বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক 🏞️(ভ্রমণ পর্ব-৩)||[১০% shy-fox🦊🦊]

প্রথম পর্বের লিংক

দ্বিতীয় পর্বের লিংক

ভৌগলিক অবস্থান:

ডিভাইস:

লোকজনের দীর্ঘ লাইন। আমাদের ক্যাম্পাসের গাইবান্ধা জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির সদস্যরা আমরা সবার পিছে দাঁড়ালাম। লাইনে দাড়ানোর উদ্দেশ্য হলো সাফারি পার্কের রাইডিং বাসে অবস্থান করে হিংস্র জীবজন্তুদের অনেক কাছ থেকে দেখা। টিকিটের মূল্য ১৫০ টাকা। ছাত্রদের ক্ষেত্রে স্টুডেন্ট আইডি কার্ড সঙ্গে থাকলে ১০০ টাকা। বিষয়টি আমরা আগে থেকেই জানতাম। এজন্য আমরা সবাই আইডি কার্ড সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলাম। লাইন এতটাই দীর্ঘ ছিল যে, লাইনের শেষ প্রান্ত থেকে বাসে ওঠা পর্যন্ত আমাদের ৩০ মিনিটের মত সময় লাগলো।

এত সময় লাগলেও বাসে ওঠার পর বেশ ভালই লাগছিল। কারণ এর আগে কখনো এসব হিংস্র জীবজন্তুদের কাছে থেকে দেখা হয়নি। বাস চলা শুরু করলো। কেউ ভিডিও করা শুরু করল; আবার কেউ ছবি উঠানোর জন্য ফোনের ক্যামেরা বের করল। আমিও ছবি উঠানোর জন্য ফোন বের করে রেডি হয়ে বসে থাকলাম। হিংস্র জীবজন্তুরা যে জঙ্গলে থাকে, ওই জঙ্গলের প্রধান গেট খুলে দেয়া হলো। খুলে দেওয়া হলে বললে ভুল হবে; রাইডিং বাসটি গেটের সামনে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গেট অটোমেটিক খুলে গেল।

প্রতিটা হিংস্র জীবজন্তুকে জঙ্গলের আলাদা আলাদা সীমানার মধ্যে রাখা হয়েছে এবং নির্দিষ্ট দূরত্ব পরপর গেট বসানো হয়েছে। ওই গেটের সামনে রাইডিং বাসগুলো যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গেট গুলো অটোমেটিক খুলে যাচ্ছিল। প্রথম মেইন গেট খোলার পরই বানরের সীমানা পড়ল। বানরগুলো এক গাছ থেকে অন্য গাছে লাফিয়ে যাচ্ছিল বাসের মধ্যে থেকে ক্যাম্পাসের ছেলে-মেয়েরা সেগুলো দেখে ভালই মজা নিচ্ছিল। এই সীমানার মধ্যে শুধু যে বানর ই ছিল তা নয়; অনেকগুলো জংলি গরু এবং মহিষ রাখা হয়েছিল। গরু গুলো বেশ স্বাস্থবান ছিল। পরবর্তী সীমানার মধ্যে দেখতে পেলাম বেশকিছু হরিণ এবং জিরাফকে। আমরা সকলেই বাঘ এবং সিংহ দেখার জন্যে উদগ্রীব হয়ে ছিলাম। কারণ এই হিংস্র জীব জন্তু গুলো খুব একটা কাছ থেকে দেখা হয়নি কখনো। আর আমরা চাচ্ছিলাম এই হিংস্র জীব জন্তুগুলো যাতে আমাদের রাইডিং বাসের সামনে চলে আসে। কিন্তু তা হচ্ছিল না। সব জীবজন্তু গুলো বাস থেকে অনেক দূরে জঙ্গলের মধ্যে অবস্থান করছিল। কতগুলো হিংস্র জীবজন্তুর প্রজাতি দেখার পর অবশেষে আমরা বাঘ এবং সিংহের সীমানার মধ্যে প্রবেশ করলাম। তখন অবশ্য সকলের মধ্যে বেশ ভয় কাজ করছিল। বাসের জানলা-দরজা ঠিকমতো লাগানো হয়েছে কিনা সবাই তা চেক করে নিচ্ছিলাম। এরপর আমরা বাঘ গুলোকে দেখতে পেলাম। যতটা হিংস্র ভেবেছিলাম প্রাণীগুলো ততটা হিংস্র ছিল না। বাস থেকে বেশ খানিকটা দূরে দুটি বাঘ দেখলাম। একটি পুকুরের পানিতে সারা শরীর ডুবিয়ে মাথা বের করেছিল; অপরটি নিস্তেজ ভাবে বসে ছিল। আর সিংহ তো ভালোভাবে দেখতেই পেলাম না। অনেক দূরে একটি স্থানে ঘুমিয়ে ছিল।

এভাবে সাফারি পার্ক এর রাইডিং বাস ভ্রমণের মাধ্যমে হিংস্র জীবজন্তুদের কাছ থেকে দেখার অধ্যায় শেষ করলাম। রাইডিং বাসটি আবার দীর্ঘ লাইন এর সামনে নিয়ে আসা হল। আমরা বাস থেকে নেমে লাইন থেকে বেরিয়ে চলে আসলাম। তৃতীয় পর্ব এতোটুকুই মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাক। পরের দুটি পর্ব অন্য কোন সপ্তাহে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব।

আমার শেয়ার করা পোস্টটি কেমন লেগেছে কমেন্ট করে জানান, আশা করি সবার ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে, কমেন্ট এবং আপভোট দিবেন।