ক্ষণস্থায়ী জীবন

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

sunset-g71230f157_1920.jpg

Copyright free Image : Pixabay

নমস্কার বন্ধুরা,

জীবন খুবই ক্ষণস্থায়ী, আজ আছে কাল নেই। অথচ এই অনিশ্চয় জিনিস নিয়েই আমাদের কত দম্ভ, তাই না?

হঠাৎ করে এমন কথা কেন বলছি? আজ পরপর এমন দুটো ঘটনার সম্মুখীন হলাম যে খবর দুটো জানার পর থেকেই বারবার এই কথা গুলো মাথায় ঘুর ঘুর করছে। ঘটনা দুটো শোনার পরে যেন মানসিকভাবে একটু বিপর্যস্ত হয়েও পড়লাম।

কয়েক মাস আগে যখন কলকাতায় একটি অনুষ্ঠান করতে এসে আমাদের সকলের প্রিয় কৃষ্ণকুমার কুন্নথ লাইভ অনুষ্ঠানেই হার্ট অ্যাটাকে ধরাধাম ছাড়লেন। সবাই তখন প্রথমে তার মৃত্যুর আকস্মিকতায় অবাক হয়ে গিয়েছিল। খুব অল্প বয়সেই এত ভালো একজন মানুষ আমাদের ছেড়ে চলে গেলে যা হয়। মারা যাওয়ার প্রাথমিক আকস্মিকতা কাটিয়ে কয়েক দিনের জন্য পুরো সঙ্গীত সমাজ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে এক অদ্ভুত শোকের ছায়া নেমে এসেছিল। কে.কে.র মারা যাওয়ার খবর শোনার পর থেকেই আমার বারবার মনে হচ্ছিলো জীবনটা কতটা ঠুনকো।

flower-g125d83c2d_1920.jpg

Copyright free Image : Pixabay

আজ বাড়ি থেকে ফিরে দুটো ঘটনা জানতে পারার পর থেকে এই কথা গুলোই আবার করে মাথায় ঘুরপাক করছে।

খোলসা করেই বলি, প্রথম ঘটনাটা হলো পাড়ার এক দাদার বাচ্চাকে নিয়ে। বাচ্চাটির তাদের ঘরে কোনো এক হাড়ি ঘাঁটাঘাঁটি করতে করতে বুঝতে পারে যে তার হাতে খুব হালকা করে কিছু একটা কামড় দিয়েছে। ঘটনা চাউর হতেই বাড়িতে হুলুস্থূল কান্ড। প্রাথমিক ভাবে সন্দেহ হয় কোনো বিষধর সাপ হতে পারে। হাড়ি ভালো করে নাড়াচাড়া করে, উল্টে পাল্টে কিছুই পাওয়া গেলো না। এমনকি হাঁড়ির আশেপাশেও কোনো কিছু খুঁজে পাওয়া যায়নি তবুও সন্দেহ মন থেকে যায় না। বাধ্য হয়ে হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হয়ে আছে। বাচ্চাটি আপাতত চিকিৎসাধীন।

দ্বিতীয় ঘটনাটা বলি, পাড়ার মকবুল কাকা। উনি কারো সাতে পাঁচে থাকেন না। সবসময় দেখেছি উনি নিজের পরিবার এবং নিজস্ব কাজকর্ম নিয়েই ব্যস্ত। আজ বিকেলের দিকে তার বড় মেয়ের ২৩ বছরের জামাই মটর বাইক এক্সিডেন্টে মারা গেছে। কথাটা শুনেই কেমন যেন অদ্ভুত খারাপ লাগা কাজ করলো। কমবয়সী কেউ মারা গেলেই যেটা হয় আমার। তারপর শুনলাম মাত্র পাঁচদিন আগে সে বাবা হয়েছে। অর্থাৎ মকবুল কাকার পাঁচ দিন আগে মেয়ের ঘরের নাতনি জন্মেছে আর ঠিক পাঁচ দিন পরে এরকম একটা ঘটনা ঘটলো। মনে মনে চিন্তা করলাম, কিছুক্ষন আগ পর্যন্ত তাদের বাড়িতে কতোই না খুশি ছিলো। কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে সব বদলে গেলো।

যে মারা গেলো সে তো চলেই গেল, আর তার যাওয়ার সাথে সাথে কতো কিছু যে হারিয়ে গেলো। এক মা তার ছেলেকে হারালো, একজন স্ত্রী তার স্বামীকে আর একজন সদ্যোজাত বাচ্চা তার বাবাকে। সন্ধ্যে বেলায় কথা গুলো ভেবে মনটা বেশ ভারাক্রান্ত হয়ে গেলো।

pexels-nina-uhlikova-725255.jpg

Copyright free Image : Pexels

জীবন নিয়ে ভাবতে ভাবতেই মনে হলো আমাদের সবকিছু অনিশ্চিত হলেও মৃত্যুটা অবধারিত। একটা সময় আসবে যখন আমাদের সবাইকে পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিতে হবে, শুধু সময়টা অজানা। তবে এই সময়ের ফাঁকে আমরা যেটা পারি তা হলো একটা অর্থপূর্ণ জীবন তৈরী করতে। তাহলেই তো বাঁচার মতো বাঁচা হবে। আমাদের ক্ষণস্থায়ী জীবন অল্প হলেও দীর্ঘতা পাবে।





IMG_20220926_174120.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  
 2 years ago 

সত্যিই এই মূল্যবান জীবনের কোনো নিশ্চয়তা নেই, কে.কে.র হঠাৎ মৃত্যু জনতার মনে সত্যিই এক বিস্ময়কর ঘটনা।তাছাড়া আপনার বলা ঘটনা দুটিও খুবই আকস্মিক।পাঁচদিন আগে বাবা হয়েও এক্সিডেন্ট এ তার প্রাণ কেড়ে নিল এটা সত্যিই খুবই দুঃখজনক।জীবন খুবই স্বল্প,তাই সাবধানে চলা উচিত।

 2 years ago 

জীবন কতোটা অনিশ্চিত তা আসলে ভাবতেও অবাক লাগে।আমরা ও যে কতোক্ষণ টিকে থাকবো তাও একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ছাড়া আর কেও ই জানেনা।

আসলেই আমাদের জীবন খুবই অনিশ্চিত। তবে এটা চিন্তা করলে তো আর হবে না নির্মাল্য দা। সামনে এগোতে তো হবে। যা হবে দেখা যাবে যতদিন বেঁচে থাকব ভালো ভাবে বেচেঁ থাকবো।

বেশ কিছু মৃত্যুর সংবাদ শুনলাম। যদিও এই ধরনের জিনিস আমার খুব খারাপ লাগে, পড়তে কষ্ট হয়। আর কে.কে এর মৃত্যুতে তো আমরা সবাই ভেঙ্গে পড়েছিলাম মানসিকভাবে।

বাচ্চাটি আপাতত চিকিৎসাধীন।

বেচেঁ আছে তো বাচ্চাটা....?

 2 years ago 

দাদা, পৃথিবীতে ক্ষণস্থায়ী আমরা জানা সত্ত্বেও এই জীবন এবং সংসার সাজাতে কিছু না করি কিন্তু একসময় সুন্দর জীবন এবং সংসার ছেড়ে যাব এটাই বাস্তব। তবে এমন জীবন হোক যেন মরে গিয়েও বেঁচে থাকি সবার মাঝে

তারপর শুনলাম মাত্র পাঁচদিন আগে সে বাবা হয়েছে।

এই ঘটনাটা সত্যি মনকে নাড়া দিয়েছে ৫ দিন আগে মেয়ে জন্ম নেওয়ার পর ওর বাবা মারা গেছে। শিশুটি হয়েছে ঠিকই কিন্তু বাবার আদর পায়নি একথা ভেবে সত্যিই অনেক কষ্ট লাগছে। ধন্যবাদ দাদা 😔😔

 2 years ago 

সত্যি দাদা চমৎকার একটি আলোচনা করেছেন। আমাদের এই ক্ষণস্থায়ী জীবন। কাকে কখন যেতে হবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। আর এই ক্ষণস্থায়ী জীবন নিয়েই মানুষ কত গৌরব, আত্ম অহংকার, ধনসম্পত্তির বিলাসিতা করে কতশত নেয় অন্যায় করছে। নিঃশ্বাসটা চলে গেলে সব পড়ে থাকবে। সেদিকে কারোরই কোন খেয়াল নেই বা পরকালের কোন চিন্তা ভাবনা নেই। গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

দাদা জীবনটা হলো এক টা মোমের বাতির মতো যতক্ষণ পর্যন্ত চলবে ভালো নিভে গেলে শেষ ৷
দাদা এ জীবনের বড়াই করে কোনো লাভ নেই ৷ আমাদের কথাই বলি আজ আছি কাল না ও থাকতে পারি ৷ কাল কেন কিছুক্ষণ পরেই যে কি হবে তার কোনো গ্যারান্টি নেই ৷ তাই এই জীবন নেই দম্ভ করে কোনো লাভ নেই ৷
জীবন খুবই ক্ষণস্থায়ী, আর ক্ষণস্থায়ী জীবনে আমরা কিসের জন্য এতো অহংকার করি বুঝি না ৷

যদিও মৃত্যু অবধারিত তবে কিছু কিছু মৃত্যু কখনো মেনে নেওয়ার মতো নয় ৷

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 68125.63
ETH 3308.80
USDT 1.00
SBD 2.74