ার জন্য আমার ছেলেকে তৈরি হতে বলল। নার্সটি খুব আদরের সহিত আমার ছেলেকে তার কাছে ডেকে বসালো। আমার ছেলেও খুবই সাহসিকতার সাথে নার্সের কাছে গিয়ে টুলের উপর বসে পড়ল। আমি আর আমার স্ত্রী দুজনে দাঁড়িয়ে থেকে আমার বীর বাহাদুর ছেলের সাহসিকতা দেখতে লাগলাম।
আমার বীর বাহাদুর ছেলে যখন এক হাতে ইনজেকশন দেওয়া শেষ হয়েছে ঠিক তখনই ঘটে গেল মহা বিপত্তি। তখন সে অন্য হাতটিতে আর কোনভাবেই ইনজেকশন দিতে রাজি হচ্ছিল না। তাই একপ্রকার জোর করেই অন্য হাতটিতেও ইনজেকশন টি দিয়ে দিতে হলো। ইনজেকশন দেওয়া শেষ হয়ে গেলে সে তার মায়ের কোলে চড়ে ভীষণ রকম ভাবে কান্না করতে শুরু করলো। কিছুক্ষণ কান্নাকাটি করার পরে সে আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলো।
আপনাদের জ্ঞাতার্থে কিছু কথা বলতে চাই, আমার ছেলেকে যখন রেবিক্স ইনজেকশনের কথা বলল কর্তব্যরত ডাক্তার, তখনই জানতে পারলাম রেবিক্স ভ্যাকসিন এর নিয়মাবলী। এই ভ্যাকসিন দুই হাতে দুটি করে ইনজেকশন দিতে হয়। এইভাবে বুস্টার ডোজ সহ মোট চারবার ইনজেকশন দিতে হবে। এই ভ্যাকসিন টি ২৮ দিনের মধ্যেই সম্পন্ন করতে হয়। এই ভ্যাকসিনটি দুই হাতে দুটি করে মোট ৮টি ইনজেকশন দিতে হবে। তাই আপনাদের সবাইকে অনুরোধ করে বলছি, আপনাদের সোনামণিদের একটু সাবধানে রাখবেন যাতে করে কখনো কোন কুকুর,বিড়াল, অথবা ইঁদুরে আঁচড় না কাটে। তাহলে হয়তোবা আমাদের মত এরকম ভোগান্তির শিকার কাউকে হতে হবে না। আর বিনিময় আমার ছেলের মত এত কষ্ট কাউকে সহ্য করতে হবে না। তাই আবারও বলছি আপনারা আপনাদের ছোট ছোট সোনামণিদের খুবই সাবধানে দেখভাল করে রাখবেন।
আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ সুন্দর বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
খুব ভালো কাজ করেছেন। না হলে মনের শঙ্কা এবং ভয় থেকে যেত। তবে কিছু বিড়াল আছে যেগুলো অনেক ভয়ঙ্কর। এগুলো অনেক জীবাণু বহন করে। আশাকরি ছোট সোনা মনি সকল বিপদমুক্ত থাকবে।
ইনশাআল্লাহ, আল্লাহর রহমতে টিকা দেওয়ার কারনে আমার ছেলে সকল বিপদ থেকে মুক্ত বলে আশা করছি। ধন্যবাদ।
হাহাহা। আমার চাচ্চু তো বুঝেনি তাকে ইনজেকশন দেয়ার জন্য এখানে এনেছেন। দিব্যি মনের সুখে খেলছিল। আমরাও ছোটবেলায় অনেক কান্নাকাটি করতাম এই সুই এর ভয়ে। অনেক বড় বড় মানুষ আছে যারা সুই কে ভয় পায়। রেবিক্স এর টিকা দিয়ে নিয়েছেন এতে ভাল হয়েছে। অনেক ধন্যবাদ ভাই আমাদের সাথে শেয়ার কররা জন্য
ঠিকই বলেছেন ভাই, আপনার চাচ্চু ইনজেকশন কি জিনিস তা সে বুঝতেই পারেনি। আর যখন বুঝতে পেরেছে তখন সে আর ইনজেকশন দিতে দিচ্ছিল না। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ঠিক বলেছেন মিতা আমাদের সবার সন্তানদের খেয়াল রাখা উচিত চমৎকার কিছু কথা বলেছেন। আপনার ছেলের জন্য দোয়া রইল। খুব শিগগিরই সুস্থ হয়ে উঠবে ইনশাআল্লাহ। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময় এই কামনাই করি।
মিতা, আপনার দো'আ আমার ছেলের উপর রহমত বর্ষণ করুক। এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Please check my new project, STEEM.NFT. Thank you!
খুব ভালো কাজ করেছেন ইনজেকশন দিয়ে কারণ না দিলে পরবর্তীতে প্রবলেম হতে পারে। বাবুর ইনজেকশন দেওয়ার মুহূর্ত খুবই অসাধারণ। আর আমার ছোটকালে সূই দেখলে অনেক ভয় পেতাম এবং কান্নাকাটি করতাম । বাবু ভালো থাকুক সুস্থ থাকুক এ আশাবাদ ব্যক্ত করি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য। আপনার দোয়ায় আমার ছেলে যেন সব সময় সুস্থ ও সবল থাকতে পারে। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
৫ টাকার টিকিট কেটে আপনি আপনার ছেলের জন্য ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আসলে সদর হসপিটালে ৫ টাকা দিয়ে রেবিস ভ্যাকসিনসহ অন্য অন্য সেবা দেওয়া হয়। এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে বিড়াল, কুকুর থেকে সাবধানে থাকাই ভালো। যাইহোক আপনার এবং আপনার ছেলের জন্য সুস্থতা কামনা করছি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার অসাধারণ সুন্দর মন্তব্যের জন্য। আপনার কামনায় আমার ছেলে যেন সর্বদায় সুস্থ ও সুন্দর থাকতে পারে। ধন্যবাদ।
খুব ভালো করেছেন ইঞ্জেকশন দিয়েছেন। আসলে বিড়ালের মধ্যে প্রোবলেম থাকতেই পারে তাই এসব বিষয়য়ে রিক্স না নেওয়াই ভালো। আপনি একজন সচেতন পিতার কাজ করছেন। ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে। আপনার ছেলে মাশাল্লাহ অনেক কিউট। শুভকামনা রইলো।
ভাইয়া রিক্স নিতে চাইনি বলেই টিকা দিতে নিয়ে গিয়েছিলাম। অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আপনি আজকে আমাদের সাথে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য দিয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন এ জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাই এবং আপনি আপনার ছেলেকে ভ্যাকসিন দিয়েছেন সেই মুহূর্তগুলো এবং তা বিস্তারিত ভাবে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা।
আমার মত ভোগান্তির শিকার যাতে কেউ না হয় তার জন্যই এই পোস্টে আমি রেবিক্স টিকার সম্পর্কে তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি মাত্র। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ভালো হয়েছে । এখন চিন্তা মুক্ত থাকতে পারবেন। প্রথম ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরে মনে হয় ব্যাথা পেয়েছিলো তাই দ্বিতীয়টা দিতে চায়নি। প্রথম টা দেওয়ার সময় ছবি দেখে বুঝলাম ভালোই সাহসী ছিলো সে।
জি ভাইয়া, প্রথমে সে সাহস দেখিয়ে টিকা দিতে একাই বসে ছিল কিন্তু পরক্ষণেই ব্যথা পাওয়ার পর আরেকটি ইঞ্জেকশন কোনভাবেই দিতে দিচ্ছিল না। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।