হাসপাতালে সারাটাদিন // ১০% লাজুক 🦊-কে

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago (edited)

নমস্কার,

বিগত কয়েকটা দিন খুব দৌড়াদৌড়ির করে কাটাচ্ছি। হাসপাতাল থেকে ডাক্তারের চেম্বার, ডাক্তারের চেম্বার থেকে ডায়াগনস্টিক সেন্টার ফের ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে আবার ডাক্তারের চেম্বার। না! আমার নিজের জন্য নয় তবে আত্মীয় বলতে পারেন। জেলার মানুষের স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়া যে কতটা কষ্টকর সেটা কয়েকদিন দৌড়োদৌড়ি করে হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।

আমার গ্রামের বাড়ির পাড়াতুতো জামাইবাবুর হঠাৎ করেই শরীরটা খারাপ হয় আর সেই সুবাদে ইউএসজি পরীক্ষা করা হলে হার্ট ব্লকেজ ধরা পড়ে। অন্য কোনো শারীরিক অসুবিধা নেই কিন্তু মার্চে পরপর দুটো বিয়ে বাড়িতে খাওয়া-দাওয়ার পর থেকে পেটে সমস্যা দেখা দিয়েছিলো, সমস্যার কথা এক পরিচিত হোমিওপ্যাথি ডাক্তারবাবুকে বললে তিনি ইউএসজি করার পরামর্শ দেন। ব্যাস! পরীক্ষা করেই হার্টের ব্লক ধরা পড়লো।

জেলায় স্বাস্থ্য পরিষেবার বেহাল পরিস্থিতি তাই আমার উপর ভরসা করে জামাইকে নিয়ে প্রতিবেশী কলকাতায় চলে আসে, আমিও অসুস্থ মানুষের অর্তি শুনে না করতে পারিনি। কাজের মাঝেই ছুটি নিই আর তাদেরকে নিয়ে প্রথমে যাই পিসেমশাইয়ের হাসপাতাল, চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ। পিসেমশাই প্রত্যেকটি রিপোর্ট দেখে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে পাঠিয়ে দিলেন।

সারাদিন নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা করতেই কেটে গেলো ঠিক সন্ধ্যের দিকে গেলাম হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডক্টর কাজল গাঙ্গুলীর চেম্বারে। অল্প সংখ্যক রোগীদের মধ্যে বয়স্কদের সংখ্যাটাই ছিলো অধিক। বয়স্ক রোগীদের মাঝে বছর ৩৮ এর জামাই ও আমরা ছিলাম খুবই বেমানান।

শরীর খারাপ তো সময় আর বয়স দেখে আসেনা, সেটা চিন্তা করেই মনকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলাম। কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই ডাক্তার বাবু চেম্বারে দেখে নিলেন। উনি বেশ খানিকটা সময় নিয়েই সমস্ত কিছু দেখে নিয়ে কিছু ওষুধ ও আরো কিছু রিপোর্ট করার পরামর্শ দিয়ে আমাদেরকে চলে যেতে বললেন।

কথা শেষ করে আমরাও চেম্বার থেকে বেরিয়ে পড়লাম। জামাইকে আশ্বস্ত করে বললাম, ঠাকুরের কৃপায় সব ভালো হয়ে যাবে। পরীক্ষা গুলো করা যাক হয়তো খুব ছোটখাটো ব্যাপার যেটা ওষুধেই সেরে উঠবে। সান্তনা স্বরূপ আরো কিছু কথা বলে তাদের ওষুধ কিনে দিয়ে হোটেলে দিয়ে আমিও বাড়ির পথ ধরলাম। বাড়ি ফেরার পথে বারবার মনে হচ্ছিল যে মানুষের জীবনে সুখ কতটা ক্ষণস্থায়ী, এই আছে এই নেই। সবই ভাগ্যের খেলা।





Support @heroism by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Sort:  
 3 years ago 

দাদা আসলে সত্যি কথা বলেছেন। রোগ কিন্তু বয়স দেখে আসে না। তবে হাসপাতালে গেলে সারাদিন কিভাবে চলে যাই সেটা আমি ভালো জানি। আল্লাহ কি যে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়,,, 🥺 হার্টের সমস্যা,,শুনে ভয় লাগছে। যাক দিন শেষে সুস্থ হয়ে উঠুক সে প্রার্থনা করি।

 3 years ago 

হাসপাতালে ছোটো ছোটো বাচ্চা ছিলো দেখেই খুব খারাপ লাগলো। মানুষের জীবনে রোগ যে কখন আসে!

 3 years ago 

আসলেই সবাই কে ভরসা করা যায়না।যাই হোক আপনার জামাই বাবু খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হোক এই পত্যাশা করি।সব দেশের কি একই অবস্থা যে ডাক্তার দেখাতে গেলে ভোগান্তিতে পরা লাগে।আমি তো ভেবেছিলাম শুধু বাংলাদেশে ঐই অবস্থা।আসলেই মানুষের জীবনে সুখ টা ক্ষনস্থায়ী।ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

চিকিৎসা ভালো হয় তবে আমাদের জনসংখ্যা তো অনেক, তাই ভীড়ও কমে না।

 3 years ago 

হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ির করাটা যে কতটা কষ্টকর তা না দেখলে বোঝা যায় না। আর এখন যে অবস্থা আমাদের দেশগুলোতে। হাসপাতলে অনেক ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। আপনার জামাইবাবু যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়। আপনার জামাইবাবুর জন্য শুভকামনা রইল।

 3 years ago 

সত্যিই তাই! নিজে না গেলে বোঝা যায় না।

*পাড়াতুতো জামাইবাবু

 3 years ago 

দাদা, আপনার পোষ্টের প্রথম শিরোনাম দেখি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। মনে করেছিলাম হয়তো আপনার কোন শারীরিক সমস্যা হয়েছে কি না।পরে আপনার পুরোটা পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম আপনাদের আত্মীয়ের শরীরের সমস্যা। দাদা, আপনি আপনার পোষ্টটে লিখেছেন জেলা হসপিটালের কথা। দাদা, আমাদের বাংলাদেশ সেম একই সমস্যা জেলা হসপিটাল গুলোতে ভালো চিকিৎসা পাওয়া যায় না এছাড়া রোগীকে ডাক্তার রোগী মনে করে না। যাই হোক দাদা, আপনার আত্মীয় যেন সুস্থ হয়ে যায় সেই দোয়া করি।এই টাই বাস্তব দাদা, মানুষের সুখ ক্ষণস্থায়ী সব ভাগ্যের লীলাখেলা।ধন্যবাদ দাদা।

 3 years ago 

হ্যাঁ। পাশের বাড়ির এক জামাইয়ের শরীরটা খারাপ হয়েছে তাকে নিয়েই ছুটোছুটি।

জেলা হাসপাতালে বিশেষ চিকিৎসা হয় না, যা কিছু সব কলকাতা কেন্দ্রিক যেটা আমাদের মতো গ্রামের মানুষের জন্য খুবই অসুবিধাজনক।

 3 years ago 

একদম ঠিক,জীবনটা আসলেই ক্ষণস্থায়ী।তা না হলে কখন কার যে কি হয়ে যায় টের ই পাওয়া যায়না।

 3 years ago 

সত্যিই তাই! এই ভালো আছে হঠাৎ করেই কখন যে কি হয়ে গেলো বলা মুশকিল।

 3 years ago 

যেখানে গেলে সুস্থ মানুষ অসুস্থ হয়ে যায় সেটা হলো হাসপাতাল দাদা। আসলে আমরা যারা অসুস্থ মানুষকে নিয়ে এরপর হাসপাতালে দিন কাটাই তাদের থেকে মনে হয় আমরাই বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ি। আসলে এভাবে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। সেই জন্যই মনে হয় অসুস্থ হয়ে পড়ি। আপনি খুবই ব্যস্ততার সময় কাটিয়েছেন সেটা আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পেরেছি। শুভকামনা রইল যেন শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 3 years ago 

সেই বুধবার থেকে শুরু হয়েছে। কয়েকদিন শুধু হাসপাতাল থেকে ডাক্তারের চেম্বার আবার সেখান থেকে ডায়াগনস্টিক সেন্টার, এই করেই কাটছে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 62067.61
ETH 2414.80
USDT 1.00
SBD 2.57