ক্ষণিকের আনন্দ হতে পারে সারাজীবনের কান্না//পর্ব:-০২
আজ--২৬ মাঘ | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার | শীতকাল|
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- ক্ষণিকের আনন্দ হতে পারে সারাজীবনের কান্না
- আজ-২৬শ মাঘ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
- শুক্রবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ বিকেল সবাইকে......!!
গত পর্বে আমি আপনাদেরকে জানিয়েছিলাম যে, আমার সেই দূর সম্পর্কের খালাতো ভাই সেই পরিবারের কথা অমান্য করে তার ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যদিও তার এই বিয়ের ব্যাপারে পরিবার সহ আত্মীয়-স্বজনের কেউই খুব একটা রাজ্য ছিল না প্রায় সকলেই না সুযোগ মন্তব্য করেছিল তার এই বিয়ে নিয়ে। সকলের কথা অমান্য করে অবশেষে তাদের বিয়ের কথা ফাইনাল করা হয়। যেহেতু সে বিয়ে করবে তাই আর পরিবারের কেউ তাকে আর বাধা দেয়নি পারিবারিকভাবেই তাদের বিয়েটা সম্পন্ন হয়েছিল সেই বিয়েতে আমি ঢাকা থেকে বাসায় গিয়েছিলাম যদিও যাওয়ার খুব একটা বেশি ইচ্ছা ছিল না কিন্তু খালাতো ভাইয়ের জোড়াজড়িতে আর ঢাকায় থাকতে পারিনি। বিয়ের দিন প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছিল যদিও তার শ্বশুরবাড়ি তার বাসা থেকে খুব একটা বেশি দূরে নয় তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে হেঁটে হেঁটে ই আমরা বউ নিয়ে আসতে যাব। সত্যি বলতে এই জীবনে প্রথমবার কারো বউ নিতে গিয়েছিলাম সেটাও আবার পায়ে হেঁটে এই ব্যাপারটা আমার কাছে একদমই অন্যরকম লেগেছে। আপনারা হয়তোবা এরকম কেউ পায়ে হেঁটে অন্যের বউ নিয়ে আসতে গিয়েছেন কিনা সেটা আমার জানা নেই তবে যারা গিয়েছেন একমাত্র তারাই বুঝতে পারবেন যে ব্যাপারটা কেমন। যদিও সেদিন প্রচন্ড বৃষ্টি ছিল, যার কারণে রাস্তায় অনেক কাদা ছিল মাঝে মাঝে আমরা জুতা খুলে হাতে নিয়েও হেটেছিলাম হাহাহা।
যেহেতু বিয়েটা এলাকার মধ্যেই আর এলাকার অনেকেই আমার খুব ভালোভাবেই চেনে। যার কারণে বিয়ে বাড়িতে পৌঁছানোর পরেই নতুন মুখ দেখেছে খুব কমই সবই পরিচিত মুখ। যদিও সবাই পরিচিত তারপরও সেদিন কেন জানেন সবাইকে একটু অন্যরকম অপরিচিত বলে মনে হচ্ছিল এরপরে অনেকেই এসে কুশলা দিয়ে বিনিময় করল এবং আমি গিয়েছি এটা জেনে তারা খুশি হল বটে। সব থেকে অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে যে, আমার খালাতো ভাইয়ের একটা দুলাভাই আছে যদিও তার কেমন দুলাভাই সেটা আমি জানি না তার সঙ্গে এর আগে কখনো পরিচয় হয়নি। এই প্রথমবার তার সঙ্গে পরিচয় তবে অল্প সময়ের মধ্যেই পরিচয়টা অনেক গভীর হয়ে গিয়েছিল। মজার ব্যাপারটা হচ্ছে যে বৃষ্টিতে রাস্তা পিচ্ছিল হয়েছিল আর আমার সেই খালাতো ভাইয়ের দুলাভাই রাস্তা পিচ্ছিল থাকার কারণে ধপাস করে উল্টে পড়ে গিয়েছিল হা হা হা। যদিও আমি তাকে টেনে তুলেছিলাম তার পরেও বিয়ে বাড়ির সকলেই সেকি হাসি। হাসতে হাসতে এক এক জন অন্যের গায়ের উপর উল্টে উল্টে পড়ছে। যদিও আমি তার সামনে আসিনি তবে একা একা অনেক বেশি হেসেছিলাম।
যাইহোক নতুন বর গেলে যে নিয়ম নীতি থাকে সেগুলো তারা পালন করল যথারীতি আমি আমার খালাতো ভাইয়ের পাশেই ছিলাম সব সময়। খালাতো ভাইয়ের যারা শালিকা হবে তারা আসলো ফাইজলামি ঠাট্টা হাসি তামাশা সবই হচ্ছে। মনে, মনেই হচ্ছে না যে এটা কোন প্রেমের বিয়ে মনে হচ্ছে যে এটা পারিবারিকভাবেই তাদের বিয়ে দিচ্ছে আমার কাছে ব্যাপারটা ঠিক এমনই লেগেছে। সেদিন আরো অনেক ঘটনা ঘটে গিয়েছিল সেগুলো আর না বলি তবে সবথেকে মজার বিষয় ছিল ওটাই যেটা আমি আপনাদেরকে একটু আগে বললাম খালাতো ভাইয়ের দুলাভাই এর কাহিনী এ ব্যাপারটা আমার মনে থাকবে সারা জীবন। যথারীতি তাদের বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়ে গেল এখন কন্যা বিদায়ের পালা।
প্রথমে আমি ভেবেছিলাম যেহেতু তারা রিলেশন করে বিয়ে করছে তাই হয়তো বা কন্যা খুব একটা বেশি কান্নাকাটি করবে না তবে আমাকে রীতিমতো অবাক করে দিয়ে মেয়েটা সে কি যে কান্না। যদিও তার কান্না দেখে আমার খুব একটা খারাপ লাগছিল না বেশ ভালই লাগছিল। আর আমি আমার খালাতো ভাইয়ের কাছে গিয়ে চুপি চুপি বলছিলাম যে তোর বউ তো ভালোভাবে কান্নাও করতে পারে না হা হা হা। যাই হোক এ কথা শুনে সে আমার সঙ্গে এক হলে হেসে দিয়েছিল। যেহেতু নতুন বউ তাকে তো আর পায়ে হেঁটে বাসায় নিয়ে আসা যায় না যদিও ততক্ষণে বৃষ্টিটা অনেকটাই থেমে গিয়েছে তবে আস্তে আস্তে বৃষ্টি পড়ছে। এরপরে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে হেঁটে যেতে আমাদের সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিট সময় লাগবে মেয়েটাকে আমরা না হাটিয়ে একটা সিএনজি ভাড়া করে নিয়ে আসলাম। যদিও অনেকেই বলছিল যে হেঁটে হেঁটে যাওয়া যাক কিন্তু আমার জোড়াজড়িতে একটা সিএনজি নিয়ে এসেছিলাম। বর আর বউ সিএনজির মধ্যে উঠে বাসায় এসেছিল আর আমরা সাথে যারা গিয়েছিলাম সকলেই পায়ে হেঁটে আবার খালাদের বাসায় চলে আসলাম।
সত্যি বলতে নতুন এক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলাম সেদিন এরকম অভিজ্ঞতা আমার এর আগে কখনোই হয়নি। বাপ চাচাদের মুখে শুনেছিলাম যে আগেকার দিনে বিয়ে গুলো নাকি এরকম হত যে বর ঘোড়ায় চরে যেতো আর বাকিরা সবাই পায়ে হেঁটে হেঁটে তার পিছু পিছু যেতো। যদিও আমাদের এখানে ঘোড়া নেই কিন্তু আমরা পায়ে হেঁটে হেঁটেই বউ নিয়ে আসতে গিয়েছিলাম। এ সময়ে এসে এরকম এক নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পেরে নিজের কাছে অনেক বেশি ভালো লাগছিল। অনেক এনজয় করেছিলাম সেদিন যেহেতু নতুন অভিজ্ঞতা বুঝতেই পারছেন এনজয়ের প্রাধান্যটা অনেক বেশি দিয়েছিলাম। বেশ ভালোই চলছিল তাদের সংসার। এদিকে খালাতো ভাই বিয়ে করে বউকে বাসায় রেখে আবার চাকরিতে চলে যায় সে চাকরি করতো শেরপুর। এদিকে খালা আমাদের বাসায় মাঝে মাঝে আসে আমি খালাকে জিজ্ঞেস করি যে বৌমা কেমন..?? খানা যথারীতি তার বৌমার প্রশংসাই করে এটা শুনে আমার কাছেও বেশ ভালো লাগে।
এভাবেই চলে যায় প্রায় চার থেকে পাঁচ মাস। যথারীতি তাদের সংসার চলছে বেশ ভালোই এদিকে শুনলাম যে খালাতো ভাই নাকি তার বউকে বাসায় নিয়ে। এটা শুনে খুশি হয়েছিলাম ভেবেছিলাম যে ভালোবেসে তারা বিয়ে করেছে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে থাকুক কিন্তু দিন শেষে তারা ভালো থাকুক এটাই চেয়েছিলাম। যদিও আমাদের সম্পর্কটা দূর সম্পর্কের তবে আমাদের চলাফেরা কথাবার্তা দেখে কেউ সেটা বুঝতে পারবে না সব সময় মনে হবে যে আমরা হয়তোবা আপন খালাতো ভাই যার কারণে সব রকম খোঁজ খবর রাখতাম। হঠাৎ একদিন আমার আম্মু ফোন দিয়ে বলল যে ওদের মধ্যে তো ঝামেলা হয়েছে মেয়েটা বাসা থেকে চলে এসেছে আমি বললাম এটা এখন কোথায় আমি বলল যে ওর মায়ের বাড়ি। আমি ভেবেছিলাম যে সংসার করতে গেলে স্বামী স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া মান-অভিমান এসব হবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু তাদের মান অভিমানটা যে এত দূর পর্যন্ত অতিক্রম করবে সেটা ভাবিনি। অবশেষে জানতে পারলাম যে মেয়েটা নাকি আর একসাথে থাকবে না সে আলাদা হতে চায়..!! এটা শুনে আমি রীতিমতো হতাশ হয়ে ছিলাম..!!!
এটা শুনে কে হতাশ হবে না আপনারাই বলুন। এত এত প্রেম এত ভালবাসা হঠাৎ করেই নিঃশেষ হয়ে যাবে এটা কি কখনো মানা যায়..?? এটা শোনার পরে মনটা কিছুদিন খুবই খারাপ ছিল, বিশেষ করে আমার খালাতো ভাইয়ের জন্য অনেক বেশি খারাপ লাগছিল আমার। এটাই ছিল আমার আজকের দ্বিতীয় পর্ব আশা করছি এই দ্বিতীয় পর্বটি আপনাদের সকলের কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। খুব শীঘ্রই আমি আপনাদের মাঝে পরবর্তী পর্ব নিয়ে হাজির হবে। সকলে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে...!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
বিভাগ | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
বিষয় | ক্ষণিকের আনন্দ হতে পারে সারাজীবনের কান্না//পর্ব:-০২ |
পোস্ট এর কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নেম @jibon47। আমি মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আব্বু আম্মু আর ছোট বোনকে নিয়েই আমার পরিবার। এই তিনজন মানুষকে কেন্দ্র করেই আমার পৃথিবী।একসাথে সবাইকে খুশি করা তো সম্ভব নয়, তারপরও আমি চেষ্টা করি পরিবারের সবাইকে খুশি রাখার। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে।আমি বর্তমানে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং লেখাপড়া করছি। আমি গান গাইতে, কবিতা লিখতে, এবং ভাই ব্রাদারের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। সত্যি বলতে আমি প্রচন্ড রকমের অভিমানী, হতে পারে এটা আমার একটা বদ অভ্যাস। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব,"আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি।
@jibon47
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আপনার গল্পের প্রথম পর্বটা আমি পড়েছিলাম। সত্যি আগের দিনে মানুষ পায়ে হেঁটে বিয়ে করতে যেত কিন্তু এখন দেখছি আপনারা পায়ে হেঁটে গিয়েছিলেন। আসলে ভাইয়া সত্যিকারের ভালোবাসা কখনো কাউকে ছেড়ে যায়না মৃত্যু ছাড়া।যাইহোক আপনার খালাত ভাইয়ের দুলা ভাইয়ের কাহিনিটা অনেক মজার ছিল। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়।
গল্পের প্রথম পর্ব টা আমার পড়া হয়নি। কল্পের দ্বিতীয় পর্ব টা পড়ে আমার কাছে খুবই ভালো লাগলো। আসলে আগেকার দিনের বিয়ে এভাবেই হতো। মানুষ পায়ে হেঁটে বিয়ে করতে যেত। এখন সেই দৃশ্য দেখা যায় না। যদি সত্যিকারের ভালোবাসা হয়ে থাকে তাহলে সে ভালোবাসা কখনোই একে অপরকে ছেড়ে দেয় না। গল্পের পরবর্তী অংশের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
খালাতে ভাইয়ের বিয়ে তো মনে রাখার মতে বিয়ে হয়েছে। হেঁটে বউ আনতে যাওয়া এবং এক দুলাভাই গাদায় ধপাস করে পড়ে যাওয়া বেশ মজার ছিলো।অবশেষে ভালোবাসার পরিনত পেয়েছি এখন সেই ভালোবাসার বিচ্ছেদ করতে চায় জেনে খুব খারাপ লাগছে।আসলে মানুষের মন কখন কি ভাবে কি রুপ নেয় তা বোঝা বড়ো দায়।পরবর্তী পোস্টে বিস্তারিত জানার অপেক্ষায় রইলাম।
প্রেম করে বিয়ে করার আসলে অনেক গল্প থাকে, সেটা অনেকের লাইফেই হয়। আর পায়ে হেঁটে বিয়ে বাড়ি যাওয়ার যে ঘটনাটা, এটা আমার সাথে ঘটেছে। আমি একবার গ্রামে গিয়ে আমার এক কাকুর বিয়েতে গিয়েছিলাম, সেখানেও মেয়ের বাড়ি ছিল আমার কাকুর বাড়ি থেকে দশ মিনিট পায়ে হেঁটে যাওয়ার রাস্তা। যাই হোক, বিয়েটা তো ঠিকঠাক সম্পন্ন হল, এরপর পাঁচ মাস যেতে না যেতেই আবার মেয়ে নাকি ওই ছেলের সাথে থাকতে চায় না! আমার কথা হল যে, যদি থাকতেই না চায় তাহলে এত ঝামেলা করে বিয়ে করার কি দরকার ছিল? ছোটখাটো সমস্যা তো সব পরিবারেই হয়। এখন দেখা যাক পরবর্তী পর্বে আপনি কি ইনফরমেশন দেন আমাদের। সেই পর্যন্ত অপেক্ষায় রইলাম।