সইফের বৌভাত (পর্ব ১) // ১০% পেআউট লাজুক খ্যাঁক-কে
নমস্কার,
যখন ভাগ্যে ঘুরতে যাওয়া নেই তখন হাজার বার পরিকল্পনা করলেও শেষমেশ ঘুরতে যাওয়াই ভেস্তে যায় আবার যখন ভাগ্যে ঘুরতে যাওয়া থাকে তখন পরপর শুধু ঘুরে বেড়ানো। আমাকেই দেখুন না, অক্টোবর মাসের পর অনেকবার অনেক জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করলেও শেষ পর্যন্ত যেতে পারিনি। পাঁচ মাস কলকাতাতেই আটকে আছি। গত সপ্তাহে প্রায় পাঁচ মাসে ক্ষরা কাটিয়ে কাজের সূত্রেই বর্ধমান গেলাম। কাজ ঘোরা দুটোই হয়ে গেলো।
করোনার পরেই সবকিছুই যেন ওলটপালট হয়ে গেছে, বেশিরভাগ সময় বাড়িতেই আটকা থাকতে হয় বা কোথাও ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা হলেও করোনা এসে সমস্ত পরিকল্পনায় জল ঢেলে দেয়। গত সপ্তাহে বর্ধমান সফর করে আসবার পর থেকে হয়তো ভ্রমণদেবী আমার উপর একটু সদয় হয়েছেন। জয় মা দুগ্গা।
আসলে চলতি সপ্তাহের শুরুতেই বোনের মেডিকেল কলেজের বন্ধু সইফ বিয়ের নিমতন্ন করলো। আমার যদিও বিয়েতে যাওয়াই খুব একটা ইচ্ছা ছিল না তার কারণ প্রথমত বর্ধমান শহর থেকে ওর বাড়িটা আরো ৩৫ কিলোমিটার দূরে। সবমিলিয়ে কলকাতা থেকে প্রায় ১৬০ কিলোমিটার। যাওয়া ও ফেরত আসা নিয়ে প্রায় ৩২০। দূরত্বের কথা ভেবেই আমি যাওয়া নিয়ে মানসিক দোটানায় ছিলাম। বুধবার বাড়ি ফিরে অনেক রাতে যাওয়াটা স্থির করলাম।
বৃহস্পতিবার সকাল ছ-টায় এলার্ম থাকলেও কোনো এক অজ্ঞাত কারণে এলার্ম বাজে নি। ভাগ্যিস পিসি ঘুম থেকে ডেকে তুললো। ঝটপট প্রস্তুতি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম বোনের গাড়ি চেপে। সইফের বাড়ির দিকে যাওয়ার আগে মধ্য কলকাতায় গিয়ে ওদের আরেক বান্ধবী সিঞ্জিনী নিয়ে যেতে হবে।
সিঞ্জিনী যখন ওর বাড়ি থেকে গাড়িতে চাপলো তখন ঘড়িতে সকাল সাড়ে আটটা। অফিস বেলা। অফিসের জ্যাম কাটিয়ে কলকাতা পেরিয়ে নিবেদিতা সেতু উঠতেই সওয়া নয়টা বাজলো। নিবেদিতা সেতু পেরিয়ে টোল পৌঁছেছি আরেক বিপত্তি! টোলের অনলাইন পেমেন্ট কিছু যান্ত্রিক গোলযোগ থাকায় আমাদের বেশ কিছুটা সময় ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকতে হলো।
অনেক চেষ্টা চরিত্র করে শেষমেশ যখন জাতীয় সড়কে উঠলাম বেলা অনেকটা গড়িয়েছে। আহা! মসৃণ রাস্তায় উঠে ফুরফুরে হাওয়া গায়ে লাগতেই কিছুক্ষনের মধ্যে বেশ খিদে পেয়ে গেলো। তখন অনেকটা রাস্তা বাকি, সিঙ্গুর পেরিয়েই তাই পুরী-ঘুগনি খেয়ে নেওয়া হলো।
উদরপূর্তি করে রাস্তায় ফেরা হলো। ঝড়ের গতিতে জাতীয় সড়কে আমাদের গাড়ি ছুটছে। কিছুদূর এগোতোই বর্ধমান জেলায় ঢুকে পড়লাম। বর্ধমান জেলা পড়তেই চারিদিক সবুজ হয়ে গেলো। যারা বর্ধমান জেলা সম্পর্কে জানেন না তাদের জন্য বলে রাখা ভালো বর্ধমান জেলাকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শস্য ভান্ডার বলা হয়। তাই জেলার শুরু হতেই প্রকৃতিতে অনেকটা পরিবর্তন, কোথাও আলুর চাষ আবার কোথাও বা ধানের রোপন হচ্ছে।
সবুজের মধ্যে দিয়ে অবশেষে সইফের বাড়ি পৌঁছানো হলো যদিও ততক্ষণে বেলা দেড়টা বেজে গেছে। হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়লাম সইফের বিবাহ মণ্ডপে...
সইফের বৌভাতের বাকিটা তোলা রইলো পরের পর্বের জন্য।
![](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmVZ2LnjzbteWf1QSr3MqRaJx7dYMMGANXS258rRfzaubR/Division.jpeg)
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
অনেক লম্বা একটি পথ অতিক্রম করেছেন দাদা। যাওয়া-আসা দিয়ে ৩২০ কিলোমিটার পথ, আমার তো ভাবতেই মাথা ঘুরে যাচ্ছে। তবে যদি ট্রেন জার্নি হয় তাহলে কিছুটা স্বস্তি থাকে। নতুন একটি তথ্য জানতে পারলাম সেটা হচ্ছে বর্ধমান জেলা কে পশ্চিমবঙ্গের শস্য ভান্ডার বলা হয়। যাইহোক দাদা পরবর্তী এপিসোড এর অপেক্ষায় রইলাম।
ট্রেনে আসলে তো বুঝতেও পারতাম না! কিন্তু বিয়ে বাড়িতে ট্রেনে আসলে ফেরার তাড়াটা বেশি থাকতো।
আশাকরি দাদা ভালো আছেন ? আপনি এত দূর জার্নি করে বৌভাতের অনুষ্ঠানে গিয়েছেন আমি শুনে বেশ ভালো লাগছে। আসলে বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার অনুভূতি এবং আনন্দটা খুবই অন্যরকম হয়। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো খুব অসাধারণ হয়েছে। বিশেষ করে বিয়ে বাড়ির গেটের ফটোগ্রাফি খুব ভালো লেগেছে। এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। ভালো থাকবেন দাদা।
গা হাত পা ব্যাথা হয়ে গেলো আরকি! 😆
বিয়ে বাড়িতে পৌঁছাতে পৌঁছাতে এই পোস্ট শেষ হয়ে গেল। এত লম্বা কাহিনী ছিল। এটা কিন্তু ঠিক বলেছেন যখন যেটা চাওয়া হয় তখন তা পাওয়া যায় না। মানে আপনি ঘুরতে যেতে চাই ছিলেন তখন যেতে পারলেন না আর এখন এমনিতেই চলে গেলেন। বোনের বন্ধুর বিয়েতে যাওয়ার ইচ্ছা না থাকলেও শেষমেষ যেতে পারছেন দেখে ভালই লাগলো। বিশেষ করে খাবারের ছবি টা দেখে ভালো লাগলো। যাওয়ার সময় পুরি খেয়ে নিলেন। শেষমেশ বিয়ে বাড়িতে গিয়ে পৌঁছালেন। বিয়েবাড়ির পর্ব টা দেখার অপেক্ষায় রইলাম। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
বৌভাতে বেশ মজা করে হলো। আসলে রাস্তা অনেকটা তাই একটু চিন্তা হচ্ছিলো।