দিনপঞ্জি ২৩-শে ভাদ্র, ১৪২৮ // ছানার রেসিপি, ওয়ার্ক ফ্রম হোম আর হ্যাং-আউট // ১০% পেআউট লাজুক খ্যাঁক-কে

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago


৯-ই আগস্ট, ২০২১


নমস্কার,

সকালবেলায় জলখাবার খুঁজতে খুঁজতে ফ্রিজটা খুলে ফেললাম। শুধু কিছু সবজি আর লিটার খানেক দুধ। মনটা খারাপ হয়ে গেলো। হঠাৎ পিসি বলে উঠলো চা খাবার বেশি দুধ লাগবে না তুই অল্প ছানা বানিয়ে নে। আমিও ছানার কথা শুনে এক পায়ে রাজি। অনেকদিন ছানা খাওয়া হয়নি। আর সকাল বেলায় এতো সুন্দর আয়োজন। যাক ছানা বানিয়ে ফেললাম, তারই রন্ধনপ্রণালী সবার সাথে ভাগ করে নিতে চাই।

উপকরণ

  • দুধ ৮০০ এমল
  • একটা লেবু
  • একটা প্যান

রন্ধনপ্রণালী

  • (১) ইন্ডাকশন ওভেনের উপরে প্যানটা রেখে সম্পূর্ণ দুধ প্যানে দিয়ে দিলাম। তারপর ওভেনটা উচ্চ তাপে চালিয়ে দুধ জ্বাল দিচ্ছিলাম আর মাঝে মাঝে হাতা দিয়ে দুধ নাড়িয়ে দিচ্ছিলাম।


দুধ প্যানে দিলাম

  • (২) খানিকক্ষণ পর দুধ ফুটে গেলে ওভেনের তাপটা একটু কমিয়ে মিডিয়াম হিটে দিলাম। তারপর গন্ধরাজ লেবু হাতার মধ্যে পুরোটা চিপে নিয়ে অল্প অল্প করে দুধে মেশাতে থাকলাম। পাতিলেবুর পরিবর্তে গন্ধরাজ লেবু ব্যবহার করলে ছানার গন্ধ দারুন হয়। তবে পতিলেবুর তুলনায় রস একটু বেশিই লাগে।
দুধ ফুটছে
লেবুর রস

  • (৩) তারপর দুধ অল্প খানিকটা নাড়াচাড়া করতেই দুধ কেটে ছানা হয়ে গেলো। এরপর ছাঁকনি দিয়ে ছানা আর জল আলাদা করে নিলাম
ছানা কেটে গেলো
ছাঁকনিতে ছেঁকে নিলাম

  • (৪) এরপর ছানায় অল্প চিনি ছিটিয়ে চামুচের সহায়তায় মাখিয়ে নিলাম। ব্যাস আমার সকালের জলখাবার তৈরী।


ছানা


খেয়ে দেয়ে বোনের সাথে ব্যাংকের যেতে হলো। এইচডিএফসি ব্যাংকের পাঁচবছর আগে এপ্লাই করা একাউন্টের এটিএম কার্ড সবে দুদিন আগে এলো। তারই পাস বই তুলতে হবে এই দরকারে যাওয়া। বেসরকারি ব্যাংক হবার সুবাদে খুব অল্প সময়েই কাজটা হয়ে গেলো।


এইচডিএফসি ব্যাংকের সামনে | w3w


বাড়ি ফিরে স্নান করে নিলাম, তারপর একে একে সমস্ত ক্লায়েন্ট দের ফোন সেরে নিলাম। তারপর কমিউনিটির কিছু পোস্ট পড়ে কমেন্ট করতে শুরু করলাম। দুপুর ঘুমাবো ভেবেছিলাম কমিউনিটির পোস্ট পড়তে আর কমেন্ট করতে করতেই বিকেল ৪ টা বেজে গেলো। তারপর কখন ঘুমিয়ে পড়েছি মনে নেই।

সন্ধ্যা বেলা ঘুম ভাঙলো এক ক্লায়েন্টের ফোনে, তাঁর একটা কোটেশন বিল বানিয়ে দিতে হবে। কি আর করা! ঘুম থেকে উঠে মুখ ধুঁয়েই কাজে লেগে গেলাম। শেষ করতে ঘন্টাখানেক লেগেই গেলো।


কাজ করছি

কাজটা সেরে উঠবো এমন সময় সিঙ্গাড়া আর চা এসে হাজির হলো। আমিও লোভ সামলাতে না পেরে ফ্রেস না হয়েই খেয়ে নিলাম।


চা-সিঙ্গাড়া


খেয়ে একটু ফ্রেস হয়ে ডিসকর্ড খুলে বসলাম। আজকে আমাদের কমিউনিটির হ্যাং আউট রয়েছে। যথারীতি রাত ৯ টায় শুভদা শুরু করে দিলেন। একে একে প্রত্যেক মডারেটররা তাদের নিজস্ব লিস্টের অগ্রগতি সম্পর্কে বললেন। সুমন দা আমাদের হিরোইসম প্রজেক্ট নিয়ে বোঝালেন। তারপর দাদা, আরো বিস্তারিত ভাবে বললেন যে "আমার বাংলা কমিউনিটির মেম্বারদের সহযোগিতায় গড়ে ওঠা হিরোইসম কিভাবে আমাদেরকেই স্টিমিটে রক্ষা কবচ হিসেবে কাজ করবে"। নানান কথা বার্তা চললো। কমিউনিটি পুরো সপ্তাহ পর একজায়গায় হয়েছে সংস্কৃতিক দিকটা উঠে আসবে এটাই স্বাভাবিক। কবিতা এবং গানে মেতে উঠলো হ্যাং আউট।

পরে হ্যাং আউট শেষ হলেও আমাদের আড্ডা শেষ হয়নি। ইমনের কাছ থেকে ওর মিশরের নোট রহস্য শুনলাম। অনেক গল্প হল। গল্পের তালে রাতে খাবার কথাব প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম। শেষে রাত ১২ টায় ডিনার সারলাম। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে যেই ডিসকর্ড খুলেছি দাদা আড্ডা ঘরের ব্যাপারটা বললেন একে একে পেলাম আড্ডা ঘরে ঢোকার সুযোগ। রাত পর্যন্ত চললো আড্ডা। কথোপকথনে দাদার বইপোকা দিকটা ফুটে এলো, জানা গেলো দাদার কাছে প্রায় ১০,০০০ কপি বাংলা বইয়ের সংগ্রহ রয়েছে। যা সত্যিই অসাধারণ। আমাদের আলোচনায় ক্রিপটোকারেন্সি থেকে নেতাজি রহস্য, কিছুই বাদ গেলো না। গল্প চললো রাত ১:৩০ পর্যন্ত। শেষে একে একে শুভরাত্রি বলে সবাই আড্ডা রুম থেকে বিদায় নিলো। এখানেই ইতি হলো আজকের দিনের। আবার এক সপ্তাহের অপেক্ষা।

১০% পেআউট @shy-fox কে

Sort:  
 3 years ago 

সকালে ঘুম থেকে উঠে আপনি যে নাস্তা তৈরি করার জন্য ছানা তৈরি করেছিলেন সেটি আমাদের ভাষায় কাচাগোলা বলা হয় ।
যাইহোক খুব সুন্দর ছিল আপনার আজকের দিনটি। বিশেষ করে যখন আপনার বোনের সাথে ব্যাংকের কাজে গিয়েছিলেন সেই সময়ের মুহূর্ত টা খুব সুন্দর ছিল

 3 years ago 

কাঁচা গোল্লার প্রথম ধাপ বলা যায়। কাঁচা গোল্লায় আরো কিছু উপকরণ দেওয়া হয়। যেমন ঘী, এলাচ।

ব্যাংকে কাজে যেতে ভয় লাগে। বারবার ঘোরায় তবে এবার সেটা হয়নি।

 3 years ago 

ঠিকই বলেছেন ভাই। আর কিছু উপকরণ যুক্ত করলে এটি কাঁচাগোল্লা হয়ে যাবে।

আর অবশ্যই এখন ব্যাংকে আর তেমন একটা ঝামেলা হয় না। কেননা এখন ব্যাংকিং সেবা গুলো সব কিছুই অনলাইন হয়ে গেছে।

সুন্দর মতামতের জন্য আন্তরিক ভাবে অভিনন্দন

 3 years ago 

বেসরকারি ব্যাংক জন্যই ভালো পরিষেবা। সরকারি হলে কয়েকদিন ঘুরতে হতো।

 3 years ago 

আপনার পোস্টটি পড়ে বোঝাই যাচ্ছে আপনার দিনটির প্রতিটি মুহূর্ত খুব ভালোভাবে কেটেছে যাই হোক আপনার ছানা বানানোর বিষয়টা আমি শিখে নিলাম ভবিষ্যতে চেষ্টা করব। সে সাথে আমার বাংলা ব্লগকে আপনি কতটা নিজের করে নিয়েছেন আপনার পোষ্টের মাধ্যমে সেটা খুবই স্পষ্ট। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার এই এরকম একটি সুন্দর মুহূর্তে ভরা দিন আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

বাড়িতেই ছানা বানিয়ে নেবে। দুধ লাগবে আর লেবু। ছানা কাটা পাউডার ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। গন্ধরাজ লেবু ব্যবহার করলে আরো ভালো লাগবে।

 3 years ago 

বানানো অত্যন্তই সহজ আর খেতেও বেশ ভালো লাগে। প্রোটিন ভরপুর। দারুন এনার্জি পাওয়া যায়। আগে মাঝে মধ্যেই খেতাম। এখন একটু কমিয়ে দিয়েছি। ধন্যবাদ পোস্টটি পড়ার জন্য।

 3 years ago 

দাদা দুধ থেকে ছানা তৈরি করে ফেললেন আর একটু সময় নিয়ে মিষ্টি ও তৈরি করে ফেলতে পারতেন খুব ভালো হতো।আপনার দিনের অভিজ্ঞতা জেনে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ দাদা।

 3 years ago 

হাঃ হাঃ। মিষ্টি আরো সময় সাপেক্ষ তবে হয়তো শিখে নেবো। তোমাদের মতো রান্নায় পটু না হলেও ধীরে ধীরে শিখছি

 3 years ago 

ছানা তৈরির পদ্ধতি টা অসাধারণ ছিল। দেখে খুবই সুস্বাদু মনে হচ্ছিল। এবং হ‍‍্যাংআউটের পরে আমাদের আড্ডাটা অসাধারণ ছিল বলা যায়। আমি খুব উপভোগ করেছিলাম। এবং এরপর আবার আড্ডাঘরের আড্ডা। কী অসাধারণ কেটেছিল সময়টা আপনি আবার খুব সুন্দর করে এগুলো উপস্থাপন করলেন। খুব ভালো দাদা।

 3 years ago 

বৃহস্পতিবার সত্যিই ভালো কেটেছে। নোট সংগ্রহ ও সংরক্ষণ নিয়ে আমি একটা দুটো বই পড়েছি। যা বুঝেছি বলে দিয়েছি 😂। ফ্রির জ্ঞান। হাঃ হাঃ

 3 years ago 

😮😮😮😮।।

 3 years ago 

সিঙ্গারা আর চায়ের কম্বিনেশনটা যে কি দারুণ তা যে কখনো খায়নি সে বলতে পারবেনা।আর এই যে ছানা বানানোর সহজ পদ্ধতিটাও শিখে ফেললাম।আমি ভাবতাম আরো বোধহয় মাঝে অনেক কাজ আছে তবে এ তো দেখছি খুব বেশিই সোজা।তবে ছানা পর্যন্ত যখন গেলেন ই তখন আরেকটু পা বাড়িয়ে মিষ্টিতে চলে গেলে ব্যাপারটা আরো জমে যেতো।যদিও তা সময়সাপেক্ষ। আজকাল ভালোই ব্যস্ত সময় পার করছেন তা টের পাচ্ছি।

 3 years ago 

দুধ চা আর সিঙ্গাড়ার কম্বিনেশন টা যেমন খেতে ভালো তেমনই পেটের জন্য খারাপ। গ্যাস হওয়া অবধারিত 😂।

আরেকটু গেলে মিষ্টি বানানো যেতো তবে সেই কঠিন ধাপটা আমি পারিনা 😂।

গত কয়েকসপ্তাহ খুবই ব্যস্ততার মধ্যে যাচ্ছে। একদিক থেকে আমার জন্য এটা ভালো।

আপনার দিনলিপি সব সময়ই হাই কোয়ালিটি সম্পূর্ণ হয়ে থাকে। আপনে সব সময় ব্যস্ততার মাঝে আপনার সময়টা পার করে থাকেন। সকালের বানানো নাস্তাটা বেশ সুন্দর ছিল।আমার ব্যাংকে যেতে ভালো লাগে না। কারণ লম্বা লাইনে দাড়িয়ে থাকতে মন চাই না। সব দিকে পোষ্টটা অনেক সুন্দর হয়েছে।
শুভ কামনা রইল।

 3 years ago (edited)

ব্যস্ততার মধ্যে কাটাতেই যেন ভালো লাগে। আলসেমি আর ভালো লাগে না।

ব্যাংকের এই সমস্যা টা আছে তবে যে ব্যাংকে গিয়েছিলাম সেটা বেসরকারি, তাই লাইন ছিলোনা বললেই চলে। ধন্যবাদ আমার পোস্ট পড়ার জন্য।

 3 years ago 

দাদা দারুন হয়েছে।দাদা সবসময়ই ভালো রেসিপি বানাও। রেসিপিগুলি খুব সুস্বাদু ও লোভনীয় হয়। ধন্যবাদ তোমাকে এত সুন্দর সুন্দর রেসিপি উপহার দেবার জন্য।

 3 years ago 

তোমার মতো হয় না ভাই। তবে চেষ্টা করছি যাতে তোমাদের লেভেলে পৌঁছে যাই, একটু সময় লাগবে। তবে পারবো।

 3 years ago 

ভাই আমিও ছানা তৈরি করা শিখলাম।মিষ্টি বানাতে পারেন।পারলে আর একদিন আমাদের শেখান।
যাইহোদ সুন্দর একটি পোস্ট করছেন, সেজন্য ধন্যবাদ।

 3 years ago 

ছানা বানানো বেশ সহজ, তবে মিষ্টি বানানো বেশ কঠিন। পরে একদিন বানানোর চেষ্টা করবো।

ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 57050.09
ETH 3060.34
USDT 1.00
SBD 2.32