📷🌼শখের ফটোগ্রাফি পর্ব- ৫৪ || প্রকৃতির সৌন্দর্য || by @kazi-raihan

আমি কাজী রায়হান। আমার ইউজার নামঃ @kazi-raihan। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

প্রতি সপ্তাহেই একটি ফটোগ্রাফি পর্ব শেয়ার করার চেষ্টা করি সেই ধারাবাহিকতায় এই সপ্তাহেও আপনাদের মাঝে একটি ফটোগ্রাফি পর্ব শেয়ার করব। আর এটা আমার ৫৪ তম ফটোগ্রাফি পর্ব। আমি সাধারণত প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলো আপনাদের মাঝে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি আসলে ফটোগ্রাফি বলতে কোন নির্দিষ্ট একটি সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তোলার যে চেষ্টা সেটাকেই বোঝানো হয় বলে আমি মনে করি। যেমন ধরুন আপনি নদীর পাড়ে গিয়েছেন আর নদীর পাড়ে গিয়ে নদীর সৌন্দর্যটা ক্যামেরাবন্দি করে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। ইদানিং সকালবেলায় একটু হাটাহাটি করতে যাওয়া হয় যার কারণে বেশিরভাগ ছবিগুলোই সকালবেলা ক্যাপচার করা তাছাড়া মাঝে কিছুদিন অনিয়মিত হয়ে পড়েছিলাম আর সেই মুহূর্তে বেশ কিছু ফটোগ্রাফি পুরাতন অ্যালবামে যুক্ত হয়েছে আর সেগুলো খুব সহজেই এখন আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারছি। আর আজকে আবার নাইট ফটোগ্রাফি অ্যাড করেছি কারণ বিগত কয়েকটি ফটোগ্রাফি পর্বে রাতের সৌন্দর্যটা তুলে ধরেছি তাই ফটোগ্রাফির ভিন্নতা ধরে রাখতে এই পর্বেও একটি নাইট মুড ফটোগ্রাফি শেয়ার করছি। তবে আজকের এই ফটোগ্রাফি পর্বে পুরাতন অ্যালবাম থেকে কয়েকটি ছবি সংগ্রহ করেছি সেই সাথে নাইট মুডের যে ফটোগ্রাফিটা এখন আপনাদের সাথে শেয়ার করব সেটাও আমার পুরাতন অ্যালবাম থেকে সংগ্রহ করা। নিয়মিত ফটোগ্রাফি করে ছবিগুলো আলাদাভাবে সেভ করে রাখি যেটা পরবর্তীতে বিভিন্ন পর্বে তুলে ধরি।

চলুন তাহলে শুরু করি।

• ইতিমধ্যে শীতের প্রভাব টা শুরু হয়ে গেছে কেননা সকালবেলা ঘুম থেকে উঠলেই দেখা যায় চারদিকে কেমন টা কুয়াশায় অন্ধকার আবার ঘাসের উপরে এতটাই কুয়াশা জমে থাকে যেন মনে হয় বৃষ্টি হয়েছে। যাইহোক মূল প্রসঙ্গে আসি, শীতের মৌসুমের কথা এজন্যই বলছি কারণ শীতের সময় নদীর পানি অনেকটাই শুকিয়ে যায় আর তখন নদীর পাড়ে মানুষের জনজীবন খুব কাছ থেকে লক্ষ্য করা যায়। আমরা সাধারণত যেখানেই যাই বাইক নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি বলতে গেলে একদম স্বাধীন বাহন আর কি। বাইক নিয়ে বিকেল বেলায় নদীর পাড়ে গিয়েছিলাম মূলত নদীর পাড়ে বসে সুন্দর একটি বিকেলের মুহূর্ত উপভোগ করার জন্য। সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করার পাশাপাশি শেষ বেলার কিছু ফটোগ্রাফি ও ক্যাপচার করেছিলাম তার মধ্যে এই ছবিটা অন্যতম তাই শেয়ার করেছি।

• ঘাসফড়িং এর ছবি তোলা সবচেয়ে কষ্টের কাজ এটা শুধু যারা ঘাস ফড়িং এর ছবি তুলতে গিয়েছে তারাই বুঝতে পারবে। সূর্য যখন অস্ত যায় তখন সব পশুপাখি কীটপতঙ্গ তাদের আপন ঠিকানায় ফিরে যেতে চেষ্টা করে। ঠিক তেমনি এই ঘাসফড়িংটি সন্ধ্যার সময় একটি ঘাসের উপরে বসেছিল। যখন সূর্য এর আলো ছিল তখন নদীর পাড় থেকে এই ঘাসফড়িং এর ফটোগ্রাফি করতে চেয়েছিলাম তবে যতবার ছবি তুলতে গিয়েছি ততবারই ঘাস ফড়িং উড়ে যায়। যখন দিনের আলো কমে আসলো কিছুটা রাতের আভাস পাচ্ছিলাম তখনই লক্ষ্য করলাম সন্ধ্যার মুহূর্তে ঘাস ফড়িং একটি ডালের উপরে বসে আছে আর আমিও ফটোগ্রাফি করার জন্য কাছে এগিয়ে গেলাম হয়তো আবহাওয়া কিছুটা অন্ধকার ছিল এজন্যই ঘাস ফড়িং তখন আর উড়ে যায়নি আর আমিও সেই সুযোগে ফটোগ্রাফি করেছিলাম।

• রাতের বেলায় চারিদিকে কুয়াশায় অন্ধকার আর চাঁদের আলোয় আকাশের সৌন্দর্যটা কিছুটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যদিও কুয়াশার তীব্রতা তেমন বৃদ্ধি পায়নি তাই চাঁদের সৌন্দর্যটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমি ফটোগ্রাফি করার পাশাপাশি কিছু ফটোগ্রাফি আবার পুরাতন অ্যালবামে যুক্ত করে রাখি যাতে পরবর্তীতে সেই ফটোগ্রাফি গুলো আবার শেয়ার করা যায় যেমন সামনে শীতের মৌসুম আর এই শীতের মৌসুমে চাঁদের সৌন্দর্যটা খুব মিস করব। ধরুন এখন শীতের মৌসুম চারিদিকে প্রচন্ড কুয়াশা আর হাড় কাঁপানো শীত পরছে তখন যদি এরকম সুন্দর চাঁদের ফটোগ্রাফি কেউ দেখে তাহলে নিশ্চয়ই গরমের আবহাওয়া তার মনে অটোমেটিক্যালি চলে আসবে কেননা গরমের সময় এরকম চাঁদের সৌন্দর্য সবসময়ই প্রায় লক্ষ্য করা যায়।

• গতকালকে আমরা সবাই পদ্মা নদীর তীরে ঘুরতে গিয়েছিলাম। সবাই বাইক নিয়ে একদম মূল পদ্মা নদীতে চলে গিয়েছিলাম। নদীর পাড়ে বাইক রেখে সবাই মূল পদ্মা নদীতে নেমে পড়লাম। সেখানকার চোরাবালির উপরে সবাই হাটাহাটি করছিল আর নদীতে হালকা ঢেউ ছিল আমি সেই ঢেউয়ের ভিডিও করতেছিলাম বেশ ভালই লাগতেছিল। দূর থেকে শব্দ শুনতে পারলাম আর তাকিয়ে দেখলাম দুইটি নৌকা ছুটে আসছে তখনই মনে মনে প্ল্যান করলাম নৌকার ছবি তুলব তবে ইচ্ছা ছিল দুইটি নৌকা এক ফ্রেমে বন্দী করব কিন্তু খুব কাছে দিয়ে নৌকা গুলো যাওয়াতে সেটা আর সম্ভব হয়নি তাছাড়া নৌকা গুলো খুব গতিতে স্রোতের প্রতিকূলে এগিয়ে যাচ্ছিল তার পরেও একটি ছবি তুলেছিলাম আর সেটাই আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। তবে এখন যদি শীতের মৌসুম না হত তাহলে পদ্মা নদীতে গোসল করতে পারতাম তাছাড়া আমরা যেহেতু শেষ বিকেলে গিয়েছিলাম তাই আর পদ্মা নদীর গভীরে নামা হয়নি।

• এই ফুলের ফটোগ্রাফি করা মাঠের মধ্য থেকে। আসলে এই ফুলগুলো আলাদা একটা সৌন্দর্যের অধিকারী। সাধারণত ফুলের পাপড়ি গুলো যখন ছড়িয়ে যায় তখন ফুলের আসল সৌন্দর্য লক্ষ্য করা যায় কিন্তু ফুলগুলো যখন শুকিয়ে যায় তখন যদি ভিন্ন রকমের একটি সৌন্দর্য ধারণ করে তাহলে সেটা দেখার প্রতি আগ্রহ জাগবে স্বাভাবিক। গ্রামাঞ্চলে রাস্তার আশেপাশে দেখবেন এক ধরনের উদ্ভিদ জন্মে যেটা একদম ছোট ফুল ধারণ করে এবং যখন ফুলগুলো শুকিয়ে যায় তখন তুলার মত দেখায় অনেকটাই যদিও এই উদ্ভিদটার নাম জানা নেই তবে এই উদ্ভিদের সৌন্দর্যটা এর আগেও আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি আর আজকে এই ফটোগ্রাফি পর্বের মাধ্যমে তুলোর মত দেখতে এই ফুলের সৌন্দর্যটা তুলে ধরেছি। আশ্চর্য এই ফুলের নাম যদি কারো জানা থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে আমাকে জানিয়ে দিবেন।

• পৃথিবীতে হাজারো প্রজাতির ফুল আছে আর এই হাজারো প্রজাতির ফুলের নাম জানা একজন ব্যক্তির পক্ষে অসম্ভব। ফুল সাধারণত ভালোবাসার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয় একজন প্রেমিক-প্রেমিকাকে যখন তার মনের কথাটা বলতে চায় তখন সর্বপ্রথম ফুল দিয়ে সেই সম্পর্কটা শুরু করার চেষ্টা করে। যাইহোক তবে এই ফুলটা কিন্তু আর ভালোবাসা প্রকাশের ক্ষেত্রে ব্যবহার হয় না কারণ এটা আকারে অনেক ছোট্ট একটি ফুল তবে যে কারো মনকে ভালো করার জন্য এই ফুলটা যথেষ্ট। সকালবেলা একটি ছেলে রাস্তার পাশের একটি ফুল গাছ থেকে এই ফুলগুলো ঝুড়িতে সংগ্রহ করে বাসায় নিয়ে যাচ্ছিল আমি সেটা দেখে ছেলেটির কাছে থেকে ঝুড়ি নিয়ে ফটোগ্রাফি করেছিলাম তবে আমি এই ফুলটার নাম জানি না যদি কারো এই ফুলের নাম জানা থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে আমাকে জানিয়ে দিবেন।

• আমি সপ্তাহের শুরু থেকেই একটি একটি করে ফটোগ্রাফি গুলো আলাদা আলাদা ভাবে ক্যাপচার করতে থাকি কারণ সপ্তাহ শেষে যাতে ফটোগ্রাফি পর্ব টি শেয়ার করতে আর বাড়তি কোন প্রেসার নিতে না হয়। তাই সপ্তাহ জুড়ে কম বেশি এলোমেলো ছবি তোলা হয় সত্যি বলতে যেখানে যায় আপাতত একটা ফটোগ্রাফি সংগ্রহ করার চেষ্টা করি কারণ প্রতিদিন যদি একটা ফটোগ্রাফি ফোনে জমা হয় তাহলে সপ্তাহ শেষে একটি পুরো ফটোগ্রাফি শেয়ার করতে খুব বেশি কষ্ট হবে না। নদীর পাড়ে ঘুরতে গিয়ে বিকেল বেলায় নদীর পাড়েই আমরা সবাই বসে ছিলাম তবে লক্ষ্য করলাম সবুজ ঘাসের মধ্যে হলুদ এক ধরনের ছোট ফুল ফুটেছে আয়তনে সেটা একদমই ছোট। প্রথমে ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলতে গেলাম কিন্তু সেটা অনেক ছোট হওয়ায় ক্যামেরায় আসলো না তাই ম্যাক্রো লেন্সে ছবি তুলেছিলাম। ফুলের হলুদ পাপড়ি গুলো দেখতে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছিল।

আজ এই পর্যন্তই ছিল, চেষ্টা করেছি সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করতে তবে কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করে দিবেন। দেখা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে অন্য কোন ফটোগ্রাফি পর্বে বা নতুন কোন বিষয় নিয়ে ধন্যবাদ সবাইকে।