এবারে বান্দরবান (পর্ব-০৮)। ||২০-১২-২০২৪|| by @kazi-raihan
আসসালামুআলাইকুম
বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আমি কাজী রায়হান। আমার ইউজার নেম @kazi-raihan বাংলাদেশ থেকে। আশা করি সবাই ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে আমার একটি ভ্রমণ কাহিনী শেয়ার করব।
বান্দরবন ভ্রমণ নিয়ে গত আট সপ্তাহ ধরে পোস্ট শেয়ার করে আসছি। প্রতি সপ্তাহে একটি করে পর্ব শেয়ার করি সেই ধারাবাহিকতায় আজকের অষ্টম সপ্তাহে অষ্টম পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। গত সপ্তাহে সপ্তম পর্ব শেয়ার করেছিলাম। সেখানে বান্দরবানের তমাতঙ্গে থেকে বান্দরবানের থানচি থানায় এসে রেমাক্রি যাওয়ার জন্য লিখিত অনুমোদন নেওয়ার বিষয়টা শেয়ার করেছিলাম। আমরা থানচি থানায় পৌঁছানোর আগে থেকেই ফোনে একজন গাইডের সাথে যোগাযোগ করেছিলাম যে আমাদেরকে বান্দরবান ভ্রমণের ক্ষেত্রে রেমাক্রি, নাফাখুম সহ বান্দরবানের গহীনে টুরিস্ট স্পটগুলো ঘুরিয়ে দেখাবে। তাছাড়া সেখানকার নিয়ম অনুযায়ী একজন গাইড ছাড়া থানা থেকে কোন অনুমোদন দেয় না। গত পর্বে শেয়ার করেছিলাম আজকে তার পরবর্তী থেকে শুরু করতে যাচ্ছি। থানা থেকে লিখিত অনুমোদন নেওয়ার পরে দুপুরের খাওয়া দাওয়া করার জন্য সেখানকার একটি হোটেলে গেলাম। বান্দরবানের থানচি থানার ঠিক সামনে একটি বাজার আছে যেটা পর্যটকদের নানান সামগ্রিক কেনা সহ হোটেলগুলোতে খাওয়া-দাওয়ার জন্য অনেক ব্যবস্থা আছে।
যেহেতু আমাদের টার্গেট ছিল রেমাক্রি যাওয়া তাই সবার আগে থেকেই প্ল্যানিং ছিল ফোনে যেন ফুল চার্জ করে নেয়া হয়। কারণ আমরা যে এলাকায় যাচ্ছি সেই এলাকায় বিদ্যুতের কোন ব্যবস্থা নেই এমনকি ফোনের নেটওয়ার্ক পাবে না শুধু ছবি তোলার জন্য ফোনে চার্জ দিতে হবে। একটি হোটেলে গিয়ে দুপুরে খাবার অর্ডার করলাম আর যত সময় খাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলাম তত সময়ে হোটেলের ভেতরের অংশে ফোনগুলো চার্জে লাগিয়েছিলাম। খাওয়া কমপ্লিট হতে হতে আমাদের ফোনের চার্জ আপাতত পুরোপুরি কমপ্লিট হয়ে গিয়েছিল। দুপুরে সেখানকার সাঙ্গু নদীর মাছ খেয়েছিলাম। তবে সেখানে লক্ষ্য করলাম তারা রূপচাঁদা মাছের নাম করে প্রাণহা মাছ বিক্রি করছে। যাই হোক আমরা দুপুরের খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমাদের গাইডের সাথে বাজারের মধ্যে দিয়ে নদীর পাড়ে চলে গেলাম। সেখানে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের অফিস আছে, অফিসে কিছু ডকুমেন্ট সহ ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি জমা দিয়ে সোজা আমাদের নৌকার দিকে চলে গেলাম। মূলত আমরা যে গাড়ি ঠিক করেছিলাম তার আন্ডারে যে নৌকা আছে সেই নৌকায় তোরে আমরা রেমাক্রি যাব।
সাঙ্গু নদী, বান্দরবান।
what3words address.
https://w3w.co/outsize.enhancement.amaze
বান্দরবান।
what3words address.
https://w3w.co/outsize.enhancement.amaze
সেখানে পর্যায়ক্রমে অনেকগুলো নৌকা দাঁড়িয়ে আছে। তবে আমাদের জন্য কোন নৌকা ঠিক করা হয়েছে সে সম্পর্কে আমরা তখন কিছুই জানিনা অর্থাৎ আমাদের গাইড এসে নৌকার দুই মাঝির সাথে কথা বলে সবকিছু ঠিকঠাক করবে। কত সময়ে আমরা পোশাক পরিবর্তন করে নিলাম সবার গায়ে শীতের পোশাক ছিল সেগুলো ব্যাগে ঢুকিয়ে নিলাম। ছোট নৌকা সামান্য পানির মধ্য দিয়ে খুব দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলে। ঘাটে বাঁধা কয়েকটি নৌকার ছবি অবশ্য উপরে শেয়ার করেছি। নদীতে সামান্য পানি ছিল তবে পাথরের উপর দিয়ে নদীর সামান্য পানি স্রোত যেন এই নদীর শীতের মৌসুমের অপরূপ সৌন্দর্য। উপরের অংশে কিছুটা বেলে মাটি আর সেখানে ভরপুর বাদাম চাষ হয় যাইহোক নিচের অংশে একটা ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন কিছু বাদাম গাছের ছবি দেওয়া আছে। আমরা দুইটা নৌকায় চারজন করে আলাদা আলাদা ভাবে বসলাম। এক নৌকায় চারজন বসে ছিলাম অন্য উপায় পাঁচজন। ভালোভাবে বসার পরেই নৌকা রেমাক্রির উদ্দেশ্যে রওনা হলো। সামান্য পানির মধ্য দিয়েও এই নৌকা বেশ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলে যেন মনে হচ্ছিল পাথরের উপর দিয়ে নৌকা যাচ্ছে।
সাঙ্গু নদী, বান্দরবান।
what3words address.
https://w3w.co/outsize.enhancement.amaze
প্রথমবার বান্দরবানের গহীনে যাচ্ছি মনের মধ্যে অন্যরকম একটা অনুভূতি কাজ করছিল। নৌকা বেশ দ্রুতগতি যাচ্ছিল। হালকা বাতাস লাগছিল আবার রোদের প্রভাব ছিল প্রকট যেন সবমিলিয়ে পারফেক্ট সময়। নৌকায় বসে নদীর দুইপাশের মানুষের জনজীবনের চিত্রগুলো দেখছিলাম। ওখানকার যারা আদিবাসী আছে তারা নদীর দুইপাশ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষে ব্যস্ত আছে। মজার বিষয় হচ্ছে মেয়েরা এই জমিতে কাজ করছে আর বেশিরভাগ ছেলেরাই এই নদীতে নৌকা চালিয়ে নিজেদের পরিবারের খরচ বহন করে। যেহেতু প্রতিবছর অনেক পর্যটক এখানে ঘুরতে আসে সেহেতু প্রতিনিয়ত নৌকায় করে তারা পর্যটকদের নিয়ে বেশ ভালো অর্থ পেয়ে থাকে। যত সামনের দিকে নৌকা নিয়ে যাচ্ছিলাম ততই যেন প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যটা উপভোগ করতে পারছিলাম। নৌকা যত গহীনে যাচ্ছিল আমাদের মনে কৌতূহল তত বাড়ছিল কেননা এটা ছিল আমাদের প্রথম রেমাক্রি যাওয়া।
সাঙ্গু নদী, বান্দরবান।
what3words address.
https://w3w.co/swatted.engraving.shall
নৌকা ঘাট থেকে ছেড়ে আসার আধা ঘন্টা পর থেকেই ফোনের নেটওয়ার্ক কমে আসছিল তার কিছু সময় পরেই ফোনের নেটওয়ার্ক শূন্য হয়ে গেল হঠাৎ আমরা এখন পুরোপুরি নেটওয়ার্কের বাইরে আছি। তবে নেটওয়ার্কের বাইরে চলে আসার পর থেকেই ছোট ছোট পাহাড় লক্ষ্য করলাম দেখলাম পাহাড়গুলো অনেক উঁচু আবার কিছু পাহাড় থেকে ঝরনার মত পানি পড়ছে। পাহাড়ের নিচের অংশে বা নদীর উঁচু কিছুটা অংশে অনেক মারমাদের বাড়ি। তাদের বাড়ির অন্যতম সৌন্দর্য সামনের অংশে সুন্দর মাছা তৈরি করা আছে সেখানে বসে নদীর এই অপরূপ সৌন্দর্য দেখা যায় তাছাড়া প্রতিটা বাড়ি কিছুটা মাটি থেকে উপরে যেটা আলাদা মই দিয়ে বেয়ে বাড়ির মধ্যে ঢুকতে হয়। যাইহোক এই সৌন্দর্যগুলো বেশ ভালোই লাগছিল তবে আমরা যে নৌকায় ছিলাম এই নৌকার দ্রুত যাওয়ার প্রমাণ দেখলাম যখন আমরা একটি পাহাড়ের বাঁকা অংশ বাদ দিলাম তখন। সেখান থেকে একটি নৌকা এত দ্রুত গতিতে আসছিল যেন স্পিডবোটের চেয়েও বেশি দ্রুত আসতে পারে। আসলে নৌকায় মাঝি ছাড়া আর কোন লোক ছিল না তাই হয়তো দ্রুত ঘাটের দিকে যাচ্ছে। যাই হোক নবম পর্ব দেখার জন্য অপেক্ষায় থাকুন খুব শীঘ্রই শেয়ার করব। এখন যত বান্দরবানের গভীরে যাব ততই বান্দরবানের পাহাড়ি অপরূপ প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখতে পারবেন।
বন্ধুরা, এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজনে, আশাকরি আপনাদের সবার কাছেই ভালো লেগেছে।এই ভ্রমণ কাহিনী পড়ে আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে সেটা কমেন্ট বক্সে আমাকে জানাবেন। আর আমার ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন 🙏
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান।আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.