দেব সেনাপতির পুজোয় // ১০% পেআউট লাজুক খ্যাঁক-কে

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago



নমস্কার,

কাহিনীর সূত্রপাত ৩২ বছর আগে। পিসেমশাইয়ের বোনের শ্বশুরবাড়ির দিকের ঘটনা। উনি সম্পর্কে আমাদের পিসিই হন, তা পিসির বিয়ের বছরে কারা যেন পিসির শ্বশুরবাড়ির সামনে কার্তিক রেখে যায়। এইবার নিয়ম অনুযায়ী একবার কার্তিক বাড়ির সামনে রেখে গেলে পরপর তিন বছর কার্তিক পুজো করে নিয়ম পালন করতে হয়। পিসিদের কার্তিক রেখে যাওয়ার বছরে পুজো দিয়েই থেমে যেতে হয়, কারণটা ছিলো অর্থনৈতিক। ফের ৩২ বছর পর, পিসতুতো দাদা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে এবারে কার্তিক পুজো করছে, সেটার নেমতন্ন রক্ষা করতে গিয়েছিলাম।


নেমতন্ন রক্ষার্থে

বাড়ির সামনে কার্তিক রেখে যাওয়ার নিয়ম কে প্রথম শুরু করেছিল সেটা আমার সঠিক বলা যাবে না তবে নববিবাহিত দের বাড়ির সামনে বিয়ের প্রথম বছর কার্তিক রেখে যাওয়ার রীতি বেশ প্রচলিত। পৌরাণিক মতে কার্তিক যেমন যুদ্ধের দেবতা তেমনি সন্তান প্রাপ্তির দেবতাও বটে, সেজন্যেই নবদম্পতিদের সন্তান লাভের আশায় কার্তিক রেখে আসা।

পুজোর দিন নেমতন্ন থাকলেও রাতের দিকে পুজো বলেই বাড়ির লোক যাওয়ার জন্য সাহস করেনি, তবে পরের দিন দুপুরের নেমন্তন্ন রক্ষা করতেই পিসি আর বোনকে নিয়ে তিনজনে গিয়েছিলাম। বাড়ি ঢুকতেই আমি আশ্চর্য, এক খানা পুজোর নেমতন্ন খেতে এসে দু দু খানা কার্তিক। জানতে পারলাম এবছরেই একসাথে দুটো পুজো করে নিয়মের সমাপ্তি হবে।


জোড়া কার্তিক ঠাকুর

যার নেমতন্ন পেয়ে এলাম, সেই উদ্যোক্তারই দেখা নেই। উদ্যোক্তা অর্থাৎ পিসতুতো দাদা রাতের খিচুড়ি প্রসাদের জন্য জোগাড় করতে ছোটাছুটি করছে। সবজি কাটা দেখা ছাড়া মনে হচ্ছিলো, রাতে খিচুড়ি খেতে এলেই মনে হয় বেশি ভালো হতো। আমার পুজার খিচুড়ি অসাধারণ লাগে।


খিচুড়ি জোগাড়

দাদাকে না পেয়ে আমাদের ঘরে বসে থেকেই কাটাতে হলো। ছোট্ট একটু ঘরে ঢোকার মুখেই আলপনা খুব সুন্দর ভাবে আঁকা ছিলো। আলপনা দেখে আমার বেশ ভালো লাগলো কারন শহরের দিকে আলপনা দেওয়ার রীতি অনেকটাই কমে গেছে। আমার গ্রামের বাড়িতে এখনো প্রতি বৃহস্পতিবারে মা আলপনা দেন কিন্তু কলকাতার দিকে গৃহস্থের বাড়িতেও খুব একটা আলপনা দেখি না।


আলপনা

দুপুরের রসনায় ছিলো বিরিয়ানি! আহা! পরিমাণের দিক থেকেই অন্য দোকানের বিরিয়ানিকে মাত দিয়ে দেবে সাথে ছিলো ভালো মানের বাসমতি চাল আর ভালো মসলার ব্যবহার। আমার খাওয়া সেরা তিনটে বিরিয়ানির মধ্যে জায়গা একটা। বোন এতো খায় না সেজন্য আমি বোনের হাফ প্লেট আর আমার একটা ফুল প্লেট সাবরে দিলাম।


বিরিয়ানি

কলকাতায় আমার প্রথম কার্তিক পুজোর নেমতন্ন বেশ ভালোই কাটলো। দাদার সাথে সময় কাটাতে পারলে আরো ভালো লাগতো কিন্তু আজ তাঁর ব্যস্ততা অনেক বেশি। ঘরে বসে আত্মীয়-স্বজনের সাথে গল্প করতে করতেই সময়টা টুক করে কেটে গেলো। শীতের দিন দুপুর গড়িয়ে টুক করে বিকেল হয়ে বোঝাও গেলো না। আমরা ওলা বুক করে বাড়ির পথে রওনা হলাম।

ঠাকুরের যেমন ভাবে পুজো গ্রহণ করবেই তেমনই পুজো হবে। আমারকার্তিক পুজোর অভিজ্ঞতাটা বেশ ভালোই ছিলো। ৩২ বছরের নিয়মের পরিসমাপ্তি।



Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Sort:  
 3 years ago 

ভালো লাগলো না আর কিছুই। এইযে বিরিয়ানিটা দেখেই আমার মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো একেবারেই।
তবে বেশ ভালো সময় ই কাটালেন বোধহয়। শীতের দিনে সমস্যা, সময় ধরাই যায়না।

 3 years ago 

বিরিয়ানি দেখলেই মেজাজ খারাপ হয় নাকি! হাঃ হাঃ।

অনেকদিন পরে কারো বাড়িতে নেমতন্ন খেতে গেলাম, বেশ ভালো কাটলো সময়টা।

দাদা মনে হয় খুব চিলে আছেন বেশ কিছুদিন যাবৎ। খুব ঘোড়াঘুরি করতেছেন দাদা। আপনার আনন্দের ভাগ নিয়েনিলাম কিন্তু আসল স্বাদ পাইলুম না🤭🤭🤭🤭🤭 তবে দাদার হাসি আমার সেই পছন্দ💗💗💗💗😁😁😁

 3 years ago 

আজকেই চিল ছিলো। নইলে তো প্রায় দিনই দৌড়ে বেড়াই। ধন্যবাদ আলমগীর 🤗

 3 years ago 

32 বছর পর পিসতুতো দাদা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে কার্তিক পূজার আয়োজন করছে খুবই ভালো লাগছে। আপনি নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েছিলেন পরিবারকে নিয়ে খুবই আনন্দের বিষয় এবং অনেক সুন্দর মুহূর্ত উদযাপন করেছেন। বিরিয়ানি এটা দেখে অনেক লোভ লেগে গেলো দারুন ছিল আর এক কথায় অনেক সুন্দর মুহূর্ত উদযাপন করেছেন আপনি

 3 years ago 

বেশ সুন্দর পারিবারিক সময় কাটাতে পারলাম। করোনার পরে বিশেষ কোথাও যাওয়াই হয় না।

 3 years ago 

ভাইয়া পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। 32 বছর পরও পিসতুতো দাদা কার্তিক পুজো করেছেন সত্যি অসাধারণ ধার্মিক ব্যক্তি। কার্তিক পূজার বিভিন্ন ধরনের ফটোগ্রাফি এবং কার্তিক পূজার ফটোগ্রাফি চমৎকার হয়েছে। দাদা আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 3 years ago 

ধার্মিকের তুলনায় নিয়ম মেনে সমাপ্তি হলো, এটাই মূল উদ্দেশ্য ছিলো। ধন্যবাদ 🤗

 3 years ago 

প্লেট ভর্তি বিরিয়ানি দেখেই তো জিভে পানি চলে আসলো ভাইয়া। পরিবার নিয়ে কার্তিক পূজার নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েছিলেন ব্যাপারটি খুব ভালো লাগলো ভাইয়া। আপনার আনন্দ উৎসব আমাদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.026
BTC 57142.47
ETH 2437.81
USDT 1.00
SBD 2.39