কষ্ট হলেও সেই রাতে আনন্দ ছিল //পর্ব--প্রথম

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago

আজ - ২৩ কার্তিক | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | বুধবার | হেমন্তকাল |



আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।


আজ আমি আপনাদের মাঝে একটা জেনারেল রাইটিং পোস্ট টা শেয়ার করব। পোস্টটাতে কোন এক রাত্রের গল্প আমি আপনাদের মাঝে তুলে ধরার। সেদিনের সেই রাতটা আসলেই স্মৃতি হয়ে থাকবে। আশা করছি এই গল্পটা আপনাদের সবার ভালো লাগবে।



  • প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
  • কষ্ট হলেও সেই রাতে আনন্দ ছিল
  • আজ ২৩ কার্তিক, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  • বুধবার


তো চলুন শুরু করা যাক...!


শুভ সকাল সবাইকে......!!


বেশ কিছুদিন আগে গিয়েছিলাম ফুফাতো ভাইয়ের ছেলের সুন্নতে খাতনার অনুষ্ঠানে। যদিও এ সকল অনুষ্ঠানে আমি তেমন একটা যাই না সত্যি বলতে আমি কারো বাসাতেই তেমন একটা যেতে পছন্দ করিনা। এই যে আমি আত্মীয়দের বাসায় তেমন একটা যাই না এ নিয়ে আত্মীয়দের এক আকাশ সমান অভিমান আমার উপরে বিশেষ করে আমার খালা এবং ফুফুদের। আমার উপরে এক আকাশ সমান অভিমান করে কোন লাভ নেই কারণ ছোটবেলা থেকে এটাই আমার অভ্যাস কারো বাসায় খুব একটা যেতে ইচ্ছে হয় না। যদিও বা কারো বাসায় যাই তাহলে সকালে যাই সন্ধ্যার আগেই বাসায় ফিরে আসি এটা নিয়ে তাদেরও অনেক মন খারাপ হয় আমি জানি। হঠাৎ করেই বাসায় এসে দাওয়াত পড়ে গিয়েছিল ফুফুদের বাসায় যেহেতু বাসায় এসেছি সেহেতু অবশ্যই আমাকে যেতে হবে কিছু করার নেই। তাই ফুফাতো ভাইয়ের ছেলের সুন্নতে খাতনার অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলাম।

যেহেতু প্রায় চার থেকে পাঁচ বছর পরে ফুপুদের বাসায় গিয়েছি আমাকে দেখে সবাই চারিদিক থেকে ঘিরে ধরেছে। অনেকেই এসে বলছে কত বড় হয়ে গিয়েছি, আবার অনেকেই বলছে তোমার তো দেখছি মুখে দাড়ি গজিয়ে গিয়েছে শেষবার যখন তোমাকে দেখেছি তখন তো দাড়ি ছিল না। আমি আবার একটু বড় বড় চুল রাখি যার কারণে অনেকেই বলছে এত বড় বড় চুল রাখো কেন..!! নানান সব প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছিলাম। কিন্তু হাসিমুখে সবার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাচ্ছিলাম একটুও বিরক্তবোধ হয়নি। ফুফাতো ভাই মোট চারটা এর মধ্যে তিনজন বিয়ে করেছে আর একজন এখন পর্যন্ত বিয়ে করেনি সে আমার থেকে দুই বছরের বড়। ছোটবেলা যখন ওদের বাসায় যেতাম তখন আমার এই ফুপাতো ভাইয়ের সঙ্গে আমার দিনরাত আড্ডাবাজি চলত। সে তো আমাকে দেখেই এক মহা খুশি।

এবার আসলো ভাবিদের পালা, এক এক ভাবি এক এক দিক থেকে এসে অনেক রকম ভাবেই ফাজলামি করছে আমার সঙ্গে। কেউ কেউ এসে বলছে প্রেম ভালোবাসা করি নাকি কেউ কেউ এসে বলছে তার বোনের সাথে ধরে বিয়ে দিয়ে দেবে। অনেক রকম ফাজলামি রং তামাশায় চলছিল আমাকে নিয়ে। যখন একটু বিরক্তবোধ হচ্ছিলাম ঠিক তখনই আমার সেই ফুফাতো ভাই আমাকে টান দিয়ে সেখান থেকে নিয়ে চলে যায়, দীর্ঘ এক নিঃশ্বাস ছেড়ে বললাম বাঁচলাম তাদের অত্যাচার থেকে।

bbq-36427_1280.webp

source

এরপরে সন্ধ্যে হয়ে যায় আমি আমার ফুফাতো ভাই সহ আরো দুই থেকে তিনজন তিনটা বাইক নিয়ে বের হয়ে পড়ি ঘোরাঘুরির উদ্দেশ্যে। যখন আমরা বাইক নিয়ে ঘোরাঘুরির উদ্দেশ্যে বের হয় তখন মাগরিবের আজান হচ্ছিল ভেবেছিলাম বাজারে গিয়ে একটু ঘুরাঘুরি করেই চলে আসবে। কিন্তু হঠাৎ করে এই মন স্থির হল অনেক দূরে একটা পার্ক আছে পার্ক নাকি অনেক সুন্দর যদিও সেখানে যাওয়া হয়নি সেখানে যেতে ইচ্ছে হলো। আমার ফুফুদের বাসা থেকে সেটা ২০ থেকে ২৫ কিলো দূরে হবে। আমি বললাম অত দূরে যাওয়ার দরকার নেই কিন্তু আমার ফুফাতো ভাই বলল অনেকদিন পর তুই এসেছিস চল তোকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসি। আমি বললাম, যেতে যেতে অনেক রাত হয়ে যাবে ততক্ষণে তো পার্ক বন্ধ হয়ে যাবে। আমার ফুফাতো ভাই বলল পার্ক নাকি সারারাত খোলা থাকে। তখন আমি বললাম ঠিক আছে তাহলে যাওয়া যাক। তিনটে বাইক নিয়ে রওনা হয়ে পড়লাম।

কিন্তু আফসোস আমরা যখন সেখানে গিয়ে পৌছালাম তখন গিয়ে দেখলাম সেই পার্ক বন্ধ সেদিন নাকি তাদের অফ ডে।অনেকটাই দুঃখ কষ্ট নিয়ে সেখান থেকে আবার বের হয়ে চলে আসলাম। মনটা অনেক বেশি খারাপ হয়ে গেল আমি এই বাইকের পিছে বসে নিশ্চুপ হয়েছিলাম কিছু বলার ছিল না। এত কষ্ট করে এত দূর পর্যন্ত এসে যদি পার্ক বন্ধ দেখি তাহলে খারাপ লাগাটাই স্বাভাবিক। এরপরে আমি অনেকটাই রাগান্বিত হয়ে তাকে বললাম যে এত রাত্রে কখনো পার্ক খোলা থাকে না আমি আগেই এ কথা তোকে বলেছিলাম কিন্তু তুই তো আমার কথা শুনলি না। সে কোন কথা না বলে শুধু একটা কথাই বারবার বলছিল যে তুই মাথা ঠান্ডা কর সমস্যা নেই আমরা অন্য কোথাও গিয়ে বসবো।

যাইহোক কিছু করার নেই এবার আমি তাকে বললাম আর কোথাও যাবো না সোজা বাসায় যাব। যথারীতি আর কোথাও না গিয়ে আমরা স্কুলের এক ফিল্ডে গিয়ে বসি সেখান থেকে আমার ফুফুরদের বাসা হয়তোবা চার থেকে পাঁচ কিলো দূরে। স্কুলের সেই ফিল্ডে বসে আমরা অনেক রকম গল্প করছিলাম যেহেতু অনেকদিন পরে সবার সঙ্গে দেখা বুঝতেই পারছেন কতটা সুন্দর ছিল সেই মুহূর্তটা।

friends-4187953_1280.webp

source

আমরা যখন স্কুলের ফিল্ডে বসে ছিলাম তখন রাত্রি প্রায় বেজে গিয়েছিল সাড়ে নটা। কিন্তু আমাদের কারোরই ঘড়ির দিকে তাকানোর সময় ছিল না আমরা এতটাই গল্পে মোজে গিয়েছিলাম। অনেকেই অনেক রকম গল্প বললো ছোটবেলায় কে কি করত আমি তাদের সঙ্গে কেমন করতাম মানে ছোটবেলায় যা যা হতো আর কি এসব ব্যাপারে আমরা একে অপরের সঙ্গে গল্প করছিলাম আর হাসাহাসি করছিলাম। এরপরে আমি দোকানে গিয়ে চিপস কিনে নিয়ে এসেছিলাম বসে বসে চিপস খাচ্ছিলাম আর গল্প করছিলাম বেশ ভালই লাগছিল। এরপরে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি প্রায় সাড়ে বারোটা মত বাজে।

এবার আমি তাদের বললাম ঠিক আছে, আমরা এখন তাহলে বাড়ি যাই অনেক রাত হয়ে গিয়েছে বাসায় হয়তোবা সবাই ঘুমিয়ে পড়বে। কিন্তু আমার ফুফাতো ভাই নাসর বান্দা সে বলে আরেকটু সময় গল্প করে তারপরে যাব। আমি আর খুব একটা বেশি চাপ দিচ্ছিলাম না কারণ গল্প করতে আমারও বেশ ভালই লাগছিল। অনেকদিন পরে এরকম একটা মুহূর্ত পেয়েছি সহজেই শেষ হতে দেওয়া যাবে না। আবার যে যার মত গল্প করায় ব্যস্ত হয়ে পড়ল.....!!!

চলবে....??



সমাপ্ত


আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা

বিবরণ
বিভাগজেনারেল রাইটিং
বিষয়কষ্ট হলেও সেই রাতে আনন্দ ছিল //পর্ব--প্রথম
পোস্ট এর কারিগর@jibon47
অবস্থান[সংযুক্তি]source

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 10 months ago 

সত্য কথা বলতে কি সব আত্মীয়-স্বজন যখন একসাথে হয় তখন আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। তবে আপনার আনন্দের আরেকটা কারণ আছে সেটা আর এখন এখানে বলবো না। সুন্দর লিখেছেন ফুফাতো ভাইয়ের ছেলের সুন্নতে খাতনা উপলক্ষে। ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপহার দেওয়ার জন্য।

 10 months ago 

আপনি ঠিকই ধরেছেন, আনন্দের আরেকটা কারণ ছিল তবে এসেই কারণটাকে আমি খুব একটা বেশি পাত্তা দেয়নি। সে বরাবরই আমার থেকে অনেকটা দূরে থেকেছে হাহাহা। মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 53955.17
ETH 2265.61
USDT 1.00
SBD 2.34