কষ্ট হলেও সেই রাতে আনন্দ ছিল //পর্ব--দ্বিতীয়
আজ - ২৫ কার্তিক | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার | হেমন্তকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- কষ্ট হলেও সেই রাতে আনন্দ ছিল(দ্বিতীয় পর্ব)
- আজ ২৫শ কার্তিক, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
- শুক্রবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ সকাল সবাইকে......!!
গত পোস্টে আমি আপনাদের মাঝে একটি গল্প শেয়ার করেছিলাম যদিও এই ঘটনাটা কিছুদিন আগেই আমার সঙ্গে ঘটে গিয়েছিল। প্রথম যে গল্পটা আমি আপনাদের মাঝে তুলে ধরেছিলাম সেই গল্পে আপনারা সকলেই অনেক সুন্দর মন্তব্য করেছিলেন যার কারণে আমি বেশি দেরি না করে খুব দ্রুতই আপনাদের মাঝে দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হয়ে গিয়েছি। দ্বিতীয় পর্বে আমি গল্পের বাকি অংশটুকু তুলে ধরার চেষ্টা করব।
প্রথম পর্বে শেষ অংশ ছিল, আমি সহ আমার ফুফাতো ভাই একটা স্কুল মাঠে বসে প্রায় রাত্রি সাড়ে বারোটা পর্যন্ত আড্ডা দিয়েছিলাম। যদিও আমি তাদেরকে বাসায় যাওয়ার জন্য অনেক বেশি তাড়াহুড়ো করছিলাম কিন্তু তারা নাসর বান্দা তারা অনেকদিন পর আমাকে পেয়ে কখনোই এত দ্রুত বাসায় যাবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে। সত্যি বলতে অনেক দিন পরে তাদেরকে পেয়ে আমারও অনেক বেশি ভালো লাগছিল যদিও বাসায় যেতে মন চাইছিল না,কিন্তু বাসা থেকে চিন্তা করবে এই ভেবে দ্রুত বাসায় চলে যেতে চাচ্ছিলাম। আর এর মধ্যে আমার আব্বু প্রায় দু থেকে তিনবার আমাকে ফোন দিয়ে বাসায় যেতে বলেছে। যাইহোক কিছুটা সময় আড্ডা দেওয়ার পরে পাশে থাকা আরেক একজন বলে পাশের গ্রামের বাজারে ছোট্ট একটা টং দোকানে অনেক সুস্বাদু চাওয়া পাওয়া যায় চলো আমরা সেখানে গিয়ে চা খেয়ে আসি। এ কথা শুনে আমি সাথে সাথে না করে দেই,কারণ যেহেতু অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল এখন চা খেতে যাওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়।
এদিকে আমি বাদে অন্য পাঁচজন তারা সকলেই রাজি হ্যাঁ আমরা সকলেই চা খেতে যাব। এখন আমি দেখলাম যে আমি বাদে তারা পাঁচজন যেহেতু রাজি হয়ে গিয়েছে আর আমি যদি যেতে না চাই তারা হয়তো বা মন খারাপ করবে। তারা যেন মন খারাপ না করে তাদের কথা রাখার জন্যই আমিও রাজি হয়ে গেলাম যেহেতু রাত হয়ে গিয়েছে আর একটু রাতেই বাসায় ফিরব সমস্যা নেই। এরপরে আবার আমরা বাইক নিয়ে পাশের গ্রামের বাজারে চলে যাই যদিও পাশের গ্রামের বাজারে যেতে আমাদেরকে ছয় থেকে সাত কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে। সাথে বাইক থাকার কারণে তেমন একটা বেশি সময় লাগেনি।
এরপরে পাশের দোকানের বাজারে গিয়ে যখন আমরা পৌঁছায় তখন প্রায় রাত্রি একটা বাজে কিন্তু রীতিমতো আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলাম যে একটার সময়ও চায়ের দোকান খোলা রয়েছে। আরো বেশি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম এত রাত্রে চায়ের দোকানে প্রায় অনেক মানুষ এখানে তারা বসে বসে চা খাচ্ছে আর টিভিতে গান শুনছে। আমি আমার ফুফাতো ভাইয়ের কাছে জিজ্ঞেস করলাম এখানে এত রাত অব্দি মানুষ থাকে...?? আমার ফুফাতো ভাই বলল এখানে রাত দুটো থেকে তিনটে পর্যন্ত মানুষ থাকে যার কারণেই তো এখানে আসলাম চা খেতে।
এরপরে আমরা ছয় কাপ চা অর্ডার করে সেখানে বসে থাকলাম কিছুক্ষণের মধ্যেই দোকানি এসে চা দিয়ে গেল। আমি আপনাদেরকে কি দিয়ে বোঝাই আসলে চাটা এত বেশি সুস্বাদু ছিল বলার বাহিরে। রং চা যে কেউ এত সুস্বাদু করে তৈরি করতে পারে সেটা জানা ছিল না এর আগে কখনোই এরকম চা খাওয়া হয়নি যদিও অন্যান্য দোকানের থেকে এখানকার চায়ের দাম একটু বেশি তাতে কিবা আসে যায়..!!
এরপরে ঘটে গেল আর এক কাহিনী, চায়ের বিল দেওয়া নিয়ে মারামারি। এ বলে আমি বিল দিব সে বলে সে বিল দেবে। আর এদিকে আমি নাছোড়বান্দা আমি তো সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি আমি ছাড়া কাউকে বিল দিতে দিব না। যদিও শেষ পর্যন্ত অনেক তর্ক বিতর্ক করে বিলটা আমি দিয়েছিলাম। ততক্ষণে প্রায় রাত্রি দেড়টা বেজে গিয়েছে। চা খাওয়া শেষে বললাম এবার আর কোন কথা নাই সোজা বাসায় যেতে হবে। এরপর সকলেই আমার কথামতো সম্মতি দিয়ে বল ঠিক আছে আমরা এখন বাসায় চলে যাব সমস্যা নেই। এরপর সেখান থেকে বাইক নিয়ে রওনা হলাম বাসার উদ্দেশ্যে বাসা সেখান থেকে প্রায় ৮ থেকে ৯ কিলোমিটার। সাথে বাইক থাকার কারণে আসতে তেমন একটা বেশি সময় লাগে নি। আমার ফুফুদের বাসার পাশে ছোট্ট একটা প্রাইমারি স্কুল আছে যখন আমরা প্রাইমারি সামনে এসে পৌছালাম তখন সকলে বলল এখানে আর কিছুক্ষণ বসে গল্প করি যেহেতু বাসার সামনেই চলে এসেছি।
এরপরে আমি ভাবলাম যেহেতু বাসার সামনে চলে এসেছি সেহেতু এখানে বসে কিছুক্ষণ গল্প করতে তো দ্বিধা নেই যেহেতু সুন্নতে খাতনার অনুষ্ঠান আর এখানে অনেক রাত অব্দি মানুষ কথাবার্তা বলবে এটাই স্বাভাবিক। এদিকে আমার আব্বু আমাকে আরো দুবার ফোন দিয়ে হয়তো বা ঘুমিয়ে গিয়েছে যার কারণে অনেক রাত হয়ে যাবার পরেও আর আমার ফোনে তেমন একটা ফোন আসেনি আমিও টেনশন ফ্রি ছিলাম। এরপরে যখন রাত্রি দুটো ১৫ প্লাস সময় হয়ে গিয়েছিল তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমরা বাসায় যাব। কিন্তু বাসায় গিয়ে যে আমরা এরকম একটা বিপদের সম্মুখীন হব সেটা কোনভাবেই বুঝতে পারিনি।
বাসায় গিয়ে দেখি যে পুরা বাসার লাইট অফ হয়ে গিয়েছে এবং বাসার গেট অফ করে দিয়েছে। রীতিমতো অবাক হয়ে গিয়েছিলাম এবং একে অপরকে ফাজলামি করি বলাবলি করেছিলাম কি ব্যাপার বাসায় কি ডাকাত পড়েছে নাকি যার কারণে সবকিছু এরকম স্তব্ধ হয়ে আছে। পাশে থাকা একজন বলছে ঠিক আছে তাহলে আমরা এই ডাকাত সেজে গিয়ে কিছু চুরি করে নিয়ে আসি হাহাহা।
এরপরে বাসার গেটের সামনে গিয়ে অনেকবার কলিং বেল বাজিয়েও অনেক রকম ভাবে ধাক্কাধাক্কি করার পরেও কেউ গেট খুলতে আসেনি। চাইলেই আমরা কাউকে ফোন দিতে পারতাম কিন্তু এত রাত অব্দি আমরা বাহিরে আছি এটা কাউকে জানাতে চাইনি যার কারণে কাউকে আমরা ফোন দেই নি।
এরপরে আমার ফুফাতো ভাই বলল আমার রুমে গেটের চাবি আছে কিন্তু গেটের উপর দিয়ে আমাকে নিচে নামতে হবে। এরপরে আমি বললাম আমরা সবাই গেটের উপর দিয়ে নিচে নামতে পারব কিন্তু বাইকগুলো ভেতরে রাখতে হবে যার কারণে গেটের চাবি লাগবেই। এরপরে আমার ফুফাতো ভাই বলল ঠিক আছে তাহলে তোরা এখানে দাঁড়া আমি গেটের উপর দিয়ে গিয়ে আমার রুম থেকে চাবি নিয়ে আসি। এরপরে আমার ভয় হচ্ছিল গেটের উপর দিয়ে যাওয়ার পরে যদি আবার পরে হাত-পা ভেঙে যায় তাহলে এটা হবে বড় একটা বিপদ।
আমি তাকে নিষেধ করলাম তারপরও সে নিষেধ না মেনে গেটের উপরে উঠে লাফ দিয়ে প্রাচীরের ওপাশে পড়ে নিজের রুমে গিয়ে চাবি নিয়ে চলে আসলো আমরা সকলেই তো এক মহাখুশি। যখন আমরা বাইকগুলো ভেতরে রাখলাম তখন প্রায় রাত্রি সাড়ে তিনটা বেজে গিয়েছে। এখন আমরা ঘুমাবো কোথায়...?? পড়ে গেলাম আর একটা মহাবিপদে...!!বাসায় যেহেতু অনেক মানুষ ছিলো তাই যে যার মতো রুম দক্ষল করে ঘুমিয়ে গিয়েছে।
এটাই ছিল আমার দ্বিতীয় পর্ব। যদিও আমি দ্বিতীয় পর্বে এই গল্পটা শেষ করতে চেয়েছিলাম কিন্তু। এখনো আরো একটা কাহিনী বাকি আছে আর যে কাহিনী লিখতে গেলে পোস্ট অনেক বেশি বড় হয়ে যাবে। আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি। সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে....!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
বিভাগ | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
বিষয় | কষ্ট হলেও সেই রাতে আনন্দ ছিল //পর্ব--দ্বিতীয় |
পোস্ট এর কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
বাহ্ ভাই সবাই মিলে তো সেই রাতে বেশ মজা করেছেন। তবে সেই রাতে চা খেতে যাওয়ায় রাজি হয়ে বেশ ভালোই করেছিলেন ভাই। কারণ সবাই যেখানে রাজি থাকে সেখানে নিজে কিছুটা অরাজি থাকলেও রাজি হয়ে যায় ভালো। সুন্দর একটি পোস্ট বিস্তারিতভাবে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আগামী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
একদম সত্য কথা বলেছেন সবাই যেখানে রাজি সেখানে নিজে যদি অরাজি থাকি তাহলে নিজের জন্য অনেকেই কষ্ট পাবে। আরে এ কথা ভেবেই সেদিন গিয়েছিলাম অনেকটাই মজা হয়েছিল। মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
অনেকদিন পরে প্রিয় মানুষের সাথে দেখা হলে সময়টা দারুন কাটে। আপনার ফুফাতো ভাইদের সাথে আপনি স্কুল মাঠে আড্ডা দিয়েছেন অনেক সুন্দর একটি মুহূর্ত পার করেছেন। আপনার গল্পটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো। আশা করি এ ধরনের গল্প আপনার থেকে মাঝে মাঝেই আমরা পাব। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
সেদিন স্কুলের ফিল্ডে সত্যিই অনেক রাত অব্দি আড্ডা দিয়েছিলাম ভীষণ ভালো লেগেছিল এরকম মুহূর্ত বারবার কাটাতে মন চায়। কিন্তু সময়ের অভাবে হয়ে ওঠে না। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।