জীবিকা নির্বাহের প্রচেষ্টা||২৭ ই ভাদ্র ১৪২৮||[ ১০% বিনিফিসিয়ারি"লাজুক খ্যাঁক"এর ]

"আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির সকল সদস্যকে আমার পক্ষ থেকে আসসালামু আলাইকুম।আমি @jahidshikder এই কমিউনিটিতে একজন নতুন সদস্য। এই কমিউনিটিতে স্থায়ী সদস্য হওয়ার জন্য যেই নিয়ম কানুন ছিলো সেই জন্য আমার পরিচয়মূলক একটি পোস্ট এই গ্রুপে করা হয়েছে।

পরিচয়মূলক পোস্ট টি ব্যতীত আনুষ্ঠানিক ভাবে আজকে আমার প্রথম পোস্ট।এই পোস্টি টির নাম দিয়েছি আমি "জীবিকা নির্বাহের প্রচেষ্টা"।

তাহলে শুরু করা যাক,

চিত্রশিল্পীঃ

IMG_20210910_181440.jpg

দেয়ালে দেয়ালে ছবি অঙ্কন আমাদের সর্বদাই চোখে পড়ে।কিছু সময় এমন ও হই, আমরা অদ্ভুত দৃষ্টিতে শুধু তাকিয়ে তাদের অঙ্কন করা চিত্র গুলো দেখি,তাদের অঙ্কন করা লেখা গুলো পড়ি।এরা এত সুন্দর করে চিত্রগুলো ফুটিয়ে তুলে কেন জানি মনে হই তারা তাদের সবটুকু দিয়ে এই চিত্র গুলো একেছে।

এদের চিত্রশিল্পী বললে খুব বেশী দোষের কিছু হবে নাকি তা আমার জানা নেই।তারা তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য খুব সুন্দর একটি পথ বেছে নিয়েছে।নিরলস পরিশ্রম করে তারা তাদের শ্রম দিয়ে যাচ্ছে।আমি জানি না তারা কত টাকা আয় করে, আমার এটিও জানা নেই তারা কি কাজ খুজে বেড়ায় নাকি তাদের দিয়ে কাজ করানোর জন্য মানুষ তাদের খুজে বেড়ায়।কিন্তু তবুও তাদের জন্য আমার পক্ষ থেকে শুভকামনা রইলো যেনো তারা এই ভাবেই তাদের শ্রম দিয়ে যায় এবং তাদের বেচে থাকার জন্য জীবিকা নির্বাহ করে।

মুচিঃ

IMG_20210910_175829.jpg

জীবন যুদ্ধে হার না মেনে নিরলস ভাবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করা এক যোদ্ধার নাম 'মুচি'।
আমরা সবাই হাজার হাজার টাকার বিনিময়ে জুতার শো-রুম থেকে জুতা কিনতে পারি।জুতা কেনার সময় বিল এর কাগজে কত টাকা জুতা কোম্পানি ভ্যাট রাখলো সেটিও দেখার সময় হই না মাঝে মাঝে।কিন্তু জখনই সেই দামি জুতা ছিড়ে যায়,কালি করার প্রয়োজন হই তখন ই ছুটতে থাকি এই মুচি র কাছে।জখম মুচি বলে আপনার জুতা কালি করার জন্য ৫০ টাকার প্রয়োজন তখন ই আমরা তাদের সাথে চিল্লা-চিল্লি শুরু করে দেয় এবং টাকা কম দেওয়ার জন্য চেষ্টা করি।অনেকটা বাধ্য করে আমরা অর্ধেক টাকা দিয়ে চলে আসি।একই ঘটনা জুতা ছিড়ে গেলেও হই,যদি তারা ১০০ টাকা চায় আমরা অর্ধেক এর ও কম বলি তারপর হইতো ৬০ টাকা বা ৭০ টাকা জোড় করে তাদের দিয়ে নিজের জুতা নিয়ে চলে আসি।তাই আমাদের সকলের উচিত তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করে,নম্র ভাষায় কথা বলে জুতা র প্রয়োজনীয় কাজ করা।

চুড়ি বিক্রেতাঃ

IMG_20210910_175541.jpg

ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে একজন বয়ষ্ক মহিলা কিছু চুড়ি, মালা ইত্যাদি নিয়ে ফুটঅভার ব্রিজের নিচে বসে ব্যবসা করছেন।জীবন যুদ্ধে ৫০ বছর বয়সের অধিক এক বৃদ্ধা মহিলাকে জীবিকা নির্বাহের জন্য আজ ফুটপাতে চুড়ি, মালা ইত্যাদি বেচা-কেনা করতে হচ্ছে।যা আমাদের সমাজে একটা খারাপ দিক নির্দেশ করে।কেননা নিশ্চয় এই পৃথিবীতে কেউ না কেউ এই বৃদ্ধা মহিলাকে দেখার জন্য থাকার কথা কিন্তু ছেলে-মেয়ে,স্বামী,সহ পাড়া প্রতিবেশী কেউ না কেউ তাকে দেখতে পারতো কিন্তু কেউ দেখে নি তাকে।সরকার এর কাছে হইতো তার কোনো তথ্য নেই, যদি থাকতো তাহলে হইতো তিনি বয়ষ্ক ভাতা পেত অর্থাৎ সরকারের কাছ থেকে ভরন-পোষন পেত।কিন্তু ভাগ্যর নির্মম পরিহাসের কারনে জীবন যুদ্ধে হেরে গিয়েও জীবিকা নির্বাহের জন্য তিনি এই পথ বেছে নেন।

সিগারেট বিক্রেতাঃ

IMG_20210910_175012.jpg

এই ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে একজন বৃদ্ধ বয়ষ্ক পুরুষ তার জীবিকা নির্বাহের জন্য সিগারেট এবং পান বিক্রি করছেন।তা ও একটি অস্থায়ী জায়গায়।যার কোনো নিশ্চয়তা নেই কখন উঠে যেতে হবে জায়গাটি ছেড়ে।মানুষ হেরে যায় না। জীবন জেনো তাকে হাড়তে বাধ্য করে।এই বয়সে মানুষ টির কোথায় ঘরে বসে বিশ্রাম করার কথা, মসজিদে গিয়ে নামায পড়ার কথা,ভালো ভালো খাবার খাওয়ার কথা।কিন্তু জীবন যুদ্ধে মানুষ টি তার নির্মম ভাগ্যকে মেনে নিয়ে অল্প পুজি নিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছেন শুধু তার নিজেকে বাচানো জন্য।কেননা এই টাকা দিয়ে তার নিজের চলতে ই হিমশিম খেতে হই।বৃষ্টি পড়লে হইতো দোকান টির বেচা কেনা বন্ধ হয়ে যায়, ঐ দিন হইতো মানুষ টির না খেয়ে দিন পার করতে হয়।জীবন অনেক কষ্টের সেই তুলনায় আমরা অনেক ভালো আছি আর এটা চায় যে চলার পথে যাদের সাথে দেখা হই তারা সবাই যেনো ভালো থাকে

চা বিক্রেতাঃ

IMG_20210910_175119.jpg

ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে একটি মধ্য বয়ষ্ক মহিলা বসে বসে চা এবং সিগারেট বিক্রি করছে।জীবনে চলার পথে হইতো তিনিও একজন যোদ্ধা। কারন যেই বয়সে মহিলাটির স্বামীর ঘর-সংসার নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা,ছেলে -মেয়েকে টেবিলে বসিয়ে পড়তে বসানোর কথা সেই বয়সে তিনি ফুটপাতে বসে চা,সিগারেট বিক্রি করছে।ভাগ্য মানুষকে যেমন অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে তেমনি আবার রাস্তায় ও নামিয়ে দিতে পারে।এই মধ্য বয়স্ক মহিলা তার প্রমান।জীবিকা নির্বাহের জন্য তিনি চা-সিগারেট বিক্রি করছেন কিন্তু মানুষের কাছে হাত পাতেন নি।নিজের ব্যক্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য তিনি নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

বাদাম বিক্রেতাঃ

IMG_20210910_175058.jpg

সাধারণত যারা এই সমাজে বাদাম,বুট,ছোলা ইত্যাদি বিক্রি করে তারা সাধারনত লুঙি এবং একটি কম দামি শার্ট পরিধান করে থাকে। কিন্তু ছবিটিতে যিনি বাদাম বিক্রি করছেন তাকে দেখা যাচ্ছে জিন্স প্যান্ট ও শার্ট পরিধান অবিস্থায়।অতএব এই থেকে বোঝা যাচ্ছে জীবন যুদ্ধে বেচে থাকার জন্য জীবিকা নির্বাহ করার তাগিদে তাকে আজ বাদাম,বুট বিক্রি করতে হচ্ছে।তার জীবন কাহিনী হইত এমন ও হতে পারে যে,তিনি এখন শিক্ষিত বেকার।পড়াশুনা শেষ করে চাকরি খুজতে খুজতে আজ দিশেহারা হয়ে অথবা ৮-১০ হাজার টাকা বেতনের চাকিরী না করে তিনি এই ব্যবসা করছেন।যা দ্বারা হইতো তিনি তার নিজের ভরন-পোষন এর দায়িত্ব নিজে পালন করছেন।এই পৃথিবীতে অনেক মানুষ এর মধ্য কেউ নিজের জন্য যুদ্ধ করে বেচে থাকার চেষ্টা করে আবার কেউবা অন্যাকে বাচাবার জন্য প্রবল প্রচেষ্টা করে।

আচার বিক্রেতাঃ

IMG_20210910_174954.jpg

একজন আচার বিক্রেতা তার আচারের কৌটা ১০ টাকা এবং ক্ষেত্র বিশেষে ২০ টাকা ও বিক্রি করে।দিন শেষে জদি সে ১০০-১৫০ কৌটা বিক্রি করতে পারে তাহলে সে সর্বনিম্ন ১০০০ টাকা থেকে ৩০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারে।মাস শেষে তার আয় মোটামুটি একটা ভালো পর্যায় ই আসে।কিন্তু এটি ফলের মোসুমের ব্যবসা। আর মোটামুটি কিছু না কিছু ফল বছরের বছরের সব সময় ই পাওয়া যায়।এখন যেমন ফলের আচার বানাচ্ছে তেমনি তরমুজ ফলের মৌসুম এলে তরমুজ কেটে কেটে বেচবে,আনারস কেটে কেটে বেচবে অর্থাৎ বোঝা যাচ্ছে যে,এই আচার বিক্রেতা বছরের প্রায় বেশীরভাগ সময়ই কোনো না কোনো ফল কেটে বা আচার বানিয়ে বিক্রি করতে পারে।জীবিকা নির্বাহের প্রচেষ্টায় তার নিরলস পরিশ্রম যেমন তার জীবিকার জন্য ভূমিকা রাখছে তেমনি তাদের জন্য আমরা ফুটপাত থেকে যেকোনো সময় ফলের স্বাদ গ্রহন ও করতে পারি।

শরবত বিক্রেতাঃ

IMG_20210910_174911.jpg

বছরের শুধু গরমের সময় আমাদের শরবতের খুব প্রয়োজন হই।কারন এই সময়ে প্রখর রোদে যখন আমরা ঘেমে অস্থির হয়ে যায় এবং ক্লান্ত হয়ে পড়ি তখনি একটু শান্তির জন্য ঠান্ডা পানির শরবত খুজি খাওয়ার জন্য।ঠান্ডা পানির শরবত খেলে যেমন অন্তর ঠান্ডা হয়ে যায় তেমনি পিপাসিত হওয়ার ভাবটা ও কমে আসে। ছবিটিতে দেখা শরবত বিক্রি করা লোকটি ৫ টাকার বিনিময়ে লেবুর শরবত ও ১০ টাকার বিনিময়ে লেবু সহ ট্যাংক এর শরবত বিক্রি করে। বছরের গরমের সময়ে লোকটির আয় বেশী হলেও শীতের সময়ে লোকটির আয় নাই বললেই চলে।জীবন যুদ্ধে বেচে থাকার জন্য লোকটি নিরলস ভাবে তার সেবার মাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে তৃষ্ণার্ত ব্যক্তির পিপাসা দূর করছে এবং তার নিজের বেচে থাকার জন্য অর্থ আয় করছে।

বেলুন বিক্রতা

IMG_20210910_174848.jpg

বেলুন বিক্রতার বেলুন সাধারণত ছোট বাচ্চারা খুব পছন্দ করে এবং কিনে দেওয়ার জন্য তাদের বাবা-মার কাছে আবদার করে।কিছু বাবা-মা হইতো সাধ্যের মধ্য হলে তার স্নেহের সন্তান দের কিনে দিতে সক্ষম হয়।আবার কিছু বাবা-মা তার সাধ্যের বাহিরের হওয়ার কারনে কিনে দিতে সক্ষম হন না।তাদের স্নেহের সন্তান দের আবদার পুরন করতে না পারার যন্ত্রনা যেন তাদের তিলে তিলে শেষ করে দেয়।জীবন যুদ্ধে কেউ বা হাড়ে আবার কেউ বা জিতে যায়।তাই সন্তানের কান্নায় বাবা-মা যেন তাদের জীবন যুদ্ধে হেড়ে যায় এমন। একজন বেলুন বিক্রেতা তার বেলুন বিক্রি করে মোটামুটি যে আয় করে তা দিয়ে হইতো তার নিজ ভরনপোষণ সম্ভব। কেননা কোনো ঐতিহাসিক স্থান, মেলা বা মানুষ বেশী হই এমন জায়গা গুলোতে এই বেলুন বিক্রি বেশী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।যার জন্য এটি থেকে কোনো নির্দিষ্ট পরিমান আয় করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।একজন বেলুন বিক্রেতা তার জীবিন যুদ্ধে নিজেকে বাচানোর জন্য এই সংগ্রাম করে প্রতিনিয়ত কষ্ট করে যায়।দিন শেষ এ সে বিভিন্ন জায়গায় হেটে হেটে হিয়ে বাড়ির ফেরার পথে যেউ টাকা আয় করে তা দিয়ে তার নিজ জীবনের জীবিকা মেটাতে পারাটাও তার জন্য অনেক।

মুড়ি বিক্রেতা

IMG_20210910_173741.jpg

বাহিরের খাবারে মধ্য "ঝাল মুড়ি" খাই না এমন একজন ব্যক্তিকে খুযে পাওয়া দুষ্কর। কারন ১০ টাকার ঝাল মুড়ি কিনে খেলে যেমন পেট ভরে যায় তেমনি মন ও ভরে যায়।কেউ বা ঝাল বেশী খায়,কেউ বা ঝাল কম খায়,কেউ বা মশলা বেশী খায় আবার কেউ বা ঘুর্নি বেশী খায়।এক এক জনের এক এক চাহিদা। এই সব চাহিদা মেটানোর জন্য একজন মুড়ি বিক্রেতা সর্বদাই তার গ্রাহক কে খুশি করার জন্য ব্যস্ত থাকে।জীবন যুদ্ধে বেচে থাকার জন্য একজিন মুড়ি বিক্রেতা নিরলস পরিশ্রম করে তার নিজের ও নিজ পরিবারের ভরনপোষণ এর দায়িত্ব ভার গ্রহণ করে এর প্রয়োজন মেটায়।তাই জীবন যুদ্ধে একজন মুড়ি বিক্রেতার পরিশ্রম যে মানুষের সেবায় ভূমিকা রাখে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

ধন্যবাদ সবাইকে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য।এবং কোনো ভুল-ভ্রান্তি থাকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে থেকে কমেন্ট বক্সে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হলো

Sort:  
 3 years ago 

পৃথিবীতে এখনও অনেক মানুষ আছে যারা জীবিকা নির্বাহ জন্যে অনেক ধরনের কাজ করে থাকে। তবে তারা যে যেই পেশার মানুষ হোক না কেন আমি তাদের কাজকে সম্মান জানাই। আর যাই হোক তারা কাজ করে খাচ্ছে, চুরি তো আর করছে না। আমাদের সবার উচিত তাদের প্রতি সম্মান দেখানো।
আপনার পোষ্টা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্ট টি পড়ার জন্য।এবং আমার পোস্ট টি আপনার ভালো লাগা ই আমার স্বার্থকতা

 3 years ago 

আমার বাংলা ব্লগে কিছু শেয়ার করার পূর্বে আপনাকে নিজের পরিচিতিমূলক পোষ্ট শেয়ার করতে হবে, যাতে আমরা আপনাকে ভেরিফাই করতে পারি।

আমি ইতি মধ্য আমার পরিচিতি মূলক পোস্ট টি গতকাল "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে শেয়ার করেছি।

https://steemit.com/hive-129948/@jahidshikder/or-or-or-or-10-beneficiaries-shy-fox

এটি আমার পরিচয়মূলক পোস্ট এর লিংক

 3 years ago 

ধন্যবাদ, আপনাকে ভেরিফাই করা হলো।

@hafizullah

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাকে "আমার বাংলা ব্লগ " কমিউনিটিতে একজন স্থায়ী সদস্য হিসেবে ভেরিফাই করার জন্য

আপনার পোস্টে আপনি খুব সুন্দর ভাবে জীবিকার তাগিদে মানুষ কি করে সেটা তুলে ধরেছেন।পোস্ট টি খুব সুন্দর হয়েছে।আসলে আমরা এদেরকে অবহেলা করি কিন্তু আমরা চিন্তা করিনা যে তারা না থাকলে আমরা ভালোভাবে চলতে পারতাম না।

ধন্যবাদ ভাই আমার পোস্ট টি পড়ার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 62716.82
ETH 2447.73
USDT 1.00
SBD 2.65