আধামণ আলুর সমান ১ লিটার সয়াবিন তেল,১০% লাজুক শেয়ালের জন্য।
হ্যালো বন্ধুরা,
আশা করছি ভাল আছেন।আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি।দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি জনজীবনকে হাঁপিয়ে তুলেছে। বেশ কিছুদিন ধরেই দ্রব্যমূল্যের এমন আস্ফালন আলোচনা-সমালোচনায় ভাসছে কাগজের পৃষ্ঠায়,টিভির পর্দায়।ঝড় তুলেছে সোস্যাল মিডিয়াতেও।দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের পর্ব।
গত মাসের ২৯ তারিখে একজন আলু চাষির স্বপ্ন নিয়ে লিখেছিলাম।লিখার মাঝে মূলত আলুর তুলনামূলক দাম ও তার ব্যাহত জীবনযাত্রা তুলে ধরা হয়েছিল।ঠিক এক মাস পর আজকে আলুর দামের সাথে,সমসাময়িক দ্রব্যের মূল্যস্ফীতি নিয়ে লিখছি।আশাকরি লেখাটি ভালো লাগবে।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মহোদয়ের তথ্য মতে,গাইবান্ধা জেলার ৯,২৫০হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে।আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন তুলনামূলক অনেক ভালো হয়েছে।
কিন্তু কথা দাড়ায়,এতো ভাল ফলন পেয়েও আলু চাষিদের হাহাকার কেন?কেন,চোখের জলে ভিজে যাচ্ছে তাদের ফসলের ক্ষেত?কেনই'বা ভালো ফসল ফলেও তাদের এতো আর্তনাদ,আহাজারি?
প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুব বেশি সময় লাগে না।আলু চাষিদের দেওয়া তথ্যমতে,এবার প্রতি বিঘা আলু উৎপাদনে তাদের মোট খরচ ১৫০০০টাকা।সে অনুযায়ী প্রতি কেজি আলুর বিক্রয় মূল্য ১৫ থেকে ১৭ টাকা।কিন্তু আলুর বর্তমান বাজার পাইকারি হিসেবে ৩৫০টাকায় এক মণ।অর্থাৎ পাইকারি দামে প্রতি কেজি আলু নয় টাকার কাছাকাছি বিক্রি করা হচ্ছে।এতে তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে উৎপাদন খরচের অর্ধেক।
উৎস
এবার কথা হলো,বাজারে আসা এক আলু চাষীর সাথে।তিনি জানান,প্রতিমণ আলু ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।পরিবহন ও আড়তদারদের খরচ বাদ দিয়ে তাদের টাকা হাতে আসছে প্রতি মণে ৩০০ টাকা।এখন তার প্রশ্ন হলো,পটাটো চিপসের দাম কি কমে গেছে,রেস্টুরেন্টে আলুর তরকারি দাম কি কম নেয়,দেশে কি আলুর চাহিদা কমে গেছে,বিশ্ববাজারে কি আলুতে মন্দা দেখা দিছে।কোনো জায়গাতেই যদি আলুর দাম,চাহিদা কম না থাকে তাহলে আমরা কৃষক কেন আলুর ন্যায্য দাম পাচ্ছিনা।
প্রশ্নগুলো খুব যৌক্তিক এবং জটিল ছিল।যার উত্তর হয়তো আমি কেন আমাদের অনেকেরই জানা নেই।বর্তমান বাজার ব্যবস্থায় মূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি তাতে আলু চাষীদের এমন ক্ষতিতে তাদের প্রশ্নগুলো ছিল খুবই যথার্থক।
উৎস
হিসাব করে দেখা যায়,২০কেজি আলু দিয়েও ১কেজি সয়াবিন তেল কেনা সম্ভব হয় না।কেননা,২০কেজি আলুর মূল্য ১৪০-১৫০ টাকা অন্যদিকে এক কেজি সয়াবিন তেলের মূল্য ১৭০থেকে ১৮০ টাকা।খেটে খাওয়া সাধারন কৃষকদের অর্থনৈতিক অবস্থা যদি এরূপ হয় তাহলে খুব বেশি দূরে নেই,আমাদের করুন অবস্থা দেখা।কেননা,এবার আলু চাষীরা প্রতি বিঘায় সাত থেকে আট হাজার টাকা লোকসান খাচ্ছেন। এমন লোকসানে তারা বদ্ধপরিকর দাম ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত আলুর আবাদ,তারা আর করবেন না।
The financial express এবং bdnews24.com এর তথ্য মতে, প্রতি কেজি সয়াবিন তেলের মূল্যবৃদ্ধি নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ টাকা বেশি।প্যাকেটজাত সয়াবিন তেলের প্রতি কেজির মূল্য ১৬৮,খোলা সয়াবিন১৪৩ এবং পাম অয়েল ১৩৩ টাকা।কিন্তু বাজারঘুরে তার বাস্তবতা দেখা যায় উল্টো,প্যাকেটজাত প্রতিকেজি সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়, খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায় এবং পামওয়েল তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬০টাকা।তেলের বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণ করার যেন কেউ নেই।দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভোক্তারা।ভোজ্য তেলের সাথে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক জিনিসের।
উৎস
দ্রব্যমূল্যের এমন অসম মূল্যস্ফীতি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।দুমাস পর পর প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যের এমন বৃদ্ধি স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাহত হচ্ছে।একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের সাথে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।পণ্যের অসম উৎপাদন প্রতিযোগিতা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অস্বাভাবিক মূল্যস্ফীতি একটি সুস্থ্য স্বাভাবিক জাতির জন্য অশনি সংকেত।সুতরাং আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি,উৎপাদনশীল অন্যান্য ফসলের দাম নির্ধারণের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নির্ধারণ করা দায়িত্বশীলদের অতীব জরুরী।
তবে,জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছেন,আলুর চাষাবাদ ও ফলন বৃদ্ধির কারনে আলুর দাম কমেছে।আলু সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে পারলে পরবর্তীতে ভাল দাম পাবেন আলুচাষিরা এমনটাই প্রত্যাশা।
আজ এখানেই শেষ করছি।পরবর্তীতে আবার আসবো নতুন বিষয় নিয়ে।সে পর্যন্ত ভাল থাকবেন,সুস্থ্য থাকবেন,নিরাপদে থাকবেন প্রিয় প্লাটফর্ম @amarbanglablog
মুল্যবান সময় দিয়ে পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
এতক্ষণ সাথে ছিলাম আমি @kamrul8217
পেশায় একজন সাংবাদিক,উপস্থাপক ও ক্ষুদ্রলেখক।আমার জ্ঞানের পরিধিকে বাড়িয়ে দিতে সাথে আছে,দুই বাংলার এক অবিচ্ছেদ্য প্রান@amarbanglablog
স্বাভাবিকভাবেই উৎপাদন বেশি হলে দাম কমে যায়। আসলেই এবার প্রত্যেকটা জায়গায় প্রচুর উৎপাদিত হয়েছে বিশেষ করে আবহাওয়া অনুকূল থাকার কারণে। কিন্তু দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে আমাদের মত মধ্যবিত্ত পরিবারের সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে আপনি সুন্দর করে তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। শুভকামনা রইল
গতানুগতিক উৎপাদনের তুলনায় এবার আলু অনেক বেশি পরিমানে উৎপাদন হয়েছে।যার কারনেই বাজারে চাহিদা তুলনামূলক কমেছে।আপনি অনেক চমতকার মন্তব্য করেছেন শ্রদ্ধেয়।
খুবই সুন্দর ভাবে আপনি আজকে আমাদের দেশের একটি বর্তমান পরিস্থিতির কথা শেয়ার করেছেন ভাইয়া। আপনি আজকে যে কথাগুলো বলেছেন সেটি পুরোটাই সত্য। কারণ এখন এক লিটার তেল কিনতে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হয় সেই অর্থ দিয়ে আমরা অনায়াসে 20 কেজি আলু কিনতে পারি। গ্রাম বাংলার মানুষেরা এই দিক থেকে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
আলু চাষিদের এমন পরিস্থিতি আমাদের সমসাময়িক দ্রব্যমূল্যের অসংগতি দারুন উদ্বেগের বিষয়।সময়কালের মূল্যস্ফীতি আস্তে আস্তে সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।যা উন্নত জীবনযাত্রায় অশনি সংকেত।
ভাই আসলে এ বিষয়টি নিয়ে কি বলবো, আমাদের দেশটাই এমন, সবকিছু সিন্ডিকেট করে রাখে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী যারা প্রচুর পরিমাণে লাভ করে, আর কৃষকরা মাঠে মরে। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করি সব সময়।
আপনি খুব চমতকার ধারনা নিয়েছেন। কিছু অসাধু সিন্ডিকেট আমাদের এই সংকট সৃষ্টি করে। যা কোনভাবেই কাম্য নয়।দায়িত্বরত ব্যক্তিদের উচিৎ এই পরিবেশ পদ্ধতির মুলৎপাটন করা।আপনার যথার্থ মন্তব্য খুব অনুপ্রেরণার।
আপনি বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট করেছে। যেহেতু আমি বেশিরভাগ সময় উত্তরাঞ্চলে থাকি তাই এই ব্যাপারটি আমার অনেক সময় চোখে পড়েছে। কৃষকের এরকম শোচনীয় অবস্থা দেখে খুব খারাপ লাগে। ধন্যবাদ ভাই এত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে পোষ্ট করার জন্য।শুভকামনা রইল আপনার জন্য
গত কয়েকদিন ধরেই এই বিষয় নিয়ে লেখার ইচ্ছে ছিলো, কিন্তু সময় হয়ে ওঠে নাই।তবে সংকট খুবই তাড়া করছিলো।কিছু বিষয় মেনেই নেওয়া যাচ্ছিলো না।
বিষয়টি কেন জানি বার বার ভাবিয়ে তুলতেছিলো।এটা নিয়ে আপনি চমতকার কিছু ধারনা দিয়েছিলেন।যা ছিলো সময় উপযোগী।
অত্যন্ত গঠনমূলক মন্তব্য করেছেন শ্রদ্ধেয়।