শুশুনিয়া পাহাড়ে ট্রেকিং // ১০% পেআউট লাজুক খ্যাঁক-কে

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago


নমস্কার,

পাহাড় ঘুরতে যাব আর ট্রেকিং করব না তা কি হয়! কলকাতা থেকে শুশুনিয়া দুপুর নাগাদ পৌঁছে গেলেও, খানিক রেস্ট নিতেই বিকেল হয়ে গিয়েছিল। পাহাড়ের দিকে সন্ধ্যেটা একটু আগেই হয়, তাই আর সাহস করে পাহাড়ে ওঠার চিন্তা আমরা কেউই করিনি। আমরা স্থির করলাম ভোর বেলাতেই যাবো। তবে রাতে হালকা এক পশলা বৃষ্টি দেখে ভোর বেলা বেরোনোর চিন্তা দূরে সরিয়ে রাখতে হলো, শেষে সকাল ৭ টাতেই বেরোনো ঠিক করা হলো। পিসি-দিদিরা ঘুমোচ্ছে দেখে ডাকাডাকি করে ঘুম না ভাঙিয়ে পিসেমশাই আর আমি একসাথে বেরিয়ে পড়লাম।


নিজস্বী | w3w

পাহাড় চড়া শুরু হলো, আমি আগে পিসেমশাই পেছনে। পাহাড়ে একটু উঠতেই একদল ফিরতি জোয়ান ছেলেদের সাথে দেখা হলো, কথায় কথায় বুঝতে পারলাম তাঁরা পাহাড়ের চূড়ায় ওঠেনি তাই কতটা উপরে উঠতে হবে সেটা জানেনা, চূড়ায় পৌঁছানোর আগেই নেমে এসেছে। দু এক কথা বলে আবার আমার পথ চলা শুরু করলাম। মিনিট পনেরো হাটতেই ২৫৭ মিটার পথ চলে আসা গেলো।


২৫৭ মিটারে | w3w

একটু জিরিয়ে নিতে বসে পড়লাম। সকাল সাড়ে সাতটা বাজে তবুও গরমে যেন ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছিলাম। পাহাড় বলেই হয়তো গরমটা বেশি। এই উচ্চতা থেকে শুশুনিয়ার সৌন্দর্য বেশ ফুটে উঠছিলো। আমরা মিনিট তিনেক আরাম করে ফের উঁচু পাহাড়ি রাস্তায় চলতে শুরু করলাম।


২৫৭ ফুট থেকে শুশুনিয়া। | w3w

মাঝে মধ্যে বেশ সুন্দর পাহাড়ি ফুলের দেখা মিলছিলো। আমরা একের পর এক পিচ্ছিল পাথরের বেয়ে উপরে উঠছিলাম সাথে ছিলো রোডের তেজ। রোদের তেজের সাথে পারা মুশকিল হয়ে যাচ্ছিলো তাই অল্প জিরিয়ে নিচ্ছিলাম।


নাম না জানা ফুলের বাহার | w3w

ঘণ্টাখানেক চড়াই রাস্তা হেঁটে, প্রায় ১ কিমি হেটে পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছালাম। পাহাড়ের উচ্চতা ৫৫২ মিটার তবে খাঁড়া রাস্তা হওয়ার বেশ পরিশ্রম করতে হলো।

৫৫৬ মিটার | w3w
পাহাড়ের চূড়ায় | w3w

আহা! চারিদিকটা দেখে প্রাণটা জুড়িয়ে গেলো। আহা এ যেন স্বর্গ। মেঘের সাথে কথা বলা। সৌন্দর্য দেখে এক নিমিষেই সমস্ত ক্লান্তি যেন কেটে গেলো।


চূড়া থেকে শুশুনিয়া | w3w


চূড়ায় কিছুটা সময় কাটিয়ে আবার ফেরার পথ ধরলাম। তবে যে রাস্তায় এসেছি তার থেকে একটু দূরে, নতুন রাস্তা ধরে ফেরা হবে ঠিক হলো। সেই মতো আবার হাঁটা। তুলনামূলক অনেকটা সহজ রাস্তা তবে বেশ সরু। হাতে লাঠি নিয়ে এগোতে থাকা হলো। আধ ঘন্টা ধরে হাঁটছি তো হাঁটছি তবুও সমতলের দেখা না পেয়ে মনে হচ্ছিলো ভুল পথেই এসেছি। তবে বাইকের হর্ন শুনতে পেয়ে আশ্বস্ত হলাম। নামার রাস্তাটা অনেকটা সহজ হলেও দূরত্ব অনেকটাই।


শুশুনিয়া

নীচে নেমে এসে অবশেষে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম।



Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Sort:  
 3 years ago 

দাদা আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখার মত ছিল, খুবই সুন্দর হয়েছে ।এই ফটোগ্রাফি গুলো দেখে আমি সত্যি মুগ্ধ হয়ে গেছি মপাহাড়ের চূড়ায় যখন ওটা হয় তখন অনেক ভালো লাগে। পাহাড়ের সুন্দরতম দৃশ্যের মাঝে ফটোগ্রাফি গুলো অসাধারন ছিলম আমার খুবই ভালো লেগেছে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল

 3 years ago 

ধন্যবাদ ভাই 🤗। যা দেখেছি ছবিতে তাঁর ৫০% ই এসেছে।

ওয়াও দাদা। পোস্ট দেখে মনে হচ্ছে খুব মজায় ছিলেন পাহাড়ে চুড়ায়। আপনার যাত্রা শুভ হোক দাদা। আর ফটোগ্রাফি গুলো মনোমুগ্ধকর পরিবেশ তৈরি করেছে। শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন দাদা।

 3 years ago 

বেশ ভালো লেগেছে ভাই। ধন্যবাদ।

 3 years ago 

অনেক সুন্দর এবং গুছিয়ে লিখেছেন ভাই, পাহাড়ের ভিডিওটা জাস্ট অসাধারণ ছিল। আপনার পোস্টগুলো আমি নিয়মিত পড়ি আসলে আপনার পোস্টগুলো ভিতরে সৃজনশীলতা ছোঁয়া পাই। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।

 3 years ago 

ওটা নেমে আসার ভিডিও। নামাটা তুলনামূলক সমতল রাস্তা দিয়েই করেছি।

দাদা, আপনার ফটোগুলো অসাধারণ হয়েছে। আর মনে হচ্ছে আপনি অনেক কষ্ট করে পাহাড়ের চূড়ায় উঠেছে। পাহাড়ের চূড়ায় উঠা আসলে অনেক কষ্টকর। অনেক কষ্ট করে পাহাড়ের চূড়ায় যখন ওঠা হয় তখনই নিজেকে সার্থক মনে হয়। আর তখনই প্রকৃতির সৌন্দর্য সেখান থেকে অনুভব করা যায়। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 3 years ago 

কষ্টকর তবে আলাদা একটা আনন্দ কাজ করছিলো। ধন্যবাদ ভাই 🤗

অসাধারণ ফটোগ্রাফি আর বর্ণনার মাধ্যমে আপনার পোস্টটি খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন।সময়টা খুব সুন্দরভাবে উপভোগ করেছেন আপনি।পাথরের মাঝে লেখাগুলো বেশ সুন্দর লাগছে।ফুলের ছবিটা দারুন ছিল।ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।

 3 years ago 

সময়টা বেশ ভালোই কেটেছে। ধন্যবাদ।

 3 years ago 

ঠিকই বলেছেন ভাইয়া পাহাড়ে ওঠা আসলেই অনেক কষ্টের কাজ। কিন্তু একবার উঠে পড়লে উপর থেকে চারপাশে দেখতে অনেক ভালো লাগে। আপনার ছবিগুলোর কথা কি বলব প্রতিটি ছবিই অসাধারণ হয়েছে। বিশেষ করে শেষের ছবিটির জবাব নেই। ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার সাথে আমরাও পাহাড়টির সৌন্দর্য দেখতে পেলাম।

 3 years ago 

পাহাড়ে চূড়ায় শুধুমাত্র শান্তি। আওয়াজ নেই। মানুষ নেই। ঠান্ডা হাওয়া আর অসাধারণ দৃশ্য।

 3 years ago 

বাহ্।। অসাধারণ একটা অ্যাডভেঞ্চার ছিল। খুবই চমৎকার। পাহাড়ের উপরে ওঠা আসলেই অনেক কষ্টকর একটা কাজ। আমারও অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু যখন একদম চূড়ায় উঠে যাওয়া যায় আর কাঙ্খিত দৃশ্যটা যখন দেখতে পাওয়া যায় তখন সব কষ্ট ভুলে যেতে হয়। মনকে প্রশান্তি করার জন্য চূড়ায় উঠে এমন দৃশ্য গুলো দেখাই যথেষ্ট ।

প্রাকৃতিক দৃশ্য গুলো সত্যিই অসাধারণ ছিল। ভিডিওটাও দেখলাম, ভিডিওটা দেখে বেয়ার গ্রিলসের কথা মনে হচ্ছিল।

 3 years ago (edited)

সূর্যের তাপ, পিচ্ছিল পাথর বেয়ে পাহাড়ের ওঠার কষ্ট উপরে উঠেই ভুলে গেলাম। বাতাস এতো পরিস্কার যারা পাহাড়ে ওঠে তাঁরা ভালো বুঝতে পারবে। নিমিষেই ওঠার খাটনি ভুলে গেলাম।

 3 years ago 

সবকিছু মিলিয়ে চরম কষ্টদায়ক জানিয়েছেন তার পরেও তার ভিতরে আনন্দ ছিল। সাথে অসাধারণ ফটোগ্রাফি সংমিশ্রন

 3 years ago 

কেষ্ট পেতে একটু তো কষ্ট করতেই হয়।

 3 years ago 

জি ভাই আপনার পরিশ্রম সার্থক হোক

 3 years ago 

আপনার পাহাড়ে উঠার কথা শুনে গা ছমছম করছে, আর পায়ের তালা ঝিমঝিম করছে।কিভাবে যে আপনারা পাহাড় ট্রেকিং করছিলেন,ভাবতেও অবাক লাগছে।আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই বিষয়গুলো শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

দাদা, দারুন মজা তো। উপরে উঠতে কষ্ট হবে তবে মজাও লাগবে।

 3 years ago 

অসাধারণ দাদা। পাহাড় ট্রেকিং করার ইচ্ছা আমারও আছে। তবে খুব ভালো লাগল দেখে আপনারা পাহাড় চূড়ায় যেতে পেরেছেন। এবং চূড়া থেকে তোলা ছবিটি এক কথায় অসাধারণ। প্রকৃতির এমন কাছে গেলে কার না ভালো লাগে।

আমাদের দিকেও রাত থেকেই বৃষ্টি। এই বৃষ্টি আমার কাছে ভালোই লাগে। তবে কীনা অনেক কাজের সমস্যা সৃষ্টি করে।

 3 years ago 

চূড়া থেকে এতোটাই ভালো লাগছিলো বলে বোঝানো সম্ভব না। তুমিও একবার পাহাড় ঘুরে এসো।

 3 years ago 

চেষ্টা করব দাদা।।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.030
BTC 58776.30
ETH 2576.56
USDT 1.00
SBD 2.44