১৮-ই ভাদ্র, ১৪২৮ // হাতিবাগান ও ফটোফ্রেম // ১০% পেআউট লাজুক খ্যাঁক-কে

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago (edited)


৪-ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২১


নমস্কার,

অন্য পাঁচটা দিনের মতো আজকের সকালটা নয়। আজ নবনিতার দেশে কাটানোর শেষ দিন। ভোর রাতেই বেরিয়ে যাবে। গত কয়েকদিন খুবই ব্যস্ততার মধ্যে কেটেছে তাই দিনটা এগিয়ে এসেছে মাথাতেই আসেনি। ঝড়ের মতোই কেটে গেলো।

নবনিতা দেশ ছাড়ার আগে কিছু একটা দেবার ইচ্ছে ছিলো, যা আমার খুব কাছের। আমাদের একসাথে কাটানো বিশেষ মুহূর্ত। তাই দুদিন আগে হাতিবাগানে কাজের জায়গার পাশেই এক স্টুডিওতে ফটোফ্রেম অর্ডার দিয়ে এসেছিলাম।

স্টুডিওতে কাজ চলছে | w3w
কিছু কাজ | w3w

আগের সপ্তাহেই এটা বানাতে দেবার ইচ্ছে ছিলো। তবে পারিনি। দুদিন আছে দিয়ে রাতের দিকে এসেছি, আজকে সেটারই ডেলিভারি পাবার কথা। সকাল বেলায় যখন ডেলিভারি পাবার আশায় দোকানে কল করলাম, ওরা বললেন দূপুরের দিকে যেতে, এখন রেডি হয়নি। তাই ধীরে সুস্থে দুপুরে স্নান সেরে খেয়েই বেরোলাম। ক্লায়েন্টদের দোকানের কাছে পিঠেই ফটোফ্রেমের দোকান। যে বাস ধরে যেতে যাই, সেটাতেই উঠলাম। তবে আজ ক্লায়েন্টদের কাছে যাবার নেই তাই সাধারণত যে বাস স্টপেজে নামি তার পরের স্টপেজে নামলাম। হাতিবাগান মোড়।


হাতিবাগান মোড় | w3w

বাস থেকে নেমে বাম দিকে হাঁটা লাগলাম। ঐতিহ্যবাহী স্টার থিয়েটারের পাশ দিয়ে খানিকটা হাঁটলেই স্কটিশ চার্চ স্কুল, তার ঠিক পাশেই বেশ কয়েকটা ফটো ফ্রেমের দোকান। আমার গন্তব্য সেখানেই। কয়েকমিনিটের হাঁটা পথ।


গন্তব্যস্থলের পথে (Time Lapse) | w3w

পৌঁছে গেলাম, কিছুক্ষনের মধ্যেই। দোকানের নাম ফ্যান্সি ফটো সেলার। বর্তমান মালিক শ্রী স্বপন চক্রবর্তী। তিন পুরুষের দোকান। ১১২ বছর আগে স্বপন বাবুর ঠাকুর্দা ফটো ফ্রেম বাঁধিয়ে দেবার কাজ শুরু করেন। আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে। স্বপন বাবু গল্প করলেন করোনা প্যান্ডামিকের কারনে কাজ কিছুটা কমলেও এখন বেশ চাহিদা আছে। তাঁর বাবার হাত ধরেই ফটোফ্রেমে হাতেখড়ি হয়েছে, আজ থেকে ৫৩ বছর আগে। তখন তার বয়স ১১! বর্তমানে স্বপন বাবুর ছেলেও ঠাকুর্দা-বাবার দেখানো পথেই হাঁটছে। খুবই ভালো লাগলো শুনে, বর্তমান সময়ে সরকারি চাকরির ইঁদুর দৌড়ে ব্যতিক্রমী। বাপ-ঠাকুরদার পারিবারিক ঐহিত্য বয়ে নিয়ে যাবে ছেলে। এর থেকে ভালো কি হয়!

নিজস্বী | w3w
স্বপন বাবুর সাথে আমি | w3w

আমি আমার কাঙ্খিত বস্তুটি চাইতেই স্বপন বাবু আমার দিকে এগিয়ে দিলেন ফ্রেমটি। ৮ ইঞ্চির ফ্রেম, তাঁতে জড়িয়ে আছে আমার আর নবনিতার একসাথে কাটানো স্মৃতি।


ফ্রেমবন্দি মুহূর্ত | w3w

ব্যক্তিগত ভাবে আমার খুবই পছন্দ হয়েছে, এখন নবনিতার পছন্দ হলেই হলো। আমি আর বেশি সময় সেখানে দিতে পারিনি না। ইচ্ছে ছিলো কথা বলার, তবে আজ আর সময় নেই। আরেকদিন আসা যাবে... স্বপন বাবুর জীবন কাহিনী শুনতে। ফটোফ্রেম হাতে নিয়ে একটা অদ্ভুত ভালো লাগা নিয়ে বাড়ির পথে রওনা দিলাম। নবনিতার হাতে রাতেই তুলে দেবো!

১০% পেআউট @shy-fox কে

Sort:  
 3 years ago 

১১২ বছর পুরানো দোকান। তাহলে বংশপরম্পরায় দোকান টা মিশে গেছে বলা যায়। আপনাকে আর নববিতা দিদিকে খুব সুন্দর লাগছে ফটোফ্রেমে।

 3 years ago 

হ্যাঁ। বংশের ব্যবসা বা কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছেলেও এখন এই কাজ করে।

ধন্যবাদ ভাই। এইটা সরস্বতী পূজার সময় তুলেছিলাম

 3 years ago 

ধন্যবাদ ভাই জানানোর জন্য 🙂🙂🙂

 3 years ago 
আমি আমার কাঙ্খিত বস্তুটি চাইতেই স্বপন বাবু আমার দিকে এগিয়ে দিলেন ফ্রেমটি। ৮ ইঞ্চির ফ্রেম, তাঁতে জড়িয়ে আছে আমার আর নবনিতার একসাথে কাটানো স্মৃতি।
প্রিয় জিনিস গুলো হাতে পেলে মনটা আনন্দে ভরে যায়। সুখের আর কোন সীমা থাকে না। আপনার যেহেতু ফ্রেমটি পছন্দ হয়েছে । সেহেতু ওনার ও এটি পছন্দ হবে। আশা করছি আপনার থেকে ওনার এটি আরও বেশি পছন্দ হবে।

অনেক সুন্দর একটি দিনলিপি উপস্থাপন করেছেন ভাই।ফটোফ্রেম টা অনেক সুন্দর হয়েছে।

১১২ বছর আগে স্বপন বাবুর ঠাকুর্দা ফটো ফ্রেম বাঁধিয়ে দেবার কাজ শুরু করেন।

অনেক দিন আগে থেকে কাজ শুরু করেছে তাহলে।

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর দিনটি শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

ধন্যবাদ ভাই! ছবিটা আমার খুব কাছের।

অনেক পুরোনো দোকান। একদিন এই দোকানের সব ইতিহাস লিখবো। ধন্যবাদ তোমাকেও আমার পোস্টটা পড়ার জন্য। 🤗

 3 years ago 

এই ছবি গুলো আমাদের অবর্তমানে স্মৃতি হয়ে থাকবে পরবর্তী প্রজন্ম দের কাছে। দারুন একটা মুহূর্ত শেয়ার করেছো। সত্যি খুব সুখময় এটি। শুভেচ্ছা অনাবিল দাদা

 3 years ago 

সত্যিই তাই! একসাথে কাটানো মুহূর্ত গুলোই স্মৃতি হিসেবে মনে থাকবে। খারাপ স্মৃতি মনে না রেখে ভালো স্মৃতি গুলোই থাক।

 3 years ago 

কোথায় যাচ্ছেন উনি? একটা সাময়িক বিচ্ছেদের ব্যাপার মনে হচ্ছে।

চিন্তা নাই। উনার পছন্দ হবে এটা।

 3 years ago 

লিভারপুল ইউনিভার্সিটিতে। সাময়িক সময়ের জন্য নয়, কমকরে হলেও ২ বছর।

দুদিন পরে জানতে পারবো

 3 years ago 

আমি আমার কাঙ্খিত বস্তুটি চাইতেই স্বপন বাবু আমার দিকে এগিয়ে দিলেন ফ্রেমটি। ৮ ইঞ্চির ফ্রেম, তাঁতে জড়িয়ে আছে আমার আর নবনিতার একসাথে কাটানো স্মৃতি।

আমি আশা করছি আপনার থেকে ওনার এটি আরও বেশি পছন্দ হবে। আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো 🥀 ভাইয়া

 3 years ago 

ভালোবাসা অটুট থাকুক আজীবন।🥰
সত্যিই দুজনকে একসাথে খুব বেশি মিষ্টি লাগছে।শুধু বলতে ইচ্ছা করছে " made for each other "।
সৃষ্টিকর্তা দুজনকে সারাজীবন ছবির মতোই হাসিতে রাখুক।বিশেষ করে নবনিতা বৌদির হাসিটা একদম 😍😍😍

 3 years ago 

ধন্যবাদ। Made for each other কিনা জানিনা তবে অনেকটা পথ একসাথে হাঁটার ইচ্ছে আছে

 3 years ago 

খুবই সুন্দর মিষ্টি একটা পোস্ট । ভালো থাকুন দুজনে। ভালো হোক সকলের।

 3 years ago 

ধন্যবাদ 🤗🙏🏾

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.029
BTC 57797.87
ETH 3067.72
USDT 1.00
SBD 2.29