মুভি রিভিউ : বব বিশ্বাস // ১০% পেআউট লাজুক খ্যাঁক-কে
নমস্কার,
বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই সুস্থ। আজকে ফের আপনাদের সাথে আবার একটি সিনেমার রিভিউ নিয়ে হাজির হলাম। ক্রাইম-থ্রিলার বব বিশ্বাস। বব বিশ্বাস ২০১২ সালে বিদ্যা বালান অভিনীত সিনেমা কাহানির একটি চরিত্রকে ঘিরে তৈরী হয়েছে। কাহানিতে বব বিশ্বাস হিসেবে শাশ্বত চ্যাটার্জির অভিনয় প্রত্যেকটা দর্শকদের নজর কারে, সেই চরিত্রকে নিয়ে পূর্ণ দৈর্ঘ্যের সিনেমা এটি।
সিনেমার শুরু হয় কলকাতার এক অন্ধকারময় গুদামঘরে। যেখানে দুজন ব্যক্তি ব্লু নামের নতুন ধরনের ড্রাগে বিনিয়োগের কথাবার্তা বলছে।
তিনমাস পরের ঘটনা। কাহানিতে গাড়ির ধাক্কা খেয়ে, বব বিশ্বাস ৮ বছর পর কোমাছন্ন থাকার পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেছে তবে বব পূর্ব জীবনের স্মৃতি সব হারিয়ে ফেলছে। ইতস্তত হলেও বব স্ত্রী মেরির ও ছেলে বেনির সাথে বাড়ি ফিরে আসে। বাড়ি এসে দেখে ববের আরো একটি সন্তান আছে মিনি। বব হতচকিত হলেও স্বাভাবিক জীবনের সাথে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
সব কিছুর অগোচরে কলকাতা পুলিশের দুই অফিসার যীশু নারাং ও খরাজ সাহু বব বিশ্বাসের উপর নজর রাখতে থাকে। স্বাভাবিক জীবনে ব্যস্ত থাকা ববকে যীশু ও খরাজ গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে ববের পূর্ব জীবনের ইতিহাস খুলে বলে যে বব আসলে একজন "সুপারি কিলার", আর এখন থেকে কলকাতা পুলিশের আততায়ী হিসাবে ববকে কাজ করতে হবে। সাথে তাঁরা ববকে একটা ফ্লিপ ফোন দেয় যাতে ববের লক্ষ্যগুলির ছবি তারা দিয়ে দেবে।
কিছুদিনের মধ্যেই ববের প্রথম টার্গেটের ছবি আসলে, বব চিন্তায় পড়ে যায়। ববকে চিন্তিত দেখে ধোনু কালী দার কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। ববকে দেখে কালীদা নাক্স ভমিকা (সাইলেন্সার সহ একটি বন্দুক) দেয়।তারপর সফলভাবেই বব ওর প্রথম টার্গেট বুবাই ও বুবাইয়ের দুই সঙ্গীকে হত্যা করে দেয়।
বুবাইকে নিকেশ করে বব বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলে রাস্তায় বুবাইয়ের কাছ থেকেই ব্লু কিনে ফেরার সময় মিনির সাথে ববের সাথে দেখা হয়ে যায়, তারপরে দুজন মিলে একসাথে বাড়ি রওনা দেয়। ববের অজান্তেই মিনি ব্লুয়ে আসক্ত। ববের দ্বিতীয় টার্গেট আসে, উস্তাদের বিনিয়োগ কারী রাহুল। বব রাহুলকেও নিকেশ করে দেয়। পরপর খুনের পরে পুলিশ অফিসার ইন্দিরা ভার্মা বুবাই ও রাহুলের খুনের তদন্ত শুরু করেন। সিসিটিভির সূত্র ধরে ইন্দিরা ববকে সন্দেহ করে ও ববের উপরে নজর রাখতে শুরু করে দেয়।
মিনির বাবা ই মেরির প্রথম স্বামী ডেভিডের কবর পরিদর্শন করার সময়, ববের মনে পড়ে যে সে তাঁর একটি ডায়েরি লুকিয়ে সেখানে লুকিয়ে রেখেছে যেখানে বব দ্বারা খুন হওয়া ব্যক্তি থেকে শুরু করে সমস্ত অর্থ লেনদেনের তথ্য আছে।
বব কালী দার কাছে নাক্স ভোমিকা নিয়ে গিয়ে একটা চাবি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে কালী দা ববকে তার দোকানের আরও গভীরে ট্রাঙ্ক রুমে নিয়ে যান ও ববকে তার নির্দিষ্ট ট্রাঙ্ক দেখিয়ে দেয়। বব ট্রাঙ্কের ভেতরে নগদ টাকা পায় যেটা কোমায় যাওয়ার আগে খুন করার পারিশ্রমিক হিসেবে পেয়েছিল। বব কালী দাকে তার পাওনা পরিশোধ করে বাড়ি ফিরে আসে।
উস্তাদের সাথে বস, যীশু ও খরাজ মিটিং হয় যেখানে বস উস্তাদকে বব ছবি দিয়ে বলে ববই উস্তাদের সহযোগীদের হত্যা করেছে। উস্তাদ ধনুকে ববকে হত্যা করার জন্য বলে, ধনু সাথে সাথেই প্রত্যাখ্যান করে ও উস্তাদের সাগরেদের হাতে মারা পরে।
উস্তাদের লোক ববকে মারতে ববের বাড়িতে যায়। বব মেরে ডান হাত ভেঙে দেয় ও ববের সাথে ধস্তাধস্তির সময় মেরি ও বেনি মারা যায়। অনেক কৌশলে বব উস্তাদের লোকদের মেরে ফেলে। জোড়া খুনের দায়ে ইন্দিরা ববকে গ্রেফতার করে কিন্তু ববকে নিয়ে যাওয়ার সময় ইন্দিরা তার বসের নির্দেশে ববকে ছেড়ে দেয়। বব যীশু ও খরাজের কাছে উস্তাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার সময় খারাজকে হত্যা করে কিন্তু যীশুকে ছেড়ে দেয় এই শর্তে যীশু ববকে উস্তাদের ঠিকানায় নিয়ে যাবে।
বব উস্তাদের ডেরায় সব সাগরেদদের মেরে উস্তাদকে মারতে উদ্যত হলে উস্তাদ মিনিকে ডাকে। বব বুঝতে পারে মিনি পুরোপুরি ব্লু আসক্ত। উস্তাদ মিনিকে ব্লুয়ের প্যাকেটের বিনিময়ে ববকে হত্যা করতে বলে। মিনি ববের উপরে গুলি চালিয়ে দেয়। অনেক লড়াই করে বব শেষমেশ উস্তাদকে হত্যা করে।
ছয় মাস পর, মেরি ও বেনির কবরের কাছে বব ও মিনির দেখা হয়। দুজনের বিশেষ কথা হয় না। তারপর মিনি চলে গেলে, ববের সেই ফ্লিপ ফোনে তার পরের টার্গেটের ছবি আসে। বিদ্যা বাগচীর।
"বব বিশ্বাস" ক্রাইম ও থ্রিলার ধর্মী একটি সিনেমা। থ্রিলার তো আমার বরাবরই খুব পছন্দের তবে বব বিশ্বাস ক্রাইম ও থ্রিলারের নিখুঁত মিশ্রণ।
দিয়া অন্নপূর্ণা ঘোষের পরিচালনা আমার বেশ লেগেছে। চিত্র নাট্য আরেকটু ভালো হলে হয়তো সিনেমাটি ধীর গতির মনে হতো না। যদিও বব বিশ্বাস হিসেবে অভিষেক বচ্চনের অভিনয় সিনেমার চিত্রনাট্যর ধীর ভাবটা বুঝতে দেয় না। চিত্রাঙ্গদা সিং বব বিশ্বাসের স্ত্রী হিসেবে বেশ ভালো কাজ করেছেন। পরান বন্দ্যোপাধ্যায় বেশি ক্ষনের জন্য স্ক্রিনে না এলেও যতক্ষন স্ক্রিন টাইম পেয়েছেন সাবলীল কাজ করেছেন।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
খুব সুন্দর মুভি রিভিউ দিয়েছেন দাদা। দেখার ইচ্ছে জাগছে। ক্রাইম থ্রিলার আমার অনেক ভালো লাগে। আপনার মুভিটা দেখবো অবশ্যই। আপনার রিভিউ দেখে কাহিনি অনেক ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটি মুভির খোঁজ দেওয়ার জন্য।
অও,মুভি দেখতে আমার খুবই ভালো লাগে।অবসর সময়ে আমি মুভিই দেখি।দারুণ রিভিউ দিয়েছেন দাদা।রক্তাক্ত সিন ভালোই আছে কাহিনী পড়ে বুঝলাম।চেষ্টা করবো দেখার জন্য,ধন্যবাদ দাদা।