১৭-ই ভাদ্র, ১৪২৮ // দুধ চা, পড়ার টেবিল আর লস্যি // ১০% পেআউট লাজুক খ্যাঁক-কে
নমস্কার,
দিনের শুরুটা দুধ চা আর টোস্ট দিয়ে শুরু হলে কার না ভালো লাগে। অন্যদিন সাধারণত আমি দুধ চা খাই না। গ্রীন টি বা লিকার চা দিয়েই দিনের শুরু হয়, তবে মাঝেমধ্যে একটু ব্যতিক্রমী হতে ইচ্ছা করে তাই না! সেজন্যই আজ দুধ চা আর টোস্ট।
বাড়িতে আজ নিরামিষ। গতকালকে অনেক সবজি কিনে এনেছি, সেসবের কিছুটা আজ রান্না হবে। আর নিরামিষ রান্না হলে আমিও নতুন কিছু রেসিপি শিখবো। আজ দুপুরে আবার বেরোতেও হবে। তার আগে একটু ল্যাদ খেয়ে রান্নায় হাত লাগাবো। এই ভেবে বেশ খুশমেজাজে ছিলাম কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে সে মেজাজে বালি পড়লো।
বোনের সাথে বেরোতে হবে তার পড়ার টেবিলটা ভেঙে গিয়ে বিপত্তি। টানা ১৪-১৫ ঘন্টা পড়তে হচ্ছে পড়ার টেবিল না হলে হয় না, বেঁকে বসে পড়লে শিরদাঁড়ায় প্রচন্ড ব্যাথা করছে। অগত্যা বেরোতেই হলো। জরুরি কাজ।
সাধারণত কলকাতায় বিশেষ একটা কাঠের দোকান দেখা যায় না, আর যেগুলো আছে তাতে দাম আকাশছোঁয়া। এক কাঠের দোকানে ছোট্ট একটা টেবিল দেখা হলো, দাম শুনেই আঁতকে ওঠার জো। প্রায় ৪০০০ টাকা, শুনেই পালিয়ে গেলাম। ঘুরতে ঘুরতে শেষে এক কাকার দোকান পেলাম।
কাকার কাছে কাঠের টেবিল নেই তবে বাচ্চাদের পড়ার টেবিল আছে। ডোরেমন আঁকা টেবিল। প্রথম দেখাতেই পছন্দ হয়ে গেলো।
দাম জিজ্ঞেস করাতে উনি বললেন টেবিলের দাম বারোশো টাকা। শুনে বেশ ঘাবড়েই গেলাম। প্লাস্টিকের বাচ্চাদের টেবিল ১২০০ টাকা!!! অথচ আমরা কিছুক্ষন আগে ফ্লিপকার্টে ৫০০ টাকার মধ্যে বেশ ভালো ভালো টেবিল দেখলাম। ডেলিভারির সময় অধিক থাকায় অনলাইনের বদলে অফলাইনে কিনতে হবে।
আমি এটা মানি যে অফলাইন রিটেল এর কাছে দামটা একটু বেশি থাকবে। অনলাইনে সেলাররা অনেক গুলো একসাথে কেনে তাই ওরা কম দামে দিতে পারে। অফলাইনে অল্প মাল কেনে তাই দামটাও একটু বেশি। তবুও ৫০০-৬০০ টাকার জিনিস, সোজা ১২০০। শুনে আমরা আর দরাদরি করিনি। সোজা বেরিয়ে এলাম।
বিফলতা হাতে আস্তে আস্তে স্কুটার চালিয়ে বাড়ি ফিরছি। বাড়ির একটু কাছেই হঠাৎ এক কাঠের দোকানের দেখা পেলাম, যাওয়ার সময় লক্ষ্য করা হয়নি। গাড়ি থামিয়ে দোকানে যাওয়া হলো, বেশ ভালোই কাঠের কাজ চলছে। একটা মন্দির বানানোর কাজ চলছিল। দেখে বেশ সুন্দর লাগলো, তাই বোনকে বললাম এই কাকার কাছেই পাকাপোক্ত একটা বানিয়ে নিই।
উনি দামটাও ঠিক বললেন, ১৫০০ টাকা। তবে কাঠের না প্লাই উডের বানিয়ে দেবেন। আমরাও রাজি। প্লাস্টিকের টেবিলের থেকে প্লাইয়ের টেবিল বেশ ভালো হবে। আমাদের দাবিটা আবার একটু ভিন্ন, নরমাল পড়ার টেবিল একটু নীচু হয় সেজন্য আমরা ১২ ইঞ্চি উঁচু, ১৬ ইঞ্চি লম্বা আর ২৪ ইঞ্চি চওড়া একটা টেবিলের অর্ডার দিয়ে বাড়ি ফিরলাম। বাড়ি ফিরতে ফিরতে সব রান্না শেষ। আর কি করা তাড়াতাড়ি করে স্নান করে নিলাম।
বেরোতেও হবে। স্নান সেরে খেয়ে বাড়ি থেকে বেরোতে বেরোতে দুপুর ২:১৫ বেজে গেলো। স্টেশন পৌঁছতে ৩০ মিনিট, সেখান থেকে আবার ট্রেন। স্টেশন পৌঁছে বিশেষ একটা অপেক্ষা করতে হয়নি, ০২:৪৮ এ স্টেশন পৌঁছালাম আর ০৩:০৯ মিনিটে ট্রেন পেয়ে গেলাম। আমি যেখানে থাকি সেখান থেকে নবনিতার বাড়ি পৌঁছাতে সব মিলিয়ে প্রায় ২ ঘন্টা সময় লাগে।
মাঝরাস্তায় ট্রেন একটু লেট করায় ওদের বাড়ি পৌঁছতে পৌঁছতে ৪:৪০ বাজলো। দেরী হওয়ায় জিরিয়ে নেবার সময় পাই নি, কাজে হাত দিলাম। সব কাজ মিটিয়ে দিতেই রাত পৌনে ৯ টা বেজে গেলো। এবার বাড়ি ফেরার পালা।
অনেকদিন ধরে একটা জিনিস চিন্তা করছিলাম যে নবনিতা চলে যাবার আগে কাঁচরাপাড়া স্টেশনে লস্যি খাবো। এখানে খুবই ভালো লস্যি পাওয়া যায়। তাও অত্যন্ত রিজেনেবল প্রাইসে, মাত্র কুড়ি টাকায়। আমি আর নবনিতা স্টেশনে এলাম, সাথে ওর বোন এসেছে। সবাই এক গ্লাস করে লস্যি খেলাম। কোয়ালিটি বেশ ভালো। মাস ছয়েক আগে যেমন ছিলো তেমনই আছে।
লস্যি খেয়ে ওদেরকে বাড়ির টোটাতে চড়িয়ে দিলাম, রাত হয়েছে। আমিও বাড়ি ফেরার ট্রেন ধরলাম...
সম্পূর্ণ দিনটি আপনি খুব ব্যাস্ততার মাঝে পার করেছেন।খুব সুন্দর ভাবে ব্যাস্ততার সময় গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।
ছবিটা খুব সুন্দর হয়েছে।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।শুভ কামনা রইল।
জানে সবই। ইন্টারনেটের যুগে সবাই সবকিছু জানে। ঠকিয়ে নেবার ধান্দা
আপনার জানালা দিয়ে যে পুকুর টা দেখা যায় সেটা আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। এবং একটি টেবিলের জন্য দেখছি অনেক ঝামেলায় পড়েছিলেন। যাইহোক সবমিলিয়ে সুন্দর ভাবে দিনটা অতিবাহিত করেছেন। আপনার জন্য শুভকামনা।।
আরামও বেশ ভালো লাগে। রাতের বেলাতেও দারুন লাগে।
প্রয়োজন আর চাহিদা একটু আলাদা তাই এতো ঝামেলা, নাহলে তো ডোরেমনই সই
দাদা কল্পনার সাথে বাস্তব😄😄😄
লাচ্ছি খেতে আমার খুব ভালো লাগে আর মাঝে মাঝে আমি বাসায় এই লাচ্ছি তৈরি করি। আমার নিজের এই গরু আছে গরুর দুধ দিয়ে তৈরি করা হয়। আপনার দিনটি খুবই ব্যস্ততায় কেটেছে। ধন্যবাদ
তাহলে তো আরোই ভালো। বাড়ির দুধ দিয়ে দই বানিয়ে লস্যি। একদম খাঁটি জিনিসটাই খাও
ধন্যবাদ ভাই আপনাকে বোনের প্রতি ভাইয়ের এই দায়িত্ব পালন করায় আপনাকে স্যালুট জানাই আপনাদের ভাই বোনের সম্পর্ক সারা জীবন অটুট থাকুক এই আশীর্বাদ করি। খুব সুন্দর ভাবে আপনি আপনার পোস্টটি কে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন।
কাজটা খুবই জরুরি ছিলো। টানা পড়াশোনা করতে টেবিল লাগেই। আর পড়াশোনা করায় অসুবিধা হোক এ আমি চাইনা। ধন্যবাদ ভাই তোমাকে আমার পোস্ট পুরোটা পড়ে কমেন্ট করার জন্য।
ডোরেমনের টেবিল টা আরেকটু কিউট হলেই বোধহয় খেয়ে ফেলতে মন চাইতো।😪
এতো কিউট কেন এটা!!
আর লস্যিটা এমন কেনো?আমার তো খেতে ইচ্ছা করছে 😥।
থাক আজকেই গিয়ে খেয়ে আসবোনে। আচ্ছা লেখাগুলো কিন্তু দারুণ গুছিয়ে লিখেন ভাইয়া।
হাঃ হাঃ। ডোরেমন ফ্যান পাওয়া গেছে। স্টিমে শুধু Anime ফ্যান দেখি।
দেখতে ভালো ছিলো তবে দামটা শুনে নিইনি।
লস্যিটা বেশ খেতে। দামও কম। নবনিতাদের বাড়ির ঐখানটাই কলকাতা তুলনায় দাম বেশ কম। আবার মানেও ভালো।
গরমের দিনেই তো লস্যি খেতে হয়।
হ্যা, আপাদমস্তক ডোরেমন ফ্যান,যদিও আজকাল তো আর নতুন আসে না।
আমিও খেয়ে এলাম আজ,দাম ৬০ নিলো বোধহয়।খুব একটা ভালো ছিলোনা, তবুও চলে টাইপ্স ছিলো আরকি।
এখন নতুন বলতে শুধুই ডোরেমন মুভি তৈরী হয়।
বাইরে যাওয়াটাই টার্গেট। খাবার ভালো হলে বাইরে ঘোরাটা আরো ভালো হয়