বাইকের প্রথম ফ্রি সার্ভিস ||১০% লাজুক খ্যাকের জন্য by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ -৩০শে আশ্বিন | ১৪২৮ বঙ্গাব্দ | শনিবার | শরৎকাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
গত মাসে বাইক কিনেছি সেটা নিয়ে একটা পোস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। দীর্ঘদিন অপেক্ষা এবং অনেক সমস্যা পার করে নিজের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে আর সেটা নিয়ে আমি অনেক সিরিয়াস। বাইক কেনার ঠিক এক মাস পরেই প্রথম সার্ভিসিং করার ডেট দিয়েছিল। আমিও একদিন দেরি না করেই বাইক সার্ভিসিং এ নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। বিকেলবেলায় এলাকার একটা ছোট ভাইকে বললাম চলো কালকে সকালে কুষ্টিয়া যাই, ও বলল ভাইয়া আমার গাড়িটাও সার্ভিসিং করাতে হবে দেখি আমি আপনাকে রাত্রে বেলায় জানাবো যদি সম্ভব হয় তাহলে দুজন একসাথেই যাওয়া যাবে। যাইহোক রাত্রিবেলায় আমিও ওকে ফোন দিলাম কিন্তু ওর পারিবারিক সমস্যার কারণে ও বলল আপনি একাই যান আমার সকালবেলা যাওয়া হচ্ছে না। ওর বাইকটা প্রায় তিন মাস আগে কেনা হয়েছে। ও আমাকে বলল ভাইয়া বাইক সার্ভিসিং এ নিলে একটু সকাল সকাল বাসা থেকে বের হবেন কারণ বেশি দেরি করে গেলে আবার সিরিয়ালে পড়তে হবে। আমিও ভাবলাম একটু সকাল সকাল গেলে হয়তো খুব দ্রুতই বাসায় ফিরে আসতে পারবো এই ভেবে আম্মুকে বললাম আমি সকালে কুষ্টিয়া যাব আমার জন্য একটু ভোরবেলায় নাস্তা তৈরি করে দিবে। সকাল ৭ টার ভেতরে নাস্তা করে বাসা থেকে বের হয়ে পড়লাম।
সকালের রোদ্দুর পরিবেশটা বেশ ভালোই লাগছিল তারপরে নতুন বাইক নিয়ে ঘোরাফেরা করতে এমনিতেই অনেক বেশি ভালো লাগে। নতুন বাইক বলে বাইকের গতিসীমা ৪০-৫০ এর মধ্যেই ছিল। তাছাড়া শোরুম থেকে বলে দিয়েছে ২০০০ কিলোমিটার পার হওয়ার আগ পর্যন্ত যেন খুব বেশি স্পিডে গাড়ি না চালাই। যদিও নতুন বাইক নিয়ে হাইওয়ে রাস্তায় উঠলে একটু জোরে চালাতে ইচ্ছে করে তারপরেও খুব আস্তে আস্তেই যাচ্ছিলাম। কুষ্টিয়া গেলেই যাত্রাপথে মীর মশাররফ হোসেন ব্রিজের উপরে থামার চেষ্টা করি। তারপর ওই দিনে একটু সকাল সকাল বাসা থেকে বের হয়েছিলাম যার কারণে ব্রিজের উপরেও গাড়ি খুব একটা চাপ ছিল না তাই ভাবলাম দাঁড়িয়ে নতুন বাইকের সাথে দু-একটা সেলফি নিই। বাইক থামিয়ে বাইকের সাথে সেলফি নিলাম এবং আলাদা বাইকের ছবি তুললাম আর সকালবেলায় গড়াই নদীর সৌন্দর্য ক্যাপচার করলাম। নদীতে প্রচুর পরিমাণে স্রোত থাকায় পানি কিছুটা ঘোলাটে আর সূর্য পুরোপুরি না ওঠার কারণে নদীর উপরে কুয়াশার ভাব কিছুটা বোঝা যাচ্ছে। ছবি তোলার পর্ব শেষ করে আবার যাত্রা শুরু করলাম আর বাইক স্টার্ট করার আগে ই ব্রিজ পার হওয়ার কারণে দশ টাকা ট্রোল ফি দিতে হয় সেটা আলাদা হাতে নিলাম যাতে বাইক আবার থামিয়ে মানিব্যাগ থেকে টাকা বের করতে না হয়।
সার্ভিস সেন্টারে বাইক রেখে শোরুমে গিয়ে বললাম আজকে এক মাস হয়ে গিয়েছে বাইক সার্ভিসিং এর জন্য নিয়ে এসেছি। শোরুমের ম্যানেজার বলল আপনি সার্ভিস সেন্টারের বাম পাশের ছোট্ট রুমে যে ম্যাডাম আছে উনার কাছে আপনার সার্ভিসিং বইটি জমা দিন এবং আমাদের ওয়েটিং রুমে অপেক্ষা করুন। আমি যথাযথ ভাবে সার্ভিস সেন্টারে এসে যে ম্যাম ছিল উনার কাছে বই জমা দিলাম এবং ওয়েটিং রুমে গিয়ে বসলাম। এসে দেখলাম শুধু একটা বাইক খুলে সার্ভিসিং এর কাজ শুরু হয়েছে আর একটা স্কুটির সামান্য একটু সমস্যা দেখা দিয়েছে সেটা ঠিক করছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম আমার বাইকটা কত সময় পর দেখবেন?? সেখান থেকে একজন বলল এখনই দেখব আপনি বাইকের চাবি দিন আর ওয়েটিং রুমে গিয়ে বসুন। সাধারণত প্রথম সার্ভিসিং এর বাইকের তেমন কোন কাজ থাকে না শুধু সব পয়েন্টে গ্রিজ করে দেয় আর পিকআপ এর রেঞ্জ কমানো সহ ছোট কিছু খুঁটিনাটি কাজ করে দেয়। প্রথম সার্ভিসিং এর জন্য খুব বেশি দেরি হয়নি মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যেই বাইকের সমস্ত কাজ কমপ্লিট হয়ে গেল আর সার্ভিসিং পয়েন্টে যে মহিলার দায়িত্বরত ছিল তার কাছে গিয়ে আমি আমার বাইকের বইটি সংগ্রহ করলাম আর প্রথম সার্ভিসিং শেষ হয়েছে এই বাবুতে একটা সিগনেচার করে বইটা সংগ্রহ করলাম।যিনি আমার বাইক সার্ভিসিং করলেন তিনি বাইকের চাবি দিয়ে বললেন একটু চালিয়ে দেখে আসুন সবকিছু ঠিকঠাক আছে কিনা?? একটু চালিয়ে আসার পরে বাইকের রেঞ্জ আরেকটু কমিয়ে নিলাম আর মেকানিককে বকশীবাদ ১০০ টাকা দিলাম। তিনি আমাকে বললেন আপনি আবার ঠিক তিন মাস পরে বাইক নিয়ে চলে আসবেন কারণ দ্বিতীয় ফ্রি সার্ভিসটি তিন মাস পরে দেওয়া হয়।
খুব সকাল সকাল বাইক সার্ভিসিং হয়ে গেল তাই ভাবলাম বন্ধুর সাথে গিয়ে লোফার পছন্দ করব। বাইক নিয়ে বন্ধুর ম্যাচের সামনে থেকে ওকে বাইকে করে নিয়ে সোজা জুতার শোরুমে গেলাম। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে ঈদের মধ্যেও যে লোফারের দাম ছিল ১২০০-১৩০০ টাকা সেগুলা বর্তমানে ২০০০ টাকা। আমার কাছে যে টাকা ছিল সেটা বাজেটের বাইরে তাই ভাবলাম আজকে আর লোফার কিনবো না। আমার বন্ধু বলল এই সপ্তাহে ওর নাকি একটা বিয়ের দাওয়াত আছে এবং বিয়ের বর যাত্রী হিসেবে সাথে যেতে হবে তাই ও একটা শার্ট কিনবে। পরবর্তীতে জামা কাপড়ের শোরুমে গিয়ে শার্ট এবং টি-শার্ট দেখলাম। সবুজ রঙের একটি শার্ট আমার বন্ধু পছন্দ করল আমি ওকে বললাম ট্রায়াল রুমে গিয়ে শার্ট গায়ে দিয়ে ট্রাইল দিয়ে দেখো কেমন ফিটিং হয় কারণ গায়ের সাথে শার্ট ম্যাচিং না হলে সেটা সুন্দর দেখায় না। তবে শার্ট ওর গায়ে বেশ মানিয়েছিল। শার্ট টি পছন্দ হওয়ায় আমার বন্ধু জসিম ১৬০০ টাকা দিয়ে একটি সুন্দর শার্ট কিনেছিল। কেনাকাটার পর্ব শেষ করে আমি আবার আমার বন্ধুকে ওর ম্যাচের সামনে নামিয়ে দিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হই।
⬇️📥 | ⬇️📥 |
---|---|
ডিভাইস | Samsung galaxy A52 |
ফটোগ্রাফার | @kazi-raihan |
লোকেশন | |
সময় | অক্টোবর,২০২২ |
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
https://twitter.com/KaziRai39057271/status/1581094811305914368?s=20&t=Asv9wkoB74toe_up-LrXZQ
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আমার পুরো পোস্ট পড়ে সুন্দর মন্তব্য প্রকাশ করার জন্য।
নতুন গাড়ি কিনলে টুকিটাকি বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় যেটা নতুন না। আর নতুন গাড়ির অনেকবার সার্ভিসিং করতে হয় আপনি ফ্রি সার্ভিসিং করিয়েছেন যেটা আপনার গাড়ির কন্ডিশন অনেক ভালো করে তুলবে ।সেই মুহূর্তের গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো।
রুলস গুলো মেনে চললে ভালো সার্ভিস পাওয়া যায় বলেই যথা সময়ে ফ্রি সার্ভিস নিয়ে নিলাম।
গাড়ি সার্ভিসিং করাতে গিয়ে ভালো কেনাকাটাও হল। আর এটা ঠিকই উৎসবে যে সব জিনিসের দাম একটু কমে, পরে আরো বেড়ে যায়। পুজোর সময়ও দেখেছি। আর নতুন গাড়ি সত্যিই জোড়ে চালাতে নেই। সাবধানে ব্যাবহার করলে বিপদ এড়ানো যায়। ভালো থাকবেন।
আসেই দিদি একটু মেনে চললেই দুর্ঘটনা থেকে এড়িয়ে চলা সম্ভব। মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আপনার বাইকটি খুবই সুন্দর।তাছাড়া এইসব ফ্রি সার্ভিসের কাজে দেরি না করাই ভালো।প্রথম বাইক কিনলে সবাই একটু গতি বাড়িয়ে চালানোর চেষ্টা করে।যাইহোক জেনে ভালো লাগলো যে আপনার বাইকের কাজ খুবই কম সময়ে হয়ে গেছে।ধন্যবাদ ভাইয়া।
অনেক অনেক ধন্যবাদ দি ভাই
আমিও শুনেছি নতুন বাইক কেনার পর একমাস পরে সার্ভিসিং করানো হয়। আপনার বাইকটা কিন্তু সত্যিই ভীষণ সুন্দর। আর আপনি একমাস হওয়ার সাথে সাথে সার্ভিসিং করাতে নিয়ে গেছেন এটা বেশ ভালো লাগলো। বিশেষ করে গাড়িটা নিয়ে এগিয়ে সমস্ত নিয়মকানুন মেনে সার্ভিসিং করিয়েছেন। দেখলাম আবার বেশি সময়ও লাগলো না এক ঘন্টা শেষ। আবার তো তিন মাস পরে আসতে বলল। আর লোকটিকে ১০০ টাকা বকশিস দিয়েছেন এটা সবথেকে বেশি ভালো লেগেছে। লোফার এর দামটা অনেক বেশি দেখছি। আর টি শার্ট সত্যিই সুন্দর ছিল আপনার বন্ধু নিয়েছে বেশ ভালো লাগলো। সব মিলিয়ে বেশ সুন্দর একটা দিন কাটিয়েছেন।
পোস্ট পড়ে সুন্দর মন্তব্য প্রকাশ করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু মনি 🥰