স্কুল শিক্ষা বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারে কলকাতার ঐতিহ্য পার্ক হোটেলে আমি।
স্কুল শিক্ষা বিষয়ে পার্ক হোটেলের সেমিনারে
পেশাগত একটি সেমিনারে যুক্ত হতে গতকাল ঘুরে এলাম কলকাতার একটি অন্যতম প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী পাঁচতারা হোটেল দি পার্কে। পার্ক স্ট্রিটে অবস্থিত এই হোটেলটিকে মানুষ সাধারণভাবে পার্ক হোটেল বলে চেনে। হোটেলটি কলকাতার বুকে দীর্ঘদিন ধরে এক ঐতিহ্য বহন করে নিয়ে চলেছে। আজ নবরুপে সজ্জিত এই পার্কের ভিতর তার সাজসজ্জা সবদিক থেকে সমানে সমানে টেক্কা দেয় কলকাতার অতি আধুনিক পাঁচতারা হোটেলগুলির সাথেও।
সারা ভারত থেকে বর্তমান স্কুল শিক্ষার উপর আয়োজন করা হয়েছিল একটি সেমিনারের। আয়োজক হিসেবে ছিল আন্তর্জাতিক একটি সংস্থা। সেখানে সারা ভারতের প্রায় ৭০ টি স্কুল থেকে অভিজ্ঞ প্রতিনিধিরা যুক্ত হয়েছিলেন নিজেদের ভাব ও অভিজ্ঞতা আদান প্রদান করবার লক্ষ্য নিয়ে। শিক্ষাক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন আধিকারিক এবং উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক ব্যক্তিত্বরাও ছিলেন সেই সেমিনারে। আমার বিদ্যালয়ের তরফে সেখানে প্রতিনিধিত্ব করেছিলাম আমি। পুরো স্কুল থেকে প্রধান শিক্ষিকা আমাকে সেখানে প্রতিনিধিত্ব করতে পাঠালেন, এ আমার কাছে এক আনন্দের মুহূর্ত। গর্বেরও বটে। নিজের স্কুলকে সারা দেশের মঞ্চে প্রতিনিধিত্ব করতে পাওয়া সত্যিই তো এক পরম পাওয়া। সেখানে কয়েক ঘন্টা ব্যাপী শিক্ষা ও ছাত্রদের সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে কথাবার্তা চলতে থাকে সকলের মধ্যে। বর্তমান যুগে হলিস্টিক ডেভেলপমেন্ট এবং ছাত্রদের পার্সোনাল মনিটরিং সিস্টেম সবদিক থেকে ভীষণ কার্যকরী। সব ছাত্রদের মেধা সমান হয় না। সেক্ষেত্রে পার্সোনাল মনিটরিংটা ভীষণভাবে প্রয়োজন। এগুলোই ছিল আলোচনার মূল বিষয়। অভিজ্ঞ শিক্ষকেরা তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন সকলের সাথে। কিভাবে সঠিক শিক্ষাদান করে বিভিন্ন মেধাযুক্ত ছাত্রদের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্যের দরজায় পৌঁছে দেয়া যায় সেই নিয়ে হল একটি প্রাসঙ্গিক ও সদর্থক আলোচনা।
এই সবকিছুর মধ্যেই ছিল পেট পুজোর আয়োজন। পাঁচতারা হোটেলে সেমিনার আর সেখানে খাওয়া-দাওয়া হবে না এমন তো হয় না। স্বভাবতই সকালে চা-কফি বিস্কুট স্যান্ডউইচ ইত্যাদি দিয়ে একটা ওয়েলকাম ব্রেকফাস্ট তারা পরিবেশন করলো। তারপর মাঝে ১০ মিনিটের বিরতি। তখন স্যুপ, ভেজ পাকোড়া ও কফি পরিবেশন করা হলো সকল অধ্যাগতদের। দুপুরে সম্পূর্ণ সেমিনার শেষ হবার পর ছিল মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন। এখানে বাফেট লাঞ্চে ছিল বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু পদ। ভেজ এবং ননভেজ সমস্ত রকম পদগুলি স্বাদে ও গন্ধে ছিল অতুলনীয়। পাঁচতারা হোটেলের খাওয়া আমি আগেও খেয়েছি। কিন্তু বরাবর শুনে এসেছি দি পার্ক সমস্ত পাঁচতারা হোটেলের তুলনায় খাওয়া-দাওয়ার দিকে একটু এগিয়ে। সেখানে যাঁরা রান্না করেন, তাঁরা প্রায় সকলেই আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন। এমন দক্ষ এবং পেশাদার বাবুর্চিদের হাতে খাবার অভিজ্ঞতা যে একেবারেই অন্যরকম হবে তা বলাই বাহুল্য।
লাঞ্চে যে সকল পদ ছিল তার মধ্যে কয়েকটি উল্লেখ করছি। দই বড়া, বিভিন্ন রকম স্যালাড, সুইট কর্ন রাইস, তন্দুরি রুটি, কাশ্মীরি আলুর দম, পনির পাসিন্দা, গ্রিলড ফিস, চিকেন মশালা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও ডিজার্ট আইটেমের মধ্যে ছিল আইসক্রিম পেস্ট্রি এবং বেকড আলাস্কা। সবকটি আইটেম ছাদে অসাধারণ। সবকিছুই আমি অল্প অল্প করে আস্বাদন করেছি। পার্ক হোটেলের সেমিনার উপলক্ষে এই লাঞ্চ আমার বহুদিন মনে থাকবে।
আমার এই অভিজ্ঞতা থেকে প্রাপ্ত ভালোলাগাটুকু আপনাদের কাছে বলতে পেরে খুব ভালো লাগছে। এরপর আপনাদের মন্তব্য জানতে ইচ্ছুক রইলাম। যদি আমার পোস্ট নিয়ে আপনাদের কোন বক্তব্য থাকে তা নিশ্চয়ই মন্তব্যের মাধ্যমে আমায় জানাবেন।
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(৫% বেনিফিশিয়ারি এবিবি স্কুলকে এবং ১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
https://x.com/KausikChak1234/status/1840590470616903992?t=3ya5WX_V62YbVYPOjpQNgQ&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.