বাসস্ট্যান্ডের আগন্তুক : অন্তিম পর্ব
বাসস্ট্যান্ডের আগন্তুক : পর্ব ৬ এর পর....
সেদিন রাতের ঘটনার তদন্তে নেমে পৌলমী বাসস্ট্যান্ডে আগে যাওয়া ঠিক মনে করলো। বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে সে দেখতে পেলো বাসস্ট্যান্ড এর সম্বল বলতে যাত্রীদের জন্য কয়েকটা মাত্র ভাঙাচোরা বসার জায়গা। জায়গা গুলোতে রীতিমতো ধুলোর পরত জমে গেছে, খালি চোখেই বোঝা যাচ্ছে বহুদিন সেখানে কেউ বসেনি। আর বাসস্ট্যান্ড এর কোনায় কোনায় পুরু নোংরাও জমে আছে যেন অনেকদিন কেউ সেখানে আসেও না কিংবা পরিস্কারও করে না। অথচ বাসস্ট্যান্ড এর মুখে রাস্তায় অফিসের লোক জন ছুটে বেড়াচ্ছে।
পৌলমী বাস স্ট্যান্ড থেকে বেরিয়ে এসে উল্টো দিকে একটা চায়ের দোকান দেখতে পেয়ে সেদিকেই এগিয়ে গেলো। দোকানে তখন বেশ কিছু অফিস কর্মী বসে চা খাচ্ছে আর খোশগল্প করছে। পৌলমীর দোকানের সামনে পৌঁছাতে তার চোখে মুখে দুশ্চিন্তা দেখে তারা সবাই চুপ করে গেলো।
চায়ের দোকানদার গল্পে ভাঁটা পড়ায় মুখ তুলে তাকাতেই পৌলমীর দিকে চোখ পড়লো। চায়ের দোকানের মালিক পৌলমীকে দেখেই চিনতে পেরে গেলো। সেদিন যারা অমিতকে হাসপাতালে নিয়ে গেছিলো তাদের দলে এই মানুষটিও ছিলেন। পৌলমী কে দেখে দোকানি চিনতে পারলেও পৌলমী তাকে চিনতে পারলো না। দোকানি তখন নিজের পরিচয় দিয়ে পৌলমীকে দোকানের ভেতরে বসার জায়গা করে দিলো।
কিছুক্ষন পর দোকানের সব খদ্দের দের একে একে বিদায় নিলে দোকানি এক কাপ চা পৌলমীর হাতে তুলে দিয়ে পৌলমীর উল্টো পাশে বসে অমিতের খোঁজ খবর জানতে চাইলো।
পৌলমী ধীরে ধীরে সব বলা শুরু করলো। কিভাবে অমিত দু সপ্তাহ হাসপাতালে কাটিয়ে বাড়ি ফিরেছে তারপরেও মাঝে মাঝে রাতে ঘুম থেকে চিৎকার করে বিছানায় উঠে বসে। ঘুমের তালেও বিড়বিড় করে কথা বলতে থাকে। পৌলমী তারপর বাধ্য হয়েই শহরের নামকরা সাইকিয়াট্রিস্ট এর কাছে যায়। তিনিই তাকে বাস স্ট্যান্ডে ফিরে আসতে বলেছেন, উত্তর খোঁজার জন্য।
পৌলমীর কথা শেষ হওয়া মাত্র চায়ের দোকানি বলে উঠলো, অমিতের ভাগ্য ভালো তাই সে এখন বেঁচে আছে। লোকটি বলতে শুরু করলো যে সেদিন তারা কয়েকজন মিলে রাত দশটার কিছু পরে বাড়ি ফিরছিলো সে সময়েই অমিতের চিৎকার শুনে দৌড়াদৌড়ি করে এসে দেখতে পায় অমিত রাস্তার মাঝখানে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। দোকানি তারপর আরো বলতে থাকলো, কয়েক বছর আগে এখানেই এক ব্যক্তি বাজ পড়ে মারা যায় তারপর থেকেই রাত হলেই বাসস্ট্যান্ডের আশেপাশে নানারূপ উপদ্রব শুরু হয়। বিগত ছয় বছরে নাকি অনেকের সাথে রাতের দিকে এরম ঘটনা ঘটেছে তবে তাদের কেউই ঘটনার বর্ণনা দেওয়ার জন্য বেঁচে থাকেনি। সবার শোনার পর পৌলমী থ মেরে গেলো।
অভিশপ্ত রাতের পর মাস তিনেক কেটে গেছে, ওষুধ পত্র খেয়ে অমিত এখন বেশ সুস্থ। টুকটাক কথা বলে। তবে পৌলমী সেই রাতের ঘটনা জিজ্ঞেস করলেই কেমন যেন চুপ মেরে যায়। হয়তো বুঝতে পারে কিছু আগন্তুক অগোচরে থাকলেই ভালো...
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে অমিত এরকম একটি ভয়ংকর ঘটনার পরে বেঁচে আছে এবং সে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছে। তবে চায়ের দোকানদার পৌলমিকে যে ঘটনাটা বলল আমি ঘটনাকে পড়ার পর শরীরের সব লোম দাঁড়িয়ে গেল। দাদা ভালোই লিখেছেন পড়ে খুব ভালো লাগলো এভাবে আরও মজার ও ভৌতিক গল্প নিয়ে পরবর্তীতে হাজির হবেন সে অপেক্ষায় রইলাম।
শেষ পর্যন্ত পারলাম। আমারও অনেক ভালো লেগেছে।
চায়ের দোকানদারের বলা ঘটনাটা আসলেই লোমহর্ষক ঘটনা, এরকম ঘটনা শোনার পর পৌল্লমী থ মারবে এটাই স্বাভাবিক। অমিত এখনো সুস্থ আছে এটা জেনে খুবই ভালো। পৌল্লমীর মতে কিছু অগস্তক অগোচরে থাকাই ভালো। এরকম সুন্দর রোমাঞ্চকর গল্প আপনার থেকে আমরা আশা করি। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা সুন্দর ব্লগটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
কিছু আগন্তুক অগোচরে থাকাই ভালো। ধন্যবাদ আপনাকেও 💕
আপনাকেও ধন্যবাদ দাদা।
যাক দাদা শেষ পর্যন্ত অমিত বেঁচে আছে এটাই বড় কথা। আমি তো ভেবেছিলাম শেষ পরিণতি তার মৃত্যু হবে নাকি ? কিন্তু অন্তিম পর্ব পড়ে এতটুকুই সান্তনা পেলাম যে অমিত বেঁচে আছে। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল দাদা।
অমিত বাঁচলো ঠিকই তবে আগন্তুকের ভয় রয়ে যাবেই।
কি অবস্থা! ১৭ দিন আগেই পোস্ট করে ফেলেছেন আর আমি ভেবেই চলেছি এখনও দিচ্ছেন না কেনো! এতটাই উদ্গ্রীব ছিলাম যে আজ পড়ে আজই কমেন্ট করলাম।যাক অমিত বেঁচে গেছে এটাই বড় ব্যাপার।