দিনপঞ্জি ৩১-শে ভাদ্র, ১৪২৮ // বিশ্বকর্মা পুজো, অরন্ধন উৎসব আর ঘুড়ি // ১০% পেআউট লাজুক খ্যাঁক-কে

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago


১৭-ই সেপ্টেম্বর, ২০২১


নমস্কার,

বিশ্বকর্মা পুজো মানেই দুর্গা পূজার ঢাকে কাঠি পড়লো। আজ থেকে শুধু দিন গোনা শুরু। মূলত যন্ত্রপাতির ওপর নির্ভর করে জীবিকার লোকেরাই বিশ্বকর্মা পুজো করে, এক কথায় বলা চলে ভারতে আজ অলিখিত শ্রমিক দিবস। চারিদিকে পুজোর মেজাজ।


আজ সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়েছি। পুরোহিত মশাই সকাল বেলাতেই পুজো করতে আসবেন, তাঁর সাথে সাথে থাকতে হবে আরকি। তবে ঘুম থেকে উঠে খুব একটা লাভ হয়নি, পুরোহিত মশাইয়ের আসবার কথা ছিলো সকাল ৭:৩০ টা অবশেষে তিনি যখন এলেন ঘড়িতে বাজে দশটা। রোদ বেশ চড়া হয়ে গেছে। কম ঘুমের কারণে চোখ জ্বালা শুরু হয়েছে। প্রতিবছর এরকমই হয় তবুও ঘুম থেকে উঠে পরতেই হয়। বুঝতে পারি পুরুত মশাইয়ের প্রচুর জায়গায় পুজো করতে হয় তবুও আমাদের সময়ের প্রায় দামই যেন নেই 😭। যদিও আজ কাজ নেই, সারাদিন বাড়িতেই থাকা। একে একে পিসেমশাইয়ের গাড়ি বোনের স্কুটার সব পুজো দেওয়া হলো। ৩০ মিনিটের মধ্যেই পুজো শেষ।

স্কুটার পুজো হচ্ছে | w3w
গাড়ির পুজো চলছে | w3w

পুজো শেষ হতেই বেশ খুশি হলাম। অবশেষে কিছু পেটে পড়বে, এই আশায়। হঠাৎ করে সে আশায় জল, আজ তো অরন্ধন উৎসব। বিশ্বকর্মা পুজোর সাথে আজ দক্ষিণবঙ্গে অরন্ধন উৎসব বা রান্না পুজো পালন হয়। রাতের বেলায় রান্না করে সারাদিন ধরে তাই খাওয়া, জ্বলে না কোনো রান্নার চু়লো।

সকাল থেকে পেটে পড়েনি এক ফোঁটাও চা। যেই মনে পড়লো আজকে তো রান্নার উনুনও জ্বলবে না, আমি বাড়িতে দোকানের চা কিনেই ঢুকলাম। আহ! কি স্বাদ। চায়ে অল্প আদা দিয়েছে, তাতেই বাজিমাত।


চা | w3w

চা খেয়ে বসলাম স্টিমিট নিয়ে, বিগত কয়েকদিন স্টিমিট খুবই কম করতে পেরেছি। আজ সারাদিন বাড়ি থাকা, আজ বেশ আয়েশ করে স্টিমিট করা যাবে। সকাল ১১ টায় চা খেয়ে বসলাম, টানা তিন ঘন্টা করে তবেই উঠেছি। পছন্দের কিছু পোস্টে কমেন্ট আর অপভোট করলাম।


স্টিমিট ছেড়ে উঠতাম না যদি না পেট চুঁই চুঁই করে উঠতো। সকাল থেকে পেটে এক কাপ চা পড়েছে মাত্র, দুপুর বেলায় পেটে যেন ইঁদুর দৌড়াতে লেগেছে। তাই খেয়েই নিলাম। আজ তো আবার স্পেশাল মেনু। পান্তা ভাতের সঙ্গে থাকে মিষ্টি কুমড়োর সবজি, আলু-পটল ভাজা, কচুশাকের ঘন্ট আর ভাজা মাছ। খাবার পরে মিষ্টিমুখের জন্য ক্ষীর পায়েস।

পান্তা 😍 | w3w
ক্ষীর পায়েস | w3w

খেয়ে উঠে ভাবলাম আরেকটু স্টিমিট করি, কিন্তু পান্তা ভাত শুরু করলো তার কামাল। যেই না মোবাইল খুলে শুয়েছি আর খেয়াল নেই। ঘুমটা ভাঙলো বাইরের চিৎকার চেঁচামেচিতে। ঘড়িতে বিকেল সাড়ে চারটা বাজে। কি ব্যাপার কি ব্যাপার করে দৌড়ে ছাদে গেলাম। সারা আকাশ জুড়ে যে ঘুড়ির মেলা। ছাদে তিনটে ঘুড়ি পড়ে আছে। বিশ্বকর্মা পুজোর রীতি রয়েছে ঘুড়ি ওড়ানোর।


ঘুড়ির মেলা | w3w

চারিদিকে হাজারে-হাজারে ঘুড়ি। রং বেরঙের ঘুড়ি। সারাটা বিকেল ঘুড়ি দেখেই কাটলো। এই ভোকাট্টা...


ভোকাট্টা


১০% পেআউট @shy-fox কে

Sort:  
 3 years ago 

পূজার দিনে একটি আলাদা উদ্যম পাওয়া যায় মনে।সারাদিন যেন নিমেষেই কেটে যায় আনন্দে।তারপর সারাবছরের অপেক্ষার পর এই দিন ঘুড়ি ওড়ানো।ধন্যবাদ দাদা।

 3 years ago 

সত্যিই আলাদা উদ্যম পাওয়া যায়। তবে রান্না পুজোর পান্তা খেয়ে ভালো ঘুম হয়েছে 😆।

আপনার দিনলিপিটা অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। আমাদের এলাকাতেও ঘুড়ি আকাশে উড়ানো হয়। বিশেষ করে নদীতে যখন পানি থাকে না তখন সবাই নদীর ধারে গিয়ে ঘুড়ি উড়াই। আপনার জন্য শুভ কামনা রইল।

 3 years ago 

ধন্যবাদ ভাই ♥️। আচ্ছা তোমরা যে ঘুড়ি ওরাও ওগুলোর লেজ কি ছোটো হয় নাকি বড়ো লম্বা?

হুম ভাইয়া, বড় এবং ছোট দুইটাই হয়।

খুব সুন্দর একটি দিনলিপি উপস্থাপন করেছেন আপনি।দিনটি শুভ হোক আপনার জন্য।

দুপুর বেলায় পেটে যেন ইঁদুর দৌড়াতে লেগেছে। তাই খেয়েই নিলাম।

আসলে ভাই ক্ষুদা লাগলে আমি চোখে অন্ধকার দেখি।আমার কাছে পেত শান্তি তো দুনিয়া শান্তি।

অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনার মূল্যবান দিনটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।

 3 years ago 

আমিও। চোখে সর্ষার ফুল দেখি 😆। মাথা খারাপ হয়ে যায় পুরো।

ধন্যবাদ ভাই আমার পোস্টটি পড়ার জন্য।

 3 years ago 

দিনটি সত্যি সুন্দর হবে পার করেছেন। দেবতাদের সন্তুষ্টি অর্জন, চা খাওয়া, ঘুড়ি ওড়ানোর মেলা সকল পর্যায় গুলো ছিল অসাধারণ সুন্দর।

 3 years ago 

ঘুড়ি ওড়ানো দেখা ছিলো সবচাইতে ভালো লাগার সময়।

আমার পোস্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

 3 years ago 

শুভকামনা রইল অবিরাম

 3 years ago 

দাদা আপনার প্রতিটা দিনপুঞ্জি অত্যান্ত সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেন।এর মধ্যে আলাদা একটা মজা থাকে অংখ্য ধন্যবাদ এভাবে প্রতিনিয়ত ভাগাভাগি করুন আমাদের সাথে।

 3 years ago 

ধন্যবাদ ভাই। পাঠকের ভালো লাগাই আমার প্রাপ্তি 🤗

 3 years ago 

পূজোর শুভেচ্ছা রইল তোমার জন্য। বিকেলের ছাদে ঘুড়ি উড়ানোর মূহুর্তটা সুন্দর ছিল ।

 3 years ago 

আমি ওড়াইনি দাদা। আমি শুধু ছবি তুলেছি আর খুব আনন্দ পেয়েছি। ধন্যবাদ দাদা আমার পোস্ট পড়ার জন্য।

 3 years ago (edited)

খুব ভালো কন্টেন্ট। দাদা প্রতিদিনের কাজকর্মের তালিকা তুলে ধরো খুব ভালো। বিশ্বকর্ম পূজার আগের দিন ও পূজার দিন। অনেকই যান্ত্রিক সকল কিছু পরিষ্কার করে। পূজা দেয়। বাঙালির ঐতিহ্য পান্তা ভাতের সাথে তরকারি ।এই পূজার দিন খায়। সবকিছুই তুমি করেছো। অনেক শুভেচ্ছা দাদা

 3 years ago 

আগের রাতে ডিসকর্ড হ্যাং আউটের সময় গাড়ি ধুইতে নিয়ে গিয়েছিলাম। সকালে পুজো হলো।

 3 years ago 

এইযে চলে আসলাম আপনার প্রতিদিনকার দিনপঞ্জির পাঠিকা। 🤪
আচ্ছা আদা দিয়ে চাটা সত্যিই ভালো লাগে! আমার কেনো জানিনা খুব একটা টানে না এই আদা চা টা। আমার নরমাল চা ই পছন্দ খুব।
আচ্ছা গাড়ি পুজোটা কেনো হলো?
আর উপরের ঘুড়ি দুটো বেশি সুন্দর।

 3 years ago 

তাই নাকি ম্যাডাম, আমিও আপনার আবৃত্তি পড়েছি। বেশ হয়েছে।

আদা চা ভালো লাগে কারণ চায়ের স্বাদে একটা জিঙ্গ আসে, যেটা গলায় হিট করে।

বিশ্বকর্মা হলেন ইঞ্জিনিয়ার দেবতা। তিনি সৃষ্টিশক্তির ধারক বাহক, তাই বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে গাড়িও পুজো করা হয়।

 3 years ago 

ও এখন বুঝেছি।

আপনার দিনলিপিটা অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। আপনার জন্য শুভকামনা দাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 60728.87
ETH 2661.87
USDT 1.00
SBD 2.50