ঢাকা ঘুরে আসার স্মৃতি - পর্ব ২ || ১০% বেনিফিশিয়ারি shy-fox এর জন্য
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আজ আমি ঢাকা ঘুরে আসার স্মৃতি পর্ব ২ নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হলাম। আমি ঢাকায় গিয়েছিলাম দুটি কাজের উদ্দেশ্যে। এক হচ্ছে আমার ব্যবসায়িক কনফারেন্স যোগদান করা এবং অপরটি আমার মিসেসের কলিগের হাজবেন্ড অর্থাৎ দুলাভাইকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে দেখতে যাওয়া। অনিবার্য কারণবশত আমার ব্যবসায়িক কনফারেন্স স্থগিত করার কারণে সেখানে আর আমার যাওয়া হয়ে ওঠেনি। তাই আমরা দুপুরবেলায় দুলাভাইকে দেখার জন্য জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে গিয়ে উপস্থিত হই।
আমার এই দুলাভাই যখন প্রথম দিন অসুস্থ হয়েছিল আমাদের কুড়িগ্রামে। তখন তাকে ঢাকা দ্রুত নিয়ে আসার জন্য অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয়েছে। ঈদের পর পরে কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকা যাওয়ার জন্য কোন প্রকারের বাসের টিকেট সংগ্রহ করতে পারেনি আবার ট্রেনের টিকিটও সংগ্রহ করতে পারেনি। আর তাই তাঁকে সৈয়দপুর থেকে প্লেনের মাধ্যমে খুব দ্রুতই ঢাকা নিয়ে আসা হয়েছিল চিকিৎসার জন্য।
এই হাসপাতালে আমি আগে কখনো আসিনি। এই প্রথম আমি হাসপাতালটি দেখলাম। আমার দুলাভাইরা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সপ্তম তলায় ছিল। আর তাই আমরা লিফটে করে সোজা সপ্তমতলা গিয়ে উঠলাম। আমার জানামতে সরকারি হাসপাতাল গুলো খুবই নোংরা হয়ে থাকে। কিন্তু আমরা যখন এই হাসপাতালে সপ্তম তলায় গিয়ে পৌছালাম তখন দেখে বুঝতে পারলাম হাসপাতালটি অনেক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। অন্যান্য রোগীদের চাইতে হৃদরোগীদের প্রতি একটু আলাদা যত্ন এবং মনোরম পরিবেশ দিয়ে থাকে হাসপাতালটি।
আমরা যখন হাসপাতালে গিয়ে পৌঁছাই আমাদের দেখে আমার মিসেসের কলিগ ও দুলাভাই আমাদের দুজনকে দেখে ভীষণ খুশি হয়। তারা দুজনেই আমাদের দেখে খুবই আনন্দের সাথে কুশল বিনিময় করা শুরু করলো। আমরা যখন বললাম দুলাভাইকে দেখার জন্যই আমরা ঢাকায় এসেছি এবং সাথে অন্য একটি কাজ নিয়ে। তখন দুলাভাই আমাদের কথা শুনে খুবই খুশি হয়। বিশেষ করে হাসপাতালে তাদের সাথে আত্মীয়-স্বজন খুব কমই ছিল যার কারনে আমাদেরকে দেখে তাদের আনন্দের সীমা থাকলো না। যেহেতু দুলাভাই অসুস্থ তাই সে হাসপাতালের রুমে শুয়ে শুয়ে বিষণ্ণতায় ভুগছিল। তার বিষন্নতা দূর করার জন্য আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করে তাকে বুঝিয়ে বলেছিলাম।
আমি হাসপাতাল এ দুলাভাইয়ের সাথে কথা বলতে বলতে একসময় রুমটির ব্যালকনিতে এসে দাঁড়িয়ে ঢাকা শহরকে এক পলক দেখে নিচ্ছি। এমনই সময় দেখতে পেলাম সবুজের সমারোহের গাছ গুলোর উপর দিয়ে বড় বড় দালান কোঠা উঁকি মেরে আছে। আবার নিচেরদিকে সপ্তম তলা থেকে হাসপাতালের সামনে গাড়িগুলো সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে ছিল সেই দৃশ্যটি দেখতে আমার কাছে ভীষণ রকম ভালো লেগেছে। আর তাই আমি আপনাদের মাঝে দৃশ্য টুকু দেখানোর জন্য দুটি ছবি তুলে নেই।
দুলাভাইকে সমস্ত চেক আপের পর বুকে দুটো রিং বসিয়ে দেওয়া হবে কথাটি শুনে খুবই হতাশা গ্রস্থ হয়। আমরা ব্যাপারটি জানতে পেরে দুলাভাইকে আশ্বস্ত করলাম বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেক উন্নত। আর তাই তার চিকিৎসা সঠিক পথে এগিয়ে চলছে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করলাম। দুলাভাই যদিও বা নিজেকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছিল তবুও তিনি বারবার বুকে রিং পরানোর বিষয়ে ভয় পেয়ে যাচ্ছিল। আমরা দুলা ভাইকে বললাম আল্লাহ যা করবেন মঙ্গলের জন্যই করবেন। আর আল্লাহ আপনার সাথে ভালো কিছু রেখেছেন তাকে বোঝানোর চেষ্টা করলাম।
দুলাভাইয়ের সাথে অনেকটা সময় পার করার পর আমরা আমাদের অন্য একটি কাজের জন্য বেরিয়ে পড়ি। আজ এখানেই শেষ করছি, দেখা হবে আগামী পর্বে।
আশা করি আমার ঢাকায় ঘোরার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ সুন্দর বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Please check my new project, STEEM.NFT. Thank you!
আপনার ঢাকা ভ্রমণ এর চ্যাপ্টার টু তে এসে আপনার ব্যাবসায়িক কনফারেন্স পন্ড হলো এবং আপনি আপনার মিসেসের কলিকের হাজবেন্ডর মানে আপনার দুলাভাইয়ের সাথে দেখা করলেন তাকে সান্ত্বনা দিলেন। এবং কি পড়ে আমার কাছেও ভাল লাগছে যে একজন অসুস্থ রোগীকে আপনারা অন্তত একটু আনন্দ দিতে পেরেছে এটাই হচ্ছে সার্থকতা। আমি আপনার চ্যাপটার ওয়ান পড়েছিলাম কিন্তু কমেন্ট করতে যাব ঠিক তখনই আমার হাতে একটা কাজ বেড়ে যায়। তাই আর কমেন্ট করা হয়নি। অসাধারণ ছিল আপনার মনের ভাবগুলো, আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
ভাই আমার প্রতিটা পোস্ট মনোযোগের সাথে পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
কি সৌভাগ্য বন্ধু! ফিরে এসেই প্রথমেই আপনার পোস্ট। ভালো লাগলো। আসলে সকলের জীবনে কম না কম এমন স্মৃতি রয়ে যায়, তবে কিছু স্মৃতি বেশি স্মরণীয় হয় যেখানে খুব কম জাওয়া হয়েছে। আর সেই স্মৃতিগুলো স্মরণ করলে কিছুটা সুখ অনুভুতি হয়।
আর অচেনা স্থানে যদি নিজের মানুষ থেকে থাকে তাহলে সেখানে যেতে খুবই সাহস যোগায়। যাইহোক খুবই ভালো লাগলো পোস্টটি পড়ে।
ভাই আমার পোস্টে এসে অনেক সুন্দর মন্তব্য করেছেন যা পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। এভাবে সব সময় পাশে থাকবেন বলে আশা করছি। ধন্যবাদ
যাক ঢাকায় এসে বেশ ব্যস্ত সময় পার করেছেন।আসলে আমাদের বাঙালিদের এই একটা জিনিস আমার বেশ ভালো লাগে,আন্তরিকতা।অনেক সময় অপরিচিত জায়গায় কিছু পরিচিত মুখ দেখলে অনেকটা ভালো লাগে।আপনাদের দুলাভাই এট সুস্থতা কামনা করছি। ধন্যবাদ
ঠিকই বলেছেন আপু অপরিচিত জায়গায় পরিচিত মুখ দেখলে সত্যিই অনেক অনেক ভালো লাগে। সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আপনার দুলাভাইয়ের আশু রোগমুক্তি কামনা করে মহান আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করছি। ঢাকায় ঘোরাফেরা করা হলো ।বান্ধবীর বন্ধুর সাথে দেখা হল। সাথে সুন্দর সুন্দর ফটো তুলে পোস্ট করা হলো। সব মিলে আপনার অনেক আনন্দে আনন্দ ঘন সময় কেটেছে।
বড় ভাই আপনাদের দোয়ায় আমার দুলাভাই মোটামুটি সুস্থ হয়ে গেছেন। অনেক সুন্দর মন্তব্য করেছেন এ জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
প্রথমে বলবো ভাই রোগী দেখাও খুবই ছোয়াবে একটা কাজ কেননা আত্মীয়-স্বজন দেখলে রুগী নিজেও অনেকটা সাহস পায় এবং তার কাছে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে। খুবই ভালো করেছেন আপনার অসুস্থ দুলাভাইকে ঢাকায় গিয়ে দেখে এসেছেন। সেই সাথে বেশ কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন সব মিলিয়ে অসাধারণ ছিল। তবে আপনি ঠিকই বলেছেন বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেক উন্নত যদি সেটা সঠিক পথে হয়ে থাকে। অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। শুভকামনা অবিরাম আপনার জন্য।
ঠিকই বলেছেন ভাই, সেদিন আমার দুলাভাই আমাদেরকে দেখে খুবই খুশি হয়েছিল। চিকিৎসা বিজ্ঞান উন্নত হওয়ার কারণে তিনি এখন মোটামুটি সুস্থ আছেন। সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আসলে হূদরোগ ওয়েস্ত্রগেন রোগী খুবই মারাত্মক রকমের ঝুঁকি। আমি নিজে একজন স্ট্রোকের রোগী তাই হারে হারে অনুভব করছি। যাহোক আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনি আপনার দুলাভাই দুলাভাই এর পাশে দাড়িয়ে তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করার জন্য। সেই সাথে দোয়া ও শুভ কামনা করি আপনার দুলাভাই জানো দ্রুত আরোগ্য লাভ করেন। বেশ ভালো লাগলো আপনার ঢাকা ঘোরাঘুরি পর্ব এবং গল্পটি আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইল।
ভাই আপনি অসুস্থ এটা আমি জানি। আমার দুলাভাই বর্তমানে কিছুটা সুস্থ আছে। সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
আপনার দুলা ভাইয়ের অপারেশন যেন আল্লহর রহমতে ভালই ভালই হয়ে যায় এই দোয়াই করি। আপনার ঢাকা ভ্রমন এর উদ্দেশ্য যদিও সুখকর ছিল না তাও আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনাকে। ভাল থাকবেন ভাই। দোয়া রইল
ভাই আল্লাহর রহমতে আমার দুলাভাইয়ের অপারেশন খুব ভাল ভালই হয়ে গেছে। এখন তিনি মোটামুটি সুস্থ। সব সময় আমার পাশে থাকার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আপনার ঢাকা ভ্রমণের স্মৃতি পর্ব টু গল্প অসম্ভব সুন্দর ছিল। আসলেই ঢাকা শহরে নিজ আত্মীয়-স্বজনের সাথে সাক্ষাৎ করতে পারলে খুবই ভালো লাগে। পরবর্তী পর্বের আশায় রইলাম।
ঠিকই বলেছেন ভাইয়া, সেদিন আমার আত্মীয়র সাথে দেখা হয়ে আমাদেরও ভীষণ ভাল লেগেছিল। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।