বাসস্ট্যান্ডের আগন্তুক : পর্ব ৬

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)


Copyright free Image : Pexels

বাসস্ট্যান্ডের আগন্তুক : পর্ব ৫ এর পর....


বাসস্ট্যান্ডের আগন্তুক : পর্ব ৬


সুবল বাবুর ট্যাক্সি চেপে পৌলমী সোজা অমিতের অফিসে পৌঁছলো। তখন ঘড়িতে রাত সাড়ে এগারোটা পেরিয়েছে, অফিসের বেশিরভাগ আলো নিভে গেছে। ট্যাক্সি থেকে নেমে পৌলমী অফিসের গেটের দিকে হনহন করে হাঁটা দিলো। অফিসের দারোয়ান দূর থেকে পৌলমীকে আসতে দেখে হাঁক পারলো, কাকে চাই বলে। পৌলমী হন্তদন্ত হয়ে দারোয়ানের কাছে পৌঁছে অমিতের কথা জিজ্ঞেস করতেই দারোয়ান বলে উঠলো, অমিত বাবু তো অনেকক্ষণ আগেই বেরিয়ে গেছেন। পৌলমী তারপর দারোয়ানকে সব ঘটনা খুলে বললো। দারোয়ান সব কথা শুনে যেন বেশ অবাকই হলো। তারপর বললো সে অমিত বাবুকে শেষ বাসস্ট্যান্ডের দিকে যেতে দেখেছে।

পৌলমী দারোয়ানের কাছে বাসস্ট্যান্ডের দিক নির্দেশ নিয়ে ট্যাক্সিতে চেপে সেদিকে রওনা দিলো। মোটে পাঁচশো মিটার রাস্তা। ট্যাক্সি চাপতেই সেখানে পৌঁছে গেলো। বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে ফের ট্যাক্সি থেকে নেমে পৌলমী এদিক ওদিক দেখতে থাকলো কিন্তু অমিতের সেখানেও কোনো পাত্তা নেই। সুবল বাবুর ডাকে পৌলমীর নজর গিয়ে পড়লো রাস্তার উপরে জটলা করা কয়েকটা কুকুরের উপরে। কুকুর গুলোর কাছে গিয়ে পৌলমী দেখতে পেলো, একখানি জুতো আর একটা পরিচয় পত্র সেখানে পড়ে রয়েছে। পরিচয় পত্রটা হাতে তুলতেই পৌলমীর মূর্ছা যাওয়ার অবস্থা হলো। এতো অমিতের পরিচয়পত্র!!

সেই মুহূর্তে পৌলমীর ফোনটা আশেপাশের নিস্তব্ধতা চিরে সজোরে বেজে উঠলো। পৌলমী খানিকটা থিতু হয়ে ফোনটা সামনে চোখের সামনে নিতে ফোনের স্ক্রিনে অমিতের নামটা ভেসে উঠলো। পৌলমী ধরফর করে ফোনটা তুলতেই ওপার থেকে কেউ একজন অচেনা গলায় বলে উঠলেন, অমিত বাবুকে আমরা মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে এসেছি আপনি চটজলদি চলে আসুন। অমিতের কি হয়েছে পৌলমী সেসব জিজ্ঞাস করার আগেই তারা ফোনটা কেটে দিলেন। সুবল বাবু সব কথা শুনে পৌলমীকে গাড়িতে বসিয়ে মেডিকেল হাসপাতালের দিকে রওনা দিয়ে দিলেন।



Copyright free Image : Pixabay


হাসপাতালে পৌঁছে দুজনে ইমারজেন্সির দিকেই ছুটে গেলো। ইমারজেন্সির সামনে তখন বেশ কয়েকজন লোক দাঁড়িয়ে আছে। তাদের পাশ কাটিয়ে নার্সের দিকে এগোতে গিয়ে জটলা থেকে একজনের মুখে অমিতের নাম শুনে পৌলমী থেমে গেলো। পৌলমী ঘুরে লোক গুলোর কাছে নিজের পরিচয় দিতেই তারা পৌলমীর দিকে এগিয়ে এলো। তারপর তাদের একজন জানালো তারাই অমিতকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে।

অমিতের হুঁশ ফিরেছে বলে তারাই পৌলমীকে পথ দেখিয়ে অমিতের ঘর পর্যন্ত নিয়ে গেলো। অমিত হাসপাতালের বিছানা এক কোনায় বসে আছে, চোখে মুখে ভয়ের ছাপ। লোকগুলো তারপর পৌলমীকে বিদায় জানিয়ে চলে গেলো।


ঘটনার মাসখানেক পেরিয়ে গেছে, অমিত শারীরিক ভাবে খানিকটা সুস্থ হয়ে উঠেছে। কিন্তু এখন তার চোখে মুখে অদ্ভূত ভয়ের ছাপ রয়ে গেছে। আর সেই রাতে তার সাথে ঠিক কি হয়েছিলো সেটাও সে বলতে চায় না। মাঝে মাঝে শুধু রাতে ঘুম থেকে চিৎকার করে বিছানায় উঠে বসে। ঘুমের তালেও কিসব বিড়বিড় করে বলতে থাকে।

এভাবেই আরো মাস খানেক কেটে যায় তবুও অমিতের পরিস্থিতির আগের মতোই রয়ে যায়। বাধ্য হয়ে পৌলমী শহরের এক নামকরা সাইকিয়াট্রিস্ট এর কাছে যাওয়া স্থির করে। সাইকিয়াট্রিস্ট এর কাছে পৌলমী অমিতের সব ঘটনা খুলে বলে। সাইকিয়াট্রিস্ট সব টুকু ঘটনা শোনার পর পৌলমীকে সেই বাস স্ট্যান্ডে ফিরে যেতে বলে।

উত্তর খোঁজার জন্য পৌলমী ঠিক করে সেই বাস স্ট্যান্ডে ফিরে যাবে যেখানে অমিতকে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া যায়। যদি কিছু জানতে পারা যায়...


চলবে...




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness


Support @heroism by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

|| Join HEROISM ||

Sort:  
 2 years ago 

দাদা দারুন লিখেছেন , গল্পের শেষে টুইস্ট রেখেদিয়েছেন ,আমার কাছে কিন্তু ভীষণ ভালো লেগেছে ,তবে এখন কথা পৌলমীকে নিয়ে , সেকি পারবে অমিতের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার রহস্য খুঁজে বের করতে ??

 2 years ago 

গল্পে টুইস্ট রাখতে পেরেছি এতেই আমি ধন্য।

 2 years ago 

যাক তবু ও অমিতকে জীবিত অবস্থায় পাওয়া গেছে। নিশ্চয়ই অমিতের সাথে ভয়ানক কান্ড ঘটে গেছে। আগামী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা। খুবই জানতে ইচ্ছে করছে কি ঘটেছিল সেই রাতে। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

দেখা যাক অমিতের কি হয়

 2 years ago 

দাদা,গল্পটা পড়ার অপেক্ষায় ছিলাম ভাগ্যিস কাল দেননি আজকে দিয়েছেন।কাল সার্ভারে অনেক সমস্যা ছিল। দাদা, গল্পটা পড়ে খুব ভালো লেগেছে অবশেষে অমিত কে খুঁজে পেয়েছে কিন্তু অমিত যে পরিস্থিতির মধ্যে ছিল তার অবস্থা মনটাই হওয়ার কথা।অমিত এই ভুতুড়ে পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে সাইকোলজিস্ট সমস্যা হয়ে গিয়েছে আমি মনে করছি।পৌলমী আসল রহস্য খুঁজে পাই কিনা সেই অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ দাদা💐💐

 2 years ago 

সে কি ভয়ানক সমস্যা। দিনটা ভোলা যাবে না। পৌলমীই পারবে আসল ঘটনা কি সেটা জানতে।

 2 years ago 

যাক বিষয়টা আজকের পর্বে একটু স্থিতবস্থায় এলো। যদিও উত্তেজনা থেকেই যাচ্ছে যে কি হলো! কি হবে! কবে সব জানতে পারবে।
আজ প্রায় অনেকদিন হল গল্পটা লিখছেন। উত্তেজনা কিন্তু কমে নি পাঠক হিসেবে বললাম।আপনার সাকসেস।

 2 years ago 

আমি ধন্য হলাম ম্যাডাম। প্রথম গল্প লিখছি।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.12
JST 0.029
BTC 61917.78
ETH 3393.54
USDT 1.00
SBD 2.51