জীবনের আসল শিক্ষাটা আমরা মা-বাবার কাছ থেকেই পাই- ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁককের জন্য

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম!
আমি ঢাকা, বাংলাদেশ থেকে @kawsar


আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আর আমিও এই অতিরিক্ত গরমের মধ্যে মোটামুটি ভালোই আছি আলহামদুলিল্লাহ। আসলে এখন প্রচুর গরম পড়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন যারা আমরা বাহিরে যাই তাদের কিন্তু খুবই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কারণ যারা আমরা ঢাকায় বসবাস করি তারা তো জানি যে গাড়িতে কত জ্যাম ,আর এই জ্যামে গরমে একেবারে নাজেহাল অবস্থা হয়ে যায়। তবুও এই গরমে যাতে আমরা সুস্থ থাকতে পারি সেজন্যই কিন্তু আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে। আর সেরকম ভাবে চলতে হবে আর প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে এবং পানি অবশ্যই বিশুদ্ধ পানি হতে হবে।


image.png

Image source: copyright & royalty free unsplash.com


প্রতিদিনের মত আজও আমি আপনাদের মাঝে আরও একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে। আসলে । আমাদের জীবনে আমরা যে শিক্ষা গ্রহণ করে থাকি সেটা ভালো হোক কিংবা খারাপ সেখানে কিন্তু মা-বাবার গুরুত্ব অনেক বেশি থাকে। আজকে আমি আলোচনা করব যে আমাদের আসলে আমরা যে শিক্ষাটা পেয়ে থাকি সেটার আসল শিক্ষক হলো আমাদের মা-বাবা। ছোট থেকে আমাদের মা বাবা আমাদেরকে যেভাবে মানুষ করার চেষ্টা করবে আমরা অনেকটাই সেইরকমই হওয়ার চেষ্টা করব. চলুন শুরু করা যাক।


আসলে পৃথিবীতে এমন মা বাবা খুঁজে পাওয়া যাবে না ,যারা তাদের সন্তানের ভালো চায় না। সবাই চায় আমার সন্তান ভালো হোক, আমার সন্তান ঠিকভাবে চলুক ,আর আমরা যদিও কোনো খারাপ কাজ করি কিন্তু আমার সন্তান যেন সবসময় সর্বক্ষেত্রে ভালো কাজ করে আর ভালভাবে চলে। কিন্তু যদি আমরা একটু খেয়াল করে দেখি যে এই যে মা-বাবাদের চাওয়া এটা কিন্তু অনেক অংশই সত্যি হচ্ছে না। আর কেন হচ্ছে না সেটা কিন্তু আমরা একটু চিন্তা-ভাবনা করলে বুঝতে পারব।


আসলে হয়ত আমরা অনেক সময় আমাদের সন্তানকে বলি যে তোমরা মিথ্যা কথা বলো না বা তোমরা অন্য মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার কোরো না। যখন আমরা তাদেরকে উপদেশ দেই তখন কিন্তু ঠিকভাবেই দেই, কিন্তু হয়তো একসময় দেখা যাচ্ছে যে আমাদের সন্তানরা আমাদের সাথেই আছেন কিন্তু আমরা কথায় কথায় মিথ্যা কথা বলে যাচ্ছি কিংবা কোন মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার করছি। এমতবস্থায় আপনার কি মনে হয় যে আপনার সন্তান আপনার কাছ থেকে ভালো কিছু শিক্ষা গ্রহণ করছে ,অবশ্যই না।


image.png

Image source: copyright & royalty free unsplash.com


যেটা আমরা করছি সেটাই কিন্তু সে শিখে যাচ্ছে। তাকে উপদেশ দিয়ে কোন লাভ নেই। যদি আমরা ঠিক ভাবে চলতে পারি ,তাহলে আমাদের সন্তানরাও কিন্তু ঠিক ভাবে চলতে চলবে। সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করার জন্য এবং ভালো কথা নেওয়ার জন্য আমার নিজেকে প্রথমত মানুষের মতো মানুষ হতে হবে এবং আমাকে ঠিক ঠিক পথে চলতে হবে। যখন আমার সন্তান দেখবে যে আমি সব সময় সত্য কথা বলছি, আমি সঠিক পথে চলছি আমি সৎ পথে চলার চেষ্টা করছি ,আমি সৎ পথে ইনকাম করার চেষ্টা করছি তাহলে কিন্তু সে যখন বড় হবে বা যখন ছোট থাকে তখন কিন্তু আমার কাছ থেকে এই যে শিক্ষাটা পাবে।


আমরা ঠিকভাবে না চলে তাদেরকে যতই আমরা উপদেশ দেওয়ার চেষ্টা করি না কেন সেটা তারা কখনোই মানবে না। আমাদের সন্তানকে আমরা যেভাবে চালাতে চাইনা কেন, যে পথে আমরা তাকে চালাতে চাই সেটা আমাদেরকে অবশ্যই খুবই ছোট থেকে অভ্যাস করাতে হবে। তাহলে কিন্তু আমরা তাকে সেই পথে নিতে পারব। হয়তো আমাদের প্রত্যেকেরই আমাদের সন্তানকে নিয়ে অনেক বড় স্বপ্ন থাকে কিন্তু সেই স্বপ্ন সবাই সত্যি হয়না আবার কেউর সত্যি হয়।


তবে আমি একটি জিনিস খেয়াল করে দেখেছি তা হল কিছু কিছু ছেলে মেয়েরা এমনিতেই অনেক ভাল হয়। কিন্তু তারা কেন ভাল হয় তা আমি বলতে পারবো না। হয়ত আল্লাহতালা তাদেরকে ভালো করে সৃষ্টি করেন। তবে 90% এরকম যে মা-বাবারা যেরকম শিক্ষা দিয়েছেন তারা সেরকমই হয়েছে। আমি আগেই বলেছি ভালো শিক্ষা দিলেই হবে না, নিজেদের ভালো ভাবে চলতে হবে। সন্তান হলো আমাদের সম্পদ। তাই এই সম্পদ কে আমাদের সঠিক পথে চালাতে হবে।


image.png

Image source: copyright & royalty free unsplash.com


আমাদের পাশের বাসায় একটি মেয়ে থাকে তার বান্ধবী কিছুদিন আগেই সুইসাইড করেছে। আমার শুনে খুবই খারাপ লাগলো। সে মাত্র ক্লাস টেনে পড়ে এই বয়সে কিন্তু তাঁর এই কাজটা করা মোটেও ঠিক হয়নি। আসলে তার বাবা-মা মায়ের কথা আমি যতটুকু শুনেছি বাবা যে রকম মেয়ে কিন্তু সেরকমই হয়েছে। সেজন্যই কিন্তু এ কাজটা করতে পেরেছে। আমি মনে করি সন্তান দেড় কে সঠিক পথের সন্ধান দিতে হবে।


যে কাজগুলো করা আমাদের উচিত নয় ,যে কাজ করলে আল্লাহ আমাদের উপর অসন্তুষ্ট হন সেটা যদি আমরা সন্তানদেরকে শিক্ষা দান করি। তবে যখন সে এই কাজটা করতে যাবে তখনি কিন্তু সে আমার বলা সেই কথাগুলো মনে করবে এবং হয়তো সে সেই কাজ থেকে পিছিয়ে আসবে। কিন্তু তারা যদি এই সম্পর্কে কিছু নাই জানে তাহলে তো সে কাজ ভাল না খারাপ সেটা বুঝতে পারবে না। আর খারাপ কাজ থেকেও কিন্তু তারা কখনো ফিরে আসবে না। যে কাজ করা আমাদের উচিত নয় যে কাজ করলে আমাদের জীবনে অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে এই শিক্ষা গুলো দেওয়া সন্তানদেরকে অবশ্যই উচিত।


এটা আমাদের সন্তানের জন্য কল্যাণকর এবং আমাদের জন্য ভালো। কারণ একটি সন্তান যদি কু-পথে চলে যায় তাহলে তার মা-বাবার যে কত চিন্তা হয় ,সেটা একমাত্র সেই বাবা জানে এবং কতটা খারাপ লাগে সেটাও সেই মা-বাবারা জানে। সেই জন্যই আমাদের সন্তানরা যাতে ভালো পথে চলতে পারে এবং ভালো কিছু শিক্ষা নিতে পারে সেজন্য আমাদেরকে অবশ্যই চেষ্টা করতে হবে এবং নিজেদেরকে ভালো পথে চলতে হবে। যে কাজগুলো আমাদের মোটেই করা ঠিক নয় বা ভালো খারাপের পার্থক্য অবশ্যই সন্তানদেরকে বুঝাতে হবে।


image.png

Image source: copyright & royalty free unsplash.com


এবং সেই খারাপ কাজটা করলে আমাদের জীবনে কতটা অকল্যাণ বয়ে আসতে পারে। সেটা তাদেরকে বুঝাতে হবে এটা অবশ্যই তারা যখন বড় হবে তখন কিন্তু বুঝতে যাবে না। সেইজন্য ছোট থেকে বুজতে হবে। যাতে বড় হলে একবার দুইবার বললেই বুঝতে পারে। সর্বশেষ আমি বলতে চাই যে আমাদের সবার সচেতন হওয়া উচিত কারণ আমাদের হয়তো আজকে কারো সন্তান আছে আবার কারো নেই কিন্তু সবারই একদিন হবে।


সেই অর্থে আমাদের সবারই সতর্ক হওয়া উচিত আগে থেকেই। আগে থেকেই সন্তানকে মানুষ করা যে পরিকল্পনাগুলো সেগুলো করে রাখা উচিত। তাহলে কিন্তু আমি মনে করি যে আমাদের জন্যই ভালো হবে। আজ এই পর্যন্তই সকলের সুস্থতা কামনা করছি। আর সকলকে বলছি অবশ্যই বেশি বেশি বিশুদ্ধ পানি পান করবেন। আমার পোস্ট এখানেই শেষ করছি। আগামী কাল আরো কোন পোস্ট নিয়ে হাজির হব। সেই পর্যন্ত সবাই সুস্থ থাকুন।



image.png


ধন্যবাদ সবাইকে পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য।
@kawsar

Sort:  
 2 years ago 

আপনার আজকের পোস্টটি আমার কাছে খুব যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে। এই কথাটা একদম সত্যি যে আমাদের জীবনে আসল শিক্ষাটা পাই বাবা-মার কাছ থেকে। ছোট বাবুরা যখন ঠিক মত হাঁটতে কথা বলতে পারেনা তখন থেকেই তারা বাবা-মাকে অনুকরণ করে অনেক কিছু শিখে যায়। আমি নিজের একটা অভিজ্ঞতা কথা বলছি। আমি প্রত্যেকদিন বাইরে থেকে যাওয়ার পর আমার ছোট ছেলেকে কোলে নেওয়ার আগে ভালো করে হাত-মুখ ধুয়ে হাতে সেনিটাইজার লাগাই। একদিন কোন কারণে ভুলে গিয়েছি স্যানিটাইজার হাতে দেইনি সেটা ১৫ মাসের ছেলে লক্ষ্য করেছে। কোলে উঠে আমাকে ওই দিকে টেনে নিয়ে তার দুই হাত দিয়ে ইঙ্গিত করছে লাগানোর জন্য। আমি তো অবাক এত অল্প বয়সে সে অনেক কিছু শিখেছে।

 2 years ago 

জি ভাই আপনি আসলেই একদমই ঠিক কথা বলেছেন আসলেই শিশুরা ছোট থেকেই তার মা-বাবাকে অনুসরণ করে। এজন্যই তাদের এজন্যই তাদের সামনে সব সময় ভালো কাজ করতে হয়, যাতে তারা ভাল কাজ শিখে যায়। আর আপনার ছেলে একদম ঠিক কাজ করেছে। আপনি প্রতিদিন তার সামনে এই কাজটা করেছেন সেই জন্যই তার মাথায় সেই কাজটা ঢুকে গেছে। এজন্য যখন ঐ কাজটা করেন নি তখনই সে আপনাকে সেই কাজটা করার জন্য নিয়ে গেছে। শুভকামনা রইল

 2 years ago 

একদম কার্যকরী ও যৌক্তিক বিষয়ে ব্লগ লিখেছেন ভাই।জীবনের আসল শিক্ষা অর্থাৎ মানবিক গুণাবলীতে মনুষ্যত্ব হওয়ার শিক্ষাটা আমরা মা-বাবার কাছ থেকেই পাই।সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

 2 years ago 

ধন্যবাদ, আপনার জন্য ও শুভকামনা রইল

আসল শিক্ষক বাবা-মা আর
বড় বোন ভাই,
তাদের মত নিঃস্বার্থ শিক্ষক
কোথায় পাবো ভাই।

শিক্ষা হয়েছে বাজারী পন্য
আসল শিক্ষা নাই
সার শুন্য শিক্ষা নিয়ে
হারিয়ছি মূল শিক্ষা তাই।

 2 years ago 

আপনার কবিতাটি ভালো লাগলো ভাইয়া

 2 years ago 

আপনি খুবই অসাধারণ কিছু কথা বলেছেন। আপনার পোস্টটা পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। আপনি একদম সঠিক কথা বলেছেন আমরা আসল শিক্ষা পাই মা বাবার কাছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই ধরনের পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আপনাকেও ধন্যবাদ প্রিয় ভাই

 2 years ago 

কথাটা একদম ঠিক বলেছেন। এই দুনিয়াতে নিজের সন্তান এর ভালো চায় না এমন বাবা মা খুব কম আছে। মাঝে মাঝে খারাপ লাগে যখন নিউজে দেখি এদিক সেদিক বাচ্চা ফেলে চলে যায় তারা আসলে বাবা মায়ের কাতারেই পরে না৷

 2 years ago 

জি ভাই একদমই ঠিক বলেছেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.13
TRX 0.12
JST 0.024
BTC 51460.37
ETH 2243.25
USDT 1.00
SBD 2.01